Ajker Patrika

‘পড়া না পারলেই হুজুর বেত দিয়ে পেটাতেন’, পায়ে পচন নিয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছে শিশু

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভার
এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহত শিশু ঈশান। ছবি: আজকের পত্রিকা
এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহত শিশু ঈশান। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকার সাভারে এক মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওই মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থীকে (১২) নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্যাতনের শিকার ওই শিক্ষার্থী স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। চিকিৎসক বলছেন, শিশুর দুই পায়ে পচন ধরেছে এবং তার ফুসফুসসহ দেহের অন্য অঙ্গেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। এসব কারণে তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে এবং সে স্বাভাবিকভাবে মূত্র ত্যাগ করতে পারছে না।

আহত ঈশান সাভারের আমিনবাজার ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের আফসার আলীর ছোট ছেলে। সে একই ইউনিয়নের পাঁচগাছিয়া জামিয়া মদীনাতুল উলুম মাদ্রাসার উর্দু বিভাগের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র।

লেখাপড়ায় কিছুটা অমনোযোগী হওয়ায় তাকে এক বছর ধরে শিক্ষক মুফতি হোসাইন আহম্মদ দুই পায়ের হাঁটু ও হাঁটুর নিচে প্রতিদিন বেত দিয়ে আঘাত করতেন বলে ওই শিক্ষার্থী ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।

প্রতিনিয়ত বেত্রাঘাতের কারণে ঈশান হোসেনের দুই পায়ে পচন ধরেছে এবং এর জের ধরে তার ফুসফুসসহ দেহের অন্য অঙ্গে সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে দাবি বড় বোন আফসানা আক্তার।

আফছানা আক্তার বলেন, ‘গত ৬ অক্টোবর আমার ভাই ঈশানের দুই পায়ের হাঁটুর নিচে হঠাৎ ফুলে ওঠে। ফুলে ওঠা স্থানের ব্যথা থেকে তার জ্বর হয়। প্রথমে স্থানীয়ভাবে তার চিকিৎসা করানো হয়। এতে কাজ না হয়ে বরং অবস্থার আরও অবনতি হতে থাকে। একপর্যায়ে তাকে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী ও ইবনে সিনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই দুই হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তার দুই পায়ে অপারেশন করার পরামর্শ দেন এবং এ জন্য অনেক টাকা খরচ হবে বলে জানান। টাকার কথা চিন্তা করে আমরা প্রথমে ১২ অক্টোবর সকালে ঈশানকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার অবস্থার আরও অবনতি ঘটে। তার শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। কিন্তু চিকিৎসকেরা তা নিরসনে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেননি।’

আফছানা আক্তার আরও বলেন, ‘ঢামেকে ভালো চিকিৎসা না পেয়ে ওই দিন (১২ অক্টোবর) বিকেলে আমার ভাইকে রাজধানীর দারুসালাম এলাকার ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন পরিচালিত বিআইএইচএস জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি। ওই দিনই তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়। আইসিইউতে ৫ দিন রাখার পর তার শ্বাসকষ্টের কিছুটা উন্নতি হলে তাকে বেডে দেওয়া হয়। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য ২২ অক্টোবর তাকে আমরা এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি করি। বর্তমানে ওই হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে ভর্তি রয়েছে। গত কয়েক দিনের চিকিৎসায় কিছুটা উন্নতি হলেও তার শ্বাসকষ্ট রয়েছে এবং সে স্বাভাবিক প্রস্রাব করতে পারছে না।’

ঈশান বলে, ‘হোম ওয়ার্ক না করলে এবং পড়া না পারলেই হোসাইন হুজুর আমাকে বেত দিয়ে পায়ে পেটাতেন। এভাবে প্রায় এক বছর ধরে প্রতিদিনই স্যার আমাকে পিটিয়েছেন। এ সময় তিনি আমাকে বলতেন, ‘‘তোর দাঁত উচা কেন, তুই কালো কেন’’? এসব কথা বাড়িতে বললে স্যার আমাকে পাঁচতলার ছাদ থেকে ফেলে দেওয়ার হুমকি দিতেন। তাই ভয়ে বাড়িতে কিছু বলিনি।’

ঈশানের মা রোকেয়া বেগম বলেন, ‘একজন শিক্ষক হয়ে কারণে-অকারণে আমার ছেলের ওপর যে অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছেন তা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানাবে। আমি ওই শিক্ষকসহ জড়িত সবার বিচার দাবি করছি।’

রোকেয়া বেগম আরও বলেন, ‘আমার স্বামী সামান্য একজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। তার আয়ে আমাদের সংসার চালানোই কষ্টকর। এর মধ্যে ছেলের চিকিৎসার জোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছি। মাদ্রাসা থেকে কিছু আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন আর তারা কোনো সহায়তা দেবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছে।’

ঈশানকে মারধরের সঙ্গে জড়িত শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন কিনা জানতে চাইলে রোকেয়া বেগম বলেন, ‘আমরা চিন্তা ভাবনা করছি। ঈশান সুস্থ হলে তাকে নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত সবার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মুফতি হোসাইন আহম্মদ বলেন, ‘শ্রেণিকক্ষে সাধারণত বেত ব্যবহার করা হয় না। তবে পড়া না পারলে মাঝেমধ্যে বেত ব্যবহার করা হয়। সেই ক্ষেত্রে হাতের তালু ছড়া অন্য কোথাও আঘাত করা হয় না।’

মুফতি হোসাইন আহমদ বলেন, ‘গত ৬ অক্টোবর শিক্ষার্থীদের একটি বিষয়ে লিখতে বলা হয়েছিল। ঈশানসহ কয়েকজন লিখতে পারেনি। এ জন্য তাদের দুই হাতের বাহুতে বেদ দিয়ে আঘাত করা হয়। কোনো শিক্ষার্থীর পায়ে আঘাত করা হয়নি। এরপরের দিন থেকেই ঈশান আর মাদ্রাসায় আসছে না। পরে জানতে পেরেছি সে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। হাতে আঘাতের কারণে কারও পায়ে পচন ধরতে পারে তা আমার কাছে বোধগম্য নয়।’

মারধরের অভিযোগে তদন্ত কমিটি

মাদ্রাসার শিক্ষাসচিব আব্দুর রহিম কাসেমী বলেন, ‘ঈশানের পরিবার থেকে শিক্ষক হোসাইন আহম্মেদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করার পর মাদ্রাসার পক্ষ থেকে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষাসচিব আব্দুল ওয়াহাব। তারা তদন্ত করে ঈশানের ওপর নির্যাতনের কোনো প্রমাণ পাননি।’

আব্দুর রহিম কাসেমী আরও বলেন, ‘আমি শুনেছি শ্রেণিকক্ষে না লেখার কারণে শিক্ষক হোসাইন আহমদ তার দুই বাহুতে বেত দিয়ে আঘাত করেছিলেন। এরপর দুপুরে মাদ্রাসা ছুটি হলে ঈশান সুস্থ অবস্থায় বাড়ি চলে যায়। বিকেলে আবার সে মাদ্রাসায় আসে। কিন্তু আসরের নামাজ না পড়েই দেয়াল টপকে মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে যায়। সম্ভবত দেয়াল টপকে যাওয়ার সময় পড়ে গিয়ে সে দুই পায়ে আঘাত পেয়েছিল। এ কারণে তার এ অবস্থা হতে পারে।’

আব্দুর রহিম কাসেমী আরও বলেন, ‘ঈশান অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। মাদ্রাসার পক্ষ থেকে তার চিকিৎসায় যথাসাধ্য আর্থিক সহায়তা করা হচ্ছে। সব সময় তার খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।’

চিকিৎসক যা বলছেন

এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক মো. কাইয়ুম রিজভী বলেন, ‘ঈশানের দুই পায়ে পচন ধরেছে এবং তার ফুসফুসসহ দেহের অন্যান্য অঙ্গে সমস্যা দেখা দিয়েছে। এসব কারণে তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে এবং সে স্বাভাবিকভাবে মূত্র ত্যাগ করতে পারছে না।’

চিকিৎসক কাইয়ুম রিজভী আরও বলেন, ‘ঈশানের দুই পায়ে অস্ত্রোপচার করতে হবে। কিন্তু তার দুই পায়ের যে অবস্থা তাতে এই মুহূর্তে সেখানে অস্ত্রোপচার করা সম্ভব নয়। অস্ত্রোপচার উপযোগী হলেই তার পায়ে অস্ত্রোপচার করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অবশেষে সেই শখের হাঁসটি নারীকে ফেরত দিলেন এনজিও কর্মকর্তারা

আগৈলঝাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি 
হাফিজা খানমকে হাঁস ফেরত দেন এনজিওর কর্মকর্তা। ছবি: আজকের পত্রিকা
হাফিজা খানমকে হাঁস ফেরত দেন এনজিওর কর্মকর্তা। ছবি: আজকের পত্রিকা

কিস্তির টাকা না পেয়ে নিয়ে যাওয়া সেই চিনা হাঁসটি অবশেষে হাফিজা খানমকে ফেরত দিয়েছেন টিএমএসএস এনজিওর কর্মকর্তারা। আজ শনিবার দুপুরে হাফিজার বাড়িতে এসে তারা হাঁসটি ফেরত দিয়ে যান। একই সঙ্গে হাঁসটি যিনি নিয়ে গিয়েছিলেন, সেই এনজিও কর্মীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

বরিশালের আগৈলঝাড়ায় বাকাল ইউনিয়নের ফুল্লশ্রী গ্রামের নারী হাফিজা। ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘের (টিএমএসএস) সদস্য তিনি। এনজিওটি থেকে ৬০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ছিলেন তিনি। গত মঙ্গলবার বিকেলে কিস্তির টাকা না পেয়ে তার বাড়ি থেকে একটি চিনা হাঁস নিয়ে যান এনজিওর কর্মী ফিরোজ খাঁন। হাফিজার স্কুলপড়ুয়া মেয়ে শখ করে হাঁসটি পালত। এটি নিয়ে ‘শখের হাঁসটি ধরে নিয়ে গেলেন এনজিও কর্মীরা’ শিরোনামে আজকের পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ ঘটনায় নড়েচড়ে বসে এনজিওটির কর্মকর্তারা।

টিএমএসএস এনজিওর বরিশাল বিভাগীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সফিউর রহমান, মাদারীপুর জোনাল কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, বরিশাল জোনাল কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদসহ চারজন কর্মকর্তা তদন্তের জন্য হাফিজার বাড়িতে আসেন। তাঁরা হাফিজা খানম, তাঁর স্বামী মুরাদ হোসেন ও স্থানীয়দের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলেন। এই ঘটনায় অভিযুক্ত মাঠকর্মী ফিরোজ খানকে গত বৃহস্পতিবার সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

হাঁসটি ফেরত পেয়ে হাফিজা বলেন, ‘আমার মেয়ের শখের হাঁসটি ফেরত পেয়ে আমি ও আমার পরিবারের সবাই খুশি হয়েছি।’

এ ব্যাপারে টিএমএসএসের এনজিওর ম্যানেজার মো. রাজেক ইসলাম বলেন, ‘হাফিজা খানমের বাড়ি থেকে ধরে নেওয়া হাঁসটি আজ দুপুরে ফেরত দিয়েছি। মাঠকর্মী ফিরোজ খানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নেত্রকোনায় লরি-মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ, নিহত ১

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নেত্রকোনার কলমাকান্দায় ইটবোঝাই লরির সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক নারী নিহত হয়েছেন। আজ শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে কলমাকান্দা পূর্ববাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত রোকেয়া আক্তার (৪৫) উপজেলার রংছাতি ইউনিয়নের রামনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি আব্দুল জব্বারের স্ত্রী।

স্থানীয়দের বরাতে কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সিদ্দিক হোসেন জানান, রোকেয়া আক্তার তাঁর মেয়ে সাদিয়া আক্তারকে নিয়ে ঢাকা থেকে বাড়ি যাচ্ছিলেন। প্রথমে তিনি মেয়েকে নিয়ে ঢাকা থেকে বাসে করে কলমাকান্দা সদরে পৌঁছান।

পরে তিনি মেয়েকে নিয়ে কলমাকান্দা বাজারের রেন্টিতলা মোড় থেকে ভাড়ায় মোটরসাইকেলে চড়ে রামনাথপুরে নিজ বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। পথে কলমাকান্দা পূর্ববাজার এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা ইটবোঝাই একটি লরির সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

এতে রোকেয়া আক্তার মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে লরির চাকায় চাপা পড়েন। এ সময়  ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান ওসি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দুই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় ময়লার গাড়ির চালক কারাগারে

শ্যামপুর-কদমতলী (ঢাকা) প্রতিনিধি 
গ্রেপ্তার চালক মো. রফিকুল ইসলাম (৫০)। ছবি: আজকের পত্রিকা
গ্রেপ্তার চালক মো. রফিকুল ইসলাম (৫০)। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর ডেমরায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ময়লাবাহী গাড়ির ধাক্কায় দুই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার চালক মো. রফিকুল ইসলামকে (৫০) কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ শনিবার বিকেলে ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এই নির্দেশ দেন।

এর আগে, গতকাল শুক্রবার গভীর রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে ডেমরা থানা-পুলিশ।

এ ঘটনায় নিহত তাহসিন ইসলাম তপুর চাচা মো. মেহেদী হাসান শুক্রবার বিকেলে ডেমরা থানায় মামলা করেন। গ্রেপ্তার রফিকুল ইসলাম কুমিল্লার মেঘনা থানার গোবিন্দপুর গ্রামের আবেদ আলী ব্যাপারীর ছেলে। বর্তমানে রাজধানীর মতিঝিল আর কে মিশন রোড ৯৭/২ গোপীবাগের বাসিন্দা তিনি। গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ধার্মিকপাড়া এলাকার মিনি কক্সবাজার সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত শিক্ষার্থীরা হলেন আইইউবির শিক্ষার্থী তাহসিন ইসলাম তপু (২২) চাঁদপুরের মতলব উত্তর থানার ছোট কিনাচর গ্রামের মৃত জহিরুল ইসলামের ছেলে। অপরজন ইউআইইউর শিক্ষার্থী গাজী ইরাম রিদওয়ান (২৪) নারায়ণগঞ্জের সদর থানার মিজমিজি খদ্দঘোষপাড়া কান্দাপাড়া গ্রামের জিএম হাবিব উল্লাহর ছেলে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায়, বন্ধুর বড় ভাইয়ের বিয়ের গায়েহলুদ অনুষ্ঠান শেষে মোটরসাইকেলে করে ফেরার পথে ডিএসসিসির ময়লাবাহী গাড়িটি (ঢাকা মেট্রো-শ-১৪-০৫৭৪) বেপরোয়া গতিতে চালালে মোটরসাইকেলটির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মোটরসাইকেলে থাকা দুই আরোহী গুরুতর আহত হন। এ সময় তাঁদের সঙ্গের বন্ধুরা উদ্ধার ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাহসিন ইসলাম তপুকে প্রথমে মৃত ঘোষণা করেন। পরে গাজী ইরাম রিদওয়ানের চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাড়ে ৫টায় মৃত্যু হয়।

এদিকে দুর্ঘটনার পরই গাড়ির চালক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরে ডেমরা থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ময়লাবাহী গাড়ি ও মোটরসাইকেল জব্দ করে।

এ বিষয়ে ডেমরা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মুরাদ হোসেন বলেন, ‘মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনার পরে মামলা নিয়ে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিকে গ্রেপ্তার করেছি। পরে আদালত তাকে শনিবার বিকেলে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাকসুর জিএসকে ‘হত্যার হুমকি’ দিয়ে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার ফেসবুক পোস্ট

রাবি প্রতিনিধি  
আসাদুল্লা-হিল-গালিব । ছবি: সংগৃহীত
আসাদুল্লা-হিল-গালিব । ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সালাহউদ্দিন আম্মারকে ‘হত্যার হুমকি’ দিয়েছেন নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখার সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব।

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে তিনি এ হুমকি দেন। ওই পোস্টে সম্মতি জানিয়েছেন রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু।

ফেসবুক পোস্টে ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম ও বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে আসাদুল্লা-হিল-গালিব লেখেন, ‘দয়া করে আমার ক্যাম্পাসটাকে কেউ কিছু করবেন না, অনুরোধ রইল। ওইটা শুধু আমার আর আমার ভাই মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর ভাগ।’

পোস্টে রাকসু জিএস সালাহউদ্দিন আম্মারকে উদ্দেশ করে তিনি লেখেন, ‘ছোটভাই, প্রটেকশন বাড়াও। ৮০ সিসি বাইক নিয়ে একা একা ঘোরাঘুরি করো না। আর তোমার আব্বা সাদিক কায়েম হেলিকপ্টারে যাতায়াত করে, তুমি অন্তত প্লেনে ঢাকা যাবা। তা নাহলে যমুনার আগে ও পরে একটা কিছু হলেও হতে পারে। আমি চাই তুমি বেঁচে থাকো, অনেক হিসাব আছে।’

ওই পোস্টে মন্তব্য করেছেন রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু। মন্তব্যে মোস্তাফিজুর রহমান বাবু লেখেন, ‘আল্লাহর কাছে দোয়া করো যেন ওকে বাঁচিয়ে রাখে।’

এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় রাকসু জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘পোস্টটি আমি এখনো দেখি নাই। তবে একজনের মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পেজ থেকে মাঝেমধ্যেই এ ধরনের পোস্ট করে বলা হয়—নেক্সট টার্গেট আমি। এগুলো আমার কাছে খুব একটা কনসার্নের বিষয় না।’

আম্মার বলেন, ‘আল্লাহর দেওয়া জান আল্লাহই নিয়ে যাবেন। এ জন্য আমি ঘর থেকে বের হবো না বা প্রোটোকল বাড়াবো, এমন কিছু না। আমি এ ধরনের হুমকিতে ন্যূনতম ভীত-সন্ত্রস্ত নই। আমি আমার কাজ করে যেতে চাই।’

গালিবের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগ ক্ষমতায় থাকাকালীনও তার কোনো পাওয়ার ছিল না। এরকম একজনের পোস্টকে গুরুত্ব দেওয়া মানেই তাকে গুরুত্ব দেওয়া। তাই এসব হুমকিতে ভীত হওয়াটা আমার জন্য সময়ের অপচয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত