Ajker Patrika

এনামুল হক ও দুই সাক্ষীর সামনে জেসমিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়: র‍্যাব

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৮ মার্চ ২০২৩, ২০: ৪৪
এনামুল হক ও দুই সাক্ষীর সামনে জেসমিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়: র‍্যাব

নওগাঁয় র‍্যাব হেফাজতে নিহত নারী সুলতানা জেসমিন ভূমি অফিসের অফিস সহকারী হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের যুগ্ম সচিবের ফেসবুক আইডি হ্যাক করে নিজের মোবাইল ফোনে ব্যবহার করছিলেন। এই আইডি ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা আদায়ের অভিযোগে জেসমিনকে আটক করা হয়। 

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র‌্যাব সদর দপ্তরের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। আল মঈন জানান, জেসমিনকে আটকের ঘটনায় দায়িত্বরত র‍্যাব সদস্যদের কোনো অবহেলা ছিল কি না, খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে র‍্যাব। তদন্তে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

র‌্যাব হেফাজতে নারীর মৃত্যু ও র‌্যাব সদস্যদের কারও দায়িত্বে অবহেলা ছিল কি না—জানতে চাইলে কমান্ডার মঈন বলেন, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে কর্মরত যুগ্ম সচিব এনামুল হকের ফেসবুক আইডি হ্যাক করে তাঁর নামে চাকরি দেওয়া এবং বিভিন্ন কাজ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে বিপুল পরিমাণ অর্থ প্রতারণা করে আসছিল একটি চক্র। এনামুল হক ২০২২ সালের মার্চে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। সেখানে তিনি এ ব্যাপারে অভিযোগ করেন।

একজন নারী এনামুল হকের ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে প্রতারণা করছেন অভিযোগে আদালতে মামলাও করেন তিনি। গত ১৯ ও ২০ মার্চ নিজ কার্যালয়ের সামনেই এনামুল হকের নাম ব্যবহার করে প্রতারক চক্র অর্থ আত্মসাৎ করে। এ খবর পেয়ে তিনি খোঁজ নেন যে প্রতারণায় আল আমিন নামে একজনের যোগসাজশ রয়েছে। এরপর তিনি খবর পান জেসমিন নামে এক নারীর নাম।

এনামুল হক অফিসে যাওয়ার পথে র‌্যাবের টহল টিমকে অভিযোগ করেন। তাঁর সামনেই অভিযুক্ত নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। এ সময় র‍্যাবের নারী সদস্যরা ছিলেন। অভিযোগকারী এনামুল হকসহ স্থানীয় দুজন সাক্ষী ছিলেন।

কমান্ডার মঈন বলেন, সাক্ষীদের উপস্থিতিতে জিজ্ঞাসাবাদের সময় আটক জেসমিন অকপটে সব অভিযোগ স্বীকার করেন। তাঁর মোবাইল ফোনে চলমান অবস্থায় এনামুল হকের নামে খোলা ভুয়া ফেসবুক আইডি দেখা যায় এবং সোনালী ব্যাংকের অ্যাকাউন্টের তথ্য মেলে, যেখানে লাখ লাখ টাকা জমা রসিদের তথ্য পাওয়া গেছে।

পরে সাক্ষীদের সামনে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেসমিনকে আটক করা হয়। এরপর জব্দ আলামত নিয়ে একটি কম্পিউটারের দোকানে প্রিন্ট করা হয়। সেখান থেকে থানায় মামলার উদ্দেশ্যে যাওয়ার পথে ওই নারী অসুস্থ বোধ করেন। তখন র‌্যাব মামলার চেয়ে তাকে হাসপাতালে নেওয়াকেই  অধিক গুরুত্ব দেয়।

কমান্ডার মঈন বলেন, র‌্যাব শুধু না, প্রতিটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নারী ও শিশু অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে অনেক বেশি সিরিয়াস। আমরা ওই নারীকে নওগাঁ হাসপাতালে নিয়ে যাই। তিনি গাড়ি থেকে নিজে নেমে হেঁটে হাসপাতালে ঢোকেন। তাঁর আত্মীয়স্বজন ও তাঁর এসিল্যান্ডসহ ভূমি অফিসে তাঁর সহকর্মীদের খবর দেওয়া হয়। সন্ধ্যার দিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্ট্রোক সন্দেহে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে তাঁকে। সেখানে সিটি স্ক্যানে স্ট্রোকের আলামত আসে। তাঁকে তখন আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

কমান্ডার মঈন বলেন, ওই নারী কি কারণে মৃত্যুবরণ করেছেন তা কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেছেন, ডেথ সার্টিফিকেটে তা উঠে এসেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করতে অনুমতি লাগে। ভুক্তভোগী যুগ্ম সচিব এনামুল হক অনুমতি সাপেক্ষে পরে থানায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।

যেহেতু অভিযোগ উঠেছে, জেসমিন নামে ওই নারী র‌্যাব হেফাজতে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন, পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। এখানে র‌্যাব সদর দপ্তরে আমাদের তদন্ত সেল রয়েছে। ইতিমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি কাজ করছে। তদন্তে দেখা হচ্ছে কারও কোনো ধরনের অবহেলা, গাফিলতি বা যোগসাজশ কিংবা অনৈতিক কিছু ছিল কি না। তদন্তে যদি কেউ দোষী সাব্যস্ত হয়, তাহলে অতীতের মতো চাকরিচ্যুতিসহ কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কারও অবহেলা বা গাফিলতি র‌্যাব পেয়েছে কি না জানতে চাইলে কমান্ডার মঈন বলেন, এটা এখনই বলার মতো সময় আসেনি। মেডিকেল রিপোর্টে সব ক্লিয়ার। তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত কমিটি তদন্তে যদি কারও কোনো ধরনের গাফিলতি পায়, তাহলে অবশ্যই আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

দেশের মানবাধিকার সংগঠনের জোট হিউম্যান রাইটস ফোরাম (এইচআরএফবি) এক বিবৃতিতে বলছে, পুরো ঘটনা বিশ্লেষণ করে এইচআরএফবি মনে করে, পরিবারের পক্ষ থেকে উত্থাপিত অভিযোগ যথাযথ আইনানুগ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে খতিয়ে দেখে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা আবশ্যক। একই সঙ্গে মামলা দায়েরের আগে আটক, বেআইনি জিজ্ঞাসাবাদ ও পুলিশকে না জানানো সংবিধান, মানবাধিকার, মূলনীতি, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা ও বিদ্যমান আইনের লঙ্ঘন এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের নিকৃষ্ট উদাহরণ। এ ক্ষেত্রে দ্রুততার সঙ্গে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে জবাবদিহি ও বিচার নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঝালকাঠিতে ট্রলির ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ঝালকাঠির নলছিটিতে ট্রলির ধাক্কায় লিমা আক্তার (৩০) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তা৭র স্বামী মোটরসাইকেলচালক আহত হয়েছেন। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে উপজেলার ভৈরবপাশা ইউনিয়নের লক্ষণকাঠি এলাকায় বরিশাল-ঝালকাঠি মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুল আলম।

নিহত লিমা আক্তার ইশ্বরকাঠি এলাকার ব্যবসায়ী রাজু মল্লিকের স্ত্রী। তাঁদের পাঁচ বছর ও দুই বছর বয়সী দুটি সন্তান রয়েছে।

নিহত লিমার ভাশুর ও স্থানীয় ইউপি সদস্য পারভেজ মল্লিক জানান, বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে করে ঝালকাঠি আসার পথে পেছন দিক থেকে একটি ট্রলি তাঁদের ধাক্কা দেয়। এ সময় ট্রলিটি একটি নৌবাহিনীর গাড়িকেও ধাক্কা দেয়। গুরুতর আহত অবস্থায় লিমাকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আনিস আলমগীর এখনো ডিবি কার্যালয়ে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আনিস আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত
আনিস আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

সাংবাদিক আনিস আলমগীর এখনো ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কার্যালয়ে রয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গতকাল রোববার সন্ধ্যায় তাঁকে সেখানে ডেকে নেওয়া হয়।

আজ সোমবার সকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান আনিস আলমগীরের ডিবি কার্যালয়ে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে গতকাল রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ডিবি সদস্যরা তাঁকে সেখানে নিয়ে যান। রাজধানীর ধানমন্ডির একটি জিম থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন আনিস আলমগীর।

ডিবির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, আনিস আলমগীর এখনো ডিবি কার্যালয়েই রয়েছেন। তাঁর বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তা এখনো জানানো হয়নি।

এদিকে সাংবাদিক আনিস আলমগীর এবং অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনসহ মোট চারজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে তাঁদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা নষ্টের ষড়যন্ত্র এবং নিষিদ্ধ সংগঠনকে উসকে দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে।

‘জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যালায়েন্স’ নামে একটি সংগঠনের কেন্দ্রীয় সংগঠক আরিয়ান আহমেদ এই অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্ত অপর দুজন হলেন মারিয়া কিসপট্টা ও ইমতু রাতিশ ইমতিয়াজ।

থানায় দেওয়া অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাই মাসের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের মধ্যেও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুসারীরা বিভিন্ন কৌশলে দেশে অবস্থান করে রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা বিনষ্টের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। অভিযুক্তরা এসব কর্মকাণ্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, গত ৫ আগস্টের পর থেকে অভিযুক্তরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন টেলিভিশন টক শোতে অংশ নিয়ে নিষিদ্ধ সংগঠনকে পুনরুজ্জীবিত করার প্রচারণা চালাচ্ছেন। এর মাধ্যমে তাঁরা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের অপচেষ্টা করছেন।

এতে আরও বলা হয়, অভিযুক্তদের এসব বক্তব্য ও অনলাইন কার্যক্রমের কারণে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা উসকানি পাচ্ছে। ফলস্বরূপ তারা রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র, সহিংসতা এবং অবকাঠামো ধ্বংসের মতো কর্মকাণ্ডে জড়িত হচ্ছে।

উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মোহাম্মদ রফিক আহমেদ গণমাধ্যমকে জানান, এটি সাইবার-সম্পর্কিত একটি ইস্যু। তিনি বলেন, ‘আমরা অভিযোগ গ্রহণ করেছি। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা যাচাই ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা পেলে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদিকে সিঙ্গাপুরে নিতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স এখন ঢাকায়

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ২৩
ওসমান হাদিকে সিঙ্গাপুরে নিতে ঢাকায় পৌঁছেছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স। ছবি: ফ্লাইটর‍্যাডার২৪
ওসমান হাদিকে সিঙ্গাপুরে নিতে ঢাকায় পৌঁছেছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স। ছবি: ফ্লাইটর‍্যাডার২৪

রাজধানীর এয়ারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদিকে সিঙ্গাপুরে নেওয়ার জন্য ঢাকায় এসেছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি সিঙ্গাপুর থেকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন রাগিব সামাদ আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি আজ বেলা ১১টা ২২ মিনিটে বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে সড়কপথে আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্সে বিমানবন্দরে নেওয়া হবে এবং সেখান থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হবে।

ওসমান হাদির বড় দুই ভাই—ওমর ফারুক এবং আবু বকর সিদ্দিক—তাঁর সঙ্গে বিদেশ যাওয়ার কথা রয়েছে। দুপুরের মধ্যেই পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। পরে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর সন্ধ্যার দিকে হাদিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন।

এরপর গতকাল রোববার ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, রোববার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান, এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জাফর, ওসমান হাদির ভাই ওমর বিন হাদির মধ্যে এক জরুরি কল কনফারেন্সে হাদিকে সিঙ্গাপুরে পাঠানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।

পরে প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত দুদিন ধরে ওসমান হাদির চিকিৎসার জন্য সরকার সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার কয়েকটি হাসপাতালে যোগাযোগ করেছে। আজ (গতকাল রোববার) এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের পরামর্শে ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনার পর প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়।

প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, বর্তমানে ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ও অপরিবর্তিত রয়েছে।

আগামীকাল (আজ সোমবার) দুপুরে ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় মেডিকেল এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক দল এবং ভ্রমণসংক্রান্ত সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করা হয়েছে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের অ্যাক্সিডেন্ট ইমার্জেন্সি বিভাগে তাঁর চিকিৎসার সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

ওসমান হাদির চিকিৎসা সংক্রান্ত সকল ব্যয় রাষ্ট্রীয়ভাবে বহন করা হবে। তার চিকিৎসা প্রক্রিয়া সার্বক্ষণিকভাবে পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

ওসমান হাদির দ্রুত সুস্থতা কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়া ও প্রার্থনা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঠাকুরগাঁওয়ে অবৈধভাবে সার মজুত: ব্যবসায়ীকে ৭ দিনের কারাদণ্ড, ৭৬৬ বস্তা জব্দ

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
সারগুলো জব্দ করে গুদাম সিলগালা করে দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
সারগুলো জব্দ করে গুদাম সিলগালা করে দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক সার মজুত রাখার অভিযোগে এক কীটনাশক ব্যবসায়ীকে ভ্রাম্যমাণ আদালত সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। একই সঙ্গে দুটি গুদাম থেকে ৭৬৬ বস্তা সার জব্দ করা হয়েছে এবং গুদাম দুটি সিলগালা করা হয়েছে।

রোববার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের বড় খোঁচাবাড়ি বাজারের পেছনে অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. খাইরুল ইসলাম। অভিযানে আব্দুল্লাহ নামের ওই কীটনাশক ব্যবসায়ীর দুটি গুদামে অবৈধভাবে মজুত রাখা বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক সার পাওয়া যায়।

সারগুলো জব্দ করে গুদাম সিলগালা করে দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
সারগুলো জব্দ করে গুদাম সিলগালা করে দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আব্দুল্লাহকে সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জব্দ করা ৭৬৬ বস্তা সার গুদামে রেখে সিলগালা করা হয়েছে।

ইউএনও মো. খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে অভিযান চালানো হয়েছে। জব্দকৃত সার কিছুদিন পর কৃষি কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে ন্যায্যমূল্যে উন্মুক্ত বাজারে বিক্রি করা হবে। কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত