Ajker Patrika

খিলগাঁওয়ের পুরি-শিঙাড়া বিক্রেতাকে তুলে নিয়ে হত্যা করা হয়, অভিযোগ স্বজনদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০২ আগস্ট ২০২৫, ২১: ৫৫
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর খিলগাঁও সিপাহীবাগ এলাকার একটি বাসা থেকে নজরুল ইসলাম মোল্লা (৪৩) নামের পুরি ও শিঙাড়া ব্যবসায়ীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে পরিবারের অভিযোগ। তাঁরা বলছেন, ওই ব্যক্তিকে নির্যাতন করে অচেতন অবস্থায় তাঁদের কাছে ফেরত দেওয়া হয়।

আজ শনিবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এর আগে নজরুল ইসলামকে তাঁর স্বজন ও থানা-পুলিশ অচেতন অবস্থায় মুগদা হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।

নিহতের গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার পাঙ্গাশিয়া গ্রামে। বাবার নাম রহিম মোল্লা। ঢাকার খিলগাঁও সিপাহীবাগ উত্তর গোড়ান চারতলা গলির এলাকার একটি বাসায় স্ত্রী আকলিমা বেগম এবং দুই সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন। বাসার পাশেই ছোট্ট একটি দোকানে নজরুল ইসলাম মোল্লা পুরি ও শিঙাড়া তৈরি করে বিক্রি করতেন।

ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ও মর্গে নিহত নজরুলের মামা কামাল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, গতকাল শুক্রবার রাত ১১টার দিকে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা নজরুলের বাসায় আসেন। তাঁকে স্ত্রী, সন্তানদের সামনে মারধর করেন। এরপর নজরুল ও তাঁর স্ত্রীকে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা নিয়ে যান। সেখানেও তাঁকে মারধর করা হয়। ভোর ৪টার দিকে নজরুল অচেতন হয়ে পড়লে তাঁর স্ত্রীর কাছে তাঁকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এরপর স্ত্রী আকলিমা বেগম নজরুলকে ভোরে মুগদা হাসপাতালে নিয়ে যান।

সেখান থেকে শনিবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে খিলগাঁও থানা-পুলিশসহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের পিঠ, বুক, ঘাড়, হাত পা ও নিতম্বে কালো জখম দেখা গেছে। হাসপাতালের মর্গে রাখা মরদেহে কালচে অসংখ্য আঘাত রয়েছে, যা সুরতহাল প্রতিবেদনেও উল্লেখ করা হয়েছে।

নিহত নজরুলের মামাতো ভাই দিদার হোসেন বলেন, রাতে বাসায় ‘যৌথ বাহিনী আসে’, তারা এসেই নজরুলের কাছে অস্ত্র ও মাদক আছে বলে গালিগালাজ করে। এরপর আশপাশের লোকজন বের হলে তাঁরা নজরুল ও তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে চলে যায়। ভোররাতে নজরুল অসুস্থ হয়ে পড়লে যৌথ বাহিনী দুই হাজার টাকা দিয়ে তাঁর স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। এরপর তিনি তাঁকে মুগদা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে জানান।

দিদার হোসেন বলেন, ‘নজরুলের হাতে-পিঠে অসংখ্য মারধরের দাগ রয়েছে। একটা লোকের নামে মামলা থাকতেই পারে, তাই বলে এভাবে পিটিয়ে মেরে ফেলবে। তাকে ধরে পুলিশে দিতে পারত। তার স্ত্রী-সন্তানদের এখন কী হবে। দুই ছেলে ছোট ছোট। তাদের জীবন চলবে কীভাবে?’

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) খিলগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম বলেন, নজরুলকে মুগদা হাসপাতালে পাওয়া যায়। সেখান থেকে তাঁকে পুলিশের সহায়তায় ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

আজ সন্ধ্যা ৬টার দিকে নজরুলের মরদেহ নিয়ে তাঁর পরিবার গ্রামের বাড়ি রওয়া হন। এর আগে তাঁর সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। তাঁকে গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে নজরুলসহ তিন মাদক কারবারিকে আটক করা হয়। পরে তাঁদের পার্শ্ববর্তী একটি ক্যাম্পে নেওয়া হয়। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদের সময় নজরুল অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।

ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. শাহরিয়ার আলী বলেন, পরিবার এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ দিলে সেটি নেওয়া হবে। এরই মধ্যে নজরুলের লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে। সব ঘটনায় যেভাবে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়, এবারও তাই করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঢাবিতে ‘তুর্কি এনজিও সমর্থিত’ সংগঠনের ‘বৃহত্তর বাংলাদেশ’ মানচিত্রে ভারতের অংশ, বললেন জয়শঙ্কর

কালো জাদুর অভিযোগে মবের তাণ্ডব, এক পরিবারে পাঁচজনকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা

খিলগাঁওয়ে পুরি-শিঙাড়া বিক্রেতাকে পিটিয়ে হত্যা

ফ্লাইটে অসুস্থ ব্যক্তিকে সহযাত্রীর চড়, তারপর থেকে তিনি নিখোঁজ

সাপের বিষে তৈরি যে মদ পাওয়া যায় এশিয়ার বিভিন্ন দেশে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত