Ajker Patrika

যৌতুক দাবির অভিযোগে মিথ্যা মামলা, বাদীর ৭ দিনের কারাদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০১ জুন ২০২৫, ২১: ০৫
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

যৌতুক দাবি করেছেন—এমন অভিযোগে প্রাক্তন স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করায় বাদীকে সাত দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুনাইদ এই কারাদণ্ডাদেশ দেন। কারাদণ্ড পাওয়া বাদী ইসরাত জেরিন খান প্রথমা। তিনি কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়ার বাসিন্দা।

সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী আব্দুল্লাহ আল-মামুন জানান, প্রাক্তন স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করার বিষয়টি প্রমাণ হওয়ায় আদালত সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন ইসরাতকে। আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে ইসরাত জামিনের আবেদন করলে আদালত ৩০ দিনের মধ্যে আপিলের শর্তে জামিন দেন।

এর আগে গত ২৪ মে এই মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে বাদীর প্রাক্তন স্বামী ফরিদ আহমদকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। একই সঙ্গে মিথ্যা মামলা করার অভিযোগে কেন বাদীকে শাস্তি দেওয়া হবে না—তা জানাতে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। আজ বাদী আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে হাজির হয়ে লিখিত জবাব দাখিল করেন। কিন্তু আদালত জবাবে সন্তুষ্ট না হওয়ায় বাদীকে সাজা দেন।

এর আগে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি প্রাক্তন স্বামী ফরিদ আহমদের বিরুদ্ধে এই মামলা করেন ইসরাত জাহান প্রথমা। মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ইসরাত ও ফরিদের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় ফরিদকে ১০ লাখ টাকার সোনার গয়না দেওয়া হয় ও আসবাবপত্র কেনার জন্য নগদ ১০ লাখ টাকা দেওয়া হয়। বিয়ের কিছু দিন পরে চাকরিসূত্রে ফরিদ ফ্রান্সে চলে যান। সেখান থেকে অন্য এক নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। ইসরাত বিষয়টি তাঁর শ্বশুর আমিনুল হককে জানান। শ্বশুর আমিনুল হক ৫০ লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে দাবি করে বলেন, যৌতুকের টাকা না দিলে তাঁর ছেলে সংসার করবেন না। শ্বশুর তাঁকে মারধরও করেন। ২০২৩ সালের ২০ জানুয়ারি ফরিদ দেশে ফিরে আসেন।

২৫ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়ায় ইসরাতের এক খালার বাড়িতে ফরিদ দেখা করেন। ফরিদও তাঁর স্ত্রীকে বলেন ৫০ লাখ টাকা যৌতুক না দিলে তিনি অন্য নারীকে বিয়ে করবেন। ইসরাত টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাঁকে তাঁর স্বামীও মারধর করেন। পরে ৩১ জানুয়ারি ইসরাত তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেন।

মামলায় ফরিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করার পর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। সাক্ষ্য প্রদানে দেখা যায়, ফরিদ যৌতুক দাবির চার বছর আগে স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন। সাক্ষীরাও ইসরাতের পক্ষে সাক্ষ্য দিয়ে অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেননি। তাই আদালত ইসরাতকে সাজা দেন।

আদালত আদেশে উল্লেখ করেছেন, মিথ্যা অভিযোগে এই মামলা করা হয়েছে, এটা প্রমাণিত হয়েছে। তাই ভবিষ্যতে যাতে কেউ মিথ্যা মামলা না করেন বা মিথ্যা মামলা দায়েরে নিরুৎসাহিত করার জন্য বাদীকে সাজা দেওয়া হলো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত