Ajker Patrika

সুড়ঙ্গ খোঁড়া শেষ, এবার রাস্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০২১, ১৩: ০০
সুড়ঙ্গ খোঁড়া শেষ, এবার রাস্তা

কর্ণফুলী নদীর সুড়ঙ্গের কাজ শেষ হলো বলে। এবার রাস্তা তৈরির অপেক্ষা। আশা করা হচ্ছে, এক বছরের মধ্যে টানেলটি খুলে দেওয়া হবে যানবাহনের জন্য।

টানেলের দ্বিতীয় টিউবের খননকাজ শেষ হচ্ছে আগামীকাল শুক্রবার। এই টানেল তৈরিতে কাজ করেছেন ৯৮০ জন শ্রমিক। বোরিং কাজ শেষ হওয়ায় নদীর তলদেশে দুটি সুড়ঙ্গই দৃশ্যমান হবে এদিন। এর মাধ্যমে নদীর দুই পাশে যাতায়াতের পথও উন্মুক্ত হচ্ছে। এখন চলাচলের এই পথ উপযুক্ত করে তৈরি করার কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক ।

কর্ণফুলী টানেলের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী হারুনুর রশিদ চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা নির্দিষ্ট সময়েই দুটি টিউবের কাজ শেষ করতে পেরেছি। এটি খুবই চ্যালেঞ্জিং। এখন বাকি থাকল টিউব দুটিকে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করে তোলা। শুক্রবার আমরা কর্মকর্তা ও প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা সেখানে থাকব। যদিও এ উপলক্ষে বড় করে কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করছি না।’

হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, `এরপর টিউবটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা, স্ল্যাব বসানো, রিং তৈরি, কেব্‌ল স্থাপন, লাইটিং, সড়ক ও পিচ ঢালাইয়ের কাজ শুরু করব। আগের টিউবেও এসব কাজ চলছে। এ পর্যন্ত প্রকল্পের ৭৩ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আশা করছি ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বা তার আগেই স্বপ্নের টানেল যানবাহনের জন্য খুলে দিতে পারব।’

প্রকল্প পরিচালকের কাছ থেকে জানা যায়, কর্ণফুলী টানেলে মোট দুটি টিউব। একটিতে যানবাহন শহর থেকে নদীর আনোয়ারা প্রান্তে যাবে, অন্যটি দিয়ে আসবে। এর মধ্যে শহর থেকে আনোয়ারায় যাওয়ার টিউবটি গত বছরের আগস্ট মাসেই খনন শেষ হয়েছিল। ডিসেম্বর মাসে দ্বিতীয় টিউব খননের কাজ শুরু হয়। ১০ মাসের মধ্যে এটিরও কাজ শেষ হলো। নদীর তলদেশে এ দুটি টিউব লম্বায় ২ হাজার ৫৫০ মিটার।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, কর্ণফুলী টানেলে মোট ৯৮০ জন শ্রমিক কাজ করেছেন। এর মধ্যে ৬০০ জন শ্রমিক এদেশের। চীনা শ্রমিক ৩৮০ জন। প্রকল্পের শুরুতে ২৯৩ জন চীনা শ্রমিক কাজ করলেও পরে আরও ৮৭ জন যোগ দেন তাঁদের সঙ্গে। চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মাহবুবুল আলম চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, টানেল হলে নদীর দক্ষিণ পাড়ের আনোয়ারা প্রান্তে আরেকটি শহর গড়ে উঠবে, যেটাকে ওয়ান সিটি টু টাউন বলা হচ্ছে। টানেল হলে ওই পারে যানবাহন পারাপারে নতুন মাত্রা যোগ হবে। শহরের ওপর চাপ কমবে। মানুষ নির্বিঘ্নে সাগরপাড় ধরে শহর পাড়ি দিয়ে কক্সবাজার সড়কে উঠবে। এ ছাড়া শিল্প কারখানা স্থাপনের পাশাপাশি পর্যটন স্থান গড়ে তোলাও সম্ভব।

টানেলের সমীক্ষা প্রতিবেদনে দেখা যায়, বর্তমান কর্ণফুলী সেতু দিয়ে পারাপারের চেয়ে প্রতিটি গাড়ি টানেলে অন্তত ২০ মিনিট আগে নদী পাড়ি দেবে।  
প্রথম বছরে ৫০ লাখ যানবাহন এই টানেল পাড়ি দেবে। ২০৩০ সাল নাগাদ পার হবে ১ কোটি ৩০ লাখ  গাড়ি। টোল বাবদ প্রথম বছরে সম্ভাব্য আয় হতে পারে ২০০ কোটি টাকা।

২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর টানেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। টানেলটি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১০ হাজার ৩৭৪ কোট টাকা। চীনা সরকারের অর্থায়নে টানেল নির্মাণে কাজ করছে চায়না কমিউনিকেশন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত