Ajker Patrika

মেয়েকে দেখতে ছুটি নেওয়ার কথা ছিল ফায়ার ফাইটার মনিরের

নাঙ্গলকোট (কুমিল্লা) ও সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ জুন ২০২২, ১৮: ৩৪
মেয়েকে দেখতে ছুটি নেওয়ার কথা ছিল ফায়ার ফাইটার মনিরের

ঈদের সপ্তাহখানেক আগে মেয়ে সন্তানের বাবা হয়েছিলেন চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের ফায়ার ফাইটার মনিরুজ্জামান মনির। নবজাত সন্তানকে দেখতে কাজ থেকে ছুটি নিয়ে কয়েক দিনের মধ্যে বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু সে আশা আর পূর্ণ হয়নি এ ফায়ার ফাইটারের।

গতকাল শনিবার রাতে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কাশেম জুট মিল গেট এলাকার বিএম কন্টেইনার ডিপোর বিস্ফোরণের ঘটনায় আগুন নেভাতে গিয়ে প্রাণ হারান মনির। দুর্ঘটনায় আহত হয়ে পরবর্তীতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ রোববার ভোররাতে মৃত্যু হয় তাঁর। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে মনিরুজ্জামানের মরদেহ শনাক্ত করেন তাঁর মামা মীর হোসেন।

মনিরের বাড়ি কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের নাইয়ারা গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হকের ছেলে। বিস্ফোরণে নিহত মনিরের মরদেহ নিতে চমেক হাসপাতালের বাইরে অপেক্ষা করছেন তাঁর স্বজনেরা।

বিস্ফোরণে নিহত মনিরুজ্জামানের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ৭ বছর আগে তিনি ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সে যোগ দেন। যোগ দেওয়ার পর থেকে ঢাকায় কর্মরত ছিলেন ২ মাস আগে চট্টগ্রামের কুমিরা ফায়ার স্টেশনে নার্সিং অ্যাটেনডেন্ট হিসেবে যোগ দেন। মনির ৫ বছর আগে ভালোবেসে বিয়ে করেন বরিশাল জেলার গলাচিপা উপজেলার বাঁশখালী গ্রামের শোহরাব মুনশির মেয়ে মাহমুদা আক্তার মুক্তাকে। তিনি দুই মেয়ে সন্তানের বাবা। তাঁর বড় মেয়ে জন্মের পরপরই মারা যায়। দ্বিতীয় মেয়ে জান্নাতুল মাওয়া ঈদুল ফিতরের এক সপ্তাহ আগে জন্ম নেয়।

মনিরুজ্জামান মনিরের মামা মীর হোসেন বলেন, ‘রোববার ভোরে ফেসবুকে জানতে পারি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কয়েকজন ফায়ার সার্ভিসকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। খবর দেখে আমি মনিরের মোবাইলে ফোন করে ফোন বন্ধ দেখে আমি ছুটে যাই চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে। সেখানে অনেক পুড়ে যাওয়া মৃত দেহের মাঝে আমার ভাগনের মরদেহ দেখে চিনতে পারি। দুদিন আগেই আমি কুমিরায় গিয়ে মনিরের সঙ্গে সারা দিন ঘুরেছি। অনেক আড্ডা দিয়েছি, একসঙ্গে খেয়েছি। কয়েক দিনের মধ্যে ছুটি নিয়ে মেয়েকে দেখতে যাওয়ার কথা বলেছিল সে।’

নিহত মনিরের ভাতিজা শাহেদ বিন রাতুল বলেন, ‘আমার চাচি তাঁর বাবার বাড়ি বরিশালে আছেন। তাঁদের পরিবারের কয়েকজনসহ তাঁরা চট্টগ্রামে আসছেন। তিনি এসে পৌঁছালে মরদেহ নিয়ে আমরা বাড়িতে রওনা করব।’

সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ সম্পর্কিত সবশেষ খবর পেতে - এখানে ক্লিক করুন

উল্লেখ্য, গতকাল শনিবার রাতে বিস্ফোরণের ঘটনার পর থেকে গতকাল রোববার বিকেল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন সাতজন ফায়ার ফাইটার। এ ছাড়াও নিখোঁজ রয়েছেন ফায়ার ফাইটারসহ ডিপোর বেশ কিছু শ্রমিক।

এই সম্পর্কিত সর্বশেষ:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সমাবেশে দলীয় স্লোগান ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে এনসিপির বিবৃতি

তোরা যারা রাজাকার, সময় থাকতে বাংলা ছাড়: ফেসবুকে বাকের মজুমদার

কঠোর হচ্ছে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন নীতি, স্থায়ী বসবাসের আবেদনে অপেক্ষা ১০ বছর

চাকরিতে কোটা: সমতলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য আসছে সমান সুযোগ

রাজপথের চাপে কোনো বিচার করা সম্ভব নয়: চিফ প্রসিকিউটর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত