Ajker Patrika

ডাক বিভাগের কর্মচারী থেকে জঙ্গিবাদে 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৪ জানুয়ারি ২০২৩, ১৫: ৫৮
ডাক বিভাগের কর্মচারী থেকে জঙ্গিবাদে 

ডাক বিভাগের কর্মচারী থেকে জঙ্গিবাদে জড়িয়েছেন মাসুকুর রহমান ওরফে রনবীর ওরফে মাসুদ। তিনি নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র অন্যতম শুরা সদস্য ও সামরিক শাখার প্রধান। তাঁকে এবং তাঁর সহযোগী বোমা বিশেষজ্ঞ বাশারকে গত সোমবার উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। 

মঙ্গলবার দুপুরে কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান। 

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত বছরের ২৩ আগস্ট কুমিল্লা সদর এলাকা থেকে আট তরুণ নিখোঁজ হন। ২৫ আগস্ট নিখোঁজদের পরিবার কুমিল্লার কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করে। সে ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে পাহাড়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফ ও নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্কীয়ার সন্ধান পায় র‍্যাব। এরপর গত তিন মাস ধরে পাহাড়ে অভিযানে রয়েছে র‍্যাবের বিভিন্ন ব্যাটালিয়ন। ইতিমধ্যে সারা দেশ থেকে নিখোঁজ ৫৫ তরুণের মধ্যে ৩৮ জনকে আটক করেছে। কয়েকজনকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

খন্দকার আল মঈন বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৭-এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় জঙ্গি সংগঠনটির সামরিক শাখার প্রধান মাসুকুর রহমান ওরফে রনবীর ওরফে মাসুদ এবং আইইডি বা বোমা বিশেষজ্ঞ মো. আবুল বাশার মৃধা ওরফে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

গ্রেপ্তার মাসুকুর রহমান রনবীর সম্পর্কে কমান্ডার মঈন বলেন, তিনি জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার অন্যতম শুরা সদস্য ও সামরিক শাখার প্রধান। তিনি ২০০৭ সালের আগে ডাক বিভাগে চাকরি করতেন। ডাকাতির এক মামলায় গ্রেপ্তারের পর কারাগারে যান তিনি। কারাগারে বসে জঙ্গিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং জেএমবির আদর্শে অনুপ্রাণিত হন। জেল থেকে বের হওয়ার পর বিভিন্ন সময়ে কারাগারে থাকা জেএমবি সদস্য ও তাঁদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেন। ২০১৭ সালে জামাতুল আনসারের শুরা সদস্য এবং অর্থ ও মিডিয়া শাখার প্রধান রাকিবের সঙ্গে পরিচয় হয়। তিনি প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য হিসেবে জামাতুল আনসারে যোগদান করেন। 

এ ছাড়া ২০২১ সালে পাহাড়ে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রশিক্ষণ সেন্টারের সঙ্গে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার চুক্তিপত্র স্বাক্ষরকালীন বৈঠকে রনবীরসহ অন্যান্য শুরা সদস্যও উপস্থিত ছিলেন। পাহাড়ে র‍্যাবের অভিযান শুরু হলে তিনি সিলেট, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আত্মগোপন করেন এবং কিছুদিন আগে আত্মগোপনের উদ্দেশ্যে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান নেন। 

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রেপ্তারকৃত আবুল বাশার মৃধা ওরফে আলম হাটহাজারীর একটি মাদ্রাসা থেকে পড়াশোনা শেষে মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন। তাঁর সাংগঠনিক নাম আলম। নিখোঁজ ৫৫ জনের তালিকায় আবুল বাশারের নাম রয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হুজির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০২১ সালে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কাছ থেকে বোমা তৈরির বিষয়ে বেশ কয়েকটি প্রশিক্ষণ নেন। জামাতুল আনসারের পাহাড়ে প্রশিক্ষণার্থীদের বিভিন্ন ধরনের বোমা তৈরিবিষয়ক প্রশিক্ষণ দিতেন। পাহাড়ে র‍্যাবের অভিযান শুরু হলে তিনি ৫৫ জনের দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পালিয়ে সিলেটে যান। তিনি সামরিক শাখার প্রধান রনবীরের সঙ্গে সিলেট, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করেন।

পাহাড়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফের প্রধান নাথান বম কোথায় জানতে চাইলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রনবীর জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, গত সেপ্টেম্বরের পর থেকে নাথান বমের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। জামাতুল আনসারের আমিরের সন্ধান এবং তাাঁক আইনের আওতায় আনা সম্ভব হলে নাথান বম সম্পর্কে জানা যাবে।

কারাগারে গিয়ে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে খন্দকার আল মঈন বলেন, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও কারা কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। রনবীর জিজ্ঞাসাবাদে কারাগারে থাকাকালেই জামাতুল আনসারে উদ্বুদ্ধ হওয়ার কথা বলেছেন। এ রকম অনেকেই উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। ২০০৫-০৬ সালের দিকে এটি বেশি হয়েছে। নতুন করে কারাগারে যাতে এই সুযোগ তৈরি না হয়, সে জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারা কাজ করছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদির ওপর হামলাকারীরা সীমান্ত দিয়ে পালিয়েছে কি না—তা শতভাগ নিশ্চিত নয় বিজিবি

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান । ছবি: আজকের পত্রিকা
বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান । ছবি: আজকের পত্রিকা

বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, ঢাকায় শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলি বর্ষণকারী ব্যক্তিরা ময়মনসিংহ সীমান্ত ব্যবহার করে ভারতে পালিয়েছে কি না—তা এখনো শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।

সোমবার ময়মনসিংহ নগরীর খাগডহর বিজিবি ক্যাম্পে তিনি আরও জানান, শুক্রবার ৯টার মধ্যে বিজিবি সদর দপ্তরের নির্দেশনায় সম্ভাব্য পাচারের রুটগুলো চিহ্নিত করে টহল এবং চেকপোস্ট বসানো হয় সীমান্তের অধিকাংশ স্থানে। পরদিন অর্থাৎ শনিবারে পুলিশ এবং বিজিবির সমন্বয়ে যৌথ অপারেশনের প্ল্যান করা হয়। ঢাকা থেকে আগত পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে বিজিবি ময়মনসিংহ সেক্টর কমান্ডারের নিয়মিত যোগাযোগ এবং অপারেশন সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা হয়।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আলোচনায় দুটি স্থানে একসঙ্গে অপারেশনের প্ল্যান করা হয়। সন্দেহভাজন হিসেবে শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে অবস্থানরত ফিলিপ স্নালকে আটকের পরিকল্পনা করা হয়। পুলিশের আরেকটি টিম হালুয়াঘাট এলাকায় অপারেশনের প্ল্যান করে। হালুয়াঘাটে অপারেশনের বিষয়ে বিজিবির সোর্স এবং অন্যান্য বিষয়ে তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহায়তা করেছে। অপর দিকে নালিতাবাড়ীর বারোমারি এলাকায় অপারেশন পরিচালিত হয় বিজিবির নেতৃত্বে এবং ঢাকা হতে আগত ও হালুয়াঘাট থানার পুলিশ সদস্যদের সমন্বয়ে। কিন্তু ফিলিপকে পাওয়া যায়নি। তবে তার স্ত্রী ডেলটা চিরান, শ্বশুর ইয়ারসন রংডি এবং মানব পাচারকারী লুইস লেংমিঞ্জাকে আটক করা হয়। তাদের বাড়ি থেকে একটি মোটরসাইকেলও উদ্ধার করা হয়।’

তাঁদের পরিবারের তিনজনসহ এ পর্যন্ত বিজিবি চারজনকে আটক করেছে। এঁদের মধ্যে সোমবার সকালে মানব পাচারকারী বেঞ্জামিন চিরামকে আটক করা হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বরগুনায় স্বামীকে গলা টিপে হত্যা, স্ত্রী ও পরকীয়া প্রেমিক আটক

বরগুনা প্রতিনিধি
আটক পরকীয়া প্রেমিক আলামিন। ছবি: সংগৃহীত
আটক পরকীয়া প্রেমিক আলামিন। ছবি: সংগৃহীত

বরগুনার বামনা উপজেলায় পরকীয়া প্রেমের জেরে এক প্রবাসফেরত স্বামীকে গলা টিপে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ আব্দুল জলিল (৪৫)। তিনি উপজেলার রামনা ইউনিয়নের ঘোপখালী গ্রামের বাসিন্দা।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী নাজমা বেগম (৩৫) ও তাঁর পরকীয়া প্রেমিক আলামিনকে (৩০) আটক করেছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুজনই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে আব্দুল জলিলের নিজ বাড়িতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

স্থানীয় ও থানা সূত্রে জানা যায়, প্রায় পাঁচ বছর ধরে একই এলাকার আবু খতিবের ছেলে আলামিন নিহতের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করতেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে নাজমা বেগমের পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায় ১৫ দিন আগে প্রবাস থেকে বাড়িতে ফিরে স্ত্রীর সম্পর্কের বিষয়টি জানতে পারেন আব্দুল জলিল।

অভিযোগ রয়েছে, রোববার বিকেলে স্ত্রী ও ওই গৃহকর্মী মিলে ঘুমন্ত অবস্থায় আব্দুল জলিলকে গলা টিপে হত্যা করেন।

হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে বামনা থানায় নিয়ে যায়। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

বামনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে নিহতের স্ত্রী ও তাঁর পরকীয়া প্রেমিককে তাৎক্ষণিকভাবে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা দুজনই হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মামলা দায়েরের পর আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মহান বিজয় দিবসে মেট্রোরেল সাময়িক বন্ধ থাকবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে আগামী ১৬ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) মেট্রোরেল চলাচল সাময়িক বন্ধ থাকবে। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দর এলাকায় প্যারাজাম্প অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে প্যারাট্রুপারদের নিরাপত্তার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ডিএমটিসিএল ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছে, আগামী ১৬ ডিসেম্বর দুপুর ১১টা ৫০ মিনিট হতে ১২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত, অর্থাৎ মোট ৪০ মিনিটের জন্য মেট্রোরেল চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে।

ডিএমটিসিএল সাময়িক অসুবিধার জন্য যাত্রীসাধারণের কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে। যাত্রীদের এই সময়সূচি মেনে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইডেনের সেই ছাত্রীকে বিয়ের ছয়মাস পর নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চার্জশিট

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
নোবেল। ছবি: সংগৃহীত
নোবেল। ছবি: সংগৃহীত

বাসায় আটকে রেখে ইডেন কলেজের এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করার অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় গায়ক নোবেলের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। গত ২৯ নভেম্বর ডেমরা থানার উপপরিদর্শক এসআই মুরাদ হোসেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন প্রসিকিউশন বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) ইলামনি আজ সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আগামী ২৮ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্রটি উপস্থাপন করা হবে। পরে এ সংক্রান্ত মামলা বিচারের জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হবে।

নোবেলের আইনজীবী মোসতাক আহমেদ জানান, এই ধর্ষণ মামলার বাদীকে বিয়ে করেছেন নোবেল। তাঁরা সংসার করছেন।

গত ১৯ মে নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, নির্যাতন ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেন ইডেন কলেজের ওই ছাত্রী। নোবেলকে গ্রেপ্তার করার পর কারাগারে পাঠানো হলে বিয়ের শর্তে তিনি জামিন পান। ১৯ জুন ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বসে ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে নোবেল ওই ছাত্রীকে বিয়ে করেন।

এই মামলায় অভিযোগ করা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই ছাত্রীর সঙ্গে পরিচয় হয় নোবেলের। এরপর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নোবেল তাঁর স্টুডিও দেখানোর কথা বলে ছাত্রীকে ডেমরার বাসায় নিয়ে যান। সেখানে আটকে রাখেন, মোবাইল ফোন ও টাকা কেড়ে নেন। এরপর ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ করেন। কথামতো না চললে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয়ও দেখান।

অভিযোগে বলা হয়, ওই তরুণীকে ছয় মাস ধরে ডেমরার ওই বাসায় আটকে রাখা হয়, মারধর করা হতো প্রায়ই। দু-তিন জনের সহায়তায় বাদীকে চুল ধরে টেনেহিঁচড়ে একটি কক্ষে আটকে রাখেন নোবেল। ওই ঘটনার ভিডিও ছড়ালে বাদীর বাবা-মা তাঁকে চিনতে পারেন। এরপর পরিবার পুলিশের সহায়তায় তাঁকে ১৯ মে উদ্ধার করে এবং পুলিশ নোবেলকে গ্রেপ্তার করে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, নোবেল বাদীকে আটক রেখে ধর্ষণ করেন এবং ধর্ষণের ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে রাখেন। বাসায় না থাকলে ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। নোবেল নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বিভিন্ন সময়ে তাঁকে মারপিট করেছেন।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, বাদীর অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। আসামি নোবেল জামিনে আছেন।

তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্রে আরও বলেছেন, বাদীকে মারধর ও ধর্ষণে আসামিকে আরও কয়েকজন সহযোগিতা করেছেন। তবে তাঁদের নাম-ঠিকানা উদ্‌ঘাটন করা সম্ভব হয়নি। অদূর ভবিষ্যতে তাঁদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করা সম্ভব হলে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।

এখন কী হবে:

নোবেলের আইনজীবী বলেছেন, নোবেল মামলার বাদীকে বিয়ে করে সংসার করছেন। তাই এই অভিযোগপত্রে নোবেলের কোনো সমস্যা হবে না। বিচারিক ট্রাইব্যুনালে বাদী আপসনামা দেওয়ার পর মামলা নিষ্পত্তি হবে। খালাস পাবেন নোবেল।

উল্লেখ্য, ভারতের সংগীত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান ‘সা রে গা মা’ দিয়ে পরিচিতি পান এই গায়ক। এর আগে মাদকে আসক্ত হয়ে সংগীত ছেড়েছিলেন তিনি। দীর্ঘ বিরতির পর আবারও শ্রোতাদের সামনে হাজির হন। সেবার নোবেল জানিয়েছিলেন, তিনি আর কখনো দর্শকদের হতাশ করবেন না। সব অতীত পেছনে ফেলে নিয়মিত গান উপহার দেবেন।

কিন্তু ২০২৩ সালে অগ্রিম টাকা নিয়ে গান গাইতে না যাওয়ায় প্রতারণার অভিযোগে রাজধানীর মতিঝিল থানায় নোবেলের বিরুদ্ধে মামলা হয়। জানা যায়, ওই বছর ১৬ মে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ হেডকোয়ার্টার পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি ব্যাচ ২০১৬-এর অনুষ্ঠানে গান গাইতে গিয়ে ১ লাখ ৭২ হাজার টাকা অগ্রিম নেওয়ার প্রতারণায় অভিযোগে আটক হয়েছিলেন। সে সময় একদিন রিমান্ডেও ছিলেন এই গায়ক। পরে আপসের মাধ্যমে ওই মামলা থেকে অব্যাহতিও পান নোবেল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত