Ajker Patrika

ঝরনা-সৈকতে অসতর্কতা ডেকে আনছে মৃত্যু, সীতাকুণ্ডে দেড় বছরে নিহত ৮ পর্যটক

সবুজ শর্মা শাকিল, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম)
আপডেট : ১৪ মে ২০২৪, ১৬: ০৬
ঝরনা-সৈকতে অসতর্কতা ডেকে আনছে মৃত্যু, সীতাকুণ্ডে দেড় বছরে নিহত ৮ পর্যটক

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের প্রাকৃতিক ঝরনা ও নয়নাভিরাম সমুদ্র দর্শনে এসে গত দেড় বছরে প্রাণ হারিয়েছেন আট পর্যটক। মূলত অসতর্কতার কারণেই এটি ঘটছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু একের পর এক প্রাণহানির ঘটনা ঘটলেও এখনো পর্যটকদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টিতে তেমন কোনো উদ্যোগ নেয়নি প্রশাসন। বেশির ভাগ ঝরনা ও সমুদ্রসৈকতের সামনে রাখা হয়নি সচেতনতামূলক নির্দেশনা। সৈকতগুলোতে নেই লাইফ গার্ড কিংবা বিপদ-পরবর্তী উদ্ধারের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম। 

নৌ-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের তথ্যমতে, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের টানে সীতাকুণ্ডে সমুদ্র ও প্রাকৃতিক সৃষ্ট ঝরনা দেখতে এসে ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত ১৯ মাসে অসতর্কতায় প্রাণ হারিয়েছেন আট পর্যটক। এর মধ্যে ঝরনা দেখতে এসে প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচজন পর্যটক। অন্যদিকে গোসলে নেমে সমুদ্রের পানিতে ডুবে প্রাণ হারিয়েছেন তিনজন পর্যটক। প্রাণ হারানো আট পর্যটকের মধ্যেই সাতজন শিক্ষার্থী ও একজন চাকরিজীবী।
 
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, সমুদ্রসৈকত ঘিরে প্রশাসনের সঠিক নজরদারির অভাব, প্রয়োজনীয় উদ্ধার সরঞ্জামের সংকট এবং পর্যটকদের অসতর্কতার কারণে ঘটছে প্রাণহানি। সৈকতে আসা পর্যটকদের মৃত্যুঝুঁকি এড়াতে বৈরী আবহাওয়া ও ভাটার সময় পানিতে না নামতে সতর্ক চিহ্ন সংবলিত দিকনির্দেশনা সৈকতের প্রবেশদ্বারগুলোতে দেওয়া প্রয়োজন। তা দেখে পর্যটকেরা সতর্ক হলে কমে যেত প্রাণহানির ঘটনা। এ ছাড়া পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সৈকতের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে নেট বা জাল দেওয়ার পাশাপাশি ঝুঁকিমুক্ত গোসলের স্থান নির্ধারণের দাবি জানান তাঁরা।
 
পর্যটকদের অভিযোগ, সৈকতে সতর্কতামূলক কোনো দিকনির্দেশনা না থাকায় তারা ঘুরতে এসে বিপদের সম্মুখীন হচ্ছেন। সৈকতে নিরাপত্তাকর্মী দেওয়ার পাশাপাশি প্রশাসনের সঠিক নজরদারি বাড়ানো হলে দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমে যাবে বলে অভিমত তাঁদের। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রাকৃতিকভাবে সাগর প্রতিনিয়ত তার আচরণ পাল্টায়। জোয়ারের সময় সাগরের যেই স্থানে সমতল থাকে, ভাটার সময় সেই স্থানে খাদের সৃষ্টি হয়, যার ফলে ঘূর্ণিপাকের সৃষ্টি হয়ে সেখানে চোরাবালির সৃষ্টি হয়। তাই সৈকতে গোসল করতে নামতে হবে নিরাপদ জায়গায়। নয়তো যেকোনো সময় প্রাণহানি ঘটতে পারে। 

বাঁশবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. শওকত আলী জাহাঙ্গীর জানান, তাঁর ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ের ভেতরে একটি ঝরনা রয়েছে। ঝরনাটি ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় হওয়ায় সেখানে স্থানীয় বাসিন্দারা যেতেও ভয় পান। কিন্তু অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় পর্যটকেরা কোনো বাধা না শুনে পিচ্ছিল ঝরনায় ওঠেন। ঝরনার পাশাপাশি বাঁশবাড়িয়ায় যে সমুদ্রসৈকত রয়েছে, সেখানে বালির পরিবর্তে রয়েছে আঠালো কাদামাটি। ফলে জোয়ারের সময় যাঁরা সমুদ্রসৈকতে নামেন, তারা সেই কাদায় আটকা পড়ে মারা যান। এসব বিষয়ে আগত পর্যটকদের স্থানীয়ভাবে সতর্ক করা হলেও তাঁরা তা না মেনে সমুদ্রের জোয়ারের পানিতে নেমে পড়েন। যার ফলে ঘটে যায় প্রাণহানির মতো ঘটনা। একটু সতর্ক হলেই প্রাণহানির ঘটনা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হতো বলে জানিয়েছেন তিনি। 

সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকতবারৈয়ারঢালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রেহান উদ্দিন জানান, তাঁর ইউনিয়নে থাকা সহস্রধারা ঝরনা দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্তের অসংখ্য পর্যটক ভিড় করেন। বর্ষা মৌসুমে আগত পর্যটকেরা মৎস্য প্রজেক্টে থাকা নৌকা দিয়ে চলাচল করেন। আর গ্রীষ্মকালেই শুকনো পথে চলাচল করেন তাঁরা। কিন্তু এ দুই মৌসুমে আগত পর্যটকেরাই নিজেদের অসতর্কতার কারণে বিপদে পড়েন। সাঁতার কাটতে না জানার পরেও কৌতূহলবশত মৎস্য প্রজেক্টের পানিতে নেমে বিপদে পড়েন তাঁরা। পর্যটকেরা যদি একটু সচেতন হতেন, তাহলেই অকালমৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেতেন তাঁরা। 

সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা মো. নুরুল আলম দুলাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, অতি উৎসাহ ও অসতর্কতার কারণেই সীতাকুণ্ডের প্রাকৃতিক ঝরনা ও সমুদ্রদর্শনে এসে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে প্রাণ হারাচ্ছেন পর্যটকেরা। গত এক বছরেই নিজেদের ভুলের কারণে ঝরনা দেখতে এসে প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচ পর্যটক। এ ছাড়া তার আগে সমুদ্রে গোসলে নেমে ডুবে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন তিন পর্যটক। ঝরনা ও সমুদ্রে প্রাণ হারানো আট পর্যটকের মধ্যে সাতজনই ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সীতাকুণ্ডের ঝরনা ও সমুদ্রসৈকতে প্রতিনিয়ত দূর-দূরান্তের হাজার হাজার পর্যটক ও দর্শনার্থী ঘুরতে আসেন। কিন্তু তাদের অসতর্কতার কারণে ঘুরে বেড়ানোর আনন্দ বিষাদে পরিণত হচ্ছে, যেটা আমাদের কারও কাম্য নয়। এখানে আগত পর্যটকদের সতর্কতা অবলম্বনে ঝরনা ও সৈকতের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা সংবলিত সাইনবোর্ড দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অতি উৎসাহী পর্যটকেরা সেগুলো উপেক্ষা করে সাঁতার কাটতে ও গোসল করতে নেমে পড়েন। পর্যটকেরা সতর্কতার সঙ্গে বা নিয়ম মেনে গোসলে নামলে সহজেই এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাসার দরজা ভেঙে প্রধান শিক্ষিকার লাশ উদ্ধার

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি
বাসার দরজা ভেঙে প্রধান শিক্ষিকার লাশ উদ্ধার

গাজীপুরের পুবাইল থানার মাজুখান এলাকায় একটি বাসা থেকে শাহানা বেগম (৫৭) নামের এক প্রধান শিক্ষকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে মাজুখান পশ্চিমপাড়া এলাকার ফাগুনী নামের ভবনের দ্বিতীয় তলার বাসা থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

মৃত শাহানা বেগম কালীগঞ্জ উপজেলার ভাটিরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শাহানা বেগম ঢাকার রামপুরা থানার বনশ্রী এলাকার আবদুল আজিজ খানের স্ত্রী। চাকরির সুবাদে তিনি চার বছর ধরে পুবাইলের মাজুখান এলাকার ওই ভবনে একাই ভাড়া থাকতেন এবং সেখান থেকেই নিয়মিত স্কুলে যাতায়াত করতেন।

মৃতের পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, শাহানা বেগম অসুস্থ ছিলেন। তাঁর ছেলে তাওসির আহমেদ খান অনিক পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁর মা দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্‌রোগে ভুগছিলেন এবং তাঁর হৃদ্‌যন্ত্রে রিং (স্টেন্ট) বসানো হয়েছিল। যেহেতু তিনি বাসায় একা থাকতেন, তাই ধারণা করা হচ্ছে, হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে বা শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি মারা গেছেন এবং সাহায্য চাওয়ার সুযোগ পাননি।

ময়নাতদন্তের জন্য লাশ গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে এটিকে স্বাভাবিক মৃত্যু বা হৃদ্‌রোগে মৃত্যু বলে মনে হচ্ছে। তবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হতে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। এ ঘটনায় পুবাইল থানায় একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা করা হয়েছে।

পুবাইল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম বলেন, কয়েক দিন ধরে ওই শিক্ষিকাকে বাসা থেকে বের হতে দেখা যাচ্ছিল না। এমনকি ঘরের ভেতর থেকেও কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় আজ সকালে পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ঢুকে শিক্ষিকার নিথর দেহ উদ্ধার করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুড়িগ্রামে ছাত্রাবাস থেকে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
কুড়িগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট । ছবি: সংগৃহীত
কুড়িগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট । ছবি: সংগৃহীত

কুড়িগ্রাম সদরের ভকেশনাল মোড় এলাকার একটি ছাত্রাবাস থেকে কুড়িগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের এক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে ভকেশনাল মোড়সংলগ্ন অর্ণব ছাত্রাবাস থেকে ওই শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়।

নিহত শিক্ষার্থীর নাম মৃত্যুঞ্জয় রায় (২১)। তিনি কুড়িগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অষ্টম সেমিস্টারের ছাত্র বলে জানা গেছে। তাঁর বাড়ি লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ থানা এলাকায়। তাঁর বাবার নাম সংকর চন্দ্র রায়। পুলিশের ধারণা মৃত্যুঞ্জয় আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন।

তবে ঠিক কী কারণে তিনি ‘আত্মহত্যার’ পথ বেচে নিয়েছেন, সে ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

অর্ণব ছাত্রাবাসের মালিক আবু সাঈদ জানান, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছুটি থাকায় ছাত্রাবাসের বেশির ভাগ ছাত্র বাড়িতে গেছেন। মৃত্যুঞ্জয়সহ চার-পাঁচজন ছাত্র ছিলেন। শনিবার বিকেলে ছাত্রাবাসের এক ছাত্র এসে মৃত্যুঞ্জয়ের মৃত্যুর খবর দেন। ছাত্রাবাসের নিজ কক্ষে তিনি গলায় ফাঁস দিয়েছিলেন। তাঁর এমন সিদ্ধান্তের কারণ জানা যায়নি। পুলিশে খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। তার পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে।

কুড়িগ্রাম সদর থানার ডিউটি অফিসার ও সহকারী উপপরিদর্শক মোস্তফা জানান, নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

২-৪টি আসনের জন্য নয়, জোট হবে ন্যায্যতার বিচারে আসন সমঝোতার ভিত্তিতে: নুরুল হক নুর

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
নুরুল হক নুর। ছবি: সংগৃহীত
নুরুল হক নুর। ছবি: সংগৃহীত

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের আমলে শেখ হাসিনা আমাদের আসন অফার করেছিলেন, টাকা অফার করেছিলেন। কিন্তু আমরা ফ্যাসিবাদের সঙ্গে আপস করিনি। আমরা ২-৪টি আসনের জন্য কারও সঙ্গে জোট করব না। যদি দেশের প্রয়োজনে জোট করি, তা ন্যায্যতার বিচারে সম্মানজনক আসন সমঝোতার ভিত্তিতে হবে।’ /

আজ শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার নবীনগর পাইলট সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নুরুল হক নুর এসব কথা বলেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনে দলীয় প্রার্থীকে পরিচয় করিয়ে দিতে স্থানীয় গণঅধিকার পরিষদ এই জনসভার আয়োজন করে। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনে জেলা গণঅধিকার পরিষদের সহসভাপতি নজরুল ইসলাম দলের প্রার্থী হয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়ে আগাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন তার কার্যক্রম সম্পন্ন করছে। ১১ তারিখ তফসিল ঘোষণা করার কথা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী, গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামের লড়াকু ও আপসহীন নেত্রী খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ থাকায় যদি কোনো প্রেক্ষাপট তৈরি হয় নির্বাচন পেছানোর, সেটি হয়তো নির্বাচন কমিশন এবং সরকার বিবেচনা করবে। অন্যথায় নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে। নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হোক আর এপ্রিলে হোক, নির্বাচনে গণঅধিকার পরিষদ এককভাবে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে। আর দেশের প্রয়োজনে যদি কোনো জোট করে, তাহলে যেসব জায়গায় জনসমর্থন আছে, সেসব আসনকে নিশ্চিত করেই আমাদের জোট হবে।’

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, ‘আমরা দেখতে পাই কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের নেতারা পুরোনো ফ্যাসিস্টদের মতোই হুমকি-ধমকি ও আধিপত্য বিস্তারের অপরাজনীতি দেশব্যাপী কায়েম করতে চান। তাঁদেরকে মনে করিয়ে দিতে চাই, ১৬ বছরের অপশাসন মুহূর্তের মধ্যেই চুরমার হয়ে গেছে। জনগণের প্রতিবাদে নেতারা সীমান্ত দিয়ে, হেলিকপ্টার দিয়ে, নদী-নালা ও খাল-বিল দিয়ে যে যেভাবে পেরেছেন পালিয়ে গেছেন। কেউ জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে তাঁদের পরিণতিও তা-ই হবে। গণ-অভ্যুত্থানের অংশীজন সব রাজনৈতিক দলকে সংযত এবং সহনশীল হওয়ার আহ্বান জানাই।’

নবীনগর উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি মেহেদী হাসানের সভাপতিত্বে জনসভায় বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-অধিকার পরিষদের সাবেক আহ্বায়ক সানাউল্লাহ হক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি আশরাফুল হাসান তপু, নবীনগর উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. কাইয়ূম প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুমিল্লায় যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ, গ্রেপ্তার ২

 কুমিল্লা প্রতিনিধি 
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ৫৭
সন্তান কোলে সাদিয়া আক্তার। ছবি: সংগৃহীত
সন্তান কোলে সাদিয়া আক্তার। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার বুড়িচংয়ে যৌতুকের দাবিতে সাদিয়া আক্তার নামে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে ও মুখে বিষ ঢেলে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে এ ঘটনায় দেবর রাব্বিকে প্রধান আসামি করে ছয়জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ ইতিমধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

প্রধান আসামি রাব্বি। ছবি: সংগৃহীত
প্রধান আসামি রাব্বি। ছবি: সংগৃহীত

পরিবার ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ৫ ডিসেম্বর দাদার কুলখানি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে সাদিয়া তাঁর বাবার বাড়ি বুড়িচংয়ের বাকশিমুল ইউনিয়নের উত্তর কোদালিয়া গ্রামে আসেন। বেলা ৩টার দিকে খাবারের টেবিলে বসার সময় হঠাৎ তাঁর দেবর রাব্বি অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকেন। সবার সামনে তিনি সাদিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘দাদা মরার খানা খাইতে আইছোস কেন? ঠিকমতো দাওয়াত দিস নাই। খাইতে আসছোস কেন? বিষ খাইলি না কেন?’

অভিযোগ রয়েছে, এ সময় রাব্বি কিল-ঘুষি মেরে জোর করে সাদিয়াকে (২২) সিএনজিতে তুলে নিয়ে যান। পরে বিকেল ৫টার দিকে সাদিয়ার শ্বশুরবাড়ির লোকজন সাদিয়ার মাকে ফোন দিয়ে জানান, সাদিয়া নাকি বিষপান করেছেন এবং তাঁকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

নিহতের মা রুবি আক্তার অভিযোগ করেন, ‘বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই স্বামী হাবিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যরা যৌতুকের জন্য সাদিয়াকে নির্যাতন করত। হাবিব প্রবাসে থাকলেও নিয়মিত ফোনে যৌতুকের টাকা দাবি করত এবং মানসিকভাবে নির্যাতন করত।’

তিনি বলেন, ‘শারীরিক নির্যাতন করে আমার মেয়েকে জোর করে বিষ খাইয়েছে। হাসপাতালে নেওয়ার নামে নাটক করেছে। পরে ঢাকায় নেওয়ার পথে চান্দিনায় অ্যাম্বুলেন্সে একা রেখে পালিয়ে যায় তারা। আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। আমি ন্যায়বিচার চাই।’

ঘটনার পর রাতে নিহতের মা বুড়িচং থানায় মামলা করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে দেবর রাব্বিকে (২৪)। অন্য আসামিরা হলেন শ্বশুর মোস্তফা (৬০), শাশুড়ি রহিমা খাতুন (৫০), ননদ আমেনা খাতুন (২৬), ননদ সোনালী আক্তার (২০) এবং স্বামী হাবিবুর রহমান (২৮)। নিহত সাদিয়ার আট মাস বয়সী একটি ছেলেসন্তান রয়েছে।

এ বিষয়ে বুড়িচং থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জিয়া বলেন, ‘ছয়জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। আমরা দুজনকে গ্রেপ্তার করেছি। অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিতভাবে বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তর্কে জড়ানো চিকিৎসককে বরখাস্তের নির্দেশ ডিজির

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত, মেডিকেল বোর্ডের সবুজসংকেতের অপেক্ষা

সবকিছু প্রস্তুত হচ্ছে, তারেক রহমান ফিরবেন যেকোনো সময়: আমীর খসরু

মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’: সৌদি আলেমদের আমন্ত্রণ, ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না হচ্ছে বিরিয়ানি

আজকের রাশিফল: ভার্চুয়াল হাতাহাতি থেকে দূরে থাকুন, সিদ্ধান্ত ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত