Ajker Patrika

বিশুদ্ধ পানির স্থানে ভাগাড়! সিরাজদিখানে নলকূপ ব্যবহারের অনুপযোগী

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, সিরাজদিখান (মুন্সিগঞ্জ) 
বিশুদ্ধ পানির স্থানে ভাগাড়! সিরাজদিখানে নলকূপ ব্যবহারের অনুপযোগী

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার প্রাণকেন্দ্র সিরাজদিখান বাজারে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের স্থাপন করা একটি সরকারি গভীর নলকূপ বর্তমানে সম্পূর্ণরূপে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। একসময় যেখান থেকে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার মানুষ সুপেয় পানি গ্রহণ করত, আজ সেই নলকূপে পানিই পড়ে না। উল্টো এর চারপাশ পরিণত হয়েছে ভাগাড়ে।

বুধবার (১৮ জুন) দুপুর ১২টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাজারের গণশৌচাগারের পাশে স্থাপিত নলকূপটির চারপাশে ছড়িয়ে রয়েছে পচা খাবার, পলিথিন, প্লাস্টিকসহ বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য। দুর্গন্ধে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা কষ্টকর হয়ে উঠেছে। বিশুদ্ধ পানির জন্য স্থাপিত এই অবকাঠামো যেন আজ অবহেলার প্রতীক।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ১৫ নভেম্বর সিরাজদিখান বাজার বণিক সমিতির নামে সরকারিভাবে একটি গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়। এ জন্য সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ১০ হাজার ২০০ টাকা জমা দিতে হয়। তবে স্থাপনের কিছুদিনের মধ্যেই আশপাশে ময়লা ফেলা শুরু হয়, ফলে নলকূপটি দ্রুত বন্ধ হয়ে যায়।

বাজারের সবজি বিক্রেতা ইউসুফ শেখ বলেন, ‘আগে এখান থেকেই ফ্রি পানি খেতাম। এখন অবস্থা এমন হয়েছে, বাধ্য হয়ে দোকান থেকে বোতলের পানি কিনে খেতে হয়।’

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক মাহবুব রহমান বলেন, ‘যাত্রীরা নামলেই পানি খোঁজে। কিন্তু নলকূপের দুর্গন্ধে কেউ কাছে যায় না।’

পথচারী কামাল হোসেন বলেন, ‘এভাবে নলকূপ রেখে লাভ কী? এটা এখন জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি।’

রশুনিয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘এটি জনগণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি অবকাঠামো। আমি বাজার কমিটিকে জানাব, যাতে কেউ এখানে ময়লা না ফেলে এবং পানি ব্যবহারের উপযোগী থাকে।’

সিরাজদিখান বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মোতাহার হোসেন বলেন, ‘গণশৌচাগারের পাশে এই নলকূপ স্থাপন করা হয়েছিল জনসাধারণের জন্য। কিন্তু কিছু অসচেতন ব্যক্তি রাতে ময়লা ফেলে এটি নোংরা করেছে। আমরা দ্রুত মাইকিং করে সবাইকে সচেতন করব এবং নলকূপ সচল রাখতে ব্যবস্থা নেব।’

এ বিষয়ে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপপ্রকৌশলী মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘মানুষের সুবিধার্থেই নলকূপটি স্থাপন করা হয়েছিল। বর্জ্যের কারণে এটি এখন অকার্যকর। আমি বাজার কমিটির সঙ্গে কথা বলে দ্রুত পদক্ষেপ নেব। পাশাপাশি যান্ত্রিক কোনো ত্রুটি থাকলে সেটিও আমাদের দপ্তর থেকে মেরামত করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত