Ajker Patrika

সংসদে সাবেক শিক্ষামন্ত্রীর বিচার চাইলেন কামাল আহমেদ মজুমদার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২১: ৩৪
Thumbnail image

মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ গত সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ধ্বংস করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ঢাকা-১৫ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার। গত সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন বর্তমান মন্ত্রিসভার সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি। তবে সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল মজুমদার বক্তব্যের সময় দীপু মনির নাম উল্লেখ করেননি। 

আজ বুধবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় এ অভিযোগ করেন কামাল আহমেদ। 

গত সেপ্টেম্বরে মনিপুর উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ মো. ফরহাদ হোসেনকে অবৈধ ঘোষণা করে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের তদন্ত কমিটি। ‘তিনি সোয়া দুই বছর ধরে অবৈধভাবে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছিলেন’ উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০ সালের ২ জুলাই বয়স ৬০ বছর হওয়ার পরও তাঁর চাকরির মেয়াদ তিন বছর বাড়ায় গভর্নিং বডি। এরপর পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের তদন্তেও ফরহাদ হোসেনের নিয়োগ বিধিসম্মত না হওয়ার কথা জানানো হয়। এ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যেই বিষয়টি উচ্চ আদালতে গড়ায়। পরে আদালতের নির্দেশে গত বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠতম শিক্ষক মো. জাকির হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিতে নির্দেশ দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। 

তবে পরিচালনা কমিটি কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে ৬ মার্চ প্রতিষ্ঠানটির মূল বালিকা বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যান জাকির হোসেন। তখন দুই পক্ষের রেষারেষিতে অচলাবস্থা তৈরি হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনও করেছিলেন তৎকালীন শিল্প প্রতিমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার।

কামাল আহমেদ মজুমদার সংসদে বলেন, ‘আমার নির্বাচনী এলাকায় (মিরপুর-কাফরুল) জামায়াতের অসংখ্য নেতা-কর্মী বসবাস করে। এরই মধ্যে জামায়াতের আমির (শফিকুর রহমান চৌধুরী) প্রার্থী হয়েছিলেন (২০১৮ সালের নির্বাচনে)। সেখানকার একমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সেটি এখন ধ্বংসের মুখে পতিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় স্কুলটি পরিচালিত হয়ে আসছিল। হঠাৎ করে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও ঢাকার ডিসির কারসাজিতে জামায়াতকে ক্ষমতায় বসানোর কারণে আমার গড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি গত শিক্ষাবর্ষে পরীক্ষার ফলাফল বিপর্যয় হয়েছে। ২ হাজার ৩০০ ছেলেমেয়ে ফেল করেছে। আগের বছর থেকে ১ হাজার ২০০ ছেলেমেয়ে জিপিএ-৫ কম পেয়েছে।’ 

কামাল আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক জামায়াতের...তাকে ক্ষমতায় বসানো হয়েছে। সে প্যারালাইসিসে ভুগছে, সে কথা বলতে পারে না। শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বারবার বলার পরেও তাকে এখনো সরানো হয় নাই। কোর্টের পর কোর্ট মামলা তারা করছে, স্কুলটাকে ধ্বংসের মুখোমুখি তারা নিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান, স্কুলটাকে আপনি রক্ষা করুন। আপনার বরাদ্দ দেওয়া জমিতে আমি তিলে তিলে এ স্কুলটি গড়ে তুলেছি। এটি নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ট্রাস্টের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। আমি জানি না, কী কারণে সাবেক শিক্ষামন্ত্রীর কুনজর পড়েছে স্কুলটির ওপর। আমি তাঁরও বিচার চাই।’

এরপর পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র ছিল। ৭ জানুয়ারি সুন্দর চমৎকার একটি নির্বাচন হয়েছে। অন্যান্য নির্বাচনের তুলনায় সহিংসতা হয়নি বললেই চলে। এই নির্বাচনে ৪২ শতাংশ ভোট পড়েছে। অনেকে প্রশ্ন তোলার অপচেষ্টা চালায়।’ 

এ সময় রোমানিয়া, বুলগেরিয়া, হংকং, আয়ারল্যান্ড ও পর্তুগালের ভোটের হার তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এসব দেশে ভোটের হার ছিল ৪৪ শতাংশের নিচে। সেখানে নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা ছিল না। কেউ নির্বাচন বর্জন করেনি।’ 

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘নির্বাচন শেষে বিশ্ববাসী কী বলে তা দেখার জন্য নির্বাচন বর্জনকারীরা উন্মুখ হয়ে ছিল। এখন পর্যন্ত ৭৮টি দেশের সরকার-রাষ্ট্রপ্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এই সরকারের সঙ্গে কাজ করার অভিপ্রায় জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে বলেছেন, এই সরকারের সঙ্গে তাঁরা নতুন পর্যায় শুরু করতে চায়। যুক্তরাজ্য প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছে। যারা নির্বাচন বর্জন করেছিল; এ ধরনের আনন্দ বার্তা অভিনন্দনের জোয়ার দেখে তাদের মুখ ফ্যাকাশে হয়ে পড়ে। তারা আবল-তাবল বকতে শুরু করে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত