Ajker Patrika

চাঁপাইনবাবগঞ্জ আদালতের মালখানায় লুট: এক বছরেও উদ্ধার হয়নি অস্ত্র-গুলি

আব্দুল বাশির, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের আদালত ভবনের নিচতলার মালখানাটি এখন স্থানীয়দের কাছে আতঙ্কের প্রতীক। গত বছরের ৫ আগস্ট তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর সারা দেশে যে অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হয়, সেই সুযোগে দুর্বৃত্তরা সদর কোর্ট আদালতের মালখানায় ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। লুটে নেওয়া হয় ৭০টি আগ্নেয়াস্ত্র, শত শত রাউন্ড গুলি, বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য, স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ৬০ কোটি টাকার মালামাল। ঘটনার এক বছর পেরিয়ে গেলেও লুট হওয়া এসব অস্ত্র ও গুলি এখনো উদ্ধার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ফলে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয়রা।

মামলার নথিপত্র ঘেঁটে জানা যায়, ঘটনার দিন মালখানা থেকে লুট হয় ৫০টি পিস্তল, ২৫০ রাউন্ড গুলি, পিস্তলের ১০০ ম্যাগাজিন, ২০টি শুটারগান ও ২৫ রাউন্ড গুলি। এ ছাড়া, বিভিন্ন মামলার জব্দকৃত মাদকদ্রব্য, মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল, মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, কম্পিউটার, নগদ টাকা ও বিদেশি মুদ্রাসহ আনুমানিক ৬০ কোটি টাকারও বেশি দামের আলামত খোয়া যায়।

মালখানার দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক মনিরুল করিম খান বাদী হয়ে এ ঘটনায় মামলা করেছিলেন। তবে মামলায় কোনো আসামির নাম উল্লেখ করা হয়নি। আদালতের পক্ষ থেকে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্তও সম্পন্ন হয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) সুকোমল চন্দ্র দেবনাথ জানান, এই মামলায় এখন পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাদের রিমান্ডেও নেওয়া হয়েছে। তবে তাদের কাছ থেকে নতুন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তিনি আরও বলেন, লুটপাটের পর কিছু মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য মালামাল পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হলেও অস্ত্র বা গোলাবারুদ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

স্থানীয়দের আশঙ্কা, লুট হওয়া অস্ত্র ও গুলি যেকোনো সময় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত হতে পারে। আসন্ন নির্বাচন সামনে রেখে এই শঙ্কা আরও তীব্র হয়েছে। শহরের এক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এই অস্ত্র যদি রাজনৈতিক সহিংসতায় ব্যবহৃত হয়, তাহলে আমরা আবারও অস্থিরতার মধ্যে পড়ব।’

আইনজীবীরা বলছেন, ফৌজদারি মামলার বিচারে সাক্ষ্যের পাশাপাশি আলামতের গুরুত্ব অপরিসীম। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মহম্মদ ইসাহাক বলেন, ‘আলামত আদালতে হাজির করতে না পারলে অনেক সময় বিচার ব্যাহত হয়। এতে আসামি খালাস পাওয়ার ঝুঁকি থাকে।’

তবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) আবদুল ওদুদ ভিন্নমত পোষণ করেন। তিনি বলেন, ‘একটি মামলার চার্জশিট, সাক্ষ্য-প্রমাণ অনেক কিছুই গুরুত্ব বহন করে। আদালত যেহেতু পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত, তাই আমরা প্রমাণ করতে পারব যে সেখানে আলামতগুলো ছিল। অনেক ক্ষেত্রে ১৬৪ ধারার জবানবন্দি আলামতের চেয়ে বেশি গুরুত্ব পায়। আমি মনে করি, এ ঘটনার কারণে কোনো আসামি শাস্তি থেকে রক্ষা পাবে না এবং বিচার প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটবে না।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মতিউর রহমান জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে এবং জড়িতদের শনাক্ত ও মালামাল উদ্ধারে পুলিশ কাজ করছে। পুলিশের কোনো গাফিলতি ছিল কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখানে পুলিশের কোনো গাফিলতি নেই। এ পর্যন্ত অনেককেই সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন জুয়েল বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কোনো অস্ত্র বা গোলাবারুদ উদ্ধার করতে না পারাটা হতাশাজনক এবং পুলিশ প্রশাসনের ব্যর্থতা। এই আগ্নেয়াস্ত্রগুলো নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতাসহ নানা অপকর্মে ব্যবহার হতে পারে, যা চাঁপাইনবাবগঞ্জ তথা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাবে।’

স্থানীয়রা মনে করছেন, অপরাধ দমন করতে হলে যেকোনো মূল্যে এই অস্ত্রগুলো উদ্ধারে অভিযান চালানো জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পানিতে ডুবে প্রাণ গেল মামা-ভাগনের

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে পুকুরে ডুবে শাহবাব মন্ডল (আড়াই বছর) ও আবু তোহা মন্ডল (৩) নামের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের যাদুরচর নতুন গ্রাম এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

শাহবাব মন্ডল উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের ধনারচর নতুন গ্রামের শাহজাহান মন্ডলের ছেলে এবং আবু তোহা মন্ডল একই গ্রা‌মের আবু তালেবের ছেলে। এই দুই শিশু সম্পর্কে মামা-ভাগনে।

পরিবারের বরাত দিয়ে যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরবেশ আলী জানান, বুধবার সকালে ওই দুই শিশু তালেব মন্ডলের বাড়িতে খেলা করছিল। এ সময় সবার অজান্তে তারা বাড়ির পা‌শে পুকুরের পানিতে পড়ে যায়। স্বজনেরা পুকুর থে‌কে দুই শিশু‌কে উদ্ধার করে হাসপাতালে নি‌য়ে যান। দা‌য়িত্বরত চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক একই এলাকার বাসিন্দা ও কুড়িগ্রাম-৪ আসনের বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস‌্য প্রার্থী আজিজুর রহমান ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তি‌নি শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

রৌমারী থানার উপপ‌রিদর্শক শাহ‌নেওয়াজ হো‌সেন ব‌লেন, খবর পে‌য়ে ঘটনাস্থ‌লে পু‌লিশ পাঠা‌নো হ‌য়ে‌ছে। সহকারী ক‌মিশনার (ভূ‌মি) ঘটনাস্থ‌লে গি‌য়ে‌ছেন। দুই শিশুর মৃত‌্যুর ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনি ব‌্যবস্থা নেওয়া হ‌বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ০৪
নিহত লায়লা আফরোজ ও নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ। ছবি: সংগৃহীত
নিহত লায়লা আফরোজ ও নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ। ছবি: সংগৃহীত

‎রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় গৃহকর্মী আয়েশাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুরে ঝালকাঠি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

‎গ্রেপ্তারের বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন।

‎মামুন বলেন, গৃহকর্মী আয়েশাকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঝালকাঠি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গত সোমবার সকালে শাহজাহান রোডের ১৪ তলা একটি আবাসিক ভবনের সপ্তম তলায় লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তাঁর মেয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।

মা-মেয়ে হত্যায় অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মা-মেয়ে হত্যায় অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশা। ছবি: আজকের পত্রিকা

গতকাল তাঁদের মরদেহ নাটোরে দাফন করা হয়েছে। মামলার এজাহারে বাসা থেকে মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ মূল্যবান জিনিস খোয়া যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

ভবনের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া তরুণী (২০) এই জোড়া খুনে জড়িত বলে সন্দেহ স্বজনদের। ঘটনার পর থেকে ওই তরুণী পলাতক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি 
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মজিরুলের নেতৃত্বে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মজিরুলের নেতৃত্বে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

জীবন আছে যার, তার মৃত্যু অনিবার্য। মৃত্যুর পর মানুষের শেষ ঠিকানা কবর। মৃতদেহ গোসল করিয়ে কাফন পরানো হয়, জানাজা শেষে তাকে শায়িত করা হয় চিরনিদ্রার ঘরে। এই কবর খোঁড়ার দায়িত্বটি গ্রামের কিছু মানুষ বহু বছর ধরে স্বেচ্ছায়, বিনা পারিশ্রমিকে পালন করে আসছেন, যাঁরা সবার কাছে ‘গোরখোদক’ নামে পরিচিত। আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় তাঁরা করে থাকেন এই কাজ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গোরখোদকেরা কোনো পারিশ্রমিক নেন না। গ্রামের যে কেউ মারা যাক, নিজেদের ব্যস্ততা ফেলে তাঁরা ছুটে আসেন কবর খুঁড়তে। তাঁদের এই মানবিক কাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গ্রামের লোকেরা দোয়া করেন—আল্লাহ যেন তাদের সুস্থ ও ভালো রাখেন।

দেবীপুর গ্রামের বাসিন্দা গোরখোদক মজিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ৫৫ বছর ধরে কবর খুঁড়ছি। যত দিন সুস্থ থাকব, এই কাজ চালিয়ে যাব। আমাদের গ্রাম ছাড়াও অন্য গ্রাম থেকে কেউ ডাকলে সেখানেও যাই। ছোটবেলায় ওস্তাদের কাছে ডালি ধরেই শিখেছি। গরিব মানুষ, মাঠে কাজ করি; কিন্তু কেউ মারা গেলে দ্বিধা করি না—এই কাজ আমার নেশায় পরিণত হয়েছে।’

মজিরুল আরও জানান, এখন তিনি তরুণদেরও এই কাজ শেখাচ্ছেন।

গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

গোরখোদক শাকের আলী বলেন, ‘আমরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করি। কখনো কোনো টাকা নিই না। যেখানেই থাকি, গ্রামের কারও মৃত্যুর সংবাদ শুনলে দ্রুত কবর খুঁড়তে চলে আসি।’

গোরখোদক ফুয়াদ হোসেন বলেন, ‘অন্য গ্রাম থেকে ডাক এলেও আমরা যাই। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই করি এই কাজ। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’

স্থানীয় বাসিন্দা শাজাহান আলী বলেন, ‘কবর খোঁড়া বড় দায়িত্বের কাজ। গ্রামের এসব মানুষ খবর পেলেই দৌড়ে আসে। আমরা তাদের জন্য দোয়া করি।’

মাওলানা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘মৃত ব্যক্তির জন্য কবর খোঁড়া নিঃসন্দেহে সওয়াবের কাজ। হাদিসে এসেছে—যাঁরা কবর খোঁড়েন, আল্লাহ তাদের জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার ফটকের সামনে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। আন্দোলনের মুখে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে সটকে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিল্প ও থানা-পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসেছেন। আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের সাইটালিয়া গ্রামে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানায় এই ঘটনা ঘটে।

কারখানার নারী শ্রমিক মিনারা আক্তার বলেন, ‘অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করে নাই। এক মাসের বেতন না পেলে আমাদের চলা খুবই কঠিন হয়। আমাদের নাওয়া-খাওয়া বন্ধ হয়। আর সেখানে কারখানা কর্তৃপক্ষ দুই মাসের বেতনভাতা বকেয়া রেখেছে। আজ সকালে শ্রমিকেরা জড়ো হলে তারা পালিয়ে যায়।’

মিন্টু নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘এই কারখানায় আমরা তিন বছর ধরে চাকরি করছি। আমাদের বেতনের বাইরে কোনো সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে না। তবু পেটের দায়ে চাকরি করি। দুই মাসের বেতন বকেয়া। আমাদের তো পেট আছে, সন্তান-সংসার আছে। এক মাস দোকান বাকি পরিশোধ করতে না পারলে পরের মাসে আর দোকানি বাকি দেয় না। আমরা কী অবস্থায় আছি, একবার ভাবুন। বেতন পরিশোধ না করে তারা পালিয়ে গেছে।’

আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেহেদী হাসান বলেন, ‘এত দিন ধরে ঋণ করে বলে-কয়ে দোকান থেকে বাকি নিয়ে চলছি। আর পারছি না। এখন দোকান বাকি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতন নিয়ে কমপক্ষে ১০টি তারিখ দিছে। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন পরিশোধ করেনি। শেষে আজ বেতন পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু তারা কারখানা ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে।’

কারখানার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. বুলবুল হাসান বলেন, ‘ব্যাংকের সমস্যার কারণে বেতন-ভাতা পরিশোধ করা যাচ্ছে না। আশা করি, আজকের মধ্যে নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করতে পারব।’ বিনা নোটিশে কারখানার ফটক কেন তালাবদ্ধ? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমি বলতে পারব না।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আহমদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত