Ajker Patrika

দুই দিনে সোহেলসহ বিএনপির ১২৪ নেতা-কর্মীর কারাদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২০ নভেম্বর ২০২৩, ১৯: ০৭
দুই দিনে সোহেলসহ বিএনপির ১২৪ নেতা-কর্মীর কারাদণ্ড

পুরোনো নাশকতার অভিযোগে বিভিন্ন থানায় দায়ের করা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। গত দুই দিনে এসব মামলার রায়ে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ১২৪ জন নেতা-কর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার ও গতকাল রোববার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পৃথক পৃথক ম্যাজিস্ট্রেট এই রায় ঘোষণা করেন।

জানা গেছে, পুরোনো নাশকতার অভিযোগে বিভিন্ন থানায় দায়ের করা চার মামলার রায় আজ ঘোষণা করা হয়েছে। এসব মামলায় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ৬২ জন নেতা-কর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পৃথক পৃথক ম্যাজিস্ট্রেট এই রায় ঘোষণা করেন।

এর মধ্যে নাশকতার এক মামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেলসহ ১৪ নেতা-কর্মীকে দেড় বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল্লাহ এই কারাদণ্ড দেন।

অন্যদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু।

২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালানো ও তাঁদের কর্তব্য পালনে বাধা দেওয়ার অভিযোগে এই দণ্ড দেন আদালত।

আসামিদের অনুপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করা হয়। তাঁদের পক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার বা আত্মসমর্পণের দিন থেকে তাঁদের শাস্তি কার্যকর হবে বলে আদালত রায়ে উল্লেখ করেছেন।

আরেক মামলায় ২৫ জনের কারাদণ্ড:
পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় রাজধানীর পল্টন থানার আরেক মামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল ও যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুসহ ২৫ জনের দুই বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন একই আদালত।

এ মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন বিএনপির তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, যুবদলের সভাপতি সুলতাল সালাউদ্দিন টুকু, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের সেক্রেটারি রাজিব আহসান, ছাত্রদলের সাবেক সেক্রেটারি আকরামুল হাসান মিন্টু, হাবিবুর রশিদ হাবিব ও যুবদল দক্ষিণের সভাপতি এনামুল হক এনাম।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় হয়ে ফেনী যাওয়ার কথা ছিল। তিনি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গেলে আসামিরা বিক্ষোভ করেন। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। পুলিশের কর্তব্য কাজে বাধার সৃষ্টি করেন। এ ঘটনায় পল্টন মডেল থানার এসআই আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। 

শাহজাহানপুরের মামলায় ১৬ জনের কারাদণ্ড:
রাজধানীর শাহজাহানপুর থানায় ২০১৮ সালে দায়ের করা একটি নাশকতার মামলায় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের স্থানীয় ১৬ নেতা-কর্মীকে দুই বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল্লাহ এই কারাদণ্ড দেন। আসামিদের মধ্যে স্থানীয় বিএনপি নেতা হাসানুল হক ফরহাদ দুলাল ব্যাপারী, আব্দুল আজিজ ও জাহাঙ্গীর হোসেন রয়েছেন।

অপর এক মামলায় ৭ জনের কারাদণ্ড:
এদিকে ঢাকার অপর এক আদালত ২০১৩ সালের মে মাসে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অগ্নিসংযোগের মামলায় যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরবসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের সাত নেতা-কর্মীকে দুই বছর ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন।

ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ শেখ সাদীর আদালতে নীরবের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। নীরব বর্তমানে অন্য মামলায় কারাবন্দী আছেন। রায়ের আগে কারাগার থেকে তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়।

মামলা দায়েরের পর থেকে বাকি ছয়জন আসামি পলাতক রয়েছেন। তাঁরা হলেন সাজেদুল ইসলাম সুমন, গান্ডু শাহিন, বেল্লাল হোসেন, জাকির হোসেন, আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার ও আবু বক্কর সিদ্দিক।

আগের দিন এক মামলায় ৬২ জনের কারাদণ্ড:

২০১৮ সালে রাজধানীর বংশালে পুলিশের ওপর হামলা ও দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়ার মামলায় বিএনপির সাবেক মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে খোন্দকার আখতার হামিদ খান পবনসহ দলটির অঙ্গসংগঠনের ৬২ নেতা-কর্মীকে সাড়ে তিন বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। 

গতকাল ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শেখ সাদী আসামিদের অনুপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করেন। আসামিরা অনুপস্থিত থাকায় আদালত তাঁদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর বেলা ২টা ২০ মিনিটের দিকে রাজধানীর বংশালের নবাব কাটরায় হোটেল সুফিয়া (প্রাইভেট) লিমিটেডের সামনে বিএনপির একদল নেতা-কর্মী জড়ো হন। একপর্যায়ে তাঁরা দোকানপাট ভাঙচুর, পুলিশের ওপর হামলা ও দায়িত্ব পালনে বাধা দেন। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে বংশাল থানায় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করে।

আসামি পক্ষের আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ, জাকির হোসেন জুয়েল ও রফিকুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত