Ajker Patrika

সাবেক স্ত্রীকে হত্যার ঘটনা চাপা দিতে তাঁর ছেলে ও প্রতিবেশী নারীকে খুন

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি
তিন খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত মো. মহিউদ্দিন হাওলাদার ওরফে শিমুল। ছবি: আজকের পত্রিকা
তিন খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত মো. মহিউদ্দিন হাওলাদার ওরফে শিমুল। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকার কেরানীগঞ্জে গত শুক্রবার রাতে বস্তাবন্দী অবস্থায় এক নারীর মাথাবিহীন খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে এ ঘটনায় তদন্তের মধ্যে গতকাল রোববার বিকেলে বুড়িগঙ্গা নদী থেকে মানুষের হাত ও পায়ের কিছু অংশ উদ্ধার করা হয়।

পুলিশের প্রাথমিক ধারণা ছিল, খণ্ডিত অংশগুলো একই ব্যক্তির। তবে এ ঘটনায় পরে আটক মো. মহিউদ্দিন হাওলাদার ওরফে শিমুল (৩১) নামের একজন জানান, টুকরোগুলো একটি লাশের নয়, সেখানে দুই নারীর লাশ রয়েছে। এ ছাড়া তিনি এক ছেলেশিশুকেও হত্যা করেছেন।

আজ সোমবার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কেরানীগঞ্জ সার্কেল) মো. জাহাঙ্গীর আলম দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, আগানগর এলাকায় মাকসুদা গার্ডেন নামের একটি মার্কেটের সামনে থেকে বস্তাবন্দী অবস্থায় এক নারীর মাথাবিহীন খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে বুড়িগঙ্গা নদী থেকে মানুষের লাশের আরও কিছু অংশ উদ্ধার হলে সেগুলো ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়।

এরই মধ্যে পুলিশ রাজধানীর জুরাইন এলাকা থেকে অভিযুক্ত মহিউদ্দিনকে আটক করে। তিনি জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন, তিনি প্রথমে বীথি আক্তার নামে তাঁর সাবেক স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। সেটি দেখে ফেলায় বীথির পরের সংসারের ছেলে রাফসানকে (৪) শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এ সময় পাশের ঘর থেকে সাবলেট ভাড়াটে নূপুর (২৫) নামের এক মেয়ে ছুটে এলে তাঁকেও হত্যা করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে মহিউদ্দিন জানান, তাঁর সঙ্গে বীথির বিচ্ছেদ হলে উভয়ে অন্যত্র বিয়ে করেন। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বীথির সঙ্গে মহিউদ্দিনের পুনরায় সম্পর্ক হয়। বীথি বর্তমান স্বামীর কাছে ব্যবসার কথা বলে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের মীরেরবাগ এলাকায় বাসা ভাড়া নেন। এখানে মহিউদ্দিন নিয়মিত যাতায়াত করতেন। পরে বীথি বিয়ে করার জন্য মহিউদ্দিনকে চাপ দিলে তাঁদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। ঘটনার দিন এ নিয়ে ঝগড়া হলে মহিউদ্দিন গলায় গামছা পেঁচিয়ে বীথিকে হত্যা করেন। পরে তাঁর ছেলে ও সাবলেটে থাকা অন্য নারীকে হত্যা করেন।

মহিউদ্দিন পরে ছুরি ও প্লাস্টিকের বস্তা এনে লাশগুলো শৌচাগারে নিয়ে টুকরো করেন। শিশুটির লাশ দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের বেয়ারা এলাকায় একটি ঝোপের মধ্যে ফেলে দেন। বীথির লাশের কিছু অংশ আগানগর এবং হাত-পাগুলো পোস্তগোলা সেতু থেকে বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেন। সর্বশেষ একটি বস্তায় দুই নারীর মাথা ও নূপুরের শরীর আরেকটি বস্তায় ভরে বুড়িগঙ্গায় ফেলেন। লাশ টুকরো করার ছুরিও নদীতে ফেলে দেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, ‘লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা হয়েছিল। যেহেতু আসামির দেখানো স্থান থেকে আজকে (সোমবার) শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, সেহেতু আরও একটি হত্যা মামলা হচ্ছে। আশা করি, আগামীকাল (আজ) আসামি আদালতে স্বীকারোক্তি দেবেন।’

এ বিষয়ে কথা হলে বীথির বর্তমান স্বামী মো. রুবেল বলেন, ‘আমাদের বাড়ি শুভাঢ্যা উত্তরপাড়া এলাকায়। মাসখানেক আগে আমার স্ত্রী বলল, সে কাপড়ের কারখানা চালু করবে তাই মীরেরবাগ এলাকায় বাসা ভাড়া নেবে। আমি তাকে না করিনি। সেখানে একটি সাবলেট বাসা ভাড়া নিয়ে আমার ছেলেকে নিয়ে থাকত। সেখানে যে তার আগের স্বামীর যাতায়াত ছিল, আমি জানতাম না। আমি এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কূটনৈতিক পাসপোর্টকে রাতারাতি অর্ডিনারি বানিয়ে দেওয়া পরিচালক বরখাস্ত

এবার সরানো হলো জ্বালানি উপদেষ্টার পিএসকে

৩৫ বছর ভারতে, স্বামী–সন্তান রেখে দেশে ফেরার নোটিশ পেলেন পাকিস্তানি সারদা

সব রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল

ঈদ শুভেচ্ছা কার্টুনে কুকুরের ছবি: প্রথম আলো সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত