Ajker Patrika

পূর্ণাঙ্গ রায়ের আগে ফাঁসি কার্যকর নয়: আপিল বিভাগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২১, ১৪: ২৩
পূর্ণাঙ্গ রায়ের আগে ফাঁসি কার্যকর নয়: আপিল বিভাগ

শিশু ধর্ষণ-হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ড বহালের আসামি শুকুর আলীর ফাঁসি কার্যকর আপাতত স্থগিত রাখতে বলেছেন আপিল বিভাগ। পুলিশের মহাপরিদর্শক ও কারা কর্তৃপক্ষকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি আসামি শুকুর আলীর আইনজীবীকে প্রক্রিয়া মেনে রিভিউ আবেদন করতে বলা হয়েছে।

আপিল বিভাগের রায়ের পর শুকুর আলীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, অথচ আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়নি। আজ রোববার বিষয়টি আপিল বিভাগের নজরে আনেন শুকুর আলীর আইনজীবী হেলাল উদ্দিন মোল্লা। 

শুনানিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, `ফাঁসির মামলা নিয়ে কত সমালোচনা হচ্ছে। ২০০৬ সালের মামলা শুনতে লিস্টে নিয়ে এসেছি। ২০০৬ থেকে ২০০৮ সালের পর ২০১৫ সালেরগুলো প্রায় শেষ করেছিলাম। এখন দেখা যায়, ২০১৩ সালের কিছু বাকি রয়েছে।' একপর্যায়ে শুকুর আলীর আইনজীবী বলেন, `আসামিকে ফাঁসি দেওয়ার জন্য নিয়ে যাচ্ছে। অথচ আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়নি। রিভিউ আবেদন করা হবে, সে পর্যন্ত ফাঁসি যাতে না দেওয়া হয়। আদালতের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।' 

আদালত বলেন, `আবেদন করেছেন? আইনজীবী বলেন, ওকালতনামা পাইনি। অ্যাডভান্স অর্ডারের জন্য আসামির প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ হয়েছে। অথচ এখনো রায়ে সই হয়নি।' আদালত বলেন, অ্যাডভান্স অর্ডার দেওয়া হয়েছে যাদের মৃত্যুদণ্ড থেকে যাবজ্জীবন হয়েছে, তাঁদের নরমাল সেলে দেওয়ার জন্য। ওই রায়ে এখনো সই হয়নি। 

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ বলেন, ফাঁসির জন্য আদালত অ্যাডভান্স অর্ডার পাঠাননি। হেলাল উদ্দিন বলেন, অথচ পুরো অর্ডার চলে গেছে কুষ্টিয়ার বিচারিক আদালতে। সেখান থেকে দণ্ড কার্যকরের জন্য কাশিমপুর কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রধান বিচারপতি অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনের উদ্দেশে বলেন, আইজি প্রিজনসকে বলবেন সবার পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার আগে যাতে দণ্ড কার্যকর করা না হয়। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, `সচিবকে বলছি, ওনাকেও বলে দেব।' 

এর আগে গত ১৮ আগস্ট কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার লালনগরে শিশুকে ধর্ষণ-হত্যার অভিযোগে আসামি শুকুর আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে তিনজনকে যাবজ্জীবন দণ্ড দেন আপিল বিভাগ। তিন আসামি নুরুদ্দিন সেন্টু, আজানুর রহমান ও মামুন হোসেনের দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন দণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া তাঁদের কনডেম সেল থেকে স্বাভাবিক সেলে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন। 

২০০৪ সালের ২৫ মার্চ রাতে দৌলতপুর উপজেলার লালনগর গ্রামের ওই শিশু প্রতিবেশীর বাড়িতে টেলিভিশন দেখে ফেরার পথে আসামিরা তাকে অপহরণ করে। এরপর লালনগর ধরমগাড়ী মাঠের একটি তামাকখেতে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ শেষে শিশুটিকে হত্যা করে। পরদিন তার বাবা আব্দুল মালেক ঝনু বাদী হয়ে পাঁচজনকে আসামি করে দৌলতপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। 

বিচার শেষে ২০০৯ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড দেন কুষ্টিয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আকবর হোসেন। পাঁচজন হলেন—শুকুর আলী, কামু ওরফে কামরুল, নুরুদ্দিন সেন্টু, আজানুর রহমান ও মামুন হোসেন। 

পরে নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি আসামিরা আপিল করেন। এর মধ্যে কামু ওরফে কামরুল মারা যান। পরে ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষে হাইকোর্ট বিভাগ মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। এরপর আসামিরা আপিল করেন। আপিল বিভাগ শুকুর আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। আর তিন আসামি নুরুদ্দিন সেন্টু, আজানুর রহমান ও মামুন হোসেনের দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন দণ্ড দেন। এ ছাড়া তাদের কনডেম সেল থেকে স্বাভাবিক সেলে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত