Ajker Patrika

চট্টগ্রাম আদালতে ভাঙচুর: আসামিপক্ষে দাঁড়িয়ে পদত্যাগে বাধ্য হলেন অতিরিক্ত পিপি

 নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
Thumbnail image
চট্টগ্রামে আদালত ভাঙচুর মামলার আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামের আদালতে হামলা–ভাঙচুরের মামলায় আসামির পক্ষে দাঁড়িয়ে (ওকালতনামাসহ) সাধারণ আইনজীবীদের তোপের মুখে পড়েন অতিরিক্ত মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট নেজাম উদ্দিন। আজ সোমবার মহানগর আদালতে এই ঘটনা ঘটে।

এই ঘটনায় বিক্ষুব্ধ আইনজীবীরা মহানগর পিপির কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ প্রদর্শনের একপর্যায়ে পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন তিনি। আইনজীবীরা এতে শান্ত না হয়ে মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট মুফিজুল হক ভুইঁয়ারও পদত্যাগ দাবি করেন। পরে তাদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের কাছে দরখাস্ত দেন তারা।

শওকত হোসেন চৌধুরী আরশাদ নামে এক আইনজীবী বলেন, ‘সহযোদ্ধা আলিফের রক্তের দাগ এখনো শুকিয়ে যায়নি। এ অবস্থায় একজন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কীভাবে আসামিপক্ষে দাঁড়াতে পারেন। অ্যাডভোকেট নেজাম বাদীপক্ষ ছাড়া আসামিপক্ষে আইনগতভাবেই দাঁড়াতে পারেন না। এ ন্যক্কারজনক ঘটনার জন্য মহানগর পিপিকেও পদ থেকে সরে যেতে হবে। এটা পুরো আইনজীবী সমাজের অবমাননা।’

এ বিষয়ে জানতে অ্যাডভোকেট নেজাম উদ্দিনের মোবাইল ফোন কল করা হলে তিনি রিসিভ করে কে জানতে চান। আজকের পত্রিকা থেকে বলার সঙ্গে সঙ্গে সংযোগ কেটে দেন।

তবে মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট মুফিজুল হক ভুইঁয়া বলেন, ‘আমার জুনিয়র আসামিপক্ষে দাঁড়িয়েছে বলে আমার দোষ কি।’ তিনি অ্যাডভোকেট নেজামের পদত্যাগ পত্রের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে আদালতে আসামিপক্ষের শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর অংশ নেওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত ছিল পুরো আদালত এলাকা। আদালতের সামনে আইনজীবীরা বিক্ষোভ করেন কয়েকঘন্টা ধরে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ছুটে আসেন আইনজীবী সমিতির নেতারা।

আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, সহযোদ্ধা সাইফুল ইসলাম আলিফের রক্তের ওপর পারা দিয়ে আসামিপক্ষে অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট নেজাম উদ্দিন শুনানিতে অংশগ্রহণ করেছেন। এটা খুবই ন্যক্কারজনক। একই সঙ্গে আইনজীবীদের সিদ্ধান্তেরও বিরুদ্ধে। আলিফ হত্যাকাণ্ড ও আদালত এলাকায় মসজিদ ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের করা মামলাগুলোতে আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী না দাঁড়াতে বলা হয়েছিল। সেখানে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী দাঁড়িয়ে গেলেন আসামির জামিন শুনানিতে। এতে আমরা ক্ষোভ প্রকাশ করছি।’

এর আগে সোমবার (২৫ নভেম্বর) রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরদিন মঙ্গলবার তাকে চট্টগ্রামের আদালতে হাজির করা হয়।

পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হলে বিক্ষোভ করেন তার অনুসারীরা। পুলিশ, বিজিবি লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। একপর্যায়ে সেটা সংঘর্ষে রূপ নেয়। এর মধ্যে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ (৩৫) নিহত হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত