Ajker Patrika

আবুতোরাব ট্র্যাজেডির এক যুগ আজ

মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ জুলাই ২০২৩, ১৪: ০৬
Thumbnail image

২০১১ সালে এই দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ৪২ জন স্কুলছাত্রসহ ৪৫ জন। আজ এক যুগ পূর্তি হলো চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে আবুতোরাব ট্র্যাজেডির। শোকের আবরণে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে সেই সব শিশু-কিশোরের স্মৃতি অশ্রুসিক্ত চোখে স্মরণ করছেন স্বজনেরা। নিহত শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক সংগঠন, এলাকার সাধারণ মানুষ ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দিবসটি পালিত হচ্ছে। 

কারও ভাই, কারও সন্তান কিংবা কারও প্রিয় ছাত্র হারানোর দুঃসহ যন্ত্রণা বয়ে বেড়ান স্বজনেরা। এখনো দুর্ঘটনাস্থলে নির্মিত আবেগ ও অন্তিমের পাশ দিয়ে চলাচলের পথে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে থমকে যান তাঁরা। 

আজকের কর্মসূচি: 
বছর ঘুরে দিনটি এলে আবুতোরাব এলাকা ঘিরে তৈরি হয় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য। এক যুগ পরেও এলাকার মানুষের কাছে একটুও কমেনি আবেগ, স্বজন হারানোর বেদনা। এক যুগ পূর্তিতে দিনটি স্মরণ করে আবুতোরাব উচ্চবিদ্যালয়, মায়ানী ইউনিয়ন পরিষদ, সামাজিক সংগঠন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আলোচনা সভা, স্মৃতি বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, অন্য ধর্মাবলম্বীদের বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। 

আবুতোরাব উচ্চবিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আবুল হোসেন বাবুল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সেদিনের ভয়াল স্মৃতি মনে হলে এখনো শিহরণ তৈরি হয়। নিহতদের জন্য সকালে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। তাদের স্মরণে আবেগ ও দুর্ঘটনাস্থল অন্তিমে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। এরপর স্কুল প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি।’ 

শিক্ষার্থীদের লাশ নিয়ে স্বজনদের আহাজারিপ্রেক্ষাপট ১১ জুলাই ২০১১: 
২০১১ সালের ১১ জুলাই সোমবার। একটি সড়ক দুর্ঘটনা শোকবিহ্বল করে তুলছিল সারা দেশকে। সেদিন মিরসরাই উপজেলা সদরের স্টেডিয়াম থেকে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল খেলা দেখে বাড়ি ফেরার পথে বড়তাকিয়া আবুতোরাব সড়কের সৈদালী এলাকায় প্রায় ৮০ জন শিক্ষার্থীকে বহনকারী একটি মিনি ট্রাক উল্টে পার্শ্ববর্তী ডোবায় পড়ে যায়। এ ঘটনায় আবুতোরাব উচ্চবিদ্যালয়, আবুতোরাব কলেজ, আবুতোরাব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩৮ জন শিক্ষার্থী ও একজন স্থানীয় ব্যক্তি ঘটনাস্থলে নিহত হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় আরও ছয়জন।

তাদের মধ্যে ছিল ৪২ জন শিক্ষার্থী, দুজন স্থানীয় কিশোর এবং একজন অভিভাবক। ৪৫টি তাজা প্রাণ মুহূর্তেই লাশ হয়ে যায়। বাবার কাঁধে ছেলের লাশ, ভাইয়ের কাঁধে ভাই। চারদিকে লাশ নিয়ে স্বজনদের আহাজারি। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও গুরুত্বসহকারে প্রচার হয় লাশের দৃশ্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী, জাতীয় পার্টির প্রধান এরশাদসহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠনের নেতারা ছুটে আসেন স্বজনহারাদের সমবেদনা জানাতে। নিহতদের স্মরণে স্থাপন করা হয় আবেগ ও অন্তিম স্মৃতিসৌধ।

সেদিন লাশের মিছিলে ভারী হয়ে ওঠে আবুতোরাব এলাকা। চারদিকে শুধু মাতম। সেই থেকে স্মৃতিসৌধ ‘অন্তিম’-এর পাশে গেলেই গা শিউরে ওঠে স্বজন, সহপাঠী কিংবা পথচারীদের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত