Ajker Patrika

বাঁকখালী নদীতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে বাধা দেওয়ায় আরও এক মামলায় আসামি ১০০০

কক্সবাজার প্রতিনিধি
বাঁকখালী নদীতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে বাধা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাঁকখালী নদীতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে বাধা। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারের বাঁকখালী নদীর তীরে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধা দেওয়ার ঘটনায় আরও একটি মামলা হয়েছে। আজ রোববার কক্সবাজার সদর মডেল থানায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কক্সবাজার নদীবন্দরের পোর্ট অফিসার মোহাম্মদ আবদুল ওয়াকিল বাদী হয়ে এ মামলা করেন।

মামলায় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতা, ব্যবসায়ী, সাংবাদিকসহ ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা এক হাজার ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এ নিয়ে বাঁকখালী তীরের দখল উচ্ছেদে বাধা দেওয়ার অভিযোগে বিআইডব্লিউটিএ ও পুলিশ তিনটি মামলা করেছে।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াস খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ওসি জানান, গত শুক্রবার বাঁকখালী নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে বাধা ও হাঙ্গামা সৃষ্টির ঘটনায় ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে ৮০০ থেকে ১০০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মনির উদ্দিনকে। এ ছাড়া উন্নয়ন ইন্টারন্যাশনালের মালিক আতিকুল ইসলাম (সিআইপি আতিক), জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র মুজিবুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাশেদুল হক রাশেদ ও তাঁর ছোট ভাই জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহীনুল হক মার্শাল, আওয়ামী নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুল খালেক রয়েছেন।

মামলার অভিযোগে জানা গেছে, গত শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) অভিযানের পঞ্চম দিনে সকাল ৯টার দিকে কক্সবাজার পৌরসভার ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের হাজারো বাসিন্দা শহরের গুমগাছতলায় বিমানবন্দর সড়কে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। সকাল ১০টার দিকে ভাঙচুর করা হয় উচ্ছেদ অভিযানে ব্যবহৃত একটি এক্সকাভেটর। এ সময় অভিযানে আসা সেনাবাহিনী, পুলিশসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ঘিরে বিক্ষোভ করেন।

পরে বেলা ১১টায় উচ্ছেদ কার্যক্রম স্থগিত করে প্রশাসন। এ ঘটনার জেরে আজ মামলাটি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে গতকাল শনিবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান উচ্ছেদ অভিযানে বাধা দেওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, যেকোনো মূল্যে বাঁকখালী নদী দখলমুক্ত করা হবে। এ জন্য তিনি রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা কামনা করেন।

বাঁকখালী নদীতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে বাধা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাঁকখালী নদীতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে বাধা। ছবি: আজকের পত্রিকা

গত ২৪ আগস্ট এই নদীর বর্তমান প্রবাহ এবং আরএস জরিপের মাধ্যমে সীমানা নির্ধারণপূর্বক নদীটিকে সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে আদালত নদীর তীরের অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের আদেশ দিয়েছেন। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) করা জনস্বার্থমূলক মামলার (নম্বর ৮৩২৫/২০১৪) চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

এই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ১ সেপ্টেম্বর থেকে কক্সবাজার শহরে শুরু হয় বাঁকখালী নদীতে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনার উচ্ছেদ অভিযান। উচ্ছেদ অভিযানের দ্বিতীয় দিনে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ২৫০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়। তৃতীয় দিনে পেশকারপাড়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধার মুখে পড়ে এই অভিযান। এ ঘটনায়ও ৪০০ জনকে আসামি করে মামলা দেওয়া হয়।

গত ৩০ আগস্ট কক্সবাজার সার্কিট হাউসে বাঁকখালী নদী দখল-দূষণমুক্ত করার লক্ষে এক বিশেষ সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। সভায় হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী বাঁকখালী নদীর অবৈধ দখলদারদের তালিকা তৈরি ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন।

১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া অভিযানে প্রথম দুই দিনে চার শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ৫৬ একর নদীর জমি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চন্দ্রগ্রহণের সময় মুমিনের করণীয় আমল

বেতন চাইলে গৃহকর্মীদের পিস্তল দেখান সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি শামসুদ্দোহা, ৯৯৯-এ কল পেয়ে গ্রেপ্তার

চন্দ্রগ্রহণ চলছে, ব্লাড মুন দেখা যাবে রাত সাড়ে ১১টায়

শেখ হাসিনার শত্রু ছিলাম, তাঁকে বের করেছি, তাঁর ভাগনির চাকরি খেয়েছি: ববি হাজ্জাজ

তৃতীয় টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং: বিমানের সঙ্গে থাকবে বিদেশি কোম্পানি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত