Ajker Patrika

৩৪ মাস ধরে পরিত্যক্ত ভবনে ইউএনও, রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ

মো. আকতারুজ্জামান, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা)
আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮: ৫০
ইউএনওর পরিত্যক্ত বাসভবন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ইউএনওর পরিত্যক্ত বাসভবন। ছবি: আজকের পত্রিকা

৩৪ মাস ধরে পরিত্যক্ত তিনটি ভবনে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ (ইউএনও) কতিপয় কর্মকর্তা–কর্মচারী বসবাস করছেন। এসব ভবনে বসবাসকারীদের বিরুদ্ধে রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে নতুন ভবনের জন্য বরাদ্দ এলেও রহস্যজনক কারণে তা আর এগোয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২১ সালের ৭ এপ্রিল স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় উপজেলা শাখা-২ থেকে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বাসভবনসহ ছয়টি ভবনকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। নিয়ম অনুযায়ী ওই সব ভবনে কেউ বসবাস করতে পারবেন না। ভবনগুলোর বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কিন্তু রহস্যজনকভাবে কয়েক দিন পর আবার সংযোগ প্রদান করা হয়।

অপর দিকে এলজিইডি নিলাম আহ্বান করে তিনটি ভবন ভাঙলে দুটি ভবন থেকে যায়। এর একটিতে বসবাস করছেন ইউএনও, অন্যটিতে কর্মকর্তারা।

সরকারি বিধি অনুযায়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ষষ্ঠ গ্রেডের বেতন অনুযায়ী বাসভবন ভাড়া বাবদ ৫৫ ভাগ টাকা রাজস্ব খাতে জমা হওয়ার কথা। সে হিসাবে গত ৩৪ মাসে ১২ লাখ ৫৩ হাজার ৭০ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হওয়ার কথা। কিন্তু এক টাকাও জমা হয়নি।

২০২১ সালের ২৯ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ২০ মার্চ পর্যন্ত ইউএনও মঞ্জুরুল হক ১১ মাস, ২০২২ সালের ২২ মার্চ থেকে ২০২৩ সালের ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ইউএনও তানভীর হোসেন ১০ মাস, ২০২৩ সালের ১১ ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ১৪ মার্চ পর্যন্ত ইউএনও জে পি দেওয়ান তিন মাস এবং সবশেষ ২০২৪ সালের ১৫ মার্চ থেকে ইউএনও মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ সপরিবারে বাস ভবনটিতে বসবাস করে আসছেন।

আরও জানা গেছে, ইউএনওর বাসভবনটি মেরামতের জন্য গত ৩৪ মাসে কয়েক লাখ টাকা সরকারি কোষাগার থেকে খরচও করা হয়। এ ছাড়া সরকারি তহবিল থেকে পরিশোধ করা হচ্ছে বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিল।

এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবন নির্মাণের জন্য ২০২১ সালের ২৬ এপ্রিল স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ, উপজেলা শাখা-২ উপসচিব মোহাম্মদ সামছুল হক স্বাক্ষরিত চিঠিতে ১ কোটি ৪৬ লাখ ৫৬ হাজার ৭১৩ টাকা বরাদ্দ করে।

কিন্তু ইউএনওরা সরকারি বাসাভাড়া ফাঁকি দেওয়ার জন্য প্রভাব খাটিয়ে নতুন বাসভবন নির্মাণ না করে পরিত্যক্ত ভবনে সপরিবারে বসবাস করে আসছেন। আর এসব ভবনের ব্যবহার করা হচ্ছে সরকারি খরচে বিদ্যুৎ ও গ্যাস। মেরামতের জন্য বছরে ব্যয় হচ্ছে কয়েক লাখ টাকা।

সূত্রে আরও জানা গেছে, অপর দুটি পরিত্যক্ত ভবনে বসবাস করছেন উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মীর হোসেন ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জোবায়ের আহম্মেদসহ কর্মকর্তা–কর্মচারীরা।

এর মধ্যে যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. কামাল উদ্দিন ২০২৩ সালে চৌদ্দগ্রামে যোগদান করার পর উপজেলা কমপ্লেক্সের ডরমিটরিতে সিট বরাদ্দ নেন। কিন্তু তিনি চার মাস ডরমিটরি ব্যবহারের পরে পরিত্যক্ত ভবনেই বসবাস করে আসছেন। এতে করে তিনিসহ ওই সব কর্মকর্তারা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছেন।

চৌদ্দগ্রামের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, উপজেলা কমপ্লেক্সে বসবাসের জন্য উপযুক্ত কোনো আবাসস্থল না থাকায় তিনি বাধ্য হয়ে পরিত্যক্ত ভবনেই অবস্থান করছেন।

৩৪ মাস সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়, এমনটা উল্লেখ করে রহমত উল্লাহ বলেন, তিনি উপজেলার দায়িত্ব নেন গত ১৪ মার্চ। এ ছাড়া পরিত্যক্ত ভবনে সরকারি রাজস্ব আদায়ের সুযোগও নেই।

প্রভাব খাটিয়ে নতুন ভবন নির্মাণ কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে, এ তথ্যও সঠিক নয়, এমন দাবি করে ইউএনও বলেন, ভবন নির্মাণের কাজ এলজিইডির মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়। এ কারণে ইউএনওর প্রভাব খাটানোর সুযোগ নেই। আর নতুন ভবন নির্মাণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

ইউএনওর দাবি, পরিত্যক্ত ভবন লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে মেরামত করা হচ্ছে এটিও সঠিক নয়।

যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন বলেন, ‘ডরমিটরিতে বসবাসের সুন্দর পরিবেশ না থাকায় আমি ২০২৪ সালে বরাদ্দ বাতিল করে ইউএনওর মৌখিক অনুমতি নিয়ে পরিত্যক্ত ভবনের বসবাস করে আসছি।’ ভাড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পরিত্যক্ত ভবনের ভাড়া দেব কাকে।’

চৌদ্দগ্রাম বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. ওয়াহেদুর রহমান বলেন, ‘পরিত্যক্ত ভবনগুলোতে কীভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ হয়েছে, তা আমি জানি না। এই বিষয়ে আপনারা ইউএনওর সঙ্গে কথা বলেন।’

এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী নুরুজ্জামান বলেন, ‘পরিত্যক্ত তিনটি ভবন নিলামের মাধ্যমে ভেঙে ফেলা হলেও ইউএনওর বাসভবনসহ দুটি ভবন এখনো ভাঙা সম্ভব হয়নি।’ বিদ্যুৎ–গ্যাস সংযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে চিঠি প্রদান করেছি।’ ইউএনওর নতুন বাসভবন নির্মাণ প্রশ্নের এ প্রকৌশলী বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।’

গ্যাস সংযোগের বিষয়ে জানতে বাখরাবাদ কুমিল্লার ব্যবস্থাপক (এমডি) আনোয়ার হোসেনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও সাড়া না পাওয়ায় তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভুয়া সনদে প্রধান শিক্ষক, এবার সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে নথি পাঠানোর অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ভুয়া অভিজ্ঞতা ও জাল সনদে একাধিক স্কুলে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম নামের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে এবার স্কুলের অ্যাডহক কমিটির সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে শিক্ষা বোর্ডে নথি পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে। চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ সরকারি কলোনি উচ্চবিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির একটি সভার রেজল্যুশনে তিনি এই জালিয়াতি করেন।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে জমা হওয়া অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শেষে ১৯ অক্টোবর বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। গতকাল মঙ্গলবার এই নির্দেশনার বিষয়টি জানা যায়।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (উন্নয়ন) মো. রিদুয়ানুল ইসলাম স্বাক্ষরিত পত্রে বলা হয়েছে, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম কর্তৃক গত বছরের ৩১ আগস্ট অনুষ্ঠিত ম্যানেজিং কমিটির সভার কার্যবিবরণীর প্রথম ও শেষ পাতা ঠিক রেখে দ্বিতীয় পাতায় আলোচ্যসূচি ৩-এ ‘এমপিওভুক্ত কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারীর এমপিও শিটে নাম, বয়স, জন্মতারিখ, ব্যাংক হিসাব নম্বর, পদবি ও বিষয় সংশোধন প্রসঙ্গে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত’ শিরোনামে ভুয়া কার্যবিবরণী তৈরি করা হয়।

এই ভুয়া কার্যবিবরণীতে অ্যাডহক কমিটির সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (হিসাব ও নেজারত) মোহাম্মদ শাহজাহানের স্বাক্ষর জাল করা হয়। চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি সেই জাল কার্যবিবরণী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ইএমআইএস সেলে পাঠানো হয়।

চিঠিতে আরও বলা হয়, জালিয়াতির অভিযোগে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলম নিজেই বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়ে দোষ স্বীকার করেছেন। ফলে তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিকে।

এর আগে গত ২৩ সেপ্টেম্বর আজকের পত্রিকার অনলাইনে ‘ভুয়া অভিজ্ঞতা ও জাল সনদে একাধিক স্কুলে প্রধান শিক্ষক, শাস্তির সুপারিশ বোর্ডের’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। জানা গেছে, শিক্ষা বোর্ড থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এখনো চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদ সরকারি কলোনি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। তাঁদের দাবি, এই ধরনের মুখোশধারী অপরাধীদের বিচারের আওতায় এনে সমাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ওমানের সড়কে ঝরে গেল বাংলাদেশি যুবকের জীবন

ব্রাহ্মণপাড়া (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 
নিহত শেখ মো. কামরুল। ছবি: সংগৃহীত
নিহত শেখ মো. কামরুল। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার শেখ মো. কামরুল (৩৬) ওমানের রাস্তায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন। ১৫ অক্টোবর সকালে বাসা থেকে মার্কেটে যাওয়ার পথে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত শেখ মো. কামরুল উপজেলার মাধবপুর গ্রামের শেখ বাড়ির মৃত কামাল হোসেনের ছেলে। তিনি ২৫ বছর ধরে ওমানে বসবাস করছিলেন এবং সিলাল মার্কেটে ব্যবসা করতেন।

কামরুলের চাচাতো ভাই শেখ মো. সজিব জানান, কোরবানির ঈদ শেষে কামরুলসহ পাঁচজন একসঙ্গে ছুটি কাটিয়ে ১০ অক্টোবর ওমানে ফিরে যান। ফেরার মাত্র ছয় দিন পরই ঘটে এই দুর্ঘটনা।

স্বজনদের ভাষ্যমতে, ১৫ অক্টোবর সকালে বাসা থেকে সিলাল মার্কেটে যাওয়ার পথে একজন তানজানিয়ান চালকের প্রস্তাবে কামরুল একটি বাসে ওঠেন। নতুন সিলাল মার্কেটের গেটের সামনে পৌঁছালে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে থাকা একটি মাটি কাটার গাড়ির (জেসিবি) সঙ্গে সজোরে ধাক্কা খায়। এতে বাসের সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই মারা যান কামরুল। বর্তমানে তাঁর মরদেহ রুস্তাক হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আজ বুধবার রাতে কামরুলের মরদেহ দেশে পৌঁছানোর কথা। আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাদ জোহর তাঁর নিজ এলাকা মাধবপুরে জানাজা শেষে দাফন করা হবে।

তাঁর দুই শিশুপুত্র রয়েছে; একজনের বয়স চার বছর এবং অন্যজনের মাত্র পাঁচ মাস। কামরুল ১২ বছর বয়সে পরিবারের দায়িত্ব নিতে প্রবাসে পাড়ি জমান। তাঁর অকালমৃত্যুতে পরিবার, স্থানীয় বাসিন্দা ও ওমানপ্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

উল্টো পথে বাস, চাপা পড়ে প্রাণ গেল ইজিবাইকচালকের

রংপুর প্রতিনিধি
রংপুরের তারাগঞ্জে উল্টো পথে আসা বাসে দুর্ঘটনা। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুরের তারাগঞ্জে উল্টো পথে আসা বাসে দুর্ঘটনা। ছবি: আজকের পত্রিকা

রংপুরের তারাগঞ্জে উল্টো পথে আসা একটি বাসের চাপায় মোতালেব হোসেন (৩৫) নামের এক ইজিবাইকচালক নিহত হয়েছেন। আজ বুধবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়কের ইকরচালী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত মোতালেব নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার মুন্সিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। এই ঘটনায় গুরুতর আহত একজনকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা সৈয়দপুরগামী ‘ভাই ভাই মুরাদ ক্লাসিক’ নামের একটি যাত্রীবাহী বাস ইকরচালী বাসস্ট্যান্ডে এসে হঠাৎ উল্টো পথে ঢুকে পড়ে। এ সময় মহাসড়কের বিপরীত দিক থেকে আসা ইজিবাইকটিকে চাপা দিয়ে সড়কের পাশে থাকা দোকানে গিয়ে সামনে থাকা পিলারে আটকে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ইজিবাইকচালক মোতালেব হোসেন মারা যান।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বাসটি বাঁ দিকে যাওয়ার কথা থাকলেও ডান দিকে সড়কের ধারে রাখা পিলারে আটকর আছে। উৎসুক লোকজন ও স্কুলশিক্ষার্থীরা বাসটি ঘিরে রেখেছে। এতে সড়কের একাংশ সংকুচিত হওয়ায় আবারও দুর্ঘটনার শঙ্কা রয়েছে। সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সেখানে কোনো পুলিশ দেখা যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী ভাতের দোকানদার আতিয়ার রহমান বলেন, ‘আমার দোকানের সামনেই ঘটনা। সকালে দোকান খোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, হঠাৎ দেখি বাসটা বাঁ থেকে ডান দিকের লেনে হাইস্পিডে ঢুকে যায়। এ সময় ডান দিক থেকে আসা অটোগাড়ির নিচে চাপা পড়ে যায়। ঘটনাস্থলে একজন মারা যায়।’

পাশের আরেক দোকানের মালিক জিয়াউর প্রামাণিক বলেন, ‘আজ নয়; প্রায় গাড়ি ফাঁকা দেখে উল্টো পাশ দিয়ে ওভারটেক করে এই স্ট্যান্ডে। এর আগেও এমন দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে অনেক মানুষের। কিন্তু এগুলো বন্ধ করার উপায় নাই।’

এ বিষয়ে তারাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ইজিবাইকচালক মোতালেব হোসেনের লাশ উদ্ধার করি। দুমড়েমুচড়ে যাওয়া অটোরিকশা ও মুরাদ পরিবহনের বাসটি জব্দ করা হয়েছে। বাসটি সড়ক থেকে সরিয়ে নিতে হবে। বাসচালক পালিয়ে গেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

উত্তাল বুয়েট: ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ছাত্রকে বহিষ্কারের পর মামলা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ২২
মঙ্গলবার মধ্যরাত পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। ছবি: স্ক্রিনশট
মঙ্গলবার মধ্যরাত পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। ছবি: স্ক্রিনশট

‎বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায়ের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে বুয়েট কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে ডিএমপির চকবাজার থানায় এই মামলা করে। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চকবাজার থানার ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রাজ্জাক।

আজ বুধবার সকালে আজকের পত্রিকাকে এসআই আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে বুয়েটের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। বুয়েট কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে এই মামলা করেছে। গতকাল রাতেই আটক থাকা ওই শিক্ষার্থীকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

‎এর আগে মঙ্গলবার রাতে বুয়েটের শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায়ের বিরুদ্ধে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এতে রাতেই ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। মধ্যরাত পর্যন্ত এই অবস্থা চলে। বিক্ষোভকারীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রাতেই অভিযুক্ত সেই শিক্ষার্থীকে বুয়েট থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত