Ajker Patrika

হাজার গ্রাহকের কোটি টাকা নিয়ে প্রগ্রেসিভ লাইফ ইনস্যুরেন্সের টালবাহানা

সবুজ শর্মা শাকিল, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম)
আপডেট : ৩০ মে ২০২৪, ২০: ৫৪
হাজার গ্রাহকের কোটি টাকা নিয়ে প্রগ্রেসিভ লাইফ ইনস্যুরেন্সের টালবাহানা

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ভায়েরখীল এলাকার সত্তরোর্ধ্ব ছকিনা বেগম ২০১১ সালে তাঁর একমাত্র মেয়ে মনোয়ারা বেগমের নামে মাসিক ২০০ টাকা করে প্রগ্রেসিভ লাইফ ইনস্যুরেন্সে ১২ বছরের জন্য একটি ডিপিএস করেন। ২০২১ সালে মেয়াদ পূর্তির পর প্রগ্রেসিভ লাইফ ইনস্যুরেন্সের সহকারী ম্যানেজার খদিজা বেগমের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় কাগজ জমা দেওয়ার তিন বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো তাঁর সঞ্চিত টাকা ফেরত পাননি তিনি। 

শুধু সকিনা বেগম নন, মেয়াদ পূর্তির তিন বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো টাকা পাননি সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের ভায়েরখীল ও আলী চৌধুরীপাড়া এলাকার ফিরোজা, নাসিমা, মনোয়ারা বেগম, পারভীন আক্তারসহ অনেক গ্রাহক। টাকা পেতে জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে হন্য হয়ে ঘুরছেন। 

প্রগ্রেসিভ লাইফ ইনস্যুরেন্সের সীতাকুণ্ড শাখা অফিসের ইনচার্জ মো. নুর উদ্দিন বলেন, ‘সীতাকুণ্ড শাখায় বিভিন্ন প্রকল্পে টাকা রাখা প্রায় এক হাজার গ্রাহকের মেয়াদ পূর্তি হয়েছে। এসব গ্রাহক এক কোটি টাকা পাবেন।’ 

ভুক্তভোগী গ্রাহকদের অভিযোগ, মেয়াদ পূর্তির পর তাঁদের কাছ থেকে ডিপিএসের বইসহ টাকা জমানো বিভিন্ন প্রকল্পের বই ও প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র মাঠকর্মী নিরুয়া আক্তার ও সংস্থাটির বি এম মনোয়ারা বেগমের মাধ্যমে জমা নেন সহকারী ম্যানেজার খদিজা বেগম। জমা নেওয়ার সময় মাসখানেকের মধ্যেই সব ধরনের প্রক্রিয়া শেষ করে তাঁদের হাতে চেক তুলে দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। কিন্তু মাস পেরিয়ে তিন বছর অতিবাহিত হলেও এখনো তাঁদের হাতে চেক তুলে দিতে পারেননি তাঁরা। যখনই তাঁদের কাছে এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে যান, তখন তাঁরা কথা বলতে অনীহা প্রকাশের পাশাপাশি অফিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। পরে গ্রাহকেরা তাঁদের পরামর্শ অনুযায়ী সীতাকুণ্ড পৌর সদরের অফিসে ছুটে গেলে নানা ধরনের জটিলতার কথা বলে তাঁদের তাড়িয়ে দেন। 

তবে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মেয়াদ উত্তীর্ণের পর এসব গ্রাহকের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা নেওয়ার পাশাপাশি তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছেন। তাঁরা বিধি মেনেই গ্রাহকদের মেয়াদোত্তর সুবিধার চেক প্রদানের চেষ্টা করছেন। কিন্তু অর্থসংকটের কারণেই চেক ছাড় না দেওয়ায় তাঁরা সঠিক সময়ে গ্রাহকের হাতে চেক তুলে দিতে পারেননি। 

গতকাল বুধবার রাতে উপজেলার বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের ভায়েরখীল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মেয়াদ উত্তীর্ণের তিন বছর পরও চেক না পাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে অর্ধশতাধিক গ্রাহক প্রগ্রেসিভ লাইফ ইনস্যুরেন্সের সহকারী ম্যানেজার খদিজা বেগমের বাড়ি ঘেরাও করেন। এ সময় উত্তেজিত গ্রাহকেরা তাঁদের টাকা ফেরত দিতে খাদিজার ওপর চাপ প্রয়োগ করেন। একপর্যায়ে সেখানে ছুটে আসেন বাড়বকুণ্ড ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম জহির। তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টির সমাধান ও ভুক্তভোগীদের পাশে থেকে তাঁদের সহযোগিতার আশ্বাস দিলে তাঁরা ঘটনাস্থল থেকে চলে যান। 

ভুক্তভোগী গ্রাহক নাসিমা আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, খদিজার মাধ্যমে তিনি প্রতি মাসে ২ হাজার ৫০০ টাকা করে ১২ বছরের জন্য ডিপিএস করেন। কিন্তু তাঁকে প্রতি মাসে ২ হাজার ৩০০ টাকা জমা করার রসিদ প্রদান করেন। রসিদে না থাকা টাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তা মেয়াদ পূর্তি শেষে বুঝিয়ে দেওয়া হবে বলে খাদিজা জানান। তিনি ২০২১ সালে মেয়াদ শেষে অফিসে কাগজপত্র জমা দেন। এর পর থেকে খাদিজার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগের পাশাপাশি অফিসের শতাধিকবার গিয়েও তাঁর প্রাপ্য টাকার চেক মিলেনি। কবে নাগাদ দেওয়া হবে, সে বিষয়টি বলতে নারাজ অফিসে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা।

ভুক্তভোগী মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘আমি ১২ বছরের জন্য এককালীন ৫০ হাজার টাকা জমা রেখেছি। সেই সঙ্গে প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে ডিপিএসও। দুটোর মেয়াদ তিন বছর আগেই পূর্ণ হয়েছে। মেয়াদ পূর্তির পর খাদিজার মাধ্যমে অফিসে কাগজ জমা দিয়েছি। কিন্তু দীর্ঘ তিন বছর অতিবাহিত হলেও এখনো টাকার কোনো সুরাহা মেলেনি।’

তিনি আরও বলেন, টাকার বিষয়ে জানতে খাদিজার কাছে ছুটে গেলে তিনি সীতাকুণ্ড অফিসে যেতে বলেন। আর সীতাকুণ্ড অফিসে গেলে সেখানে থাকা কর্মকর্তারা হেড অফিসে যোগাযোগের কথা বলে অনেকটাই তুচ্ছ–তাচ্ছিল্য করেই তাড়িয়ে দেন। 

প্রগ্রেসিভ লাইফ ইনস্যুরেন্সের বি এম মনোয়ারা বেগম ও মাঠকর্মী নিরু বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ইনস্যুরেন্স সম্পর্কে তাঁদের কোনো ধরনের অভিজ্ঞতা নেই। গ্রাহক সংগ্রহ ও টাকা উত্তোলনের কাজ করতে খাদিজা চাকরি দিয়েছিল। তাঁরা খাদিজার পরামর্শে নতুন গ্রাহককে বুঝিয়ে ইনস্যুরেন্স করানোর পাশাপাশি প্রতি মাসের টাকা গ্রাহকদের কাছ থেকে তুলে খাদিজার হাতে এনে জমা দিতেন। 

বাড়বকুণ্ড ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম জহির আজকের পত্রিকাকে বলেন, মেয়াদ পূর্তির পর টাকা না পাওয়া শতাধিক বিক্ষুব্ধ গ্রাহক ইনস্যুরেন্স কর্মকর্তা খাদিজাকে অবরুদ্ধ করেন। তিনি বিক্ষুব্ধ গ্রাহকদের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। 

এরপর তিনি ভুক্তভোগী বেশ কিছু গ্রাহককে নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সংস্থাটির সীতাকুণ্ড শাখা অফিসে যোগাযোগ করেন। কিন্তু সেখানে দায়িত্বরত কোনো কর্মকর্তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। শেষে অফিস ইনচার্জ নুর উদ্দিনের সঙ্গে কথা বললে তিনি গ্রাহকের টাকা কবে নাগাদ ফেরত পাবে সে বিষয়ে অবগত নন বলে জানান। 

শতাধিক গ্রাহকের টাকা না পাওয়ার বিষয়টি সত্যি জানিয়ে প্রগ্রেসিভ লাইফ ইনস্যুরেন্সের সহকারী ম্যানেজার খাদিজা বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, কর্মীদের গাফিলতির কারণে মেয়াদ পূর্তির পরও সঠিক সময়ে কাগজপত্র জমা দিতে পারেননি। তবে সময়ক্ষেপণ করে জমা দিলেও প্রতিষ্ঠানের অর্থসংকটের কারণে গ্রাহকের সঞ্চিত টাকার চেক দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। জুলাই মাসে এসব গ্রাহকদের চেক দেওয়া হবে বলে হেড অফিস থেকে তাঁকে জানানো হয়েছে। তবে প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে যে সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তাতে জুলাই মাসে চেক মিলবে কি না সে বিষয়েও সন্দিহান।

এ বিষয়ে জানতে প্রগ্রেসিভ লাইফ ইনস্যুরেন্সের সীতাকুণ্ড শাখা অফিসের ইনচার্জ মো. নুর উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, সীতাকুণ্ড শাখায় ডিপিএস, মেয়াদি বিমাসহ বিভিন্ন প্রকল্পে টাকা রাখা প্রায় এক হাজার গ্রাহকের মেয়াদ পূর্তি হয়েছে। এসব গ্রাহকেরা এক কোটি টাকা পাবেন। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের অর্থসংকটের কারণে তাঁরা এই মুহূর্তে টাকা ছাড় দিতে পারছেন না। জুলাই মাসে সারা দেশে সংস্থাটির যতগুলো অফিস রয়েছে, সে অফিসগুলোর জন্য দুই কোটি টাকা ছাড় দেবে। সেই হিসাবে তাঁরা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পাবেন। সে টাকা দিয়ে তাঁদের কিছুই হবে না।

তবে কবে নাগাদ গ্রাহকেরা টাকা পেতে পারেন, সে বিষয়ে জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির বর্তমানে যে অবস্থা চলছে, সে অবস্থা থেকে কবে উত্তোরণ ঘটবে তার কোনো ঠিক নেই। সেই হিসাবে কবে নাগাদ তাঁরা গ্রাহকদের টাকা পরিশোধ করতে পারবেন, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। তবে সময়ক্ষেপণ হলেও পর্যায়ক্রমে গ্রাহকেরা তাঁদের টাকা ফেরত পাবেন বলে তিনি আশাবাদী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

চীনা কর্মকাণ্ডের ঝুঁকি ‘সুস্পষ্টভাবে’ বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর কাছে তুলে ধরব: ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন

বড়াইগ্রামের একটি গুদামে ১৩ টন গুলির খোসা নিয়ে চাঞ্চল্য

মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে বাবার হাতে খুন হলো নিষ্পাপ দুই শিশু

আবারও পুরান ঢাকায় প্রেমিকার বাসার সিঁড়িতে প্রেমিকের লাশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পাবনায় ট্রাকচাপায় দুই শিক্ষার্থীসহ নিহত ৩

পাবনা প্রতিনিধি
পাবনায় ট্রাকচাপায় তিনজন নিহত হয়। রোববার সকালে পাবনা সদরের ডাঙ্গাবাড়িয়া এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
পাবনায় ট্রাকচাপায় তিনজন নিহত হয়। রোববার সকালে পাবনা সদরের ডাঙ্গাবাড়িয়া এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎পাবনায় বাঁশবোঝাই ট্রাকের চাপায় দুই স্কুলশিক্ষার্থীসহ তিনজন নিহত হয়েছে। এই ঘটনায় আরও দুজন গুরুতর আহত হয়েছে। ‎রোববার (২৬ অক্টোবর) সকাল ৭টার দিকে পাবনা সদর উপজেলার গয়েশপুর ইউনিয়নের বাঙ্গাবাড়িয়া এলাকায় ঢাকা-পাবনা মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ‎নিহত ব্যক্তিরা হলো পাবনা কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী তাসমিয়া আক্তার, পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আবু তোহা ও ভ্যানের চালক আকরাম হোসেন।

‎মাধপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ‎

‎‎জানা গেছে, সকাল ৭টার দিকে ৮-১০ জন শিক্ষার্থী ভ্যানগাড়িতে করে পাবনার জালালপুর এলাকার ক্যাডেট কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজে যাওয়ার পথে ঢাকা থেকে পাবনাগামী একটি বাঁশবোঝাই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই ছাত্র-ছাত্রী ও ভ্যানচালক নিহত হয়। এ সময় গুরুতর আহত হয়েছে আরও দুজন পথচারী। স্থানীয় বাসিন্দারা মাধপুর হাইওয়ে থানা-পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধার করে। ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে। মহাসড়কে যান চলাচল সাময়িক বন্ধ রয়েছে।

ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ভ্যানের ড্রাইভারসহ তিনজন নিহত ও চায়ের দোকানে থাকা দুই ব্যক্তি আহত হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ট্রাক জব্দ করা হয়েছে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।‎

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

চীনা কর্মকাণ্ডের ঝুঁকি ‘সুস্পষ্টভাবে’ বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর কাছে তুলে ধরব: ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন

বড়াইগ্রামের একটি গুদামে ১৩ টন গুলির খোসা নিয়ে চাঞ্চল্য

মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে বাবার হাতে খুন হলো নিষ্পাপ দুই শিশু

আবারও পুরান ঢাকায় প্রেমিকার বাসার সিঁড়িতে প্রেমিকের লাশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সিরাজদিখানে ১৪৩ দিনে কোরআন মুখস্থ করল ৯ বছরের শিশু আরফান

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
মোহাম্মদ আরফান হোসাইন। ছবি: সংগৃহীত
মোহাম্মদ আরফান হোসাইন। ছবি: সংগৃহীত

অভূতপূর্ব এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার কুচিয়ামোড়া গ্রামের ৯ বছর বয়সী মোহাম্মদ আরফান হোসাইন। মাত্র ১৪৩ দিনে পুরো পবিত্র কোরআন মুখস্থ করে হাফেজ হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে সে। আরফানের এই অসাধারণ সাফল্যে পরিবার, শিক্ষক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আনন্দ ও গর্বের আবহ বিরাজ করছে।

আরফান বর্তমানে ইসলামপুর কামিল কওমি মাদ্রাসার ছাত্র। এর আগে সে কুচিয়ামোড়া দারুন্নাজাত মাদ্রাসায় অধ্যয়ন করেছে। অল্প বয়সে এমন সাফল্য অর্জন করে স্থানীয়ভাবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

আরফান কেয়াইন ইউনিয়নের কুচিয়ামোড়া গ্রামের বিশিষ্ট আলেম ও শিক্ষক হাফেজ আব্দুল্লাহ আল মাসরুরের (লাভু হুজুর) ছেলে। লাভু হুজুর বর্তমানে কুচিয়ামোড়া দারুন্নাজাত মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ এবং কুচিয়ামোড়া মিত্রপাড়া বাইতুন নূর জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তিন ভাইবোনের মধ্যে আরফান সবার ছোট। মাত্র ১৪৩ দিনে সম্পূর্ণ কোরআন মুখস্থ করে সে তার পরিবারসহ পুরো এলাকাকে গর্বিত করেছে।

ইসলামপুর কামিল মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক ফখরুদ্দীন রাজি বলেন, ‘আরফান আমাদের মাদ্রাসার গর্ব। ১৪৩ দিনে কোরআন মুখস্থ করা আমাদের মাদ্রাসার ইতিহাসে এই প্রথম। এটি এক বিরল দৃষ্টান্ত। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

চীনা কর্মকাণ্ডের ঝুঁকি ‘সুস্পষ্টভাবে’ বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর কাছে তুলে ধরব: ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন

বড়াইগ্রামের একটি গুদামে ১৩ টন গুলির খোসা নিয়ে চাঞ্চল্য

মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে বাবার হাতে খুন হলো নিষ্পাপ দুই শিশু

আবারও পুরান ঢাকায় প্রেমিকার বাসার সিঁড়িতে প্রেমিকের লাশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাবিতে ঘাস কাটার মেশিন ভেঙে যুবকের মাথায় ঢুকল ব্লেড

জাবি প্রতিনিধি 
হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে আহত যুবককে। ছবি: আজকের পত্রিকা
হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে আহত যুবককে। ছবি: আজকের পত্রিকা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ঘাস কাটার যন্ত্র (মেশিন) ভেঙে ব্লেড ছিটকে মাথায় ঢুকে সুমন মিয়া (২৬) নামের এক যুবক গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনি সাতক্ষীরা জেলার বাসিন্দা এবং জাবি স্পোর্টস ক্লাব আয়োজিত তিন দিনব্যাপী নাইট ফুটবল টুর্নামেন্ট উপলক্ষে বরাদ্দ স্টলে কাঁকড়া ফ্রাই বিক্রি করতেন।

শনিবার (২৫ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। ঘটনার পরপরই তাঁকে প্রথমে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্ট একাধিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২৩ অক্টোবর থেকে জাবি স্পোর্টস ক্লাবের ব্যবস্থাপনায় তিন দিনব্যাপী নাইট ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু হয়। শনিবার ছিল খেলার শেষ দিন। টুর্নামেন্টে ক্লাবের সভাপতি আরশাদ হাবিব বিশালের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া এক বন্ধু একটি স্টল বরাদ্দ নেন, যেখানে সুমন মিয়া ও জাবির এক হোটেল কর্মচারী কাজ করতেন।

এদিকে বিশালের অনুরোধে অনানুষ্ঠানিকভাবে মাঠ প্রস্তুতের কাজ করতেন শারীরিক শিক্ষা অফিসের কর্মচারী আবুল হোসেন। গতকাল শেষ দিন উপলক্ষে ক্যাম্পাসে এসে মাঠ প্রস্তুতের কাজ শেষে হাতে সময় থাকায় মেশিন দিয়ে ঘাস কাটা শুরু করেন তিনি। ঘাস কাটার সময় মেশিনের ব্লেড মাটিতে থাকা একটি ইটে লেগে ভেঙে যায়। ব্লেডের সেই অংশ ছিটকে গিয়ে পাশের স্টলে দাঁড়িয়ে থাকা সুমন মিয়ার মাথায় ঢোকে।

সুমন মিয়ার পাশের স্টলে পিঠার দোকান ছিল নাদিয়া মীম নামের সিটি ইউনিভার্সিটির সাবেক এক শিক্ষার্থীর। নাদিয়া বলেন, সুমন স্টলে দাঁড়ানো অবস্থায় ব্লেড ছিটকে এসে লাগার সঙ্গে সঙ্গে ঢলে পড়ে যান। প্রথমে ভয়ে কেউ তাকে উঠায়নি। পরে বিশাল এসে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য মোটরসাইকেলে উঠিয়ে দেন।

কর্মচারী আবুল হোসেন বলেন, ‘হাতে একটু সময় থাকায় ঘাস কাটছিলাম। মেশিনে ইট লেগে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটবে, এটা ভাবতে পারছি না।’

শারীরিক শিক্ষা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক নাসরিন বেগম বলেন, ‘আজ ছুটির দিন থাকায় আমি অফিসে ছিলাম না। আমাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারীরাও ছুটিতে ছিল। তবে জাবি স্পোর্টস ক্লাবের নাইট ফুটবল টুর্নামেন্ট চলমান থাকায় তিনি সেখানে ছিলেন। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আমরা দ্রুত আহত ব্যক্তিকে এনাম মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাই। পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। রাত ১টার দিকে তার অপারেশন শুরু হয়।’

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আহত সুমনের মাথায় অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে। তবে তিনি আশঙ্কামুক্ত নন। ৭২ ঘণ্টা অবজারভেশনে থাকবেন তিনি। নিবিড় পরিচর্যার পরামর্শ থাকলেও এখন পর্যন্ত তার ব্যবস্থা হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

চীনা কর্মকাণ্ডের ঝুঁকি ‘সুস্পষ্টভাবে’ বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর কাছে তুলে ধরব: ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন

বড়াইগ্রামের একটি গুদামে ১৩ টন গুলির খোসা নিয়ে চাঞ্চল্য

মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে বাবার হাতে খুন হলো নিষ্পাপ দুই শিশু

আবারও পুরান ঢাকায় প্রেমিকার বাসার সিঁড়িতে প্রেমিকের লাশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলি টেকনাফের বসতবাড়ি ও দোকানে, নারী আহত

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি 
মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলি ও ছিদ্র হয়ে যাওয়া টেকনাফের একটি ঘরের বেড়া। ছবি: আজকের পত্রিকা
মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলি ও ছিদ্র হয়ে যাওয়া টেকনাফের একটি ঘরের বেড়া। ছবি: আজকের পত্রিকা

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে তীব্র সংঘর্ষের জেরে ছোড়া গুলি বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায় এসে পড়েছে। এই ঘটনায় কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের তেচ্ছি ব্রিজ সীমান্তসংলগ্ন এলাকায় এক নারী গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন। এ ছাড়া গুলিতে একটি বসতবাড়ি ও একটি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

শনিবার (২৫ অক্টোবর) বিকেল ৫টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। আহত নারীর নাম ছেনুয়ারা (২৭)। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার বিকেলের দিকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ভয়াবহ গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। কিছু সময় পর ওপার থেকে ছোড়া দুটি গুলি বাংলাদেশ সীমান্তের তেচ্ছি ব্রিজ এলাকার একটি বসতবাড়ি ও কম্পিউটারের দোকানে এসে লাগে। এতে ঘরের টিন ও দেয়াল ছিদ্র হয়ে যায়।

ঘটনার পর সীমান্ত এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় অনেক পরিবার শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে।

হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ নুর আহমেদ আনোয়ারী বলেন, ‘মিয়ানমারের দিক থেকে ছোড়া গুলি এপারে এসে পড়ায় একজন নারী আহত হয়েছেন। সীমান্তের মানুষ এখন চরম আতঙ্কে রয়েছে। প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

নুর আহমেদ আনোয়ারী আরও বলেন, যদি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে সীমান্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জোটের ভোটেও দলীয় প্রতীক: বিএনপির আপত্তি যে কারণে, এনসিপির উদ্বেগ

চীনা কর্মকাণ্ডের ঝুঁকি ‘সুস্পষ্টভাবে’ বাংলাদেশ সরকার ও সামরিক বাহিনীর কাছে তুলে ধরব: ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন

বড়াইগ্রামের একটি গুদামে ১৩ টন গুলির খোসা নিয়ে চাঞ্চল্য

মায়ের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে বাবার হাতে খুন হলো নিষ্পাপ দুই শিশু

আবারও পুরান ঢাকায় প্রেমিকার বাসার সিঁড়িতে প্রেমিকের লাশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত