মো. আকতারুজ্জামান, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা)
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের কাদৈর বাজারের নৈশপ্রহরী মো. স্বপন। তাঁর ছেলে মো. মারুফ হোসেনকে স্থানীয় হাজারীপাড়া হাফেজিয়া এতিমখানা ও নূরানি মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়েছিলেন ২০২২ সালের জানুয়ারিতে। কিন্তু এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভর্তির তালিকা অনুযায়ী স্বপন মারা গেছেন ২০২০ সালের ৯ এপ্রিল। মারুফের নামে সরকারি ক্যাপিটেশন তহবিল থেকে মাদ্রাসার সুপার হাফেজ বেলাল প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা করে উত্তোলন করছেন।
শুধু স্বপনই নন; মৃত দেখানো হয়েছে ওই প্রতিষ্ঠানের আরও বেশ কয়েক শিক্ষার্থীর বাবাকে। আজকের পত্রিকার অনুসন্ধানে এমন তথ্য উঠে এসেছে। জানা যায়, ১৯৯১ সালে আবুল হাশেম নামের এক বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজারীপাড়া হাফেজিয়া এতিমখানা ও নূরানি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠানটি সমাজসেবা অধিদপ্তরের ক্যাপিটেশন গ্র্যান্ড তালিকাভুক্ত হয়। শুরুতে ১০ জন ছাত্র এ সুবিধা পেয়ে থাকে। কিন্তু হঠাৎ করে ২০২৫ সালে এই মাদ্রাসার ১০২ জন এতিমের নামে ক্যাপিটেশন সুবিধা চালু করা হয়। মাদ্রাসাটিতে ২১৪ জন শিক্ষার্থীর তালিকা দেখা গেলেও প্রকৃতপক্ষে ১১৯ জনের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। বাকি ৯৫ জনের প্রমাণ মেলেনি। অথচ চলতি বছরের জুনে মাথাপিছু ২ হাজার টাকা করে ১০২ জন এতিম ছাত্রের অনুকূলে ১২ লাখ ২৪ হাজার টাকা সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে উত্তোলন করেছেন মাদ্রাসার সুপার হাফেজ বেলাল। তিনি শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মৃত দেখিয়ে এ তালিকা তৈরি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি বিষয়টি জানার পর অবাক হয়েছেন ওই শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরাও। জানা গেছে, মাদ্রাসাটিতে বিনা বেতনে পড়াশোনার কথা বলা হলেও প্রতি মাসে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর অভিভাবকেরা ১৫০০ টাকা করে বেতন পরিশোধ করে আসছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষার্থী মারুফের বাবা স্বপন বলেন, ‘আমি তো জীবিত। আমার ছেলে এতিম হয় কী করে? আমার ছেলেকে দ্বীনি শিক্ষালাভ করার জন্য এই মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়েছি। প্রতি মাসে ১ হাজার ৫০০ টাকা করে আমি বেতন পরিশোধ করছি।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গোবিন্দপুর গ্রামের দুই ভাই মো. আরিফ ও মো. হাসান এই মাদ্রাসায় ভর্তি হয় ২০২২ সালে। তাদের বাবা মো. ইয়াছিন জীবিত। তিনি ওমানপ্রবাসী। মাদ্রাসার তালিকায় ইয়াছিনকে মৃত দেখানো হয়েছে। বিষয়টি শুনে ইয়াছিনের স্ত্রী হাছিনা বেগম অবাক হন। তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী জীবিত, তিনি ওমানে আছেন। তিনি মারা গেলেন কবে? আমার ছেলেরা তো এতিম নয়। প্রতি মাসে ১৫০০ করে ৩ হাজার টাকা আমি মাদ্রাসায় ছেলেদের পড়াশোনার বেতন বাবদ পরিশোধ করে আসছি।’
এদিকে মাদ্রাসার তালিকায় দেখা গেছে, ইয়াছিনকে মৃত দেখানো হয় ২০১৩ সালের ৫ জানুয়ারি। এভাবেই শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মৃত দেখিয়ে প্রতিবছর সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে ছাত্রদের নামে টাকা উত্তোলন করা হচ্ছে।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলার সমাজসেবা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৩৪৮ জন এতিম সমাজসেবা অধিদপ্তরের ক্যাপিটেশন গ্র্যান্ড সুবিধা পাচ্ছে। যার মধ্যে ১০২ জনই হাজারীপাড়া হাফেজিয়া এতিমখানা ও নূরানি মাদ্রাসার ছাত্র।
ওই মাদ্রাসার এক ছাত্র জানায়, ‘অনেক সময় বাহির থেকে স্যারেরা এলে বড় হুজুর (হাফেজ বেলাল) আমাদেরকে শিখিয়ে দেন তোমরা বলবা তোমাদের বাবা নেই এবং তোমাদের থেকে কোনো বেতন নেওয়া হচ্ছে না। আমরা অস্বীকার করলে তিনি আমাদেরকে বেত্রাঘাত করেন। তাই ভয়ে বলি, আমাদের বাবা নেই, আমরা এতিম।’
জানতে চাইলে মাদ্রাসার সুপার হাফেজ বেলাল বলেন, ‘কম্পিউটার টাইপে তালিকা ভুল হয়েছে। তাই এমনটি হয়েছে।’ তিনি দাবি করেন, অধিকাংশ শিক্ষার্থীর বাবা মৃত্যুসনদ দিয়েছেন, তাই তাদের এতিম দেখানো হচ্ছে। তবে এ বক্তব্যের বিপরীতে তিনি কোনো শিক্ষার্থীর বাবার মৃত্যুসনদ এই প্রতিবেদককে দেখাতে পারেননি।
উপজেলার সমাজসেবা কর্মকর্তা সাহিদুর রহমান বলেন, ‘প্রতিবছর বার্ষিক প্রতিবেদনের জন্য অন্তত দুইবার মাদ্রাসাটি পরিদর্শন ও তথ্য যাচাই করি। সরেজমিনে সবকিছু ঠিকঠাক পাওয়া গেছে।’ কিছু প্রমাণ সমাজসেবা কর্মকর্তাকে দেখানো হলে তিনি বলেন, ‘আমরা তো শিক্ষার্থীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তথ্য যাচাই করতে পারি না। মাদ্রাসা ও এতিমখানা থেকে যে তথ্য আমাদের সরবরাহ করা হয়, তা সঠিক বলে আমরা বিবেচনা করি।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জামাল হোসেন বলেন, ‘বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি হাজারীপাড়া হাফেজিয়া এতিমখানা ও নূরানি মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের জীবিত বাবাকে মৃত দেখিয়ে ক্যাপিটেশন সুবিধা নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে সমাজসেবা কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের কাদৈর বাজারের নৈশপ্রহরী মো. স্বপন। তাঁর ছেলে মো. মারুফ হোসেনকে স্থানীয় হাজারীপাড়া হাফেজিয়া এতিমখানা ও নূরানি মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়েছিলেন ২০২২ সালের জানুয়ারিতে। কিন্তু এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভর্তির তালিকা অনুযায়ী স্বপন মারা গেছেন ২০২০ সালের ৯ এপ্রিল। মারুফের নামে সরকারি ক্যাপিটেশন তহবিল থেকে মাদ্রাসার সুপার হাফেজ বেলাল প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা করে উত্তোলন করছেন।
শুধু স্বপনই নন; মৃত দেখানো হয়েছে ওই প্রতিষ্ঠানের আরও বেশ কয়েক শিক্ষার্থীর বাবাকে। আজকের পত্রিকার অনুসন্ধানে এমন তথ্য উঠে এসেছে। জানা যায়, ১৯৯১ সালে আবুল হাশেম নামের এক বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজারীপাড়া হাফেজিয়া এতিমখানা ও নূরানি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠানটি সমাজসেবা অধিদপ্তরের ক্যাপিটেশন গ্র্যান্ড তালিকাভুক্ত হয়। শুরুতে ১০ জন ছাত্র এ সুবিধা পেয়ে থাকে। কিন্তু হঠাৎ করে ২০২৫ সালে এই মাদ্রাসার ১০২ জন এতিমের নামে ক্যাপিটেশন সুবিধা চালু করা হয়। মাদ্রাসাটিতে ২১৪ জন শিক্ষার্থীর তালিকা দেখা গেলেও প্রকৃতপক্ষে ১১৯ জনের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। বাকি ৯৫ জনের প্রমাণ মেলেনি। অথচ চলতি বছরের জুনে মাথাপিছু ২ হাজার টাকা করে ১০২ জন এতিম ছাত্রের অনুকূলে ১২ লাখ ২৪ হাজার টাকা সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে উত্তোলন করেছেন মাদ্রাসার সুপার হাফেজ বেলাল। তিনি শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মৃত দেখিয়ে এ তালিকা তৈরি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি বিষয়টি জানার পর অবাক হয়েছেন ওই শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরাও। জানা গেছে, মাদ্রাসাটিতে বিনা বেতনে পড়াশোনার কথা বলা হলেও প্রতি মাসে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর অভিভাবকেরা ১৫০০ টাকা করে বেতন পরিশোধ করে আসছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষার্থী মারুফের বাবা স্বপন বলেন, ‘আমি তো জীবিত। আমার ছেলে এতিম হয় কী করে? আমার ছেলেকে দ্বীনি শিক্ষালাভ করার জন্য এই মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়েছি। প্রতি মাসে ১ হাজার ৫০০ টাকা করে আমি বেতন পরিশোধ করছি।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গোবিন্দপুর গ্রামের দুই ভাই মো. আরিফ ও মো. হাসান এই মাদ্রাসায় ভর্তি হয় ২০২২ সালে। তাদের বাবা মো. ইয়াছিন জীবিত। তিনি ওমানপ্রবাসী। মাদ্রাসার তালিকায় ইয়াছিনকে মৃত দেখানো হয়েছে। বিষয়টি শুনে ইয়াছিনের স্ত্রী হাছিনা বেগম অবাক হন। তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী জীবিত, তিনি ওমানে আছেন। তিনি মারা গেলেন কবে? আমার ছেলেরা তো এতিম নয়। প্রতি মাসে ১৫০০ করে ৩ হাজার টাকা আমি মাদ্রাসায় ছেলেদের পড়াশোনার বেতন বাবদ পরিশোধ করে আসছি।’
এদিকে মাদ্রাসার তালিকায় দেখা গেছে, ইয়াছিনকে মৃত দেখানো হয় ২০১৩ সালের ৫ জানুয়ারি। এভাবেই শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মৃত দেখিয়ে প্রতিবছর সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে ছাত্রদের নামে টাকা উত্তোলন করা হচ্ছে।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলার সমাজসেবা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৩৪৮ জন এতিম সমাজসেবা অধিদপ্তরের ক্যাপিটেশন গ্র্যান্ড সুবিধা পাচ্ছে। যার মধ্যে ১০২ জনই হাজারীপাড়া হাফেজিয়া এতিমখানা ও নূরানি মাদ্রাসার ছাত্র।
ওই মাদ্রাসার এক ছাত্র জানায়, ‘অনেক সময় বাহির থেকে স্যারেরা এলে বড় হুজুর (হাফেজ বেলাল) আমাদেরকে শিখিয়ে দেন তোমরা বলবা তোমাদের বাবা নেই এবং তোমাদের থেকে কোনো বেতন নেওয়া হচ্ছে না। আমরা অস্বীকার করলে তিনি আমাদেরকে বেত্রাঘাত করেন। তাই ভয়ে বলি, আমাদের বাবা নেই, আমরা এতিম।’
জানতে চাইলে মাদ্রাসার সুপার হাফেজ বেলাল বলেন, ‘কম্পিউটার টাইপে তালিকা ভুল হয়েছে। তাই এমনটি হয়েছে।’ তিনি দাবি করেন, অধিকাংশ শিক্ষার্থীর বাবা মৃত্যুসনদ দিয়েছেন, তাই তাদের এতিম দেখানো হচ্ছে। তবে এ বক্তব্যের বিপরীতে তিনি কোনো শিক্ষার্থীর বাবার মৃত্যুসনদ এই প্রতিবেদককে দেখাতে পারেননি।
উপজেলার সমাজসেবা কর্মকর্তা সাহিদুর রহমান বলেন, ‘প্রতিবছর বার্ষিক প্রতিবেদনের জন্য অন্তত দুইবার মাদ্রাসাটি পরিদর্শন ও তথ্য যাচাই করি। সরেজমিনে সবকিছু ঠিকঠাক পাওয়া গেছে।’ কিছু প্রমাণ সমাজসেবা কর্মকর্তাকে দেখানো হলে তিনি বলেন, ‘আমরা তো শিক্ষার্থীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তথ্য যাচাই করতে পারি না। মাদ্রাসা ও এতিমখানা থেকে যে তথ্য আমাদের সরবরাহ করা হয়, তা সঠিক বলে আমরা বিবেচনা করি।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জামাল হোসেন বলেন, ‘বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি হাজারীপাড়া হাফেজিয়া এতিমখানা ও নূরানি মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের জীবিত বাবাকে মৃত দেখিয়ে ক্যাপিটেশন সুবিধা নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে সমাজসেবা কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
মাদারীপুরের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকদের হাজিরার জন্য বসানো বায়োমেট্রিক ডিজিটাল হাজিরা মেশিনগুলো কোনো কাজেই আসেনি। দিনের পর দিন ব্যবহার না হওয়ায় এসব যন্ত্র এখন নষ্টের পথে। এতে অপচয় হচ্ছে সরকারের লাখ লাখ টাকা।
১ ঘণ্টা আগেবরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) অন্তত ২৩ শিক্ষককে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেওয়ার তোড়জোড় চলছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাঁদের মধ্যে সাতজন জুলাই আন্দোলনের বিরোধিতাকারী রয়েছেন। পদোন্নতির এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. তৌফিক আলম।
১ ঘণ্টা আগেহযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আমদানি কার্গো ভিলেজ ঘিরে রেখেছেন যৌথ বাহিনীর সদস্যরা। শুধু জরুরি সেবায় নিয়োজিত ছাড়া কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
২ ঘণ্টা আগেনৌপথে ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে মোরেলগঞ্জ পর্যন্ত যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ছিল প্যাডেলচালিত স্টিমার। ঐতিহ্যবাহী এ জলযানের চলাচল বন্ধ হয়ে যায় তিন বছর আগে। এবার সেই ঐতিহ্য ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়।
২ ঘণ্টা আগে