Ajker Patrika

১১ তরুণের আনন্দযাত্রা পরিণত হলো শবযাত্রায়

নুরুল আলম, মীরসরাই (চট্টগ্রাম)
আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২২, ২০: ১৩
Thumbnail image

চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ের খৈয়াছড়া ঝরনা দেখে ফেরাই জীবনের শেষ যাত্রা হলো ১১ পর্যটকের! ঝরনায় হাসি-আনন্দ শেষে লাশ হয়ে হাটহাজারীর বাড়ি ফিরতে হলো তাঁদের। শত শত মানুষ দুর্ঘটনাস্থলে এসে চোখের জল ঝরাচ্ছিলেন তরুণ শিক্ষার্থীদের সারি সারি নিথর দেহ দেখে।

আজ শক্রবার বেলা পৌনে ১টার দিকে খৈয়াছড়া ইউনিয়নের পূর্ব খৈয়াছড়া গ্রামের ঝরনা এলাকার রেলক্রসিংয়ে দুর্ঘটনাটি ঘটে। খৈয়াছড়া ঝরনা দেখে ফেরার পথে ট্রেন-মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে মৃত্যু হয় ১১ জনের। ট্রেন প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে টেনে নিয়ে যায় মাইক্রোবাসটি। ট্রেন থামার পর দেখা যায়, ১৬ জন যাত্রীর ১১ জন ঘটনাস্থলেই নিহত হন। গুরুতর আহত একজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। একে একে ১১ জনের মরদেহ উদ্ধার করে বড়তাকিয়া রেল স্টেশনের সামনে রাখা হয়। দুর্ঘটনাস্থলে রেলের লেভেল ক্রসিংয়ে গেটম্যান না থাকাই দুর্ঘটনার কারণ বলে জানান স্থানীয়রা। 

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার সকালে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার আমানবাজার এলাকা থেকে একটি মাইক্রোবাসযোগে খৈয়াছড়া ঝরনা দেখতে আসেন ওই তরুণেরা। ভ্রমণ শেষে বেলা পৌনে ১টার দিকে ফেরার পথে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা মহানগর প্রভাতি ট্রেনটি মাইক্রোবাসকে ধাক্কা দিলে দুর্ঘটনাস্থলেই ১১ জন নিহত হন, গুরুতর আহত হন একজন। পরে স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে মীরসরাই সদর এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। 

দুর্ঘটনার পরপর মীরসরাই থানার পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের উদ্ধারকর্মীরা দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে দুর্ঘটনাকবলিত মাইক্রোবাস থেকে হতাহতদের উদ্ধার করে। 

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (মীরসরাই সার্কেল) লাবিব আব্দুল্লাহ ও মীরসরাই থানার ওসি কবির হোসেন দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুর্ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন মাইক্রোবাসের আরোহী ১১ যুবক। আহত একজনকে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আরও চারজনের কথা শোনা যাচ্ছে, তবে তাঁদের তথ্য আমাদের কাছে নেই। দুর্ঘটনাকবলিত মাইক্রোবাস থেকে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহগুলো মাস্তাননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে ডেথ সার্টিফিকেট নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে। হতাহতদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। তবে এটুকু জানা গেছে, তাঁরা সবাই চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার আমানবাজার এলাকা থেকে ঝরনা দেখতে এসেছিলেন।’

এদিকে দুর্ঘটনার পর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জিআরপি পুলিশের সীতাকুণ্ড-ফাঁড়ির ইনচার্জ (উপপরিদর্শক) খোরশেদ আলম বলেন, ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে। দুর্ঘটনাকবলিত মাইক্রোবাসটি কেটে কেটে লেন থেকে সরানোর চেষ্টা করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত