Ajker Patrika

বিশ্বব্যাংকের নামে প্রতারণা: আন্তর্জাতিক চক্রের এক সদস্য গ্রেপ্তার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩০ নভেম্বর ২০২৫, ১৫: ৫১
: প্রতারক চক্রের সদস্য সোহাগ। ছবি: সিআইডি
: প্রতারক চক্রের সদস্য সোহাগ। ছবি: সিআইডি

বিশ্বব্যাংকসহ আন্তর্জাতিক সংস্থার নাম ও লোগো ব্যবহার করে কম সুদে ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার অভিযোগে একটি আন্তর্জাতিক চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিট অভিযুক্ত সোহাগ হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে।

আজ রোববার দুপুরের সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন খান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। গ্রেপ্তার সোহাগের বাড়ি লক্ষ্মীপুর। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের প্রতারণার সঙ্গে জড়িত।

সিআইডি জানায়, চক্রটি ভুয়া ওয়েবসাইট খুলে ‘বিশ্বব্যাংকের ঋণ কর্মসূচি’ নামে সাধারণ মানুষের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করত। নিজেদের ‘লোন অফিসার, এমএসএস ইউনিট, কার্ড ডিভিশন, World Bank’ পরিচয় দিয়ে ২ শতাংশ সুদে ১০ লাখ টাকা ঋণ অনুমোদনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো।

‘bdworldloanprojectcw.com’ নামের ওয়েবসাইটে আবেদন করতে বলা হতো। বিভিন্ন চার্জ, ভ্যাট, ইনস্যুরেন্স ও প্রক্রিয়াকরণ ফি বাবদ টাকা জমা দিতে বলত তারা। এভাবে এক ভুক্তভোগী মোট ২ লাখ ৪৭ হাজার ৪৪৮ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। এ ঘটনায় শাহজাহানপুর থানায় একটি মামলা করেন ভুক্তভোগী।

তদন্তে নেমে সিপিসির সাইবার ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট টিম চক্রের সদস্য লক্ষ্মীপুরের মো. সোহাগ হোসেনকে (৩৫) শনাক্ত করে। ২৮ নভেম্বর ভোরে রায়পুর উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের রাজাবিয়া হাট এলাকার একটি আবাসিক ভবনে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার হওয়ার সময় তাঁর কাছ থেকে ৫টি মোবাইল ফোন, একাধিক বিকাশ ও নগদ এজেন্ট অ্যাকাউন্ট এবং ৯টি মোবাইল নম্বর সংবলিত তথ্য জব্দ করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে সিআইডি জানিয়েছে, সোহাগ একটি আন্তর্জাতিক ‘বিনিয়োগ ও ঋণ প্রতারণা’ চক্রের সদস্য। চক্রটির মূল হোতা বিদেশে অবস্থান করছে। বিশ্বব্যাংক, আইএফএডি ও জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার নাম-লোগো ব্যবহার করে বহু মানুষের কাছ থেকে অনলাইনে অর্থ আত্মসাৎ করে আসছিল তারা।

সোহাগ চক্রটির ব্যবহৃত বিভিন্ন এমএফএস অ্যাকাউন্ট পরিচালনা, টেলিকম সিম সংগ্রহ এবং অবৈধ আর্থিক লেনদেন সমন্বয়ের দায়িত্বে ছিলেন। প্রতারণার মাধ্যমে আয় হওয়া টাকা তিনি বিদেশে থাকা সদস্যদের কাছে পাঠাতেন।

সাইবার পুলিশ সেন্টার সূত্র জানায়, একই কৌশলে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বহু মানুষ প্রতারণার শিকার হয়েছেন। বিভিন্ন ইউনিটে এ ধরনের একাধিক মামলা রুজু হয়েছে। এসব মামলায় সোহাগসহ আন্তর্জাতিক চক্রটির অন্য সদস্যদের সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

চক্রটির বিদেশি সদস্য, ব্যবহৃত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ভুয়া ওয়েবসাইট, লেনদেনের পথ এবং সব ভুক্তভোগীর পরিচয় শনাক্তে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান বলেন, ‘কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান বা আন্তর্জাতিক সংস্থা কখনোই ফেসবুক বা সন্দেহজনক ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ঋণ প্রদান করে না। ফি, ট্যাক্স, চার্জ বা ভেরিফিকেশন কস্ট-এর নামে টাকা চাইলে সেটি প্রতারণা—এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’

অনলাইন প্রতারণা বা সন্দেহজনক কার্যক্রম দেখলে দ্রুত সাইবার পুলিশ সেন্টার, সিআইডি-তে অভিযোগ জানানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ