Ajker Patrika

ডিসেম্বরের মধ্যে পারকি পর্যটন কমপ্লেক্সের কাজ শেষ হবে: শেখ বশির

কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
আপডেট : ২৭ আগস্ট ২০২৫, ১৯: ০৯
আজ দুপুরে পারকি পর্যটন কমপ্লেক্সের কাজ পরিদর্শনে অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য, বস্ত্র ও পাট এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনবিষয়ক উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ দুপুরে পারকি পর্যটন কমপ্লেক্সের কাজ পরিদর্শনে অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য, বস্ত্র ও পাট এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনবিষয়ক উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামের পারকি সৈকতসংলগ্ন এলাকায় ৭৯ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন পারকি সৈকত পর্যটন কমপ্লেক্সের কাজ আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য, বস্ত্র ও পাট এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনবিষয়ক উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। আজ বুধবার (২৭ আগস্ট) বেলা ১১টায় পারকি সমুদ্রসৈকত ও ‘পারকিতে পর্যটন সুবিধাদি প্রবর্তন (২য় সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্প’ পরিদর্শন শেষে এ কথা জানান তিনি।

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘পানি সমস্যাসহ নানা কারণে পারকি সমুদ্রসৈকতে নির্মাণাধীন পর্যটন কমপ্লেক্সের কাজে ধীরগতি দেখা দেয়। আমি এই প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত সব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্প পরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছি, তাঁরা চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে এই প্রকল্পের সব ধরনের অবকাঠামোগত কাজ শেষ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।’

এ সময় উপদেষ্টা বাংলাদেশ বিমানের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বলেন, ‘সব নৈরাজ্য কাটিয়ে বাংলাদেশ বিমানকে একটি সচল ও ব্যবসাসফল প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা হবে। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর আমার প্রধান লক্ষ্য হয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসকে লাভজনক ও টেকসই একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড় করানো। এ জন্য সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা ও সহযোগিতা প্রয়োজন।’ তিনি বলেন, ‘বিমানের চলমান সংকট কাটাতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। সেবার মান উন্নয়ন, যাত্রীদের আস্থা অর্জন ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের দিকেও আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি।’

এ সময় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব বেগম নাসরীন জাহান বলেন, পারকি সমুদ্রসৈকতে পর্যটন কমপ্লেক্স প্রকল্পটি একটি সম্ভাবনাময় প্রকল্প। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় বাসিন্দাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। সঙ্গে এই অঞ্চলের ট্যুরিস্ট পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ভূমিকার বিষয়ে জোর দেন তিনি।

আজ দুপুরে পারকি পর্যটন কমপ্লেক্সের কাজ পরিদর্শনে অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য, বস্ত্র ও পাট এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনবিষয়ক উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ দুপুরে পারকি পর্যটন কমপ্লেক্সের কাজ পরিদর্শনে অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য, বস্ত্র ও পাট এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনবিষয়ক উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। ছবি: আজকের পত্রিকা

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান সায়েমা শাহীন সুলতানা, প্রকল্প পরিচালক মাজেদুর রহমান, আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আক্তার, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দীপক ত্রিপুরাসহ পর্যটন করপোরেশন ও ঠিকাদারের প্রতিনিধিরা। পরিদর্শন শেষে উপদেষ্টা পর্যটন কমপ্লেক্সে সামনে বৃক্ষরোপণ করেন।

বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে পারকি সৈকতসংলগ্ন এলাকায় ১৩ দশমিক ৩৩ একর জায়গায় শুরু হয় ৭৯ কোটি টাকার একটি উন্নয়ন প্রকল্প। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো তা শেষ হয়নি। মাঝখানে দীর্ঘদিন বন্ধও ছিল প্রকল্পের কাজ।

প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেন, ওই প্রকল্পের অধীনে গড়ে তোলা হচ্ছে ১০টি সিঙ্গেল কটেজ (প্রতিটি ৮০০ বর্গফুটের), ১ হাজার ৩৫০ বর্গফুটের চারটি ডুপ্লেক্স কটেজ, তিনতলাবিশিষ্ট মাল্টিপারপাস ভবন—যাতে রয়েছে অফিস ভবন, রেস্তোরাঁ। প্রতিটি তলার আয়তন ৬ হাজার ৩২৩ বর্গফুট। তিনতলাবিশিষ্ট সার্ভিস ব্লক।

আজ দুপুরে পারকি পর্যটন কমপ্লেক্সের কাজ পরিদর্শনে অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য, বস্ত্র ও পাট এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনবিষয়ক উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ দুপুরে পারকি পর্যটন কমপ্লেক্সের কাজ পরিদর্শনে অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য, বস্ত্র ও পাট এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনবিষয়ক উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। ছবি: আজকের পত্রিকা

এ ছাড়া অন্যান্য কাজের মধ্যে রয়েছে সাবস্টেশন ভবন (১ হাজার ৫০ বর্গফুট), অভ্যন্তরীণ সড়ক নির্মাণ, সিকিউরিটি রুম, দুটি পিকনিক শেড (টয়লেট, রান্নাঘরসহ প্রতিটি ১ হাজার ৭০৮ বর্গফুটের)। এ ছাড়া ওই প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে হ্রদ ও শিশুদের খেলাধুলার জায়গা।

প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রকল্পের কাজগুলোকে তিন ভাগে বাস্তবায়ন করছে তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে সীমানাপ্রাচীর ও গেট পোস্টের কাজ করছে রাজ করপোরেশন। বালু ভরাট, হ্রদ, ভেতরের রাস্তা ও নালার কাজ নিয়াজ ট্রেডার্স এবং অবকাঠামোগত অন্যান্য কাজ করছে দেশলিংক লিমিটেড। এর মধ্যে দেশলিংক লিমিটেডের দীর্ঘসূত্রতার কারণে প্রকল্পটি সময়মতো শেষ হয়নি।

স্থানীয় লোকজন জানান, পারকি সৈকতের পাশে টানেল সার্ভিস এরিয়া ৪৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে সাত তারকা মানের অতিথিশালা নির্মাণের কোনো প্রয়োজন না থাকলেও সেটি দ্রুত সময়ের মধ্যে করা হয়েছে। অথচ মাত্র ৭৯ কোটি টাকা ব্যয়ে পর্যটন করপোরেশনের পর্যটন কমপ্লেক্সের কাজটি শেষ করা হয়নি, যা রহস্যজনক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৩
নিহত লায়লা আফরোজ ও নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ। ছবি: সংগৃহীত
নিহত লায়লা আফরোজ ও নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ। ছবি: সংগৃহীত

‎রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় গৃহকর্মী আয়েশাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুরে ঝালকাঠি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

‎গ্রেপ্তারের বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন।

‎মামুন বলেন, গৃহকর্মী আয়েশাকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঝালকাঠি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গত সোমবার সকালে শাহজাহান রোডের ১৪ তলা একটি আবাসিক ভবনের সপ্তম তলায় লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তাঁর মেয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।

মা-মেয়ে হত্যায় অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মা-মেয়ে হত্যায় অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশা। ছবি: আজকের পত্রিকা

গতকাল তাঁদের মরদেহ নাটোরে দাফন করা হয়েছে। মামলার এজাহারে বাসা থেকে মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র খোয়া যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

ভবনের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া তরুণী (২০) এই জোড়া খুনে জড়িত বলে সন্দেহ স্বজনদের। ঘটনার পর থেকে ওই তরুণী পলাতক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি 
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মজিরুলের নেতৃত্বে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মজিরুলের নেতৃত্বে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

জীবন আছে যার, তার মৃত্যু অনিবার্য। মৃত্যুর পর মানুষের শেষ ঠিকানা কবর। মৃতদেহ গোসল করিয়ে কাফন পরানো হয়, জানাজা শেষে তাকে শায়িত করা হয় চিরনিদ্রার ঘরে। এই কবর খোঁড়ার দায়িত্বটি গ্রামের কিছু মানুষ বহু বছর ধরে স্বেচ্ছায়, বিনা পারিশ্রমিকে পালন করে আসছেন, যাঁরা সবার কাছে ‘গোরখোদক’ নামে পরিচিত। আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় তাঁরা করে থাকেন এই কাজ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গোরখোদকেরা কোনো পারিশ্রমিক নেন না। গ্রামের যে কেউ মারা যাক, নিজেদের ব্যস্ততা ফেলে তাঁরা ছুটে আসেন কবর খুঁড়তে। তাঁদের এই মানবিক কাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গ্রামের লোকেরা দোয়া করেন—আল্লাহ যেন তাদের সুস্থ ও ভালো রাখেন।

দেবীপুর গ্রামের বাসিন্দা গোরখোদক মজিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ৫৫ বছর ধরে কবর খুঁড়ছি। যত দিন সুস্থ থাকব, এই কাজ চালিয়ে যাব। আমাদের গ্রাম ছাড়াও অন্য গ্রাম থেকে কেউ ডাকলে সেখানেও যাই। ছোটবেলায় ওস্তাদের কাছে ডালি ধরেই শিখেছি। গরিব মানুষ, মাঠে কাজ করি; কিন্তু কেউ মারা গেলে দ্বিধা করি না—এই কাজ আমার নেশায় পরিণত হয়েছে।’

মজিরুল আরও জানান, এখন তিনি তরুণদেরও এই কাজ শেখাচ্ছেন।

গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

গোরখোদক শাকের আলী বলেন, ‘আমরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করি। কখনো কোনো টাকা নিই না। যেখানেই থাকি, গ্রামের কারও মৃত্যুর সংবাদ শুনলে দ্রুত কবর খুঁড়তে চলে আসি।’

গোরখোদক ফুয়াদ হোসেন বলেন, ‘অন্য গ্রাম থেকে ডাক এলেও আমরা যাই। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই করি এই কাজ। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’

স্থানীয় বাসিন্দা শাজাহান আলী বলেন, ‘কবর খোঁড়া বড় দায়িত্বের কাজ। গ্রামের এসব মানুষ খবর পেলেই দৌড়ে আসে। আমরা তাদের জন্য দোয়া করি।’

মাওলানা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘মৃত ব্যক্তির জন্য কবর খোঁড়া নিঃসন্দেহে সওয়াবের কাজ। হাদিসে এসেছে—যাঁরা কবর খোঁড়েন, আল্লাহ তাদের জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার ফটকের সামনে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। আন্দোলনের মুখে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে সটকে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিল্প ও থানা-পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসেছেন। আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের সাইটালিয়া গ্রামে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানায় এই ঘটনা ঘটে।

কারখানার নারী শ্রমিক মিনারা আক্তার বলেন, ‘অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করে নাই। এক মাসের বেতন না পেলে আমাদের চলা খুবই কঠিন হয়। আমাদের নাওয়া-খাওয়া বন্ধ হয়। আর সেখানে কারখানা কর্তৃপক্ষ দুই মাসের বেতনভাতা বকেয়া রেখেছে। আজ সকালে শ্রমিকেরা জড়ো হলে তারা পালিয়ে যায়।’

মিন্টু নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘এই কারখানায় আমরা তিন বছর ধরে চাকরি করছি। আমাদের বেতনের বাইরে কোনো সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে না। তবু পেটের দায়ে চাকরি করি। দুই মাসের বেতন বকেয়া। আমাদের তো পেট আছে, সন্তান-সংসার আছে। এক মাস দোকান বাকি পরিশোধ করতে না পারলে পরের মাসে আর দোকানি বাকি দেয় না। আমরা কী অবস্থায় আছি, একবার ভাবুন। বেতন পরিশোধ না করে তারা পালিয়ে গেছে।’

আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেহেদী হাসান বলেন, ‘এত দিন ধরে ঋণ করে বলে-কয়ে দোকান থেকে বাকি নিয়ে চলছি। আর পারছি না। এখন দোকান বাকি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতন নিয়ে কমপক্ষে ১০টি তারিখ দিছে। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন পরিশোধ করেনি। শেষে আজ বেতন পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু তারা কারখানা ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে।’

কারখানার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. বুলবুল হাসান বলেন, ‘ব্যাংকের সমস্যার কারণে বেতন-ভাতা পরিশোধ করা যাচ্ছে না। আশা করি, আজকের মধ্যে নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করতে পারব।’ বিনা নোটিশে কারখানার ফটক কেন তালাবদ্ধ? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমি বলতে পারব না।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আহমদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাছ ধরতে গিয়ে ভারতে আটক ৬ জেলে, ১৩ মাস পর হস্তান্তর

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি 
১৩ মাস সাজা ভোগের পর হস্তান্তর হওয়া বাংলাদেশি ছয় জেলে। ছবি: আজকের পত্রিকা
১৩ মাস সাজা ভোগের পর হস্তান্তর হওয়া বাংলাদেশি ছয় জেলে। ছবি: আজকের পত্রিকা

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নাকুগাঁও সীমান্ত দিয়ে ছয় বাংলাদেশি মৎস্যজীবীকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে হস্তান্তর করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁদের হস্তান্তর করা হয়।

হস্তান্তর হওয়া মৎস্যজীবীরা কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার বাসিন্দা। তাঁরা হলেন আবুল হোসেনের ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫), বাহাদুর মিয়ার ছেলে বিপ্লব মিয়া (৪৫), ইসহাক আলীর ছেলে মীর জাফর আলী (৪৫), ইছাক আলীর ছেলে বকুল মিয়া (৩২), ফকির আলীর ছেলে আমের আলী (৩৫), সলিমুদ্দিন ব্যাপারীর ছেলে চাঁন মিয়া (৬০)।

বিজিবি ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৪ নভেম্বর জিঞ্জিরাম নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে ভুলক্রমে সীমান্ত অতিক্রম করে তাঁরা ভারতের ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় স্থানীয় পুলিশ ও বিএসএফ সদস্যরা তাঁদের আটক করে। অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে তাঁরা সেখানে প্রায় ১৩ মাস সাজা ভোগ করেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সন্ধ্যায় শেরপুর ৩৯ বিজিবির দায়িত্বে থাকা এলাকার হাতিপাগার বিজিবি কোয়ার্টার মাস্টার মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে ভারতের কিল্লাপাড়া বিএসএফ ক্যাম্পের সঙ্গে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে বিএসএফ ছয় বাংলাদেশি নাগরিককে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে। এ সময় নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান বলেন, আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর তাঁদেরকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত