Ajker Patrika

দলের নেতাকে ‘পাগলা কুকুর’ বললেন বিএনপির আহ্বায়ক

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
ইদ্রিস মিয়া। ছবি: সংগৃহীত
ইদ্রিস মিয়া। ছবি: সংগৃহীত

দলীয় অনুষ্ঠানে প্রতিপক্ষের নেতা-কর্মীদের বেরাইজ্জা (লজ্জাহীন), বেশ্যা (পতিতা) ও পাগলা কুকুর শব্দ ছুড়ে দিয়ে ক্ষোভ ঝাড়লেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইদ্রিস মিয়া। গত বুধবার (১১ জুন) এই বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দলের ভেতরে-বাইরে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।

এ ঘটনায় দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হকের সমর্থকেরা পটিয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করেছেন। তাঁরা নেতা-কর্মীদের নিয়ে ইদ্রিস মিয়ার কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান। গতকাল শুক্রবারও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন তাঁরা।

জানা যায়, গত বুধবার (১১ জুন) চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপির সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচি পটিয়া কলেজ গেট দলীয় কার্যালয়ে দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. ইদ্রিস মিয়ার উদ্বোধনের কথা ছিল।

কিন্তু জেলা কমিটির আরেক নেতা এনামুল হক এনামের অনুসারীরা তাঁদের নিয়ন্ত্রণাধীন দলীয় কার্যালয় দখলের আশঙ্কায় ঈদ পুনর্মিলনী নামে পাল্টা একটি অনুষ্ঠান দিয়ে মারমুখী অবস্থান নেন। এই নিয়ে দিনভর দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে।

তবে শেষ পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই সন্ধ্যায় পৌর সদরের ইন্দ্রপুল বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্স এলাকায় শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠান করেন ইদ্রিস মিয়ার অনুসারীরা।

ওই অনুষ্ঠানের বক্তব্যে (৪ মিনিট ২৭ সেকেন্ডের ভিডিও) দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইদ্রিস মিয়াকে বলতে শোনা যায়, ‘হল টুডে কমিউনিটি সেন্টারে বিএনপির দক্ষিণ জেলার সভায় গ্রুপিং রাজনীতির কারণে ভাগিনাকে (এনামুল হক) উত্তম-মাধ্যম দেওয়া হয়েছিল। সেই মাইর খেয়ে ভাগিনা নেতা হয়েছে। নেতা থেকে এখন আবার “কেথা” হয়ে গেছে। আজকে দলের মধ্যে একটি দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে সে আবার নেতা হওয়ার চেষ্টা করেছে। আলহাজ ইদ্রিস মিয়া সে সুযোগ দেবে না।’

তিনি এনাম অনুসারীদের উদ্দেশে করে বলেন, ‘আমি তাদের নাম বলব না। যাদের একজন চাঁদাবাজ ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে চাঁদাবাজি করে দলের দুর্নাম ছড়িয়েছে। তারা কয়েকজন হলো “বেরাইজ্জ্যাদের” মতো, আজকে এদিকে, কালকে আরেক দিকে, আবার আজকে জুয়েল সাহেবের সঙ্গে, কালকে ইদ্রিস মিয়ার সঙ্গে, পরশু শাহাদাতের সঙ্গে।

‘এসব বিএনপি নামধারী নেতাদের আমি “বেরাইজ্জ্যা, বেশ্যা” উপাধি দিলাম। আর যখন আশ্বিন-কার্তিক মাস আসে তখন কুকুর পাগল হয়ে যায়। এখন আমাদের বিএনপির বন্ধুরা (এনামুল হক ও তার অনুসারী) পাগল হয়ে গেছে। তারা যাকে পায় তাকে কুকুরের মতো কামড় দেওয়ার চেষ্টা করছে। আপনারা তাদের কাছ থেকে সতর্ক থাকবেন। কারণ, বর্তমানে কুকুরে কামড়ালে টিকা পাওয়া যায় না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইদ্রিস মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই দিনের অনুষ্ঠানে সুযোগ সন্ধানীদের বিরুদ্ধে আমি বক্তব্য রেখেছি। এর বেশি কথা বলতে পারছি না। আমি একটা মিটিংয়ে আছি। পরে আপনাকে ফোন করব।’

অপর দিকে জেলা বিএনপির নেতা এনামুল হক বলেন, ‘আমাকে নিয়ে ওনার এ ধরনের বক্তব্য রাখা উচিত হয়নি। রাজনীতিতে উনি এ ভাষা ব্যবহার করতে পারেন না। আমাদের মধ্যে অনেক মনোমালিন্য, ক্ষোভ ও দুঃখ থাকাটা স্বাভাবিক। কিন্তু উনি যে ভাষা ব্যবহার করেছেন, সেটা রাজনীতির ভাষা হতে পারে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত