Ajker Patrika

আপনার এলাকায় খুন হচ্ছে, থানায় বসে করেন কী: গভীর রাতে ওসিকে তরুণের জেরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১২ মার্চ ২০২৫, ০১: ১৪
আপনার এলাকায় খুন হচ্ছে, থানায় বসে করেন কী: গভীর রাতে ওসিকে তরুণের জেরা

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি, চুরি, ছিনতাই ও খুনের ঘটনা ঘটছেই। পুলিশ থানায় বসে কী করছে? গতকাল সোমবার গভীর রাতে এক তরুণ এভাবেই পল্লবী থানায় গিয়ে ওসিকে জেরা করেন। এমন জেরার মুখে ডিউটি অফিসারের কক্ষ থেকে ওসি ওই তরুণকে হাত ধরে টেনে তাঁর কক্ষের দিকে নিতে চান। এমন সময় ওসির সঙ্গে তিনি হাতাহাতিতে জড়ান। অন্য পুলিশ সদস্যরা তাঁকে নিবৃত্ত করতে এলে তাঁদের সঙ্গেও তাঁর হাতাহাতি হয়। এরপর পুলিশ তাঁকে ধরে হাজতখানায় নিয়ে রাখে।

ওই তরুণের নাম আবদুর রাজ্জাক ফাহিম। তিনি ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় পুলিশ একটি মামলা করেছে।

সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে আবদুর রাজ্জাক ফাহিম পল্লবী থানায় প্রবেশ করেন। সিঁড়ি ভেঙে তিনি থানার দ্বিতীয় তলায় ডিউটি অফিসারের কক্ষে যান। প্রথমে তিনি ডিউটি অফিসারের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বিভিন্ন কথা বলেন। বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এরপর তিনি ওসির কক্ষের দিকে এগোতে থাকেন। বাগ্‌বিতণ্ডা শুনে কক্ষ থেকে বের হন ওসি নজরুল ইসলাম ও এসআই শরীফুল ইসলাম।

ওসিকে দেখেই ওই তরুণ প্রশ্ন করেন, ‘আপনার এলাকায় খুন হচ্ছে, আপনারা থানায় বসে কী করেন?’ ওসি পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘কোথায় খুন হয়েছে?’ তখন ওই তরুণ বলেন, ‘আপনার ডিউটি অফিসার জানে।’ তখন তাঁরা ডিউটি অফিসারের কক্ষে যান। ডিউটি অফিসারের কক্ষে তখন আরও দুজন ব্যক্তি ছিলেন, যাঁরা থানায় পুলিশের সেবা নিতে এসেছিলেন। তাঁরা হলেন হোসেন মল্লিক ও আমির মল্লিক। তাঁদের সামনেই ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির ওই শিক্ষার্থী ওসি, এসআই ও ডিউটি অফিসারকে জেরা করেন। তখন ওসি তাঁর নাম ও পরিচয় জানতে চান।

জবাবে ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘নাম দিয়ে কী করবেন?’ তাঁর এমন উত্তরে ওসি তরুণের হাত ধরে টেনে তাঁর কক্ষের দিকে নিতে চাইলে ওই তরুণ হাতাহাতি শুরু করেন। থানার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়ে বিভিন্ন অশালীন মন্তব্য করেন। এলোপাতাড়ি কিলঘুষি দিতে থাকেন। এতে এসআই শরীফুল ইসলামের কপালে এবং এএসআই নাসির উদ্দিনের ডান হাতের কনিষ্ঠ আঙুল ভেঙে যায়। এমনকি থানায় সেবা নিতে আসা হোসেন মল্লিককেও তিনি মারধর করেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। এরপর পুলিশ তাঁকে হাতকড়া পরিয়ে হাজতখানায় রাখেন।

মঙ্গলবার দুপুরে পল্লবী থানায় গিয়ে দেখা গেছে, থানার ফটকের সামনে ফাহিমের কয়েকজন বন্ধু দাঁড়িয়ে আছেন। গতকাল রাতের বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তরুণ বলেন, আবদুর রাজ্জাক ফাহিম, সোহাগ ও ওয়াহাব বিন ইয়াহিয়া উত্তরা ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী। তাঁদের মধ্যে ফাহিমের ফুফাতো ভাইয়ের বাসা পল্লবী ২২ তলা এলাকায়। ভাইকে নিয়ে তাঁদের পুরান ঢাকায় বিরিয়ানি খেতে যাওয়ার কথা ছিল। এ জন্য ওই তিন তরুণ গতকাল গাজীপুরের জয়দেবপুর থেকে একটি মাইক্রোবাসে করে পল্লবী আসেন। মাইক্রোবাসটির চালক ছিলেন নাজমুল হাসান দিপু। ফুফাতো ভাইয়ের বাসায় যাওয়ার আগেই ফাহিম পল্লবী থানার বিপরীতে মাইক্রোবাসটি থামাতে বলে অপর দুই বন্ধুকে বলেন, থানায় তাঁর এক ভাই আছেন, একটু দেখা করে ফিরে আসবেন। তিনি দ্রুত থানায় যান। এরপর থানার ভেতরে কী হয়েছে, তা তাঁরা জানাতে পারেননি।

ফাহিমের বাবা মফিজুর রহমান। তিনি গার্মেন্টস ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, তাঁর ছেলে ফাহিম গতকাল রাতে পুরান ঢাকায় সেহরি করার কথা বলে বন্ধুদের নিয়ে বের হন। গভীর রাতে পল্লবী থানা-পুলিশ তাঁকে ফোন দেয়। ফোন দিয়ে জানায়, ফাহিম থানায়। তিনি পুলিশের ফোন পেয়ে ভড়কে যান। তিনি পুলিশের ফোন রেখে ফাহিমের বন্ধুদের ফোন দিয়ে বলেন, ‘ফাহিম থানায় কেন? সে কী করেছে।’ তখন তাঁর বন্ধুরাও কিছু জানেন না বলে জানান।

এদিকে পুলিশ ফাহিমকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। বাইরে থাকা তাঁর দুই বন্ধু ও গাড়িচালককে মাইক্রোবাসসহ থানায় নিয়ে আসেন। তাঁদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করে।

পুলিশ প্রথমে ভাবছিল, এই তরুণেরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো নেতা-কর্মী হবেন। তাঁরা সে রকমই ব্যবহার করছিলেন। তবে তাঁরা কোনো পদের পরিচয় দেননি। কিন্তু তাঁরা আন্দোলনে ছিল বলে পুলিশকে জানিয়েছেন।

পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, ফাহিম উত্তরায় তাঁর এক বন্ধুকে নিয়ে সেলুন দিতে চান। এ জন্য তিনি পরিকল্পনা করছিলেন। তাঁর কাছে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় তিনি এটা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। তাঁর কথাবার্তা অসংলগ্ন।

ফাহিমের বাবা জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে তিন দিন ধরে ঘুমাচ্ছেন না। তাঁর কথাবার্তা একটু অসংলগ্ন। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সে ডিপ্রেসড ছিলেন। তাই এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে তাঁর ধারণা।

তবে অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, পথে চেকপোস্টে পুলিশের সঙ্গে তাঁর বাগ্‌বিতণ্ডা হলে তিনি থানায় নালিশ করতে এসে খারাপ আচরণ করেন। তবে এই তথ্য অস্বীকার করেছে পুলিশ।

পল্লবী থানার ওসি নজরুল ইসলাম গতকাল থানায় বসে বলেন, ‘ফাহিম নামের ওই যুবক থানায় এসে দাবি করেন, এলাকায় একটি খুন হয়েছে। এ রকম ঘটনা আমার জানা নেই বললে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে আমি তাঁর হাত ধরে নিয়ে যেতে চাইলে তিনি হঠাৎ আমাকে কিলঘুষি মারতে শুরু করেন। তখন এএসআই নাসির তা ঠেকাতে এলে ওই যুবক মেরে তাঁর একটি আঙুল ভেঙে দেন। এ ছাড়া এসআই শরীফুলের কপালে ঘুষি মারেন। পরে আমরা তাঁকে আটক করি।’

ওসি জানান, আটকের পর ওই যুবককে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, বাইরে একটি গাড়িতে আরও তিনজন রয়েছেন। পরে তাঁদেরও আটক করা হয়। তাঁদের বাড়ি গাজীপুর।

এ ঘটনায় ফাহিমকে আসামি করে একটি মামলা করেছে পুলিশ। মামলার বাদী ঘটনার সময় থানার ডিউটি অফিসার আমিনুল ইসলাম। তিনি মামলায় অভিযোগ করেছেন, ফাহিম থানায় এসে পুলিশকে মারধর করেছেন। সরকারি কাজে বাধা দিয়েছেন। সুযোগ পেলে জুলাই আন্দোলনের মতো পুলিশকে মেরে আবার ঝুলিয়ে রাখবে, এমন হুমকি দিয়েছেন। তাঁকে মঙ্গলবার আদালত কারাগারে পাঠিয়েছেন।

অপর তিনজনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করা হয়েছে। মাইক্রোবাসটির চালক দীপু পুলিশকে জানিয়েছে, এই গাড়ির ড্যাশ বোর্ডে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের স্টিকার ছিল। ওই চ্যানেলে তিনি ভাড়ায় গাড়ি চালান বলে সেটি রেখেছিলেন। গাড়িটি পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভুয়া সনদে প্রধান শিক্ষক, এবার সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে নথি পাঠানোর অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ভুয়া অভিজ্ঞতা ও জাল সনদে একাধিক স্কুলে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম নামের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে এবার স্কুলের অ্যাডহক কমিটির সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে শিক্ষা বোর্ডে নথি পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে। চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ সরকারি কলোনি উচ্চবিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির একটি সভার রেজল্যুশনে তিনি এই জালিয়াতি করেন।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে জমা হওয়া অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শেষে ১৯ অক্টোবর বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। গতকাল মঙ্গলবার এই নির্দেশনার বিষয়টি জানা যায়।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (উন্নয়ন) মো. রিদুয়ানুল ইসলাম স্বাক্ষরিত পত্রে বলা হয়েছে, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম কর্তৃক গত বছরের ৩১ আগস্ট অনুষ্ঠিত ম্যানেজিং কমিটির সভার কার্যবিবরণীর প্রথম ও শেষ পাতা ঠিক রেখে দ্বিতীয় পাতায় আলোচ্যসূচি ৩-এ ‘এমপিওভুক্ত কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারীর এমপিও শিটে নাম, বয়স, জন্মতারিখ, ব্যাংক হিসাব নম্বর, পদবি ও বিষয় সংশোধন প্রসঙ্গে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত’ শিরোনামে ভুয়া কার্যবিবরণী তৈরি করা হয়।

এই ভুয়া কার্যবিবরণীতে অ্যাডহক কমিটির সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (হিসাব ও নেজারত) মোহাম্মদ শাহজাহানের স্বাক্ষর জাল করা হয়। চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি সেই জাল কার্যবিবরণী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ইএমআইএস সেলে পাঠানো হয়।

চিঠিতে আরও বলা হয়, জালিয়াতির অভিযোগে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলম নিজেই বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়ে দোষ স্বীকার করেছেন। ফলে তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিকে।

এর আগে গত ২৩ সেপ্টেম্বর আজকের পত্রিকার অনলাইনে ‘ভুয়া অভিজ্ঞতা ও জাল সনদে একাধিক স্কুলে প্রধান শিক্ষক, শাস্তির সুপারিশ বোর্ডের’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। জানা গেছে, শিক্ষা বোর্ড থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এখনো চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদ সরকারি কলোনি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। তাঁদের দাবি, এই ধরনের মুখোশধারী অপরাধীদের বিচারের আওতায় এনে সমাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ওমানের সড়কে ঝরে গেল বাংলাদেশি যুবকের জীবন

ব্রাহ্মণপাড়া (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 
নিহত শেখ মো. কামরুল। ছবি: সংগৃহীত
নিহত শেখ মো. কামরুল। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার শেখ মো. কামরুল (৩৬) ওমানের রাস্তায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন। ১৫ অক্টোবর সকালে বাসা থেকে মার্কেটে যাওয়ার পথে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত শেখ মো. কামরুল উপজেলার মাধবপুর গ্রামের শেখ বাড়ির মৃত কামাল হোসেনের ছেলে। তিনি ২৫ বছর ধরে ওমানে বসবাস করছিলেন এবং সিলাল মার্কেটে ব্যবসা করতেন।

কামরুলের চাচাতো ভাই শেখ মো. সজিব জানান, কোরবানির ঈদ শেষে কামরুলসহ পাঁচজন একসঙ্গে ছুটি কাটিয়ে ১০ অক্টোবর ওমানে ফিরে যান। ফেরার মাত্র ছয় দিন পরই ঘটে এই দুর্ঘটনা।

স্বজনদের ভাষ্যমতে, ১৫ অক্টোবর সকালে বাসা থেকে সিলাল মার্কেটে যাওয়ার পথে একজন তানজানিয়ান চালকের প্রস্তাবে কামরুল একটি বাসে ওঠেন। নতুন সিলাল মার্কেটের গেটের সামনে পৌঁছালে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে থাকা একটি মাটি কাটার গাড়ির (জেসিবি) সঙ্গে সজোরে ধাক্কা খায়। এতে বাসের সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই মারা যান কামরুল। বর্তমানে তাঁর মরদেহ রুস্তাক হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আজ বুধবার রাতে কামরুলের মরদেহ দেশে পৌঁছানোর কথা। আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাদ জোহর তাঁর নিজ এলাকা মাধবপুরে জানাজা শেষে দাফন করা হবে।

তাঁর দুই শিশুপুত্র রয়েছে; একজনের বয়স চার বছর এবং অন্যজনের মাত্র পাঁচ মাস। কামরুল ১২ বছর বয়সে পরিবারের দায়িত্ব নিতে প্রবাসে পাড়ি জমান। তাঁর অকালমৃত্যুতে পরিবার, স্থানীয় বাসিন্দা ও ওমানপ্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

উল্টো পথে বাস, চাপা পড়ে প্রাণ গেল ইজিবাইকচালকের

রংপুর প্রতিনিধি
রংপুরের তারাগঞ্জে উল্টো পথে আসা বাসে দুর্ঘটনা। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুরের তারাগঞ্জে উল্টো পথে আসা বাসে দুর্ঘটনা। ছবি: আজকের পত্রিকা

রংপুরের তারাগঞ্জে উল্টো পথে আসা একটি বাসের চাপায় মোতালেব হোসেন (৩৫) নামের এক ইজিবাইকচালক নিহত হয়েছেন। আজ বুধবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়কের ইকরচালী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত মোতালেব নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার মুন্সিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। এই ঘটনায় গুরুতর আহত একজনকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা সৈয়দপুরগামী ‘ভাই ভাই মুরাদ ক্লাসিক’ নামের একটি যাত্রীবাহী বাস ইকরচালী বাসস্ট্যান্ডে এসে হঠাৎ উল্টো পথে ঢুকে পড়ে। এ সময় মহাসড়কের বিপরীত দিক থেকে আসা ইজিবাইকটিকে চাপা দিয়ে সড়কের পাশে থাকা দোকানে গিয়ে সামনে থাকা পিলারে আটকে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ইজিবাইকচালক মোতালেব হোসেন মারা যান।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বাসটি বাঁ দিকে যাওয়ার কথা থাকলেও ডান দিকে সড়কের ধারে রাখা পিলারে আটকর আছে। উৎসুক লোকজন ও স্কুলশিক্ষার্থীরা বাসটি ঘিরে রেখেছে। এতে সড়কের একাংশ সংকুচিত হওয়ায় আবারও দুর্ঘটনার শঙ্কা রয়েছে। সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সেখানে কোনো পুলিশ দেখা যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী ভাতের দোকানদার আতিয়ার রহমান বলেন, ‘আমার দোকানের সামনেই ঘটনা। সকালে দোকান খোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, হঠাৎ দেখি বাসটা বাঁ থেকে ডান দিকের লেনে হাইস্পিডে ঢুকে যায়। এ সময় ডান দিক থেকে আসা অটোগাড়ির নিচে চাপা পড়ে যায়। ঘটনাস্থলে একজন মারা যায়।’

পাশের আরেক দোকানের মালিক জিয়াউর প্রামাণিক বলেন, ‘আজ নয়; প্রায় গাড়ি ফাঁকা দেখে উল্টো পাশ দিয়ে ওভারটেক করে এই স্ট্যান্ডে। এর আগেও এমন দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে অনেক মানুষের। কিন্তু এগুলো বন্ধ করার উপায় নাই।’

এ বিষয়ে তারাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ইজিবাইকচালক মোতালেব হোসেনের লাশ উদ্ধার করি। দুমড়েমুচড়ে যাওয়া অটোরিকশা ও মুরাদ পরিবহনের বাসটি জব্দ করা হয়েছে। বাসটি সড়ক থেকে সরিয়ে নিতে হবে। বাসচালক পালিয়ে গেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

উত্তাল বুয়েট: ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ছাত্রকে বহিষ্কারের পর মামলা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ২২
মঙ্গলবার মধ্যরাত পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। ছবি: স্ক্রিনশট
মঙ্গলবার মধ্যরাত পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। ছবি: স্ক্রিনশট

‎বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায়ের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে বুয়েট কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে ডিএমপির চকবাজার থানায় এই মামলা করে। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চকবাজার থানার ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রাজ্জাক।

আজ বুধবার সকালে আজকের পত্রিকাকে এসআই আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে বুয়েটের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। বুয়েট কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে এই মামলা করেছে। গতকাল রাতেই আটক থাকা ওই শিক্ষার্থীকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

‎এর আগে মঙ্গলবার রাতে বুয়েটের শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায়ের বিরুদ্ধে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এতে রাতেই ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। মধ্যরাত পর্যন্ত এই অবস্থা চলে। বিক্ষোভকারীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রাতেই অভিযুক্ত সেই শিক্ষার্থীকে বুয়েট থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত