Ajker Patrika

চবির ১০ ছাত্রী বহিষ্কার: প্রশাসনকে চাপ দিতে ছাত্রনেতাদের বার্তা পাঠান সহকারী প্রক্টর

  • এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই সহকারী প্রক্টরের ইন্ধনের তথ্য মিলেছে।
  • চাপ দিয়ে তদন্তে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ।
  • আমাদের বিরুদ্ধে অপবাদ হচ্ছে, দাবি দুই প্রক্টরের।
সাখাওয়াত ফাহাদ, ঢাকা 
আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২: ২৩
চবির ১০ ছাত্রী বহিষ্কার: প্রশাসনকে চাপ দিতে ছাত্রনেতাদের বার্তা পাঠান সহকারী প্রক্টর

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে একটি ছাত্রী হলের সামনে ভাঙচুরকে কেন্দ্র করে ১০ জন নারী শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই সহকারী প্রক্টরের ইন্ধনের তথ্য মিলেছে। অভিযোগ উঠেছে, সহকারী প্রক্টর নূরুল হামিদ কানন ও অধ্যাপক ড. মো. কোরবান আলী নারী শিক্ষার্থীদের শাস্তির দাবিতে প্রশাসনকে ‘চাপ দিতে’ বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতাদের কাছে বার্তা পাঠিয়েছিলেন।

কয়েকটি ছাত্রসংগঠনের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এই অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। তাঁরা বলেছেন, ১০ নারী শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল ও অন্যান্য প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরা আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, ছাত্রী হলের সামনে গভীর রাতে মব তৈরি হলে বিভিন্ন প্রগতিশীল ও নারী অধিকারের সঙ্গে যুক্ত ছাত্রীরাই প্রথমে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানান। জুলাই অভ্যুত্থানেও তাঁদের অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। অভ্যুত্থানের পরও তাঁরা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন অধিকারের আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকায় ছিলেন। কিন্তু গত ৫ আগস্টের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজনীতিতে জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের আধিপত্য বিস্তার এবং পরিবর্তিত পরিস্থিতি নারী শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার ত্বরান্বিত করতে নেপথ্যে কাজ করেছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের এক নেতা আজকের পত্রিকাকে অভিযোগ করে বলেন, ‘তদন্ত কমিটি গঠনের পরই নারী শিক্ষার্থীদের বিচার চেয়ে প্রশাসনকে চাপ দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের প্রায় ২০ জনের বেশি নেতা-কর্মীর কাছে বার্তা পাঠান দুই সহকারী প্রক্টর।’ তবে বার্তাপ্রাপ্ত অধিকাংশই এতে সাড়া দেননি বলে জানান তিনি।

৬ ফেব্রুয়ারি দুপুরে সহকারী প্রক্টরদের ‘প্রেসক্রিপশনে’ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন শিক্ষার্থী শেখ হাসিনা হলের ছাত্রলীগ নেত্রীদের সিট বাতিল ও তদন্ত সাপেক্ষে ছাত্রত্ব বাতিলের দাবিতে প্রক্টর অফিস ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেন। পরে তাঁরা নারী শিক্ষার্থী কর্তৃক ছাত্র-সাংবাদিক আহত হওয়া ও শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনার বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফকে অভিযোগপত্র দেন। অন্যদিকে সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণ ও হেনস্তার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধন করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি।

কী ঘটেছিল ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে

বহিষ্কারের ঘটনায় ভুক্তভোগী, বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতা এবং ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা আজকের পত্রিকাকে জানান, রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২-এ ভাঙচুরের উত্তেজনা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়লে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ছাত্রী হলের সামনে স্থাপিত ‘নৌকা’সদৃশ বসার স্থান ভাঙতে রাত সাড়ে ১১টায় ছাত্রী হলের সামনে ‘মব’ তৈরি হয়। এতে নারী শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং হলের নিচে নেমে আসেন। এ সময় অনেকেই ‘ঘরের’ পোশাকে ছিলেন, তাই সাংবাদিকেরা ভিডিও চিত্র নিতে চাইলে তাঁরা নিষেধ করেন। একপর্যায়ে এ নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।

বহিষ্কারের ঘটনায় ভুক্তভোগী এক নারী শিক্ষার্থী আজকের পত্রিকাকে বলেন, সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. কোরবান আলী ঘটনাস্থলে এসে ‘মবের’ পক্ষ নেন এবং নারী শিক্ষার্থীদের ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’সহ নানা অশালীন ভাষায় গালাগাল শুরু করেন। এতে এক শিক্ষার্থী ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁর গায়ে হাত তোলে। তাঁর ভাষা ব্যবহার ও আচরণে তিনি যে সহকারী প্রক্টর, তা অনেকেই বুঝতে পারেননি।

চাপ দিয়ে তদন্তে প্রভাব বিস্তার

৫ ফেব্রুয়ারি রাতের ঘটনা নিয়ে পরদিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে আয়োজিত এক সভায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, সব হলের প্রভোস্ট ও হাউস টিউটর, নিরাপত্তা কর্মকর্তা, প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য এবং পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়ন, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী ও একটি নিবন্ধিত ইসলামি রাজনৈতিক দলের ছাত্রসংগঠনের দায়িত্বশীল নেতারা জানিয়েছেন, তদন্ত কমিটি গঠনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই সহকারী প্রক্টর নূরুল হামিদ কানন তাঁদের দলীয় নেতা-কর্মীদের তদন্ত কমিটি ও প্রশাসনকে ‘চাপ দিতে’ তাঁদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান। অন্যদিকে ঘটনায় ‘দায়ী’ হিসেবে চিহ্নিত করা ছাত্রীদের ছবি পাঠিয়ে ছাত্রসংগঠনের নেতাদের প্রক্টর ও প্রশাসনিক কার্যালয় ঘেরাওয়ের কথা বলেন অধ্যাপক ড. মো. কোরবান আলী।

৬ ফেব্রুয়ারি সহকারী প্রক্টর নূরুল হামিদ কানন বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের শীর্ষপর্যায়ের এক নেতাকে হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান। সেই নেতা এবং সহকারী প্রক্টরের কথোপকথনে দেখা যায়, সহকারী প্রক্টর তদন্ত কমিটির প্রজ্ঞাপনটি পাঠিয়ে তাঁকে বলেন, ‘চাপ দাও, দাবি আদায় করো।’ এ ছাড়াও চিহ্নিত করা ছাত্রীদের ছবি পাঠিয়ে সহকারী প্রক্টর লেখেন, ‘এদের বিরুদ্ধে শাস্তি নিতে প্রশাসনকে চাপ দাও। প্রক্টর অফিস ঘেরাও করো। বৈষম্যবিরোধীদের পক্ষে।’ এ ছাড়াও প্রাথমিক শাস্তি হিসেবে হল থেকে যেন নারী ছাত্রীদের বের করে দেওয়া হয়, এ দাবি তোলার কথা বলেন সহকারী প্রক্টর নূরুল হামিদ কানন।

কয়েকটি ছাত্রসংগঠনের নেতারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজকের পত্রিকাকে জানান, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ১৩ ফেব্রুয়ারি বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটি। এই কমিটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেও সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. কোরবান আলী ১২ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতাদের নারী শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের দাবি জানাতে বলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিআরএফ ইয়ুথ ক্লাবের ব্যানারে মানববন্ধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

এসব বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সহকারী প্রক্টর নূরুল হামিদ কানন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা ছাত্রসংগঠনের দায়িত্বে আছেন, তাঁদের সঙ্গে বিভিন্ন মাধ্যমে আমাদের প্রতিনিয়ত যোগাযোগ হয়। সে সময় যেহেতু ওই ঘটনা ঘটছিল, তাই সেটা নিয়েই তাঁদের সঙ্গে কথা হয়েছে, হয় নাই তা বলছি না।’ অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে কেউ এ ধরনের কথা বললে মনে করি আমাদের অপবাদ দেওয়া হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রশাসনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এ ঘটনা ঘটানো হচ্ছে।’

অভিযোগের বিষয়ে আরেক সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. কোরবান আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এসব বিষয়ে তো আমি কিছু জানি না, আপনার কাছ থেকেই বিষয়টি জানলাম।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার কয়েকজন ছাত্র আমাকে জিজ্ঞেস করছে, কোন মেয়েরা আপনাকে ইয়ে করেছে, তাদের ছবি পাঠান, আমি বিভিন্ন মাধ্যমে আসা ছবিগুলো তাদের পাঠিয়েছি। ঘেরাওয়ের কথা বলার কোনো প্রশ্নই আসে না।’ ছাত্রসংগঠনের নেতারা তবে মিথ্যা অভিযোগ করছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তা তো অবশ্যই। এগুলো করার কোনো দরকার আছে আমার?’ নারী শিক্ষার্থীদের ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে অশালীন ভাষায় গালাগালের বিষয়টি উল্লেখ করলে তিনি বলেন, ‘আপনি ভিডিওতে যা শুনেছেন, তা ভুল শুনেছেন। আপনার শোনা ঠিক নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সখীপুরে জোঁকের অস্বাভাবিক উৎপাত, উদ্বেগ-শঙ্কা

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি 
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ৪৩
সখীপুর উপজেলার মুচারিয়া পাথার এলাকায় গাছের পাতায় ঘোরাফেরা করছে জোঁক। ছবি: আজকের পত্রিকা
সখীপুর উপজেলার মুচারিয়া পাথার এলাকায় গাছের পাতায় ঘোরাফেরা করছে জোঁক। ছবি: আজকের পত্রিকা

টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলাজুড়ে এবার জোঁকের অস্বাভাবিক উপদ্রব দেখা দিয়েছে। বিশেষত এ বছর অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে জোঁকের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় রোপা আমন ধান কাটা ও দৈনন্দিন কৃষিকাজ নিয়ে উদ্বেগ ও শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকেরা। ছোট জলাশয়, ধানখেত থেকে শুরু করে বাড়ির আঙিনা পর্যন্ত এদের আনাগোনায় হাঁস, মুরগি, গবাদিপশু ও শিশুরা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা; যেমন দাড়িয়াপুর, হামিদপুর, গজারিয়া, মুচারিয়া পাথার, বড়চওনা, দারিপাকা, কচুয়া, কালিয়া, মৌলভীবাজার, শ্রীপুর, বটতলী, কালিদাস, বোয়ালী, প্রতিমা বংকীসহ প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে জোঁকের উপদ্রব লক্ষ করা গেছে। গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়ার শরীরে জোঁক লেগে রক্ত শোষণ করছে।

শুধু মাঠ নয়, বাড়ির আঙিনা, শিশুদের খেলার মাঠ, স্যাঁতসেঁতে জায়গা, পানির পাত্র ও ঝোপঝাড়েও এদের আনাগোনা দেখা যাচ্ছে। এতে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ভেজা মাটি বা ঘাসের সংস্পর্শে এলেই জোঁক শরীরে উঠে আসছে। এতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ছেন কৃষিকাজে নিযুক্ত শ্রমিকেরা। অনেক এলাকায় জোঁকের ভয়ে শ্রমিকেরা মাঠে নামতে অনীহা প্রকাশ করছেন।

উপজেলার মুচারিয়া পাথার গ্রামের কৃষক মজিবর রহমান বলেন, জোঁকের উপদ্রবে খেতখামারে কাজ করতে ভয় করে। গরু-ছাগলের নাক দিয়ে জোঁক গিয়ে রক্ত শুষে নেয়। জোঁক তাড়াতে অনেকেই লবণ, তামাকের গুঁড়া, ডেটলমিশ্রিত পানি ব্যবহার করছে। কেউ কেউ গামবুট বা পলিথিন দিয়ে পা মুড়িয়ে মাঠে নামছে।

পাথারপুর জনতা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানায়, বিদ্যালয় মাঠেও জোঁক আছে। জোঁকের ভয়ে মাঝেমধ্যে তাদের ক্লাস বন্ধ থাকে।

গরুর পায়ে লেগে থাকা জোঁক দেখাচ্ছেন কৃষক। ছবি: আজকের পত্রিকা
গরুর পায়ে লেগে থাকা জোঁক দেখাচ্ছেন কৃষক। ছবি: আজকের পত্রিকা

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিয়ন্তা বর্মন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শুকনো ধানখেতে জোঁকের উপস্থিতি দেখা যায়নি। তবে এ বছর বৃষ্টির পরিমাণ বেশি থাকায় বাড়ির আঙিনার স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে জোঁকের উপদ্রব বেশি। আমরা কৃষকদের বাড়ির আশপাশ পরিচ্ছন্ন রাখার পরামর্শ দিচ্ছি। এ ছাড়া মাঠপর্যায়ের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারাও কৃষকদের নিয়মিত সচেতন করছেন।’

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. সাইদুর রহমান বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার জোঁকের উপদ্রব একটু বেশি। গবাদিপশু সুরক্ষায় আক্রান্ত এলাকায় সচেতনতা বৃদ্ধি, ওষুধ সরবরাহ ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সখীপুরে ইয়াবাসহ শ্রমিক দল নেতা গ্রেপ্তার, দল থেকে বহিষ্কার

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি 
গ্রেপ্তার শ্রমিক দল নেতা সামছুল আলম। ছবি: আজকের পত্রিকা
গ্রেপ্তার শ্রমিক দল নেতা সামছুল আলম। ছবি: আজকের পত্রিকা

টাঙ্গাইলের সখীপুরে ৩৮০টি ইয়াবা ট্যাবলেটসহ সামছুল আলম (৩৫) নামের এক শ্রমিক দল নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলার দেবরাজ এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং আজ শনিবার সকালে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তার সামছুল আলম উপজেলার বড়চওনা ইউনিয়ন শ্রমিক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং কুতুবপুর শুকনারছিট এলাকার মজিবর রহমানের ছেলে।

সখীপুর থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ উপজেলার দেবরাজ এলাকায় অবস্থান নেয়। পরে ওই এলাকা থেকে মাদকদ্রব্যসহ সামছুলকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর কাছ থেকে ৩৮০টি ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে।

এদিকে গ্রেপ্তারের খবর ছড়িয়ে পড়লে শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে দলীয় সকল পদ থেকে সামছুল আলমকে বহিষ্কার করা হয়। উপজেলা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক মো. মতিন ও সদস্যসচিব বাবুল মিয়া এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানান, দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গ, দলের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে সামছুলকে দলীয় প্রাথমিক সদস্যপদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সখীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) লিবাস চক্রবর্তী বলেন, ‘আসামি কোনো দলের নেতা কি না, তা আমাদের জানা নেই। তাঁর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শিশুশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষককে গণপিটুনি, প্রাণ বাঁচাতে পুলিশ বক্সে আশ্রয়

গাজীপুর (শ্রীপুর) প্রতিনিধি
অভিযুক্ত শিক্ষক দৌড়ে গিয়ে পুলিশ বক্সে আশ্রয় নিলে সেখানে তাঁকে দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ জনতা। ছবি: আজকের পত্রিকা
অভিযুক্ত শিক্ষক দৌড়ে গিয়ে পুলিশ বক্সে আশ্রয় নিলে সেখানে তাঁকে দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ জনতা। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে মাদ্রাসার এক শিশুশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষককে গণপিটুনি দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে ওই শিক্ষক দৌড়ে গিয়ে পুলিশ বক্সে আশ্রয় নিলে সেখানে তাঁকে দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। খবর পেয়ে ওসির নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে হেফাজতে নেয়। এ সময় পুলিশ ও বিক্ষুব্ধ জনতার মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে।

গতকাল শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) রাতে উপজেলার মাওনা চৌরাস্তা এলাকায় পুলিশ বক্সে এই ঘটনা ঘটে। শুক্রবার রাত ১১টায় পুলিশ বক্স থেকে অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে পুলিশ। অভিযুক্ত মোহাম্মদ মহসিন (৩৫) নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া উপজেলার কাচুটিয়া গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে। তিনি শ্রীপুর উপজেলার দারুল হিকমা হাফিজিয়া ক্যাডেট মাদ্রাসার শিক্ষক।

সরেজমিনে দেখা যায়, রাত সোয়া ৯টার দিকে অভিযুক্ত শিক্ষককে গণপিটুনি দেন মাদ্রাসার আশপাশের বাসিন্দা ও ভুক্তভোগী শিশুশিক্ষার্থীর স্বজনেরা। এরপর প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে গিয়ে মাওনা চৌরাস্তা এলাকার জেলা পুলিশ বক্সে আশ্রয় নেন অভিযুক্ত শিক্ষক। এরপর কয়েক শ মানুষ পুলিশ বক্স ঘিরে ফেলে। এ সময় পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি সামাল দিতে চেষ্টা করেন। পরে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে কয়েক দফায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। দুই ঘণ্টার চেষ্টায় স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় তাঁকে আটক করে থানায় নেয় পুলিশ।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, প্রথমে বিষয়টি জানার পরপরই পুলিশ পাঠানো হয়। পরে পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হয়ে পড়ায় অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় বিক্ষুব্ধ জনতাকে ধাওয়া দিয়ে অভিযুক্ত মাদ্রাসাশিক্ষককে আটক করে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাইকোর্টের সামনে মধ্যরাতে গাড়িচাপায় নারীর মৃত্যু

ঢামেক প্রতিবেদক
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ৫৭
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর শাহবাগ থানাধীন হাইকোর্টের সামনে সড়ক দুর্ঘটনায় অজ্ঞাত পরিচয় (৩০) এক নারী নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। গুরুতর অবস্থায় পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক রাত আড়াইটার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।

শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হামিদুল ইসলাম জানান, রাতে জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এর মাধ্যমে খবর আসে হাইকোর্টের সামনে কোনো যানবাহনের ধাক্কায় এক নারী গুরুতর আহত হয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

হামিদুল ইসলাম আরও জানান, স্থানীয় ব্যক্তিদের মাধ্যমে জানা গেছে, ওই নারী ভবঘুরে প্রকৃতির। হাইকোর্ট এলাকায় থাকতেন। তাঁর পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত