Ajker Patrika

চট্টগ্রামের হাসপাতালের তথ্য: পুরুষের ফুসফুস, নারীর স্তন ক্যানসার বেশি

  • ২১ মাসে ৩০ হাজার রোগীর চিকিৎসা।
  • আক্রান্তদের মধ্যে নারী রোগীর সংখ্যা প্রায় ৫৫-৬০%, পুরুষের সংখ্যা প্রায় ৪০-৪৫%।
  • ভেজাল খাদ্য, দূষণ, খাদ্যাভ্যাস বিপদ বাড়াচ্ছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৫: ০০
চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল। ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামে ক্যানসার আক্রান্তদের মধ্যে নারীরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন স্তন ক্যানসারে। এর হার ক্যানসার রোগীদের মধ্যে ১৮ শতাংশ। আর ক্যানসার রোগীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় ফুসফুসের ক্যানসার। এর হার ৩০ শতাংশ। এটা পুরুষদের মধ্যে বেশি।

চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল ক্যানসার ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা শুরু হওয়ার ২১ মাসে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে পাওয়া গেছে এ চিত্র। এই মরণব্যাধি ভবিষ্যতে মহামারিতে রূপ নিতে পারে বলে সতর্ক করেছেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা।

২০২৩ সালের নভেম্বরে ক্যানসার ইনস্টিটিউট চালু হওয়ার পর থেকে গত আগস্ট পর্যন্ত ২১ মাসে এখান থেকে বহির্বিভাগে চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন ১৯ হাজার ৫৪ জন। ভর্তি হয়ে সেবা নিয়েছেন ৩ হাজার ১০৭ জন। কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি ও অন্যান্য সেবা নিয়েছেন প্রায় সাড়ে ৮ হাজার জন।

রোগীদের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এখানে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩০ শতাংশ ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত। এটি পুরুষদের মধ্যে বেশি। ফুসফুস ক্যানসারে বেঁচে থাকার হার সবচেয়ে কম। এরপরের অবস্থানে রয়েছে স্তন ক্যানসার আক্রান্ত রোগী। যার হার ১৮ শতাংশ। নারীকেন্দ্রিক এই ক্যানসারে রোগীদের মৃত্যুহার প্রায় ৭ দশমিক ৬ শতাংশ। অন্যান্য ক্যানসারের মধ্যে হেড অ্যান্ড নেক ক্যানসারে আক্রান্ত ১৫ শতাংশ, পাকস্থলীর ১০ শতাংশ, জরায়ুতে ৮ শতাংশ এবং মলাশয়ের ক্যানসারে আক্রান্ত ৭ শতাংশ। একইভাবে খাদ্যনালি ক্যানসারে প্রতি ১ লাখে প্রায় ১৬ জন, ডিম্বাশয়ের ক্যানসারে ৪ শতাংশ, গলব্লাডার ক্যানসারে ৩ শতাংশ এবং কিছু বিরল ক্যানসারে ২-৩ শতাংশ আক্রান্ত হয়।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল ক্যানসার ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. শেফাতুজ্জাহান জানান, চট্টগ্রামের মানুষকে দুটি ক্যানসারে বেশি আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যে উদ্বেগজনক হারে নারীরা স্তন ক্যানসার ও পুরুষরা ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন। এই দুই ক্যানসারেই আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি।

ক্যানসার আক্রান্তদের মধ্যে নারী রোগীর সংখ্যা শতকরা প্রায় ৫৫-৬০ ভাগ, পুরুষের সংখ্যা শতকরা প্রায় ৪০-৪৫ ভাগ এবং শিশুদের সংখ্যা শতকরা প্রায় ৩-৪ ভাগ বলেও জানান এই চিকিৎসক।

ইনস্টিটিউট থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, এই হাসপাতালে পুরুষ ও নারী ওয়ার্ডে ৬০ শয্যায় ক্যানসার রোগী চিকিৎসা নেন। আরও সমানসংখ্যক রোগী ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে এখানে। সংকটাপন্ন রোগীদের জন্য ১৬ সিটের ক্যানসার আইসিইউও রয়েছে।

১৯৭৯ সালে চট্টগ্রামের কিছু মহানুভব ব্যক্তির উদ্যোগে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে ৮৫০ শয্যার এই হাসপাতালে ১৫০ আসনের মেডিকেল কলেজ এবং নার্সিং ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। ২০২৩ সালের নভেম্বরে যাত্রা শুরু করে ক্যানসার ইনস্টিটিউট।

সেবার বিষয়ে ইনস্টিটিউটের ক্যানসার আইসিইউর কনসালট্যান্ট মাহাদী হাসান জানান, ক্যানসার রোগীদের জন্য আলাদা আইসিইউ থাকার বিষয়টি আন্তর্জাতিক একটি প্রটোকল, যা এখানে রয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের দেওয়া তথ্যমতে, শিপব্রেকিং ও কারখানার বর্জ্যে বায়ু ও পানিদূষণ, পান, সুপারি, তামাক, ধূমপান ইত্যাদির অভ্যাস, লবণাক্ত খাবার ও মাংস বেশি খাওয়ার পাশাপাশি ভেজাল খাদ্য, অ্যাসবেস্টসসহ বিভিন্ন রাসায়নিক ও ধাতুর সংস্পর্শ, প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ ধরা না পড়া এবং বংশগত ঝুঁকির কারণে ক্যানসারের মাত্রা বাড়ছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) চট্টগ্রামের সমন্বয়ক মুনিরা পারভীন রুবা বলেন, পরিবেশ বিপর্যয়, জলবায়ু পরিবর্তন, বিষাক্ত বর্জ্য, ভেজাল খাদ্যসহ নানা কারণে ক্যানসারের প্রকোপ মারাত্মক আকার ধারণ করছে। এখন থেকে সচেতন না হলে ভবিষ্যতে এটি মহামারি আকারে রূপ নিতে পারে।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ছিনতাই ও হত্যাচেষ্টার মামলায় চাটমোহর মহিলা দলের দুই নেত্রী গ্রেপ্তার

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি 
গ্রেপ্তার দুই নেত্রী। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তার দুই নেত্রী। ছবি: সংগৃহীত

পাবনার চাটমোহরে ছিনতাই ও হত্যাচেষ্টা মামলার পলাতক আসামি হিসেবে উপজেলা মহিলা দলের বহিষ্কৃত দুই নেত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে চাটমোহর পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মহিলা দল চাটমোহর উপজেলা শাখার সিনিয়র সহসভাপতি (বহিষ্কৃত), পৌরসভার মধ্য শালিখা মহল্লার মৃত কোবাদ হোসেনের মেয়ে বুড়ি সরকার (৪২) এবং একই কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (বহিষ্কৃত), পৌরসভার বালুচর মহল্লার বিএনপি নেতা সেলিম রেজার স্ত্রী রহিমা রেজা (৪৫)।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, চাটমোহর উপজেলা মহিলা দলের বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তামান্না আজিজা স্বর্ণা গত ২৩ আগস্ট বিকেল ৫টার দিকে পৌরসভার আফ্রাতপাড়া এলাকায় বিএনপির কর্মসূচিতে অংশ নিতে গেলে পূর্ববিরোধের জেরে রহিমা রেজা ও বুড়ি সরকার দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাঁর ওপর হামলা চালান। এতে স্বর্ণা আহত হন। পরে তিনি একাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে ছিনতাই ও হত্যাচেষ্টার মামলা করেন।

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনজুরুল আলম বলেন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত পলাতক আসামি রহিমা রেজা ও বুড়ি সরকারকে পৃথক অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তাঁদের আদালতের মাধ্যমে পাবনা জেলা কারাগারে পাঠানো হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বরিশালে যুবকের লাশ হাসপাতালে রেখে পলায়ন, শরীরে পোড়া দাগ, গ্রেপ্তার ৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
বরিশালে যুবকের লাশ হাসপাতালে রেখে পলায়ন, শরীরে পোড়া দাগ, গ্রেপ্তার ৩

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল (শেবাচিম) কলেজ হাসপাতালে যুবকের মরদেহ রেখে পালিয়ে যান চার তরুণ-তরুণী। বুধবার কোতোয়ালি মডেল থানা-পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এর আগে নগরীর ভাটারখাল এলাকার জেলা পরিষদ মার্কেটের একটি কক্ষে মো. বেল্লাল (২৮) নামের ওই যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।

পুলিশ জানায়, নিহত বেল্লাল বরিশাল সদর উপজেলার পশ্চিম চর আইচা গ্রামের শাহ আলমের ছেলে। তিনি ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাতেন। নিহত বেল্লালের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। বেল্লালের বাবা শাহ আলম পাঁচজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন। এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন চরমোনাই ইউনিয়নের গিলাতলী গ্রামের সিরাজ হাওলাদারের ছেলে রনি হাওলাদার (২৮), মায়া চৌধুরী (২৬) ও সাদিয়া (২৪)। পলাতক দুজন হলেন পলাশপুর বস্তির রিপন রানা এবং চরবাড়িয়া ইউনিয়নের সবুজ।

স্থানীয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে মার্কেটের তৃতীয় তলা থেকে বেল্লালের লাশ সিঁড়ি বেয়ে নামাচ্ছিলেন এক যুবকসহ চার তরুণ-তরুণী। পরে তাঁরা লাশ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রেখে সরে পড়েন। ঘটনাটি জানাজানি হলে পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।

ভাটারখাল এলাকার বাসিন্দা মো. টিপু বলেন, সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা আলাউদ্দিন আলোর ভাড়া করা একটি রুমে প্রতিদিন কয়েকজন মদ্যপান করতেন। মঙ্গলবার রাতে মদ্যপানের একপর্যায়ে বেল্লালকে বেধড়ক মারধর করা হয়। মারধরে তাঁর মৃত্যু হলে লাশ সিঁড়ি দিয়ে নামিয়ে হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যান তাঁরা।

নিহত ব্যক্তির বাবা শাহ আলম বলেন, ‘আমার ছেলেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তার করে শাস্তি দেওয়া হোক।’

কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ‘লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। বেল্লালের শরীরে মারধর ও পোড়ার স্পষ্ট চিহ্ন রয়েছে। তদন্ত চলছে।’

শেবাচিম হাসপাতালের মর্গ-সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, বেল্লালের শরীরে পোড়া দাগ আছে। মনে হচ্ছে, তাঁকে বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে অর্থ দাবি: রাজনগরে দুজন ভুয়া সাংবাদিক আটক

রাজনগর (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
আটক দুই ভুয়া সাংবাদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা
আটক দুই ভুয়া সাংবাদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে স্থানীয় লোকজন। বুধবার সন্ধ্যায় মনসুরনগর ইউনিয়ন থেকে তাঁদের আটক করে পরে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

সূত্র জানায়, মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার রাজনগর গ্রামের মিরাজ উদ্দিনের ছেলে আরিফুর রহমান (২৮) এবং গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার দক্ষিণ কোটালীপাড়া গ্রামের রুকন উদ্দীনের ছেলে তরিকুল ইসলাম (৩৬) নিজেদের একটি জাতীয় দৈনিকের সাংবাদিক পরিচয় দিতেন। বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে দেখা করে খোঁজখবর নেওয়ার নাম করে তাঁরা আর্থিক সুবিধা চাইছিলেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

চেয়ারম্যানদের সন্দেহ হলে একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁদের গতিবিধি নজরদারিতে রাখা হয়। পরে মনসুরনগর ইউনিয়নে সুযোগ পেয়ে স্থানীয় লোকজন দুজনকে আটক করে।

খবর পেয়ে রাজনগর থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁদের থানায় নিয়ে যায়।

রাজনগর থানার এএসআই হৃদয় বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে। দোষী প্রমাণিত হলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঝিনাইদহে প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে শিশুর মরদেহ উদ্ধার

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
নিহত শিশু সাইমা আক্তার ছাবা। ছবি: সংগৃহীত
নিহত শিশু সাইমা আক্তার ছাবা। ছবি: সংগৃহীত

ঝিনাইদহে পবাহাটি গ্রামে প্রতিবেশীর খাটের নিচ থেকে সাইমা আক্তার ছাবা (৪) নামের এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার রাত ১০টার দিকে পবাহাটি গ্রামের ঈদগাহ পাড়ায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত শিশু ওই গ্রামের ভ্যানচালক মো. সাইদুল ইসলামের মেয়ে। এই ঘটনায় সাইদুল ইসলামের প্রতিবেশী আক্তারুজ্জামান মাসুদের স্ত্রী সান্ত্বনা খাতুনকে (৩২) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়েছে পুলিশ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সায়মা আক্তার ছাবা সকাল থেকে নিখোঁজ ছিল। আশপাশের পুকুর, বাড়িসহ সব জায়গায় খুঁজে তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। সারা দিন মাইকিং করা হয়েছে। পরে রাতে সাইদুল ইসলামের প্রতিবেশী সান্ত্বনা খাতুনের বাড়ি থেকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।

নিহত শিশুর বাবা সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘সকালে মেয়ে ঘুম থেকে তুলে আমার মুখে চুমু দেয়। আর বলে আব্বু কাজে যাবা না? আমার জন্য মিষ্টি কিনে আনতে হবে না। তার কথা শুনে আমি দ্রুত উঠে পড়ি। পরে ভ্যান নিয়ে কাজে বের হওয়ার সময় মেয়েকে ভ্যানে চড়িয়ে একটু ঘুরিয়ে নামিয়ে দিই। পরে আমার স্ত্রী ফাতেমাকে বলেছে, আম্মু তুমি ভাত রান্না করো। রান্না শেষে আমাকে ডাক দিয়ো, আমি বাইরে খেলছি। পরে আমার স্ত্রী মেয়েকে ডাক দিয়ে আর পায় না; তখন আমার ছেলে আমাকে জানায় ছাবাকে পাওয়া যাচ্ছে না। আমি বাড়িতে এসে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে বাড়ির পাশের বিভিন্ন পুকুরসহ আশপাশের সব জায়গায় খুঁজে কোথাও পাইনি। পরে থানায় জিডি করি, মাইকিং করি। তবু মেয়েকে পাই না। পরে আমি প্রতিবেশী আখতারুজ্জামান মাসুদের বাড়িতে মেয়েকে খুঁজতে গিয়েছিলাম। তখন মাসুদের স্ত্রী আমাকে জানায়, আমার মেয়ে তাদের বাড়িতে যায়নি। আমার সন্দেহ হলো। পাড়ার সবাই আমার মেয়েকে খুঁজছে, কিন্তু মাসুদের স্ত্রী আসছে না, কোনো খোঁজও করছে না। পরে রাতে পুকুরপাড়ে আবারও যাই, সে সময় দেখি মাসুদের স্ত্রী একটি বস্তা নিয়ে কোথায় যাচ্ছে; তখন আমি চিৎকার দিলে সে আবার ঘরে দৌড়ে চলে যায়। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে তার ঘরের খাটের নিচ থেকে আমার মেয়ের লাশ উদ্ধার করে।’

ঝিনাইদহ সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ হোসেন বলেন, ‘বাচ্চাটা সকাল থেকে নিখোঁজ ছিল। রাতে আমরা খবর পাই সাইদুল ইসলামের প্রতিবেশীর বাড়িতে মরদেহ পাওয়া গেছে। ঘটনা কী ঘটেছে এখনই বলা সম্ভব হচ্ছে না। খোঁজখবর নিচ্ছি, তদন্ত চলছে। সম্ভাব্য আসামিকে আমরা হেফাজতে নিয়েছি। মরদেহ পোস্টমর্টেমের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর বিস্তারিত বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত