Ajker Patrika

সখীপুর থেকে প্রতি সপ্তাহে যাচ্ছে অর্ধকোটি টাকার কাঁঠাল

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
বড়চওনা বাজারের কাঁঠাল হাটের চিত্র, বৃহস্পতিবার তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়চওনা বাজারের কাঁঠাল হাটের চিত্র, বৃহস্পতিবার তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বিভিন্ন হাট থেকে প্রতি সপ্তাহে প্রায় অর্ধকোটি টাকার কাঁঠাল যাচ্ছে ঢাকাসহ দেশের নানা অঞ্চলে। স্বাদে মিষ্টি ও পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এই ফল শুধু রসনাতৃপ্তিই করে না, শরীরের নানা উপকারেও আসে। পুষ্টিবিদদের মতে, হজমে সহায়তা, পানিশূন্যতা প্রতিরোধ, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে কাঁঠাল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

সখীপুরের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই কাঁঠালগাছ রয়েছে। বাড়ির আঙিনার এসব গাছ থেকেই প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ কাঁঠাল উৎপন্ন হয়। উপজেলার কুতুবপুর, বড়চওনা, কচুয়া, মহানন্দপুর, নলুয়া, তক্তারচালা ও দেওদীঘি—এ হাটগুলোতে কাঁঠাল বেচাকেনা হয়। এর মধ্যে কুতুবপুর হাট সারা বছর কলার জন্য পরিচিত থাকলেও জ্যৈষ্ঠ মাস থেকে এটি কাঁঠালের হাটে রূপ নেয়। বড়চওনা ইউনিয়নের এই হাটে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৩০ লাখ টাকার কাঁঠাল কেনাবেচা হয়। হাটটি বসে শনি, রোব, মঙ্গল ও বুধবার।

এ ছাড়া নলুয়ার হাট বৃহস্পতিবার, দেওদীঘি সোমবার, তক্তারচালা শনিবার, কচুয়া রোববার ও বুধবার এবং মহানন্দপুর হাট বসে মঙ্গলবার। এসব হাটেও সপ্তাহে ২০-৩০ লাখ টাকার কাঁঠাল কেনাবেচা হয়। সব মিলিয়ে সখীপুর থেকে প্রতি সপ্তাহে অর্ধকোটি টাকার বেশি কাঁঠাল যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।

কুতুবপুর হাটে স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শনিবার বিকেল থেকে রোববার দুপুর এবং মঙ্গলবার বিকেল থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত কৃষক ও খুচরা ব্যবসায়ীরা কাঁঠাল আনেন। পরে পাইকাররা ট্রাকে করে সেগুলো দেশের বিভিন্ন জেলায় নিয়ে যান।

স্থানীয় খুচরা ব্যবসায়ী আবুল কালাম ও বাবলু মিয়া জানান, তাঁরা সখীপুরের বিভিন্ন গ্রাম থেকে কাঁঠাল কিনে বিভিন্ন হাটে পাইকারদের কাছে বিক্রি করেন। প্রতিটি কাঁঠাল আকারভেদে ৩০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হয়। তবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খুচরা ব্যবসায়ীরা তা ২০ থেকে ৬০ টাকায় সংগ্রহ করেন।

বড়চওনা বাজারের কাঁঠাল হাটের চিত্র, বৃহস্পতিবার তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়চওনা বাজারের কাঁঠাল হাটের চিত্র, বৃহস্পতিবার তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুতুবপুর হাটের ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন জানান, প্রতি হাটে এখান থেকে ১৫-২০ ট্রাক কাঁঠাল বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়। প্রতিবার হাটে প্রায় ১৫ লাখ টাকার কাঁঠাল কেনাবেচা হয়, যা সপ্তাহে ৩০ লাখ টাকার বেশি।

নারায়ণগঞ্জ থেকে কাঁঠাল কিনতে আসা পাইকার আব্দুল জব্বার বলেন, ‘আমি প্রতি সপ্তাহে এক ট্রাক কাঁঠাল (প্রায় ২ হাজার পিস) কিনে ঢাকায় নেই। সারা সপ্তাহ বিক্রি করি, কিছু লাভ থাকে (মুচকি হাসি)।’

তবে হাটে কাঁঠালের ব্যাপক বেচাকেনা হলেও দাম নিয়ে অসন্তুষ্ট কৃষক ও খুচরা বিক্রেতারা। তাঁদের অভিযোগ, গাছ থেকে কাঁঠাল সংগ্রহ, পরিবহন ও বাজারে আনতে যে খরচ হয়, বিক্রির পর হাতে তেমন কিছুই থাকে না। এতে কাঁঠাল চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন স্থানীয়রা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিয়ন্তা বর্মন বলেন, ‘কাঁঠাল আমাদের জাতীয় ফল। এর প্রতিটি অংশ কোনো না কোনোভাবে খাওয়ার উপযোগী। এমনকি এর খোসাও গরুর খাবার হিসেবে ব্যবহারযোগ্য। সখীপুরে বাণিজ্যিকভাবে কাঁঠাল চাষ করে লাভবান হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত