Ajker Patrika

বন্দরের এনসিটি ও লালদিয়ারচর ইজারার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করলে হরতাল-অবরোধ: স্কপ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের (স্কপ) গণ-অনশন কর্মসূচি। ছবি: আজকের পত্রিকা
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের (স্কপ) গণ-অনশন কর্মসূচি। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি ও লালদিয়ারচর টার্মিনাল ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করলে হরতাল, অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন শ্রমিক-কর্মচারীরা। শনিবার (১ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের (স্কপ) গণ-অনশন কর্মসূচি থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক ও বন্দর সিবিএর সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহারের সভাপতিত্বে অনশন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন স্কপ কেন্দ্রীয় নেতা ও জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন।

কর্মসূচি চলাকালে আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি। সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত ও আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন এনসিটি বর্তমানে দেশের সবচেয়ে সফল কনটেইনার টার্মিনাল। অথচ এটিকে বিদেশি কোম্পানি ডিপি ওয়ার্ল্ডের হাতে তুলে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত জাতীয় স্বার্থবিরোধী ও আত্মঘাতী। এই সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।’

বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (টিইউসি) চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সভাপতি ও শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য তপন দত্ত বলেন, ‘বিগত সরকারের সময়ে নেওয়া এই একতরফা সিদ্ধান্ত বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বহাল রেখেছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। দেশের কৌশলগত সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার এই চক্রান্ত জনগণ কখনোই মেনে নেবে না। সরকারকে অবশ্যই এনসিটি ও লালদিয়ারচর ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে, অন্যথায় হরতাল, অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচির মাধ্যমে চট্টগ্রাম অচল করে দেওয়া হবে।’

সভাপতির বক্তব্যে কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার বলেন, ‘রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো জনগণের সম্পদ রক্ষা করা, বিক্রি বা ইজারা দেওয়া নয়। অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। একই সঙ্গে বন্দর শ্রমিকদের হয়রানি ও অযৌক্তিক কারণ দর্শানো নোটিশের মাধ্যমে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।’

বক্তারা চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সাম্প্রতিক গণবিজ্ঞপ্তিতে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে বলেন, প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা বা পুলিশি বাধা দিয়ে কোনো ন্যায্য আন্দোলনকে দমন করা যায়নি, এবারও যাবে না। শ্রমিকেরা ঐক্যবদ্ধভাবে তাঁদের অধিকার আদায়ে শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবে।

সরকার যদি অবিলম্বে এনসিটি ও লালদিয়ারচর ইজারা বাতিলের ঘোষণা না দেয়, তবে সার্বিক কর্মবিরতি, চট্টগ্রামে হরতাল ও বন্দর অবরোধসহ আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

টিইউসির কেন্দ্রীয় সংগঠক ফজলুল কবির মিন্টুর সঞ্চালনায় অনশনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি শাহ আলম, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এস কে খোদা তোতন, ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের খোরশেদুল আলম, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শ ম জামাল উদ্দিন, ডক শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক তসলিম হোসেন সেলিম, বাসদ চট্টগ্রাম জেলা শাখার নেতা আল কাদেরী জয়, গণমুক্তি ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি রাজা মিয়া, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগর শাখার সভাপতি মিরাজ উদ্দিন, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশন জেলা আহ্বায়ক জাহেদুন্নবী কনক, টিইউসি চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মছিউদ্দৌলা, স্কপের যুগ্ম আহ্বায়ক রিজোয়ানুর রহমান খান, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট চট্টগ্রাম জেলা শাখার আহ্বায়ক হেলাল উদ্দিন কবির, বিএলএফ চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সভাপতি নুরুল আবসার তৌহিদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...