Ajker Patrika

৩ পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আত্মগোপনে, কার্যক্রম ব্যাহত

আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫: ২৫
৩ পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আত্মগোপনে, কার্যক্রম ব্যাহত

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে চলে গেছেন তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা। ৫ আগস্টের পর থেকে তাঁদের কার্যালয়ে দেখা যাচ্ছে না। এতে জেলা পরিষদগুলোর কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এদিকে, নতুন পরিষদ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়। 

রাঙামাটি জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা নুর উদ্দিন মুহাম্মদ শিবলী নোমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে অংসুই প্রু চৌধুরী পদত্যাগ করেছেন। চেয়ারম্যান ও সদস্যরা না আসায় কাজে বিঘ্ন হচ্ছে। প্রধান নির্বাহীর স্বাক্ষরে ১০ হাজার টাকার বেশি বিল-ভাউচার পরিশোধ করা যাচ্ছে না।’ 

স্থানীয়রা জানান, পার্বত্য জেলা পরিষদগুলোতে নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও গত তিন যুগে হয়নি। দল মনোনীত প্রতিনিধিদের দিয়ে চলছিল কার্যক্রম। এতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি না থাকায় মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারেননি তাঁরা। পার্বত্য চুক্তি অনুযায়ী স্থায়ী বাসিন্দাদের নিয়ে পৃথক ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও নির্বাচন বিধিমালা তৈরি না হওয়ায় নির্বাচন হচ্ছে না। 

তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পাহাড়ের শাসন পদ্ধতিতে স্বচ্ছতা, গতিশীলতা ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে ১৯৮৯ সালে পাহাড়ি সম্প্রদায় থেকে একজনকে চেয়ারম্যান করে ৩৪ সদস্যের স্থানীয় সরকার পরিষদ গঠন করা হয়। ১৯৮৯ সালের ২৫ জুন তিন বছর মেয়াদের জন্য এসব পরিষদের একবার নির্বাচন হয়েছিল। পরে পাঁচ বছর মেয়াদ বাড়ানো হয়। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি।

১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরের পর স্থানীয় সরকার পরিষদের পরিবর্তে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান নামে পার্বত্য জেলা পরিষদ নামকরণ করে একজন পাহাড়ি ব্যক্তিকে চেয়ারম্যান ও চারজন সদস্য করে অন্তর্বর্তী পরিষদ গঠন করা হয়। তবে একই বছরে বান্দরবানের এক পাহাড়ি ব্যক্তি পরিষদগুলোতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়ায় হাইকোর্টের রিট করলে তিন মাসের মধ্যে পরিষদের নির্বাচন অথবা পরিষদের প্রথম নির্বাচিত কমিটির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের রায় হয়। কিন্তু সরকার ওই রায়ের কার্যকারিতার বিরুদ্ধে দফায় দফায় আপিল করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের মেয়াদ বাড়ায়। ফলে যে সরকারই ক্ষমতায় আসে, সেই সরকারেরই মনোনীত দলীয় লোকজন দিয়ে অন্তর্বর্তী পরিষদের কার্যক্রম চলে আসছে বলে স্থানীয়রা জানান। 

২০১৪ সালে সর্বশেষ তিন পার্বত্য পরিষদের আইন সংশোধন করে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদকে পুনর্গঠন করে একজন চেয়ারম্যানসহ ১৫ সদস্যের অন্তর্বর্তী পরিষদ গঠন করে সরকার। এতে আওয়ামী লীগ মনোনীত ব্যক্তিদের নিয়ে পরিষদের কার্যক্রম চলছিল। 

এদিকে, ৫ আগস্টের পর তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা পলাতক। তবে, ৩ সেপ্টেম্বর রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অংসুই প্রু চৌধুরী। খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু ও বান্দরবানের জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা এবং সদস্যরা কাগজে-কলমে বহাল রয়েছেন। 

দেড় মাস ধরে তিন জেলা পরিষদে কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার কথা আজকের পত্রিকাকে স্বীকার করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এ কে এম শামিমুল হক। তিনি বলেন, ‘আমরা নতুন পরিষদ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছি। দ্রুত পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা পরিষদের নতুন চেয়ারম্যান ও সদস্য পাব, এরপরই সংকট কেটে যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত