Ajker Patrika

অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ, প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

বুড়িচং (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
Thumbnail image

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার নিমসার জুনাব আলী কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগে অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে কলেজ প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। 

শিক্ষার্থীরা জানান, কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মামুন মিয়া মজুমদার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক শিক্ষার্থীকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে অশ্লীল ছবি পাঠান। এই কথোপকথনের স্ক্রিনশট ছড়িয়ে গেলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে নানাভাবে হুমকি দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনা জানাজানি হলে শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। 

একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ইয়াসিন আহমেদ বলেন, ‘প্রিন্সিপাল স্যার ফেসবুকে আমাদের এক সহপাঠীকে অশ্লীল কথা বলেছে। এই ঘটনার পর থেকে প্রিন্সিপাল স্যারের স্ত্রীসহ অনেকেই ওই শিক্ষার্থীকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। আমাদের দাবি অভিযুক্ত অধ্যক্ষ পদত্যাগ করতে হবে এবং দাবি না আদায় হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্লাস বর্জন করেছি।’ 

ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে প্রতিবাদে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা অধ্যক্ষের পদত্যাগ চাই। আমাদের সুরক্ষিত রাখার দায়িত্ব অধ্যক্ষের, কিন্তু উনিই যদি এমন করে তাহলে আমরা কীভাবে কলেজে আসব।’ 

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, ‘স্যার সামাজিক মেসেঞ্জারে আমাকে খারাপ কথা বলে। তিনি আমাকে উপবৃত্তি দেওয়ার প্রলোভন দেয়। এ ছাড়া কলেজে বিনা মূল্যে পড়ানোসহ নানা প্রলোভন দেখায়। স্যার আমার কাছে বাজে ছবি চায় এবং নিজের বাজে ছবিও আমাকে পাঠায়। তারপর আমাকে হুমকি দেয় এ বিষয়ে কাউকে বললে আমার কলেজ থেকে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাবে।’

এদিকে এই ঘটনার বিচার দাবিতে সকাল ১০টা থেকে কলেজে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। এরপর সাড়ে ১১টায় কলেজে আসেন বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হালিমা খাতুন ও বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মারুফ রহমান। এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের শান্ত করার চেষ্টা করেন তাঁরা। 

পরিস্থিতি শান্ত করতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বুড়িচংয়ের ইউএনও হালিমা খাতুন ও ওসি মারুফ রহমান।দুপুরে ইউএনও অন্যান্য শিক্ষক, অভিভাবক প্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনায় বসেন। দীর্ঘক্ষণ আলোচনা শেষে বিকেলে ইউএনও হালিমা খাতুন আজকের পত্রিকাকে জানান, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ছামিউল ইসলামকে প্রধান করে ৮ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটি শুনানি শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানান তিনি। 

অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মামুন মিয়া মজুমদার আজকের পত্রিকাকে জানান, কলেজের শিক্ষক ও বাইরের কিছু লোকজন মিলে তাঁকে কলেজ থেকে বিতাড়িত করার জন্য একটি সাজানো ঘটনা সৃষ্টি করেছে। মূলত ওই ছাত্রীকে তিনি কোনো প্রকার যৌন হয়রানি বা অশ্লীল ছবি পাঠাননি। 

অভিযুক্ত অধ্যক্ষ আরও বলেন, হয়রানির বিষয়টি বুঝতে পেরে তিনি বুধবার অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে বুড়িচং থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত