Ajker Patrika

৬ মাস না পেরোতেই বিএম কন্টেইনার ফের আগুন, ২ ঘণ্টায় নিয়ন্ত্রণে

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
৬ মাস না পেরোতেই বিএম কন্টেইনার ফের আগুন, ২ ঘণ্টায় নিয়ন্ত্রণে

বিস্ফোরণের ছয় মাস না পেরোতেই আবারও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সেই বিএম কন্টেইনার ডিপোতে। আজ মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ৩টায় ডিপোর শেষ প্রান্তে একটি খোলা শেডে থাকা জুটের শেডে এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। 

এদিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার খবর পেয়ে আগ্রাবাদ ও কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। এরপর টানা দুই ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে ডিপোতে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। 

আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক আব্দুল হামিদ মিয়া বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়েই আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে টানা দুই ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নেভাতে সক্ষম হই। এতে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির পুনরাবৃত্তি থেকে রক্ষা পেয়েছে ডিপো কর্তৃপক্ষ। তবে অগ্নিকাণ্ডের সঠিক কারণ নিরূপণ করা যায়নি। সিগারেটের আগুন থেকে শেডের ভেতরে থাকা জুটে আগুন লাগতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। আগুনে জুট পুড়ে দুই লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।’ 

আগুন নেভানো কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাকুমিরা ফায়ার সার্ভিসের জ্যৈষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফিরোজ মিয়া অগ্নিকাণ্ডের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ‘সোয়া ৩টায় অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে তারা দুটি ইউনিট নিয়ে দ্রুত বিএম ডিপোতে ছুটে যান। তাদের সঙ্গে অগ্নিনির্বাপণ কাজে যোগ দেন আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট। ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিটের ফায়ার ফাইটাররা টানা ২ ঘণ্টা প্রচেষ্টা চালিয়ে বিকেল সোয়া ৫টার পর আগুন পুরোপুরি নেভাতে সক্ষম হই।’ 

বিএম কন্টেইনার ডিপো ব্যবস্থাপনা পরিচালক মইনুল হাসান বলেন, ‘ডিপোর ভেতরে থাকা একটি খোলা শেডে এক টন জুট রাখা ছিল। কিন্তু বিকেলে শেডে জুটের স্তূপে আগুনের ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখে তারা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিই। পরে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত পরিকল্পিত না সিগারেটের আগুন থেকে তা নির্ণয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।’ 

 সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘বিএম কনটেইনার ডিপোর খোলা শেডে থাকা জুটে আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি তারাও ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছেন।’

টানা ২ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরাউপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ডিপোর একটি খোলা শেডে রপ্তানির জন্য রাখা পাটের স্তূপে আগুন লাগে। তবে ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের প্রচেষ্টায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই অল্প সময়ের মধ্যে আগুন নিভে যায়। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।’ 

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৪ জুন (শনিবার) রাত সাড়ে ৯টায় উপজেলার কাশেম জুট মিল গেট এলাকায় অবস্থিত বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগে। খবর পেয়ে কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নেভাতে যান। এ সময়ই সেখানে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। বিএম কনটেইনার ডিপোতে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিটের ১৮৩ ব্যক্তি আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। তাঁদের হিসাব অনুযায়ী এ ঘটনায় ৪৯ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২০০ জন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৯ জন ফায়ার সার্ভিস কর্মী রয়েছেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত