Ajker Patrika

১১ বছর আগে গুলিতে নিহত ৩ যুবদল কর্মী, বিচারের প্রত্যাশায় স্বজনরা

গাজী মমিন, ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর)
আপডেট : ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ২২: ৪২
১১ বছর আগে গুলিতে নিহত ৩ যুবদল কর্মী, বিচারের প্রত্যাশায় স্বজনরা

২০১৩ সালের ২৫ অক্টোবর বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের আহ্বানে ডাকা মিছিল সমাবেশকে কেন্দ্র করে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে সংঘর্ষ ও গুলিতে নিহত হন উপজেলার তিন যুবদল কর্মী। 

তারা হলেন-উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের পূর্ব গাজীপুর তিনকড়ি ব্যাপারী বাড়ির আ: মতিন ব্যাপারী ও তফুরেরনেছা দম্পত্তির ছেলে জাহাঙ্গীর ব্যাপারী, রূপসা উত্তর ইউনিয়নের বারপাইকা গ্রামের মো. আব্দুল আলিম ও হাজেরা বেগম দম্পত্তির ছেলে আরিফ হোসেন এবং একই ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামের আব্দুর রহিম ও সফুরা বেগম দম্পত্তির ছেলে বাবুল ভূঁইয়া। 

নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে ওই সময়ে মামলা করা হলেও তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের পাল্টা মামলার কারণে তাদের মামলার কার্যক্রম আর এগোয়নি। একযুগ মুখে বুঝে সবকিছু সহ্য করলেও স্বৈরাচারের পতনের পর নতুন করে বিচারের আশা করছেন ওই তিন পরিবারের স্বজনরা। এক যুগেও তাদের স্বজনদের হত্যার বিচার না পাওয়ার যন্ত্রণা তাদের কুরে কুরে খাচ্ছে। 

সরেজমিনে নিহত তিন যুবদল কর্মীর বাড়ি গিয়ে তাদের মা-বাবা ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে পরিবারের দু: সহ জীবনের স্মৃতি এবং প্রত্যাশার কথা জানা গেছে। 

রূপসা উত্তর ইউনিয়নের বারপাইকা গ্রামের মুন্সি বাড়ির মরহুম আ: আলিমের তিন সন্তানের মধ্যে সবার ছোট আরিফ হোসেন। পেশায় ছিল টাইল্স মিস্ত্রি আরিফ। ২০১৩ সালের ২৫ অক্টোবর শুক্রবার জুমার নামাজের পর বাড়ি থেকে বের হয়ে বিএনপির মিছিলে যোগ দেন। কিন্তু মিছিলে এসে বাড়ি ফেরেন লাশ হয়ে। 

মা হাজেরা বেগম জানান, ছেলেকে হারানোর পর থেকে তার সংসারের সুখ চলে গেছে। তার স্বামী মারা যায়। মেঝ ছেলে দেলোয়ার হোসেন ব্রেন স্ট্রোক করে। আরিফের বিধবা স্ত্রী আদরের নাতনিকে নিয়ে অন্যত্র বিয়ে করে চলে যায়। 

ভাই দেলোয়ার হোসেন বলেন, পুলিশ ও আওয়ামী লীগের ক্ষমতার দাপটে তার ভাই আরিফের হত্যার বিচার পাননি তারা। মামলা করা হলেও উল্টো মামলা দিয়ে আমাদের মামলাকেই শেষ করে দিয়েছে। ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচারের পতনের পর মামলাটি পুন: তদন্তের আবেদনের পর খারিজ করে দেয় আদালত। তবে প্রত্যাশা করছি অন্তর্বর্তী সরকারের সঠিক নির্দেশনায় মামলাটি পুনরায় তদন্ত হবে এবং আমরা ন্যায় বিচার পাবো। 

একই ইউনিয়নের দক্ষিণ বদরপুর গ্রামের আনিছ ভূঁইয়া বাড়ির আ: রহিমের ৬ সন্তানের মধ্যে বড় বাবুল ভূঁইয়া। বিএনপির ডাকা মিছিলে অংশ নিতে ফরিদগঞ্জ সদরে আসে কিন্তু ফেরে লাশ হয়ে। 

বাবা আব্দুর রহিম জানান, ‘সেদিন ছেলের গুলি খাওয়ার সংবাদ শুনে হাতে থাকা ৫০ টাকা নিয়ে ছুটে গিয়েছি ফরিদগঞ্জে। পুলিশের রক্তচক্ষু ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের চাপের মধ্যেই ছেলেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছি, কিন্তু পারিনি।’ 
 
নিহত বাবুলের স্ত্রী রোকেয়া বেগম বলেন, কাঠ মিস্ত্রীর কাজ করে সংসার চালাতেন তার স্বামী। স্বামীর মৃত্যুর পর তিন সন্তানকে নিয়ে অনেক কষ্ট করেছি। আওয়ামী লীগের লোকজন টাকার লোভ দেখালেও তাতে সাড়া দেইনি। অপক্ষোয় রয়েছি স্বামী হত্যার বিচারের। 

পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের পূর্ব গাজীপুর গ্রামের তিনকড়ি বাড়ির মৃত আব্দুল মতিনের ৯ সন্তানের সবার ছোট জাহাঙ্গীর বেপারীও ওইদিন আরও নেতাকর্মীর মতই মিছিলে এসেছিলেন। কিন্তু সেও লাশ হয়ে ফিরে। 

বড় ভাই সেলিম ব্যাপারী জানান, জাহাঙ্গীরের মৃত্যুতে সবকিছুই ওলোটপালট হয়ে যায় তার সংসারে। একপর্যায়ে তার স্ত্রী চলে যায়। মেয়েটির বিয়ে হয়ে গেছে। কিন্তু ছোট ভাইয়ের হারানোর ব্যথা ভুলতে পারছি না। ফ্যাসিস্টরা এতদিন আমাদের কথা বলতে না দিলেও এখন বিশ্বাস করি খুনীদের বিচার হবেই। 

ফরিদগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. আবুল কালাম আজাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, জাহাঙ্গীর, বাবুল ও আরিফের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়েছিল। কিন্তু স্বৈরাচার সরকারের প্রশাসন মামলাটির প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে ব্যর্থ হয়। আমরা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এমএ হান্নান চৌধুরীর পক্ষ থেকে আর্থিক ও মানসিক সহযোগীতার মধ্যদিয়ে ওই পরিবারগুলোর পাশে অতীতে ছিলাম। এখন যেহেতু স্বৈরাচার সরকার চলে গেছে, আশা করি মামলাটি পুনতদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীরা বিচারের আওতায় আসবে। আমরা বিএনপি পরিবার ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে সহযোগিতা করবো। 

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ব্যাংকিং ও রাজস্ব বিষয়ক সম্পাদক লায়ন মো. হারুনুর রশিদ বলেন, আমরা নিয়মিত জাহাঙ্গীর, বাবুল ও আরিফের পরিবারের খোঁজখবর রেখে আসছি। তাদের সঠিক বিচার পাওয়ার জন্য যা যা করা প্রয়োজন আমরা তাই করবো। 

ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হানিফ সরকার বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। বাদী পক্ষ আমাদের কাছে এসেছিল। মামলা যেহেতু আদালতে বিচারাধীন। তাদেরকে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। আদালত আমাদের যে নির্দেশনা দেবে, আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক আমরা সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

‘জনতার জন্য হিজাব আইন, খামেনির উপদেষ্টার মেয়ের জন্য ডানাকাটা জামা’

ত্রিভুজ প্রেম থেকে মুক্তি পেতেই জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে ছাত্রী: পুলিশ

স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সাপ্লাই চেইন বিভাগে চাকরির সুযোগ

যুগান্তকারী উদ্ভাবন: চোখে চিপ বসিয়ে দেখতে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জবি ছাত্র জোবায়েদ হত্যা: আদালতে দায় স্বীকার করে ৩ আসামির জবানবন্দি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জবি শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
জবি শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. জোবায়েদ হোসেন (২৫) হত্যার ঘটনায় রাজধানীর বংশাল থানায় করা মামলায় গ্রেপ্তার জোবায়েদের ছাত্রী (১৯), তাঁর বন্ধু মো. মাহির রহমান (১৯) ও মাহিরের বন্ধু ফারদীন আহম্মেদ আয়লান (২০) দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাঁরা জবানবন্দি দেন।

বিকেলে বংশাল থানা-পুলিশ তিনজনকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বংশাল থানার এসআই মো. আশরাফ হোসেন তিনজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার জন্য আবেদন করেন। আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এই তিনজনের পরিকল্পনায় জোবায়েদকে হত্যা করা হয় বলে গ্রেপ্তারের পর তাঁরা জানান। তাঁরা আদালতেও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে ইচ্ছুক।

পরে তিনজনই ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান, মাসুম মিয়া ও জুয়েল রানার খাস কামরায় ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। জবানবন্দি শেষে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়।

আসামি মাহির জবানবন্দি দেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের কাছে। জোবায়েদের ছাত্রী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম মিয়া ও আয়লান মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানার কাছে জবানবন্দি দেন। বিকেল থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত তাঁরা জবানবন্দি দেন।

আদালতের বংশাল থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই তানভীর মোর্শেদ চৌধুরী জবানবন্দির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জোবায়েদ খুন হওয়ার পর ওই দিন রাতেই তাঁর ছাত্রীকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও শান্তিনগর থেকে অপর দুজনকে আটক করে পুলিশ। আজ সকালে বংশাল থানায় মামলা করেন জোবায়েদের বড় ভাই এনায়েত হোসেন সৈকত।

মামলায় জোবায়েদের ছাত্রী, তাঁর বন্ধু মো. মাহির রহমান ও মাহিরের বন্ধু ফারদীন আহম্মেদ আয়লানকে আসামি করা হয়। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও চার–পাঁচজনকে আসামি করা হয়।

জবানবন্দিতে যা বলেছেন তিনজন

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, তিনজনকে গ্রেপ্তারের পর থানা হেফাজতে তাঁদের মুখোমুখি করা হয়। পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে তাঁরা হত্যার দায় স্বীকার করেন। পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে তাঁরা যা বলেছেন, আদালতে সে রকম স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।

প্রত্যেকে জবানবন্দিতে বলেছেন, এই হত্যাকাণ্ড তাঁরা সংঘটিত করেছেন পরিকল্পিতভাবে। গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে তাঁরা জোবায়েদকে উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

‘জনতার জন্য হিজাব আইন, খামেনির উপদেষ্টার মেয়ের জন্য ডানাকাটা জামা’

ত্রিভুজ প্রেম থেকে মুক্তি পেতেই জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে ছাত্রী: পুলিশ

স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সাপ্লাই চেইন বিভাগে চাকরির সুযোগ

যুগান্তকারী উদ্ভাবন: চোখে চিপ বসিয়ে দেখতে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিরাজগঞ্জে কিশোরী ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার ৩

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ০০: ০১
গ্রেপ্তার তিনজন। ছবি: আজকের পত্রিকা
গ্রেপ্তার তিনজন। ছবি: আজকের পত্রিকা

সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে কিশোরীকে রেস্টুরেন্টে ধর্ষণের মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে মামলার প্রধান আসামিসহ আরও দুজন পলাতক রয়েছেন।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার জামতৈল গ্রামের আলমের ছেলে মো. আকাশ (২১), নান্নু সরকারের ছেলে মো. আতিক (২৩) এবং কর্ণসুতি গ্রামের জাহাঙ্গীর প্রামাণিকের ছেলে নাজমুল হক নয়ন (২০)।

কামারখন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ বলেন, গ্রেপ্তার তিনজনকে আজ মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

পুলিশ জানায়, গতকাল সোমবার জামতৈল বাজার এলাকা থেকে আকাশ ও আতিককে এবং পরে নাজমুল হক নয়নকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

উল্লেখ্য, গত রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কর্ণসুতি গ্রামের এক কিশোরীকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তুলে নিয়ে উপজেলার জামতৈল সেন্ট্রাল পার্কসংলগ্ন ‘ডেরা ফাস্ট ফুড অ্যান্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্টে’ ধর্ষণ করা হয়। ওই ঘটনায় কিশোরীর মা গতকাল কামারখন্দ থানায় ছয়জনকে আসামি করে মামলা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

‘জনতার জন্য হিজাব আইন, খামেনির উপদেষ্টার মেয়ের জন্য ডানাকাটা জামা’

ত্রিভুজ প্রেম থেকে মুক্তি পেতেই জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে ছাত্রী: পুলিশ

স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সাপ্লাই চেইন বিভাগে চাকরির সুযোগ

যুগান্তকারী উদ্ভাবন: চোখে চিপ বসিয়ে দেখতে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চট্টগ্রামে আ.লীগ অফিসে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগ, ভাঙচুর

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামে আ.লীগ কার্যালয় ভাঙচুর করেন একদল যুবক। ছবি: আজকের পত্রিকা
চট্টগ্রামে আ.লীগ কার্যালয় ভাঙচুর করেন একদল যুবক। ছবি: আজকের পত্রিকা

কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম উত্তর জেলা কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়েছেন একদল যুবক। নগরীর নিউমার্কেট দোস্ত বিল্ডিংয়ের কার্যালয়টিতে আজ মঙ্গলবার বিকেলে এ ভাঙচুর চালানো হয়। তবে ভাঙচুর সম্পর্কে কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি ঘটনাস্থল থেকে ২০০ গজ দূরে থাকা কোতোয়ালি থানা-পুলিশ।

আব্দুল মালেক নামের স্থানীয় এক ব্যবসায়ী জানান, বিকেলে ৩০-৪০ জনের একটি দল এসে দোস্ত বিল্ডিংয়ে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। ভাঙচুর শেষে তারা ভবনটিতে থাকা চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ ও মুজিব সেনা কার্যালয়ে প্রবেশ করে। তাদের হাতে হকিস্টিক ও লাঠিসোঁটা ছিল।

চট্টগ্রামে আ.লীগ কার্যালয় ভাঙচুর করেন একদল যুবক। ছবি: আজকের পত্রিকা
চট্টগ্রামে আ.লীগ কার্যালয় ভাঙচুর করেন একদল যুবক। ছবি: আজকের পত্রিকা

এ সময় আওয়ামী লীগ কার্যালয়টি ভাঙচুর চালিয়ে তছনছ করে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে কার্যালয় দুটি তালা দেওয়া ছিল বলে জানান স্থানীয় ওই দোকানদার। ভাঙচুর করতে আসা যুবকদের সঙ্গে বিল্ডিংয়ের লিজ দাবিদার জাকির হোসেনও উপস্থিত ছিলেন বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মহানগর সমন্বয় কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী আরিফ মঈনুদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে ভবনটিতে অবৈধভাবে দখল করে কার্যালয় পরিচালনা করে আসছিল আওয়ামী লীগ। সরকার পতনের পর কিছুদিন কার্যালয়টি বন্ধ ছিল। কিন্তু কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা তিন-চার মাস ধরে রাতের বেলায় কার্যালয়টিতে বসে মিটিং করে। বৃহত্তর চট্টগ্রামের সব নাশতার পরিকল্পনা হয় এই কার্যালয় থেকে।

তিনি আরও বলেন, বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর ‘৩৬ জুলাই’ নামের একটি সংগঠনের লোকজন কার্যালয়টিতে তল্লাশি করে। এই সময় কার্যালয়টিতে সম্প্রতি সময়ে মিটিং করার নমুনা হিসেবে ড্রিংকিং ওয়াটার, বিছানা, চেয়ার টেবিল, শেখ মুজিব, শেখ হাসিনা ও ইন্দিরা গান্ধীর ছবি পাওয়া গেছে বলে জানান এনসিপির এই নেতা।

চট্টগ্রামে আ.লীগ কার্যালয় ভাঙচুর করেন একদল যুবক। ছবি: আজকের পত্রিকা
চট্টগ্রামে আ.লীগ কার্যালয় ভাঙচুর করেন একদল যুবক। ছবি: আজকের পত্রিকা

অপর দিকে ঘটনাস্থলের কাছে থাকা কোতোয়ালি থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল করিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একটু আগে রাতে এই বিষয়ে খবর পেয়েছি। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখছি। তবে এই ঘটনায় আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি।’

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম নগরীর নিউমার্কেট মোড়ের দোস্ত বিল্ডিংয়ে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের ৪১টি কার্যালয় রয়েছে। ভবনটির প্রকৃত মালিক একজন বিহারি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় যিনি দেশত্যাগ করেন।

এর পর থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ভবনটি দখল করে নিজেদের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। মাঝখানে ১৯৯১ সালে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন জাকির নামের এক ব্যক্তিকে লিজ দিলেও বিভিন্ন আইনি জটিলতায় তিনি দখল নিতে পারেননি। ভবনটি নিয়ে লিজ পাওয়া ব্যক্তি ও দখলদারদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি কমপক্ষে চারটি মামলা চলমান রয়েছে বলে জানা গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

‘জনতার জন্য হিজাব আইন, খামেনির উপদেষ্টার মেয়ের জন্য ডানাকাটা জামা’

ত্রিভুজ প্রেম থেকে মুক্তি পেতেই জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে ছাত্রী: পুলিশ

স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সাপ্লাই চেইন বিভাগে চাকরির সুযোগ

যুগান্তকারী উদ্ভাবন: চোখে চিপ বসিয়ে দেখতে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজশাহীতে সোনার বারসহ গ্রেপ্তার ১

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
উদ্ধার করা সোনার বার। ছবি: সংগৃহীত
উদ্ধার করা সোনার বার। ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানা-পুলিশ ৫টি সোনার বার উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় এক তরুণকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর নাম মোশারফ হোসেন (২০)। তিনি সোনা চোরাকারবারি বলছে পুলিশ।

মোশারফের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার বকচর গ্রামে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জেলা পুলিশের মুখপাত্র রফিকুল আলম এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।

রফিকুল আলম বলেন, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে গোদাগাড়ী পৌরসভার হাটপাড়া ঘাটসংলগ্ন পদ্মা নদীর পাশে অভিযান চালিয়ে ৫টি সোনার বারসহ মোশারফকে আটক করা হয়।

কালো স্কচটেপে মোড়ানো ৫টি সোনার বার কাটা অবস্থায় ছিল। এগুলোর ওজন ২৯৪ দশমিক ১৩ গ্রাম। তিনি আরও জানান, অভিযানের সময় সোনা চোরাকারবারি চক্রের আরও দুই সদস্য ডাবলু ও জাহিদ কৌশলে পালিয়ে যায়। এ নিয়ে মামলা করা হয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

‘জনতার জন্য হিজাব আইন, খামেনির উপদেষ্টার মেয়ের জন্য ডানাকাটা জামা’

ত্রিভুজ প্রেম থেকে মুক্তি পেতেই জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে ছাত্রী: পুলিশ

স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সাপ্লাই চেইন বিভাগে চাকরির সুযোগ

যুগান্তকারী উদ্ভাবন: চোখে চিপ বসিয়ে দেখতে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত