Ajker Patrika

শিক্ষায় জাতীয় আয়ের কমপক্ষে ৬ শতাংশ ব্যয় করা উচিত: সলিমুল্লাহ খান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
জাতীয় প্রেসক্লাবে আইপিএলডি আয়োজিত সেমিনারে বক্তা ও অতিথিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জাতীয় প্রেসক্লাবে আইপিএলডি আয়োজিত সেমিনারে বক্তা ও অতিথিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

শিক্ষা খাতে জাতীয় আয়ের ন্যূনতম ছয় শতাংশ ব্যয় করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান। তিনি বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার নতুন সরকার বলছে, ‘‘তারা শিক্ষা খাতে জাতীয় আয়ের ১০ শতাংশ ব্যয় করবে।’’ আমি বলছি, আমরা যদি শ্রীলঙ্কার মতো ১০ ভাগ না-ই করতে পারি, অন্তত ৬ ভাগ তো করা উচিত।’

আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ইনিশিয়েটিভ ফর দ্য প্রমোশন অব লিবারেল ডেমোক্রেসি (আইপিএলডি) আয়োজিত ‘বাংলাদেশে টেকসই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রতিবন্ধকতা’ শীর্ষক সেমিনারে ড. সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন।

সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘জাতিসংঘ বহু আগেই বলেছে, নিরক্ষরতা দূর করতে হলে একটি রাষ্ট্রকে তার জাতীয় আয়ের কমপক্ষে ৬ শতাংশ শিক্ষা খাতে ব্যয় করতে হবে। কিন্তু আমাদের এখানে যখন এই কথা বলা হয়, তখন হোসেন জিল্লুর রহমানের মতো পণ্ডিতেরা বলেন—‘‘না না, এতে তো সব দালানকোঠা নির্মাণে শেষ হয়ে যাবে।’’ আমি বলি, ‘দালানকোঠার জন্য আলাদা বাজেট নির্ধারণ করুন। কিন্তু শিক্ষা খাতে চলমান ব্যয়ের যে অংশ, সেটা তো আপনাকে চালাতে হবে। এটা আপনি করবেন না, আবার গণতন্ত্রের কথা বলবেন—এটা কি আপনাকে মানায়?’

ড. সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘বাচ্চাদের বই দিয়ে বড়াই করা হচ্ছে। এটা তো তাদের অধিকার। বরং বাচ্চাদের দুই সেট করে বই দেওয়া দরকার। একটা স্কুলে থাকবে, আরেকটা বাসায়। তাহলে তার আর কিছু বহন করতে হবে না। স্বাস্থ্যের কোনো ব্যবস্থা নাই।’

তিনি বলেন, ‘ঢাকা শহরের শতকরা পাঁচ ভাগ লোককে স্পর্শ করে না সে রকম একটা মেট্রোপলিটন রেল চালু করেছে। সেটাও ভালো, মন্দের ভালো। কিন্তু বাকি ৯৫ জন লোক কী অপরাধ করল? সাধারণ গণপরিবহন নাই কেন আমাদের? আপনি ইচ্ছে করলে বাসে উঠতে পারছেন না কেন? এটা কোনো সভ্য দেশের মাপকাঠি হতে পারে? এটি গণতন্ত্রের মাপকাঠি হতে পারে। যেখানে আপনার এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাইতে ছয় ঘণ্টা লাগে। ঢাকা শহরে উত্তরা থেকে দক্ষিণে আসতে। কিন্তু সেটা গণতন্ত্র হতে পারে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজ বাংলাদেশের সবাই মুক্তিযুদ্ধের কথা বলছে—কিন্তু সেটা শুধু কথার ফুলঝুরি, ‘‘লিপ সার্ভিস’’। মুক্তিযুদ্ধের মূল আদর্শ ছিল—সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার। অথচ এই আদর্শকেই ১৯৭২ সালে হত্যা করা হয়েছে। বাহাত্তরের সংবিধান কোনো অন্য কারণে নয়, কেবল এই কারণে বাতিল করা হয়েছিল। এই সংবিধানকে একরকম ফ্যাসিস্ট কনস্টিটিউশন বানিয়ে তোলা হয়েছিল। এই সত্যটা আমাদের বুঝতে ৫০ বছর লেগে গেল। ছাত্ররা আন্দোলন না করলে, ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতায় না গেলে, আমরা আজও এই সত্য প্রকাশ করতে পারতাম না।’

আইপিএলডির সভাপতি মোহাম্মদ ফজলুল আজীম সেমিনারটির সভাপতিত্ব করেন। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন আইপিএলডির নির্বাহী সদস্য ফয়জুল লতিফ চৌধুরী, এহসান শামীম, কবি মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আবু ইউসুফসহ অন্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত