Ajker Patrika

কানের দুল-আংটির জন্য বৃদ্ধাকে হত্যা, ২ জনের মৃত্যুদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১০ মার্চ ২০২৪, ২২: ০৪
Thumbnail image

চট্টগ্রামে কানের দুল, হাতের আংটি ও মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের জন্য এক বৃদ্ধাকে খুনের ঘটনায় দুই আসামির মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় আরেক আসামির অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাঁকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। 

আজ রোববার চট্টগ্রামের ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ বেগম সিরাজাম মুনীরা এই রায় ঘোষণা করেন। 

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন ভোলা জেলার দৌলতখান থানার চর খলিফা গ্রামের মো. রুবেল (২৭) এবং চট্টগ্রামের আনোয়ারা থানার মোহছেন আউলিয়া গ্রামের মো. আব্বাস (৩০)। এঁদের মধ্যে রুবেল চট্টগ্রাম অভয়মিত্র ঘাটের কর্ণফুলী কলোনিতে ও আব্বাস নগরীর সদরঘাট থানার আলকরণ এলাকায় থাকতেন। আদালতের অতিরিক্ত পিপি দীর্ঘতম বড়ুয়া আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি বলেন, হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এর পাশাপাশি দুই আসামিকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ২০১ ধারায় লাশ গুমের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় একই আসামিদের তিন বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। 

এ ছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ছিনিয়ে নেওয়া স্বর্ণালংকারের ক্রেতা ফরহাদ হোসেনকে এই মামলা থেকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। 

দীর্ঘতম বড়ুয়া বলেন, আদালতের রায়ের সময় আসামি আব্বাস কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর সাজা পরোয়ানামূলে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামি রুবেল পলাতক রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

মামলার নথি থেকে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২৫ মে সকালে নগরীর সদরঘাট থানার নেভাল-২ এলাকায় হাঁটতে যান মঞ্জু সেন (৭৭)। তিনি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর থানার মির্জারহাট বাজার গ্রামের মৃত মানিক চন্দ্র সেনের স্ত্রী। তিনি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নগরীর ফিরিঙ্গি বাজার শিববাড়ী লেইন এলাকায় কাদের দোভাষের ভবনে ভাড়া থাকতেন। 

ওই দিন মঞ্জু সেনকে একটি নির্মাণাধীন ভবনে নিয়ে যায় দণ্ডপ্রাপ্তরা। সেখানে তাঁর স্বর্ণের চেইন, কানের দুল ও মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে তাঁকে মাথায় আঘাত করে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। এরপর কাঁথা মুড়ি দিয়ে তাঁরা মরদেহটি ঝোপের আড়ালে ফেলে দেয়। পরদিন ২৬ মে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। 

এ ঘটনায় নিহতের একমাত্র ছেলে রতন কান্তি সেন বাদী হয়ে সদরঘাট থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনায় জড়িত দুই আসামি রুবেল ও আব্বাসকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। 

জবানবন্দিতে আসামিরা জানান, বৃদ্ধাকে খুনের পর তাঁর কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া স্বর্ণালংকার ফরহাদ হোসেন জাকির ওরফে রাব্বি নামের একজনের কাছে বিক্রি করেছিলেন। 

দীর্ঘতম বড়ুয়া বলেন, ২০১৮ সালের ১১ অক্টোবর এ মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। এই মামলায় মোট ২৪ জন সাক্ষীর মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ১০ জন সাক্ষী আদালতে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়। পরে দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আজ আদালত এই রায় ঘোষণা দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত