Ajker Patrika

টেকনাফে জেলের জালে ৪ মণ ওজনের ভোল মাছ

 টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
টেকনাফে জেলের জালে ৪ মন ওজনের ভোল মাছ। ছবি: আজকের পত্রিকা
টেকনাফে জেলের জালে ৪ মন ওজনের ভোল মাছ। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারের টেকনাফের বাহারছড়ায় জেলের জালে ধরা পড়েছে ১৬৬ কেজি ওজনের একটি ভোল মাছ। স্থানীয় বাজারে মাছটি ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বাহারছড়া সমুদ্র এলাকায় মাছটি ধরা পড়ে।

মাছ ধরার নৌকার মালিক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এত বড় মাছ আগে কখনো দেখি নাই। মাছটি তুলতেই কয়েকজন জেলে মিলে হিমশিম খেতে হয়েছে। জীবনে প্রথমবার আমার জালে এত বড় ভোল মাছ ধরা পড়েছে।’

সাইফুল ইসলাম আরও বলেন, ‘প্রতিদিনের মতো ভোরে নৌকা নিয়ে সাগরে ছয়জন মাঝিমাল্লা মাছ ধরতে যাই। সাগরে জাল ফেলার পর দুপুরের দিকে হঠাৎ জালে অস্বাভাবিক ভারী অনুভব হলে টেনে তুলতে গিয়ে মাছটি দেখা যায়। অতিরিক্ত ওজনের কারণে মাছটি নৌকায় তুলতেও আমাদের বেগ পেতে হয়েছে।’

পরে মাছটি বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর বাজারে বিক্রি করার জন্য তোলা হলে ২ লাখ টাকা দাম হাঁকা হয়। দাম হাঁকাহাঁকি করে ব্যবসায়ী করিম ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায় মাছটি কিনে নেন।

মাছ ব্যবসায়ী করিম জানান, ঢাকায় পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। রাতেই মাছটি পরিবহন করে ঢাকায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

এদিকে বাহারছড়া এলাকায় জেলের জালে এত বড় ভোল মাছ ধরা পড়ায় স্থানীয় জেলেদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তালাকের ১ মাসের মাথায় ফের বিয়ে করলেন ত্বহা-সাবিকুন

তালাকের পরে ফের বিয়ে নিয়ে সমালোচনা, যে ব্যাখ্যা দিলেন সাবিকুন নাহার

৮ কুকুরছানা হত্যায় সরকারি কর্মকর্তাকে বাসা ছাড়তে বাধ্য করল প্রশাসন, মামলার প্রস্তুতি

বোনের সঙ্গে ২০ মিনিটের আলাপে আসিম মুনিরের বিরুদ্ধে ইমরান খানের অভিযোগ

২৪ ভারতীয় ছিলেন সরাসরি হত্যাকাণ্ডে: পিলখানা ট্র্যাজেডি নিয়ে কমিশনের প্রতিবেদন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আট কুকুরছানা হত্যায় মামলা: সরকারি কর্মকর্তার স্ত্রী গ্রেপ্তার

পাবনা ও ঈশ্বরদী প্রতিনিধি 
আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ০৭
গ্রেপ্তার আসামি নিশি রহমান। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তার আসামি নিশি রহমান। ছবি: সংগৃহীত

পাবনার ঈশ্বরদীতে মা কুকুরের অগোচরে আটটি কুকুরছানাকে বস্তাবন্দী করে পুকুরে ডুবিয়ে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা করা হয়েছে। মামলার পর অভিযুক্ত আসামি নিশি রহমানকে (৩৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন বাদী হয়ে ঈশ্বরদী থানায় মামলাটি করেন।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ স ম আব্দুন নূর মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, প্রাণী কল্যাণ আইন, ২০১৯-এর ৭ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় ক্ষুদ্র কৃষক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়নের স্ত্রী নিশি রহমানকে আসামি করা হয়েছে।

এদিকে মামলার পরপরই রাতে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত আসামি নিশি রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রণব কুমার এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, মামলার পর গতকাল রাত দেড়টার দিকে অভিযান চালিয়ে ঈশ্বরদী পৌর সদরে রহিমপুর গার্লস স্কুলের পাশের একটি বাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তাঁকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।

ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন বলেন, ‘ঘটনাটি বিভিন্ন গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছে। যে কারণে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার ফোন করেছিলেন। তিনি বলেছেন, এই ঘটনা অমানবিক। এই ঘটনা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। তাই প্রাণী হত্যায় জড়িতদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। এ ছাড়াও মহাপরিচালক স্যারও ফোন করে মামলা দায়ের করার নির্দেশনা দিয়েছেন।’

ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘কুকুরছানা হত্যার ঘটনায় ক্ষুদ্র কৃষক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়নকে সোমবার (১ ডিসেম্বর) গেজেটেড কোয়ার্টার ছাড়তে লিখিত নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তারা মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) বিকেলে বাসা খালি করে অন্যত্র চলে গেছেন।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়নের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

তবে নয়নের স্ত্রী নিশি রহমান মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘বাচ্চাগুলো আমাদের বাসার সিঁড়ির পাশে থাকত এবং খুব ডিস্টার্ব করত। তাই আমি বাজারের ব্যাগে ভরে পুকুরের পাশে একটি শজনেগাছের গোড়ায় রেখে আসি। কীভাবে পুকুরে পড়েছে জানি না। আমি নিজে ছানাগুলোকে পুকুরে ফেলিনি।’

প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরে ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনের একটি কোনায় থাকত টম নামের একটি কুকুর। এক সপ্তাহ আগে টম আটটি বাচ্চা প্রসব করে। সোমবার সকাল থেকে তার ছানাগুলো না পেয়ে পাগলপ্রায় অবস্থায় ছোটাছুটি করতে দেখা যায় মা কুকুরকে।

পরে উপজেলা পরিষদের কর্মচারীরা জানতে পারেন, ঈশ্বরদী উপজেলা পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশন কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়ন ও তাঁর স্ত্রী জীবন্ত আটটি কুকুরছানাকে বস্তার মধ্যে বেঁধে রোববার রাতের কোনো এক সময় ফেলে দেন উপজেলা পরিষদের পুকুরে। এক দিন পর সোমবার সকালে পাওয়া যায় কুকুরছানাগুলোর মরদেহ। দুপুরের পর মৃত কুকুর ছানাগুলোকে ইউএনওর বাসভবনের পাশে মাটিচাপা দেওয়া হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাড়ির কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সোমবার সকালে নয়ন স্যার মোটরসাইকেলে বাইরে যাচ্ছিলেন। আমি ছানাগুলোর কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি কিছু জানেন না বলেন। তখন তাঁর ছেলে বলে, “আম্মু ছানাগুলোকে বস্তায় ভরে পুকুরে ফেলে দিয়েছে।” এরপর আমরা পুকুরে গিয়ে একটি বস্তা ভাসতে দেখি। তুলে খোলার পর আটটি ছানাকেই মৃত অবস্থায় পাই।’

মৃত ছানাগুলো দেখে মা কুকুরটি প্রচণ্ড আর্তনাদ করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মীরা কুকুরটিকে চিকিৎসা দেন। মঙ্গলবার সারা দিন ছানাগুলোর খোঁজে মা কুকুরকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়সহ উপজেলা চত্বর এলাকায় ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তালাকের ১ মাসের মাথায় ফের বিয়ে করলেন ত্বহা-সাবিকুন

তালাকের পরে ফের বিয়ে নিয়ে সমালোচনা, যে ব্যাখ্যা দিলেন সাবিকুন নাহার

৮ কুকুরছানা হত্যায় সরকারি কর্মকর্তাকে বাসা ছাড়তে বাধ্য করল প্রশাসন, মামলার প্রস্তুতি

বোনের সঙ্গে ২০ মিনিটের আলাপে আসিম মুনিরের বিরুদ্ধে ইমরান খানের অভিযোগ

২৪ ভারতীয় ছিলেন সরাসরি হত্যাকাণ্ডে: পিলখানা ট্র্যাজেডি নিয়ে কমিশনের প্রতিবেদন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাঁচার আকুতি ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত কুবি শিক্ষার্থী অনন্যার

কুবি প্রতিনিধি 
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক। ছবি: সংগৃহীত
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী তাসলিম হক অনন্যা ‘অ্যাকিউট মাইলয়েড লিউকেমিয়া’ নামক ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আছেন। মেধাবী এই শিক্ষার্থীর আকস্মিক অসুস্থতায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে তাঁর পরিবারে।

নৃবিজ্ঞান বিভাগ ও অনন্যার পরিবার সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে তিনি জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ভারতের চেন্নাইয়ের অ্যাপোলো হাসপাতালে স্থানান্থর করেছে। ইতিমধ্যে তার চিকিৎসা বাবদ অনেক টাকা ব্যয় হয়েছে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অনন্যার চিকিৎসা চালিয়ে যেতে প্রায় ৫০ লাখ টাকার প্রয়োজন, যা তাঁর পরিবারের পক্ষে বহন করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থায় তাঁর চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার জন্য আর্থিক সাহায্যের আবেদন করেছে তাঁর পরিবার। 

এ বিষয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান শামীমা নাসরিন বলেন, ‘তাসলিম হক অনন্যা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের একজন সদস্য। তার পাশে দাঁড়ানো আমাদের সকলের দায়িত্ব। অনন্যার উন্নত চিকিৎসার জন্য ৫০ লাখ টাকা দরকার, যা তার পরিবারের পক্ষে বহন করা অসম্ভব। আমাদের সকলের সহযোগিতায় বাঁচতে পারে অনন্যার জীবন।’

সহযোগিতার মাধ্যম ব্যাংক একাউন্ট—Thaslim Haque Anonna, Account No- 0604140000196, NANDIPARA BRANCH, AL-Arafah Islamic Bank PLC

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তালাকের ১ মাসের মাথায় ফের বিয়ে করলেন ত্বহা-সাবিকুন

তালাকের পরে ফের বিয়ে নিয়ে সমালোচনা, যে ব্যাখ্যা দিলেন সাবিকুন নাহার

৮ কুকুরছানা হত্যায় সরকারি কর্মকর্তাকে বাসা ছাড়তে বাধ্য করল প্রশাসন, মামলার প্রস্তুতি

বোনের সঙ্গে ২০ মিনিটের আলাপে আসিম মুনিরের বিরুদ্ধে ইমরান খানের অভিযোগ

২৪ ভারতীয় ছিলেন সরাসরি হত্যাকাণ্ডে: পিলখানা ট্র্যাজেডি নিয়ে কমিশনের প্রতিবেদন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অর্থাভাবে নিভে যাচ্ছে শিশু সাব্বিরের চোখের আলো

লালমনিরহাট প্রতিনিধি 
বাবার কোলে সাব্বির রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাবার কোলে সাব্বির রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা

অর্থাভাবে নিভে যাচ্ছে লালমনিরহাটের সাত বছরের শিশু সাব্বির রহমানের চোখের আলো। সন্তানকে বাঁচাতে বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের হাত পেতেছেন তার অসহায় বাবা রবিউল ইসলাম। সাব্বির রহমান লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের সিংগারদার গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে।

জানা গেছে, তিন মাস আগে চোখ ওঠে ও জ্বর হয় সাব্বিরের। এরপর স্থানীয় পল্লিচিকিৎসকের কাছে ওষুধ খেয়ে শরীর ফুলে যায় ও ফোসকা ওঠে। তখন তাকে ভর্তি করা হয় লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে। সেখানে শিশু বিশেষজ্ঞ তপন কুমারের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলে এক সপ্তাহ। এ সময়ে তার পুরো শরীরের মাংসে পচন ধরে। বাধ্য হয়ে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন চিকিৎসকেরা।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টানা ২৩ দিনের চিকিৎসায় শরীরের পচন রোধ হলেও চোখ আক্রান্ত হয়। ধীরে ধীরে দুই চোখ নষ্ট হতে বসে। চক্ষু বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। সেখান থেকে দ্বীপ আই কেয়ার হাসপালেও চিকিৎসা করানো হয় সাব্বিরকে। কোনোভাবেই তার চোখ ভালো করতে পারছিলেন না চিকিৎসকেরা।

চিকিৎসকদের পরামর্শে সাব্বিরকে ঢাকা ইস্পাহানি ইসলামিয়া আই হসপিটালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা দ্রুত তাকে চোখে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন। দ্রুত অপারেশন না করলে চিরদিনের মতো চোখের আলো নিভে যাবে সাব্বিরের। এই অপারেশন করতে খরচ পড়বে ৬-৭ লাখ টাকা। খরচের কথা শুনে হতবাক সাব্বিরের বাবা রবিউল ইসলাম। একটি কোম্পানির সেলসম্যানের চাকরি করা রবিউল ইসলামের সঞ্চয়ে যা ছিল, সব তিন মাসে সন্তানের পেছনে খরচ করে বর্তমানে শূন্য। সন্তানকে বাঁচাতে চিকিৎসকদের পেছনে ছুটতে ছুটতে একপর্যায়ে চাকরিও চলে যায় রবিউলের।

প্রতিবেশীদের কাছ থেকে নেওয়া ঋণের টাকায় ওষুধ কিনে দিলেও চোখের আলো ফেরাতে অপারেশন করা তার সাধ্যের বাইরে। বাধ্য হয়ে সন্তানকে বাঁচাতে বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের হাত পেতেছেন সাব্বিরের বাবা রবিউল ইসলাম। বাড়িভিটার দুই শতক জমি ছাড়া তাঁর সম্পত্তি বলতে দুই ছেলেই। বড় ছেলে সাব্বির প্রথম শ্রেণির ছাত্র। তার অসুস্থতার কথা শুনে কেউ পাশে ভেড়ে না। বন্ধ হয়ে যায় পড়াশোনা।

সাব্বিরের মা সেলিনা বেগম বলেন, ‘তিন মাস আগেও আমার সাব্বির বাচ্চাদের সঙ্গে স্কুলে যেত। আজ তিন মাসের মাথায় চোখের আলো হারাতে বসেছে। তার চিকিৎসা করাতে পারছি না আমরা। তার চোখের আলো ফেরাতে ৬-৭ লাখ টাকা লাগে। কোথায় পাব এত টাকা? চোখের সামনে ছেলেটা অন্ধ হয়ে যাবে ভাবতেই বুকটা কেঁপে ওঠে। কেউ ঋণে টাকা দিলেও গ্রহণ করে সন্তানকে বাঁচাতাম।’ সমাজের বিত্তবানদের কাছে আর্থিক সাহায্যের আবেদন করেন তিনি।

সাব্বিরের বাবা রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আদরের সন্তান সাব্বিরকে সুস্থ করতে চিকিৎসকদের পেছনে ছুটতে ছুটতে চাকরি হারালাম। সঞ্চয় যা ছিল সব শেষ। এখন আমি শূন্য পকেটে ছেলেকে বুকে জড়িয়ে ধরে বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের হাত পেতেছি। তবু সন্তানের অপারেশনের টাকা জোগাড় করতে পারছি না। চোখের সামনে আদরের সন্তান ছটফট করছে। বিত্তবানেরা এগিয়ে এলে আমার আদরের ধন তার চোখের দৃষ্টশক্তি ফিরে পেত।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তালাকের ১ মাসের মাথায় ফের বিয়ে করলেন ত্বহা-সাবিকুন

তালাকের পরে ফের বিয়ে নিয়ে সমালোচনা, যে ব্যাখ্যা দিলেন সাবিকুন নাহার

৮ কুকুরছানা হত্যায় সরকারি কর্মকর্তাকে বাসা ছাড়তে বাধ্য করল প্রশাসন, মামলার প্রস্তুতি

বোনের সঙ্গে ২০ মিনিটের আলাপে আসিম মুনিরের বিরুদ্ধে ইমরান খানের অভিযোগ

২৪ ভারতীয় ছিলেন সরাসরি হত্যাকাণ্ডে: পিলখানা ট্র্যাজেডি নিয়ে কমিশনের প্রতিবেদন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভাগ্যবদলের স্বপ্নে ছুটছেন গাইবান্ধার চরাঞ্চলের নারীরা

আনোয়ার হোসেন শামীম, গাইবান্ধা
বাড়ির আঙিনায় চাষ করা সবজির পরিচর্যা করছেন এক নারী। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাড়ির আঙিনায় চাষ করা সবজির পরিচর্যা করছেন এক নারী। ছবি: আজকের পত্রিকা

উত্তরের জেলা গাইবান্ধা সাতটি উপজেলা নিয়ে গঠিত। এর মধ্যে সুন্দরগঞ্জ, সদর, ফুলছড়ি ও সাঘাটা—এই চারটি উপজেলা চরবেষ্টিত। এসব চরে প্রায় ৫ লাখ মানুষের জীবন কাটে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, নদীভাঙন, ভূমিক্ষয়, বন্যা, ঝড় আর দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে। নদীভাঙনের ধাক্কা সামলে টিকে থাকতে তাঁদের এক চর থেকে অন্য চরে ছুটে বেড়াতে হয়।

এই পিছিয়ে থাকা মানুষের জীবনমান উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি কাজ করছে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের নারীরা প্রশিক্ষণ নিয়ে বসতবাড়ির আঙিনায় শাকসবজি চাষ, হাঁস-মুরগি ও ভেড়া পালন শুরু করেছেন। এতে নিজেদের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি বাড়তি আয় করে ভাগ্যবদলের স্বপ্ন দেখছেন তাঁরা।

দুর্যোগে চরের মানুষের ধানের বীজতলা, মাঠের ফসল, ঘরবাড়ি, গরুর খাবার, খড়ের গাদা পর্যন্ত নষ্ট হয়ে যায়। এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ফ্রেন্ডশিপসহ কয়েকটি এনজিও এগিয়ে এসেছে। ফ্রেন্ডশিপের ট্রান্সিশন ফান্ড (এএসডি) প্রকল্পের সহায়তায় এসব পরিবার বসতভিটায় সবজি চাষ এবং ভেড়া, হাঁস-মুরগি পালন শুরু করেছে। তাতেই পাল্টে যাচ্ছে তাঁদের জীবনমান।

গাইবান্ধা সদর উপজেলার মোল্লারচর ইউনিয়নের মাইজবাড়ী চরের এফডিএমসির সদস্য আসমা বেগম ফ্রেন্ডশিপের প্রকল্প থেকে ৩ হাজার ৬০০ টাকা মূল্যের একটি ভেড়া পেয়েছিলেন। সেই ভেড়া থেকে এখন তাঁর পাঁচটি ভেড়া হয়েছে। বাজারে এগুলোর দাম প্রায় ৩২ হাজার টাকা।

মালেকা বেগম বলেন, ‘আধুনিক পদ্ধতিতে শাকসবজি উৎপাদনের প্রশিক্ষণ পাওয়ার পর আমার বসতবাড়িতে সবজি উৎপাদন করে এ বছর ৫ হাজার ১০০ টাকার সবজি বিক্রি করেছি, যা আমার সংসারের ব্যয়ভার বহনে খরচ হচ্ছে এবং আমি সবজি বিক্রির ৮ হাজার টাকায় একটি ছাগল কিনেছি।’

গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি ইউনিয়নের কড়াইবাড়ী চরের মুনসুরা বেগম বলেন, ‘আগে অবহেলিত ছিলাম। ভেড়া পেয়ে এখন স্বাবলম্বী হওয়ার পথে। একটা ভেড়া দিয়ে শুরু করে বর্তমানে আমার ৩০টি ভেড়া হয়েছে। এ ছাড়া শাকসবজি চাষ করি। নিজে খাই, বাজারে বিক্রি করে বাড়তি আয় করি।’

ভেড়া পালন করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন আসমা বেগমের। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভেড়া পালন করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন আসমা বেগমের। ছবি: আজকের পত্রিকা

আম্বিয়া বেগম নামের একজন বলেন, একসময় পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ ছিল। এনজিও থেকে একটি ভেড়া পেয়ে সেটি থেকে একাধিক হয়েছে। এরই মধ্যে কয়েকটি ভেড়া বিক্রি করে পরিবারে বেশ সচ্ছলতা ফিরেছে।

চরের নুরুল ইসলাম, রাশেদা বেগম ও মিনারা বেগম বলেন, ‘আগে বাজার থেকে সার কিনতে হতো, এখন আমরা নিজেরাই কম্পোস্ট সার তৈরি করি। পোকামাকড় দমনে ব্যবহার করি ফেরোমন ফাঁদ। সরকারি সেবা পেতে বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করি। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধেও কাজ করছি।’

তাঁরা আরও বলেন, ঘন ঘন দুর্যোগ মোকাবিলা, অবকাঠামো উন্নয়ন, সরকারি সহায়তা ও সচেতনতা বাড়াতে আরও কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন।

ফ্রেন্ডশিপের প্রকল্প ব্যবস্থাপক দিবাকর বিশ্বাস বলেন, ‘চরাঞ্চলের পিছিয়ে থাকা নারীদের ভেড়া ও সবজি চাষে স্বাবলম্বী করতে আমরা সহায়তা দিচ্ছি। বীজ, প্রযুক্তিগত সহায়তা—সবই বিনা মূল্যে দেওয়া হচ্ছে। গাইবান্ধার চরাঞ্চলে দেশি ভেড়ার বীজ থেকে উন্নত জাত তৈরির কাজ চলছে। এই জাতের ভেড়া দুর্যোগপ্রবণ এলাকার মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়ক হবে।’

গাইবান্ধা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘চরাঞ্চলে ভেড়া পালন খুবই লাভজনক। জেলায় সমতল এলাকায় ৭৪ হাজার ভেড়া রয়েছে। চরাঞ্চলে চারণভূমি থাকায় ভেড়া পালন সহজ এবং এতে বাড়তি শ্রমিকও লাগে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তালাকের ১ মাসের মাথায় ফের বিয়ে করলেন ত্বহা-সাবিকুন

তালাকের পরে ফের বিয়ে নিয়ে সমালোচনা, যে ব্যাখ্যা দিলেন সাবিকুন নাহার

৮ কুকুরছানা হত্যায় সরকারি কর্মকর্তাকে বাসা ছাড়তে বাধ্য করল প্রশাসন, মামলার প্রস্তুতি

বোনের সঙ্গে ২০ মিনিটের আলাপে আসিম মুনিরের বিরুদ্ধে ইমরান খানের অভিযোগ

২৪ ভারতীয় ছিলেন সরাসরি হত্যাকাণ্ডে: পিলখানা ট্র্যাজেডি নিয়ে কমিশনের প্রতিবেদন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত