Ajker Patrika

নিজেদের স্ত্রীদের সঙ্গে পরকীয়া করত চার বন্ধু, একজনকে খুন করে অটোরিকশা ছিনতাই: পিবিআই

উত্তরা (ঢাকা) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০: ০৩
গ্রেপ্তার মো. আলমগীর (২৫) ও সদর আলী ওরফে সোহরাব (৪৭) । ছবি: আজকের পত্রিকা
গ্রেপ্তার মো. আলমগীর (২৫) ও সদর আলী ওরফে সোহরাব (৪৭) । ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা জেলার ধামরাইয়ে দুই বছর আগে অটোরিকশাচালক সাইদুর রহমানকে হত্যার পেছনে পরকীয়া প্রেম ও ছিনতাইয়ের ত্রিভুজ চক্র ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ ঘটনায় সদর আলী ওরফে সোহরাব (৪৭) ও মো. আলমগীরকে (২৫) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

উত্তরার ঢাকা জেলা পিবিআই কার্যালয়ে আজ মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার (এসপি) মো. কুদরত-ই-খুদা।

এসপি মো. কুদরত-ই-খুদা জানান, ধামরাইয়ের বাইশাকান্দার কেষ্টখালী গ্রামের একটি ধানখেত থেকে ২০২৩ সালের ২৮ নভেম্বর সকালে অজ্ঞাতনামা এক পুরুষের লাশ উদ্ধার করে ধামরাই থানা-পুলিশ। ওই ঘটনায় এসআই আব্দুল জব্বার বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন এবং নিহত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করেন। নিহত ওই ব্যক্তি অটোরিকশাচালক সাইদুর রহমান। পরে ক্লুলেস মামলাটি পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে তদন্তভার আসে পিবিআইয়ের ওপর।

কুদরত-ই-খুদা আরও জানান, তদন্তকালে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর এলাকায় ৪ সেপ্টেম্বর অভিযান চালিয়ে সদর আলী ওরফে সোহরাবকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে দেওয়া তাঁর তথ্যের ভিত্তিতে মানিকগঞ্জের সদরের বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর আলমগীরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এসপি কুদরত-ই-খুদা বলেন, এদিকে গ্রেপ্তারের পর আলমগীরকে জিজ্ঞাসাবাদে ও রিমান্ডে সদর আলীকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে হত্যাকাণ্ডের চাঞ্চল্যকর ঘটনা। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁদের আদালতে পাঠানো হলে তাঁরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে এসপি কুদরত জানান, ভিকটিম সাইদুর রহমান, আসামি সদর আলী, আলমগীর ও জুয়েল বন্ধু। তাঁরা একই বাসায় পাশাপাশি বসবাস করতেন। যার সুবাদে সদর আলীর স্ত্রীর সঙ্গে জুয়েলের অনৈতিক সম্পর্ক তৈরি হয়। একপর্যায়ে আলমগীরের সহায়তায় জুয়েল সদর আলীর স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে যান।

এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, এদিকে সদর আলী ভুক্তভোগী সাইদুরের স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। অপরদিক আলমগীরও জড়াতে চান। বিষয়টি বুঝতে পেরে সাইদুরের সঙ্গে আসামি সদর আলী ও আলমগীরের তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে হাতাহাতি হয়। অন্যদিকে সদর আলীর স্ত্রী জুয়েলের সঙ্গে ছয় মাস থাকার পর সদর আলীর কাছে চলে আসেন।

কুদরত-ই-খুদা বলেন, মারামারির ঘটনাকে কেন্দ্র করেই সাইদুরকে হত্যার পরিকল্পনা করেন আলমগীর, সদর আলী ও জুয়েল। পরে নগদ টাকার প্রয়োজন হলে সাইদুরকে ফুঁসলিয়ে রাতে গান শোনার অজুহাতে বাইরে নিয়ে যান তাঁরা। পরে ফেরার পথে কেষ্টখালী গ্রামের স্থানে গামছা দিয়ে মুখ বেঁধে, হাত ও পায়ে রশি দিয়ে বেঁধে কোমরে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে মৃতদেহ ফেলে অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যান তিন বন্ধু। পরে অটোরিকশাটি ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করে ভাগাভাগি করে নেন তাঁরা।

এক প্রশ্নের জবাবে এসপি কুদরত-ই-খুদা আজকের পত্রিকাকে বলেন, আসামিদের মধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামি জুয়েলকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। বিষয়টি যাচাই করে দেখা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে বাংলাদেশ এলডিপির সেলিম, প্রার্থী হবেন ধানের শীষের

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

আপাতত লন্ডন নেওয়া হচ্ছে না খালেদা জিয়াকে

গত ১৬ বছরে যা দেখেছি, ৫ আগস্টের পরে তার পরিবর্তন হয়নি: তারেক রহমান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাইবান্ধায় মাহফিলে বয়ানরত অবস্থায় ব্রেন স্ট্রোক, হাসপাতালে বক্তার মৃত্যু

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
মাওলানা ফরিদুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
মাওলানা ফরিদুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

গাইবান্ধায় তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে বয়ানরত অবস্থায় ব্রেন স্ট্রোক করে মারা গেছেন মাওলানা ফরিদুল ইসলাম নামের এক বক্তা। জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের চরবালুয়া গ্রামে মাহফিল চলাকালে এই ঘটনা ঘটে। উপস্থিত হাজারো মানুষের সামনে বয়ানরত অবস্থায় ব্রেন স্ট্রোক করে স্টেজেই লুটিয়ে পড়েন মাওলানা ফরিদুল ইসলাম (৩৫)। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার তিনি মারা যান।

‎স্বজন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার চরবালুয়া গ্রামের একটি জামে মসজিদের উদ্যোগে আয়োজিত তাফসির মাহফিলের তৃতীয় বক্তা হিসেবে বয়ান শুরু করেন মাওলানা ফরিদুল ইসলাম। বক্তব্য শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই হঠাৎ ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে তিনি স্টেজে ঢলে পড়েন। তাৎক্ষণিক তাঁকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং পরে রংপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

‎মাওলানা ফরিদুল ইসলাম গাইবান্ধা সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের খামার গোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি মহিমাগঞ্জ আইডিয়াল একাডেমিক স্কুলের ধর্মীয় শিক্ষক এবং স্থানীয় ঘোষপাড়া জামে মসজিদের ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ব্যক্তিজীবনে তিনি আড়াই বছর বয়সী এক সন্তানের জনক ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে বাংলাদেশ এলডিপির সেলিম, প্রার্থী হবেন ধানের শীষের

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

আপাতত লন্ডন নেওয়া হচ্ছে না খালেদা জিয়াকে

গত ১৬ বছরে যা দেখেছি, ৫ আগস্টের পরে তার পরিবর্তন হয়নি: তারেক রহমান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শাজাহানপুরে পিস্তলসহ স্বেচ্ছাসেবক দলের বহিষ্কৃত নেতা আটক

শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি  
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৩৮
: উদ্ধারকৃত পিস্তল। ছবি: আজকের পত্রিকা
: উদ্ধারকৃত পিস্তল। ছবি: আজকের পত্রিকা

বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার বেজোড়া এলাকায় পিস্তলসহ স্থানীয় জনগণের হাতে আটক হয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক দলের বহিষ্কৃত নেতা ফেরদৌস করিম সনি। একটি শর্টপিচ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে দাওয়াত না পাওয়ার জেরে তিনি গুলি করার চেষ্টা করলে জনতা তাঁকে আটক করে। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১১টার দিকে উপজেলার বেজোড়া দক্ষিণ পাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে ‘বেজোড়া যুবসংঘ’ শর্টপিচ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছিল।

আয়োজক কমিটির সদস্য রুবেল হোসেন বলেন, ‘দাওয়াত না পাওয়ায় রাত ১১টার দিকে স্বেচ্ছাসেবক দলের বহিষ্কৃত নেতা সনি এসে মোটরসাইকেল আমাদের সাউন্ড বক্সের ওপরে তুলে দেন। তখন উপস্থিত লোকজন বাধা দিলে সনি পাশেই নিজের বাড়িতে গিয়ে পিস্তল হাতে ফিরে এসে আমাকে গুলি করার চেষ্টা করেন। এ সময় স্থানীয় শত শত জনতা সনিকে পিস্তলসহ আটক করে পিটুনি দেয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে বগুড়ার কৈগাড়ি ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পিস্তলসহ সনিকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।’

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, সনি এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী এবং মাদক বিক্রিসহ নানা অপরাধে জড়িত।

ঘটনাস্থলে থাকা কৈগাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আবু সুফিয়ান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পিস্তলসহ সনিকে আটক করে থানায় নিয়ে এসেছি। পিস্তলটি সম্ভবত আসল না। পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে বাংলাদেশ এলডিপির সেলিম, প্রার্থী হবেন ধানের শীষের

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

আপাতত লন্ডন নেওয়া হচ্ছে না খালেদা জিয়াকে

গত ১৬ বছরে যা দেখেছি, ৫ আগস্টের পরে তার পরিবর্তন হয়নি: তারেক রহমান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পৌরসভার বর্জ্যে নদী পরিণত হচ্ছে নর্দমায়

গুরুদাসপুর (নাটোর) সংবাদদাতা
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭: ৪৮
পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে নাটোরের গুরুদাসপুরের নন্দকুঁজা নদীতে। সম্প্রতি তোলা ছবি। 	আজকের পত্রিকা
পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে নাটোরের গুরুদাসপুরের নন্দকুঁজা নদীতে। সম্প্রতি তোলা ছবি। আজকের পত্রিকা

নদী যেন দিন দিন মরে যাচ্ছে পৌরসভার ফেলে যাওয়া ময়লা-আবর্জনায়। যে নদীর পানিতে একসময় শিশুদের হাসি ও খেলাধুলার শব্দ ভেসে উঠত, সেই নদী আজ দুর্গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসা এক বিষাক্ত নর্দমায় পরিণত হচ্ছে পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অবহেলায়।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর থেকে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা চাঁচকৈড় রসুনহাট, গরুর হাট ও গুরুদাসপুর বাজারঘাট এলাকার আবর্জনা গাড়িতে তুলে এনে নদীর তীরে বা সরাসরি পানিতে ফেলে দিচ্ছে। শুধু ঘরবাড়ির বর্জ্য নয়, বিভিন্ন কারখানা ও ক্লিনিক থেকে আসা রাসায়নিক বর্জ্য এবং পয়োনিষ্কাশনের নালা-পাইপের বর্জ্যও নন্দকুঁজা নদীতে পড়ছে। এতে নদীর পানি যেমন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে, অন্যদিকে দ্রুত ভরাট হয়ে যাচ্ছে নদী। তবু পরিস্থিতি মোকাবিলায় দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেই।

রসুনহাটসংলগ্ন নদীপাড়ের ব্যবসায়ীরা বলেন, শহরজুড়ে ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের ফেলা নানান আবর্জনা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে জমে থাকে। পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা সেসব বর্জ্য সংগ্রহ করে পৌরসভার গাড়িতে করে এনে নদীর ধারে ফেলে রাখেন। এতে এতটাই দুর্গন্ধ ছড়ায় যে আশপাশে বসবাস করা দুরূহ হয়ে পড়েছে।

স্থানীয় কয়েকজন নদীপারের বাসিন্দা জানান, একসময় এই নদীতে দল বেঁধে গোসল করতেন তাঁরা, মাছ ধরতেন, শিশুদের খেলাধুলার জায়গা ছিল এটি। এখন নদীতে নামাই যায় না। দূষিত পানিতে শরীর চুলকায়, আগের মতো মাছও আর মেলে না। নদীর প্রতি মানুষের নির্ভরতা কমে যাচ্ছে, তারা চান, আগের সেই স্বাভাবিক নদী ফিরে আসুক।

জানতে চাইলে গুরুদাসপুর উপজেলা নদী রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান বলেন, ‘নদী রক্ষায় বহুবার আন্দোলন করেছি, পৌর মেয়রকেও অনুরোধ জানিয়েছিলাম; তবু নদীতে আবর্জনা ফেলা বন্ধ হয়নি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহমিদা আফরোজ আজকের পত্রিকাকে জানান, ব্যস্ততার কারণে বিষয়টি তাঁর নজরে আসেনি। এখন তিনি পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের নির্দেশ দেবেন, যেন নদীতে আর আবর্জনা ফেলা না হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে বাংলাদেশ এলডিপির সেলিম, প্রার্থী হবেন ধানের শীষের

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

আপাতত লন্ডন নেওয়া হচ্ছে না খালেদা জিয়াকে

গত ১৬ বছরে যা দেখেছি, ৫ আগস্টের পরে তার পরিবর্তন হয়নি: তারেক রহমান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঠান্ডাজনিত রোগে সাত দিনে পাঁচ শিশুর মৃত্যু

মুজাহিদুল ইসলাম সোহেল, সুবর্ণচর (নোয়াখালী) 
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ২৬
নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বারান্দায়ও ভর্তি রোগীর ভিড়। গতকাল তোলা ছবি। 	আজকের পত্রিকা
নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বারান্দায়ও ভর্তি রোগীর ভিড়। গতকাল তোলা ছবি। আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে কয়েক দিন ধরে তীব্র ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। দিনের অধিকাংশ সময়েই রোদের দেখা মিলছে না। এই অবস্থায় বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগ। দেখা দিচ্ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস ও অ্যাজমার প্রকোপ। এসব রোগে আক্রান্তদের অধিকাংশই শিশু ও বৃদ্ধ। এক সপ্তাহে এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে কয়েক শ শিশু জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে এক সপ্তাহে উপজেলায় পাঁচ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। হঠাৎ করে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকেরা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে চলতি (ডিসেম্বর) মাসের প্রথম আট দিনে (১ থেকে ৮ তারিখ পর্যন্ত) মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৭৮৪ জনের মধ্যে শিশু ৬৭২ জন। এদের সবাই ঠান্ডাজনিত রোগ নিয়ে ভর্তি হয়েছে। এই আট দিনে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৬১৯টি শিশু। গতকাল সোমবার ভর্তি ছিল ৪৮ জন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালের মেঝেতেও রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। নার্সরা ব্যস্ত রোগীর চাপ সামলাতে। শিশু ওয়ার্ডে কথা হয় গৃহবধূ আসমা আক্তারের সঙ্গে। চার দিন ধরে তাঁর সাড়ে তিন বছর বয়সী মেয়ে মুনতাহা জ্বরে আক্রান্ত। প্রথমে বাড়িতে রেখে পল্লিচিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসা দিলেও জ্বর কমেনি। নিরুপায় হয়ে হাসপাতালে আসেন। শয্যা না পেয়ে মেঝেতে রেখে মেয়ের চিকিৎসা করাচ্ছেন।

আসমা বলেন, ‘বাচ্চাটা চার দিনের জ্বরে কাহিল হয়ে গেছে। ঘাড় তুলতে পারছে না। চিকিৎসকেরা বলেছেন, ঠান্ডাজনিত রোগ (নিউমোনিয়া) প্রতিদিন অনেক শিশু ভর্তি হচ্ছে। এখন ইনজেকশন ও অন্যান্য ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা চলছে। শয্যা পাচ্ছি না। বলতে পারছি না কবে সন্তানকে সুস্থ করে বাড়িতে ফিরতে পারব।’

চর আলাউদ্দিনের বাসিন্দা শেফালী আক্তারের পাঁচ বছর বয়সী ছেলে সৈকত ছয় দিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত। অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে জোসনার চোখেমুখে দুশ্চিন্তার ছাপ। তিনি জানান, ছেলের নিউমোনিয়া হয়েছে, আগে বুঝতে পারেননি। প্রথমে স্থানীয় চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা করিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন সাধারণ জ্বর। কিন্তু হাসপাতালে দুই দফায় পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়েছেন, ছেলের নিউমোনিয়া হয়েছে। এখন চিকিৎসা চলছে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শিশু বিশেষজ্ঞ মো. সোহেল সারওয়ার জানান, সুবর্ণচরের চরাঞ্চল থেকে শিশুরা বেশি আসছে। প্রতিবছরের মতো এ বছর তীব্র ঠান্ডা পড়েছে। ফলে ঠান্ডাজনিত রোগও দেখা দিয়েছে। সাধারণ ওয়ার্ডে রোগীর চাপ বেশি হওয়ায় চিকিৎসা দিতেও হিমশিম খেতে হয়। তিনি বলেন, ‘যে শিশুগুলো মারা যাচ্ছে, বেশির ভাগ নবজাতক ও পাঁচ বছরের মধ্যে। পল্লিচিকিৎসকদের কাছে চিকিৎসা নিয়ে তাদের অবস্থা যখন বেশি খারাপ হয়, তখন হাসপাতালে আসেন এতে আমাদেরও কিছু করার থাকে না। আমরা সাধ্য অনুযায়ী এ হাসপাতালে সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করছি।’

এদিকে জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপপরিচালক রফিকুল ইসলামের কাছে তাপমাত্রা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আবহাওয়ার কোনো রেকর্ড আমাদের কাছে নেই। আগামীকাল (৯ ডিসেম্বর) জানাতে পারব।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘হাসপাতালে অনেক শিশুকে ক্রিটিক্যাল অবস্থায় নিয়ে আসে। আমরা সেসব শিশুকে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠাই। অনেক রোগীর অভিভাবক আছেন, জেলা হাসপাতালে না গিয়ে বাড়ি ফিরে যান। তখন সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে বাড়িতে মারা যায়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে বাংলাদেশ এলডিপির সেলিম, প্রার্থী হবেন ধানের শীষের

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

আপাতত লন্ডন নেওয়া হচ্ছে না খালেদা জিয়াকে

গত ১৬ বছরে যা দেখেছি, ৫ আগস্টের পরে তার পরিবর্তন হয়নি: তারেক রহমান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত