Ajker Patrika

এক ছাত্রীকে কেন্দ্র করে জবি ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ

জবি সংবাদদাতা 
আপডেট : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০: ৪৯
Thumbnail image

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই গ্রুপেরই অন্তত ১০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর।

বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) এক নারী শিক্ষার্থীকে হয়রানির জের ধরে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বাহাদুর শাহ পার্কের সামনে প্রথম দফায় এবং সন্ধ্যার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ায় দ্বিতীয় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। 

প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষাবর্ষের এক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ২০২০–২১ শিক্ষাবর্ষের নীরব নামের এক শিক্ষার্থীর বিবাদ বাঁধে। এ ঘটনার জেরে মঙ্গলবার দুপুরে অ্যাকাউন্টিং বিভাগের ওই ছাত্রকে মারধর করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজির গ্রুপের নৃবিজ্ঞান বিভাগে পড়ুয়া নেতা–কর্মীরা। 

এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার ক্যাম্পাসে সরস্বতী পূজা শেষে রাতে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের পাশে পুলিশ ফাঁড়ির সামনে ইব্রাহীম ফরাজী গ্রুপের নেতা–কর্মীদের (নৃবিজ্ঞান বিভাগ ছাত্রলীগ) ওপর অতর্কিত হামলা করে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন গ্রুপের নেতা–কর্মীরা। এরপর প্রধান ফটকের সামনে দুই গ্রুপের মারামারি হয়। 

এ সময় সভাপতি ফরাজি গ্রুপের নেতা–কর্মী কম থাকায় তাঁর গ্রুপের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯–২০ শিক্ষাবর্ষের তাসরিফ ও নিলয়, ২০১৭–১৮ শিক্ষাবর্ষের গাজী সামসুল হুদা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৫–১৬ শিক্ষাবর্ষের আব্দুল বারেকসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। এতে তাসরিফ মাথা ও নিলয় হাতে গুরুতর জখম নিয়ে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। 

পরবর্তীতে সভাপতি গ্রুপের নেতা–কর্মীরা জড়ো হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যানটিনে সাধারণ সম্পাদক আকতারের গ্রুপের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করে। এতে সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০২১–২২ শিক্ষাবর্ষের নিয়ামত, সংগীতের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের অনন্ত, কলা অনুষদ ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের মিরাজ হোসেন, মনোবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শেখ রিফাত আব্দুল্লাহ, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের তামিম ইকবালসহ আরও অনেকে আহত হয়। পরে সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজি ও সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসাইন ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। 

এতে দুই গ্রুপ থেকে অন্তত ১০ জন আহত হয়। সংঘর্ষের সময় ক্যাম্পাসে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা ভীত–সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। 

এ বিষয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী তাফসির বলেন, ‘গতকাল আমার এক বান্ধবীকে উত্ত্যক্ত করা হলে আমি তার প্রতিবাদ করি। তারই জেরে আজকের এই ঘটনা।’ 

শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহিম ফরাজী বলেন, ‘দুই বিভাগের শিক্ষার্থীর মধ্যে মারামারি হয়েছে। প্রশাসন একাডেমিকভাবে ব্যবস্থা নেবে। আর যদি কেউ ছাত্রলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকে তাহলে সাংগঠনিকভাবে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন বলেন, ‘নৃবিজ্ঞান বিভাগের এক ছোট বোনকে কেন্দ্র করে ছোট একটি ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি ঘটেছে ক্যাম্পাসের বাইরে, পূর্বের ঘটনার রেশ ধরে আজকে হঠাৎ করে ঘটনাটি ঘটেছে। যখন ঘটনাটি ঘটে তখন আমি এবং সভাপতি ফরাজী ভাই এবং প্রক্টরিয়াল বডিসহ সকলে সেখানে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি থামানোর চেষ্টা করি। এটি ডিপার্টমেন্টের বিষয় তারা সমাধান করবে।’ 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘ভিক্টোরিয়া পার্কে মারামারি হয়, তার রেশ ক্যাম্পাসে কিছুটা ছিল। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি, পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত