Ajker Patrika

মধ্যপ্রাচ্যের খেজুরের চাষ হচ্ছে ভোলায়

শিমুল চৌধুরী, ভোলা
আপডেট : ২৬ জুন ২০২২, ১৪: ২০
মধ্যপ্রাচ্যের খেজুরের চাষ হচ্ছে ভোলায়

ভোলার উপকূলের মাটি সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে মধ্যপ্রাচ্যের খেজুর চাষে। এই খেজুর চাষে উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখছেন দ্বীপ জেলার চাষিরা। তাই এ জেলার উঁচু জমিতে বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে সৌদি আরবের খেজুরের চাষ। 

এ কাজের সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার টবগী ইউনিয়নের দালালপুর গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হচ্ছে সৌদি আরবের আজোয়া, সুক্কারি, মরিয়ম, খালাছ, আম্বারসহ বিভিন্ন প্রজাতির খেজুর। ভোলার উষ্ণ আবহাওয়া ও রুক্ষ মাটিতে ধানের পাশাপাশি অর্থকরী ফসল হিসেবে চাষ হচ্ছে মরুর খেজুর। অন্যান্য ফলের চেয়ে এই খেজুরের সংরক্ষণকাল, চাহিদা ও বাজারমূল্য বেশি। তাই বাণিজ্যিকভাবে খেজুরের বাগান করতে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন এখানকার স্থানীয় চাষিরা। এগুলো আকার ও স্বাদে সৌদি খেজুরের মতো হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা বেশি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দালালপুর গ্রামের সৌদিপ্রবাসী মেসার্স হাজি এগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী হাজি মো. মোসলেম উদ্দিন ২০২০ সালে ৪০ শতাংশ জমিতে উন্নত জাতের ড্রাগনের পাশাপাশি চাষ করছেন সৌদি আরবের খেজুরের। দুই বছরের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের এ ফলের গাছ থেকে ফল আসতে শুরু করে। এখন তাঁর বাগানে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ২৫০টি খেজুর ও ২১০টি ড্রাগন গাছ রয়েছে। এর মধ্যে সুক্কারি জাতের দুটি গাছে ইতিমধ্যে প্রচুর খেজুর ধরেছে। এবং ড্রাগনের প্রতিটি গাছেও রয়েছে ফল। ওই বাগান ছাড়াও তাঁর বাড়ির আঙিনার নার্সারিতে আরও প্রায় ৩০০ খেজুরের চারা রয়েছে। বয়স অনুযায়ী প্রতি পিছ চারা ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি করছেন। এ ছাড়া ৬০০ পিস ড্রাগনের কাটিং রয়েছে। প্রতি ড্রাগনের পিস ৫০ টাকায় বিক্রি করছেন। এই জমিতে খেজুর ও ড্রাগন দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসছে বহু মানুষ। 

এ বিষয়ে চাষি মোসলেহ উদ্দিন জানান, তিনি দীর্ঘ কয়েক বছর সৌদি আরবে বসবাস করেছেন। তিন বছর আগে দেশে আসার সময় সৌদি আরব থেকে বিভিন্ন প্রজাতির খেজুরের বীজ নিয়ে আসেন। ওই বীজ তিনি তাঁর বাড়ির আঙিনায় রোপণ করেন। তিনি এখন খেজুরের বাগান করার জন্য পাশের ইউনিয়ন কাচিয়ার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাচিয়া গ্রামে ৪০ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। এর মধ্যে ১৬ শতাংশ জমিতে পুকুর ও বাকি ২৪ শতাংশ জমিতে খেজুরের চারা এবং উন্নত জাতের ড্রাগনের কাটিং রোপণ করেন। 

চাষি মোসলেহ উদ্দিন আরও জানান, এটা একটা চ্যালেঞ্জিং প্রজেক্ট হলেও লাভজনক ব্যবসা। শুরুতে এলাকার মানুষ হাসি-ঠাট্টা করলেও ফলন আসার পর অনেকে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। জমিসংকটের কারণে বাগান সম্প্রসারণ করতে পারছেন না। একসময় তাঁর বাগানের খেজুর ভোলাসহ সারা দেশে রপ্তানি হবে বলেও তিনি আশা করেন। 

এ বিষয়ে টবগী ইউনিয়নের মুলাইপত্তন গ্রামের বাসিন্দা মো. জাহাঙ্গীর বলেন, ‘মোসলেম উদ্দিনের বাগান দেখে আমি উদ্বুদ্ধ হয়েছি। তাঁর কাছ থেকে ২৩টি খেজুর গাছের চারা নিয়ে আমি রোপণ করেছি।’

মোসলেহ উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, এ বিষয়ে বিভিন্ন পরামর্শের জন্য বোরহানউদ্দিন উপজেলা কৃষি অফিসে গেলেও তারা কোনো কর্ণপাত করেননি। কৃষি অফিসে কয়েকবার যাওয়ার পর কয়েক মাস আগে একবার এসে দেখে গেছেন। এরপর অনেকবার যোগাযোগ করেও তাদের পক্ষ থেকে কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে বোরহানউদ্দিন উপজেলা কৃষি অফিসার এইচ এম. সামীম আজ রোববার সকালে বলেন, সৌদি আরবের খেজুর মরুভূমির ফসল। তবু অনেকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ফসলটি চাষ করছেন। এর মধ্যে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার টবগী ইউনিয়নে একজন চাষি এই ফসল বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছেন বলে শুনেছি। অনেক সময় বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে আমাদের কর্মকর্তারা সময় দিতে পারেন না। তব, খুব শিগগিরই তাঁর বাগানটি পরিদর্শন করে সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকেরা ভাতা পান না, নতুন গাড়ি-অফিস চান সদস্যসচিব

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে এমন ‘অদ্ভুতুড়ে’ ঘটনার কারণ তাহলে এটাই

সময়ক্ষেপণ করবেন না, আগামীকালের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করুন— প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঘর ভাঙলেও জমি আঁকড়ে কোল পরিবারগুলো

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে উচ্ছেদের শিকার ভুক্তভোগীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে উচ্ছেদের শিকার ভুক্তভোগীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

এক্সকাভেটরের চাপায় ঘরের টিনগুলো চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেছে। দুমড়েমুচড়ে গেছে ঘরের স্টিলের খাট, হাঁড়ি-পাতিলসহ অন্য জিনিসপত্র। বাড়ির মাটির দেয়ালগুলো মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বাবু ডাইংয়ে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোল সম্প্রদায়ের পাঁচজনের বাড়ি এভাবে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলেও তাঁরা ভিটা ছেড়ে যাননি। পাশেই বাঁশঝাড়ে অল্প কিছু জিনিসপত্র নিয়ে তাঁরা আশ্রয় নিয়েছেন। এখানেই থাকতে চান তাঁরা।

গত সোমবার দুপুরে সনাতন সরেন, সুজন সরেন, ভুটু কিসকু, ভারত টুডু ও শনিলাল টুডুর বাড়িতে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। খাস জায়গা ভেবে এই পরিবারগুলো ১৯৯৮ সাল থেকে এখানে বাস করে আসছিলেন। পরে শোনেন যে, জমিটি তিলক মাঝি, দিনু মাঝি ও ভাদু মাঝি নামের কয়েকজনের নামে রেকর্ড আছে। তাঁরা তাঁদের জাত ভাই। এখন এখানে নেই। তাঁদের হিন্দু সাজিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করে নেন মকবুল হোসেন নামের এক ব্যক্তি।

পরে মকবুলের ওয়ারিশ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সদরের আলমগীর কবিরসহ কয়েকজন জমি পেতে আদালতে মামলা করেন। কোল সম্প্রদায়ের মানুষগুলো মামলা পরিচালনা করতে পারেননি। একতরফা রায়ে এই ৭৭ শতাংশ জায়গার রায় হয়েছে আলমগীরদের পক্ষে। গত সোমবার পুলিশ ও আদালতের প্রতিনিধি গিয়ে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে।

গোদাগাড়ীর মোহনপুর ইউনিয়নে অবস্থিত বাবু ডাইং গ্রামটি রাজশাহী শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর থেকে দূরত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, তিনটি বাড়ি একেবারেই গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আর দুটি বাড়ির আংশিক ভাঙা হয়েছে। শনিলাল টুডুর বাড়ির অর্ধেক ভেঙে আঙিনায় কয়েকটি সীমানা পিলার পুঁতে দেওয়া হয়েছে। শনিলালের স্ত্রী চম্পলি মুর্মু বলেন, ‘একদিক থেকে বুলডোজার দিয়ে বাড়ি ভাঙছিল, আরেক দিক দিয়ে নিজেরা নিজেরাই মাপামাপি করে বাড়ির আঙিনায় সীমানা পিলার পুঁতে দিয়েছে। আমাদের কোনো কথাই শোনেনি।’

সনাতন টুডু বলেন, ‘পুলিশসহ কোর্টের লোকজন এসে বাড়ি ভাঙতে চাইলে আমি দরজার সামনে দাঁড়িয়ে যাই। তখন পুলিশ বলে যে, ‘‘আপনি আইনের কাজে বাধা দেবেন না’’। আমাকে সরিয়ে দিয়ে বুলডোজার চালিয়ে দেয়। জিনিসপত্র সরাতে আমরা ৩০ মিনিটও সময় পাইনি।’

ঘরহারা সুজন সরেন বলেন, ‘অল্প কিছু জিনিস বের করতে পেরেছি। সেগুলো এখানেই রেখেছি বাঁশতলায়। বাকিগুলো বুলডোজারের নিচে গেছে। গরু-ছাগলগুলো মানুষের বাড়িতে রেখেছি। দুই দিন আমরা বাঁশঝাড়ের মধ্যেই ছিলাম। গতকাল রাতে বৃষ্টি এলে পাশের বাড়ির বারান্দায় আশ্রয় নিই। আমরা এখানেই থাকতে চাই। আমাদের তো আর যাওয়ার কোনো জায়গা নাই।’

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে উচ্ছেদের শিকার ভুক্তভোগীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে উচ্ছেদের শিকার ভুক্তভোগীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

এ দিন পরিবারগুলোকে দেখতে যান বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) রাজশাহী ইউনিটের সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট সামিনা বেগম, সেন্টার ফর ক্যাপাসিটি বিল্ডিং অব ভলান্টারি অর্গানাইজেশনের (সিসিবিভিও) সমন্বয়কারী আরিফ ইথার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক গোলাম সারওয়ার, রক্ষাগোলা সমন্বয় কমিটির সভাপতি সুধীর সরেন, বন্ধু আমরার সভাপতি মাহফুজুল ইসলাম লিটন, সিসিবিভিওর সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার নিরাবুল ইসলাম ও ব্লাস্টের প্যারালিগ্যাল আবু তালেব।

সিসিবিভিওর সমন্বয়কারী আরিফ ইথার বলেন, ‘আগে এ জমি কোল সম্প্রদায়েরই ছিল। তাদের হিন্দু দেখিয়ে জমির রেকর্ড করে নেওয়া হয়েছে বাঙালিদের নামে। কারণ, আদিবাসীদের জমি নিতে হলে জেলা প্রশাসকের অনুমোদন লাগে। হিন্দু হলে অনুমোদনের প্রয়োজন নেই। ভিন্নপথে জমির মালিকানা নিয়ে তাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। এটা খুবই অমানবিক কাজ হয়েছে। আমরা অনুরোধ করব, যেন দ্রুতই তাদের পুনর্বাসন করা হয়।’

জানতে চাইলে কোল পরিবারগুলোর বিরুদ্ধে করা মামলার বাদী আলমগীর কবির বলেন, ‘এই জমি কিনেছিলেন আমার দাদা মকবুল হোসেন। তিনি কীভাবে এটা কিনেছিলেন, তা তো আমরা বলতে পারব না। তবে এটা রেকর্ডীয় সম্পত্তি। তারপরও আদিবাসীরা জমি ছাড়েনি। বাধ্য হয়ে আমরা আইনের আশ্রয় নিয়ে তাদের উচ্ছেদ করেছি। জমি এখন আমাদের দখলে।’

ব্লাস্টের রাজশাহী ইউনিটের সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট সামিনা বেগম জানান, এই জমির সমস্ত কাগজপত্র তাঁরা সংগ্রহ করবেন। তারপর ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে আইনি সহায়তা দেবেন। গতকাল গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল আহম্মেদ জানিয়েছিলেন, পরিবারগুলোর থাকার ব্যবস্থা করার জন্য তিনি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দিয়েছেন। তবে আজ পর্যন্ত তাঁদের কোনো গতি হয়নি। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে ইউপি চেয়ারম্যান খাইরুল ইসলামকে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকেরা ভাতা পান না, নতুন গাড়ি-অফিস চান সদস্যসচিব

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে এমন ‘অদ্ভুতুড়ে’ ঘটনার কারণ তাহলে এটাই

সময়ক্ষেপণ করবেন না, আগামীকালের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করুন— প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিএম কলেজে যুগলের ওপর চড়াও, উগ্র অনলাইন গ্রুপের ১০ জন আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
বরিশাল সরকারি বিএম কলেজে এক যুগলের ওপর চড়াও হওয়ায় ১০ জনকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরিশাল সরকারি বিএম কলেজে এক যুগলের ওপর চড়াও হওয়ায় ১০ জনকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরিশাল সরকারি বিএম কলেজে এক যুগলের ওপর চড়াও হয়ে তাঁদের ছবি ফেসবুকে ছেড়ে দিয়েছে একদল তরুণ। বৃহস্পতিবার দুপুরে ক্যাম্পাসের পরীক্ষা ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে বিএম কলেজ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বহিরাগত শিক্ষার্থীদের মারামারি হয়েছে। পরে পুলিশের হাতে ১০ জনকে তুলে দেওয়া হয়।

যুগলের ওপর চড়াও হওয়া তরুণেরা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ‘টিম প্রটেক্ট আওয়ার সিস্টার্স’ নাম একটি উগ্র অনলাইন গ্রুপের সদস্য বলে জানা গেছে।

আটক ব্যক্তিরা হলেন বিএম কলেজের মীর বাহার মিয়া ও তাকরিম হোসেন, ইনফ্রা পলিটেকনিকের মো. ফজলুল হক আকিব, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের মো. রাব্বি, বেলতলা দারুল উলুম মাদ্রাসার ইনাম আহমেদ, নগরের কাশিপুরের মো. মাহমুদ মোস্তফা, রূপাতলী এলাকার মো. রাফি, মুসলিমপাড়ার নাসিম মাহমুদ এবং লুৎফুর রহমান সড়কের কাজী মিরাজ ও মো. তাওহিদ।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, আটক ব্যক্তিদের কোনো খারাপ উদ্দেশ্য আছে কি না তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

পুলিশ ও কলেজ প্রশাসনের তথ্যমতে, আটক ব্যক্তিরা একটি উগ্র অনলাইন গ্রুপের সদস্য। তাঁরা নারীদের রক্ষার নামে বিভিন্ন স্থানে বিশৃঙ্খলা করে আসছেন।

পুলিশ জানায়, আটক তরুণেরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন যে গ্রুপের প্রধান মালয়েশিয়াপ্রবাসী।

বিএম কলেজের উপাধ্যক্ষ ড. আবু তাহের মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে জানান, ক্যাম্পাসের পরীক্ষা ভবনের কাছাকাছি ভিন্ন ধর্মাবলম্বী দুটি ছেলে-মেয়ে গল্প করছিলেন। ছেলেটি হাতেম আলী কলেজের এবং মেয়েটি বিএম কলেজের। একপর্যায়ে কলেজেরই এক ছেলে ওদের দেখে তাঁর সহযোগী বহিরাগত কয়েকজনকে ডেকে আনেন। সেখানে ওই ছেলে-মেয়ের ভিডিও করে হাতেম আলী কলেজের ছেলেটিকে মারধর করা হয়। বিষয়টি টের পেয়ে বিএম কলেজছাত্ররা বহিরাগত কয়েকজনকে ধরে তাঁর কার্যালয়ে নিয়ে আসেন।

উপাধ্যক্ষ জানান, এই ছেলেরা ‘টিম প্রটেক্ট আওয়ার সিস্টার্স’ নাম একটি উগ্র অনলাইন গ্রুপের সদস্য। তাঁরা কলেজে আটকা পড়েছেন এমন খবর ছড়িয়ে দিলে দলে দলে কলেজ গেটের সামনে হাজির হয়। একপর্যায়ে বিএম কলেজে ছাত্ররা তাঁদের মধ্যে ১০ জনকে ধরে পুলিশে খবর দেন। এঁরা নগরের টেক্সটাইল কলেজ, পলিটেকনিক কলেজ, বিএম কলেজ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও মাহমুদিয়া মাদ্রাসার ছাত্র। খবর পেয়ে পুলিশ ১০ জনকে ১১টি মোবাইলসহ আটক করে থানায় নিয়ে গেছে।

এ ব্যাপারে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন আইস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিএম কলেজ থেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১০ জন ছাত্রকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। বিএম কলেজছাত্ররা তাদের ধরে দিয়েছে। তাদের নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। শুনেছেন যে একটি অনলাইন গ্রুপের সদস্য তারা। তবে তদন্ত করে দেখা হবে আটককৃতদের কোনো খারাপ উদ্দেশ্য আছে কি না। এরপর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকেরা ভাতা পান না, নতুন গাড়ি-অফিস চান সদস্যসচিব

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে এমন ‘অদ্ভুতুড়ে’ ঘটনার কারণ তাহলে এটাই

সময়ক্ষেপণ করবেন না, আগামীকালের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করুন— প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজধানীতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় যশোরের বিএনপি নেতা নিহত

ঢামেক প্রতিবেদক
আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ২২: ৪৮
বিএনপি নেতা আব্দুল মুজিদ। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপি নেতা আব্দুল মুজিদ। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিএনপির এক নেতা নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে যাত্রাবাড়ীর ডাচ-বাংলা রোডে এই দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক সন্ধ্যা ৭টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত ব্যক্তির নাম আব্দুল মজিদ (৬০)। তিনি যশোর জেলার চৌগাছা থানার সিংহঝুলি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ছিলেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে হাসপাতালে মৃত আব্দুল মজিদের বন্ধু আলমগীর হোসেন জানান, তাঁদের বাড়ি যশোর জেলার চৌগাছা থানার জামালতা গ্রামে। এলাকায় কেবলের ব্যবসা করতেন মজিদ।

আলমগীর হোসেন আরও জানান, তাঁরা চারজন দুই মোটরসাইকেলে করে যশোর থেকে রাঙামাটি গিয়েছিলেন। সেখান থেকে যশোর যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকায় আসছিলেন। মজিদ তাঁর সঙ্গে একই মোটরসাইকেলের পেছনে ছিলেন। যাত্রাবাড়ীর ডাচ-বাংলা রোডে এলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরসাইকেল থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন মজিদ। পরে দ্রুত ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি যাত্রাবাড়ী থানায় অবহিত করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকেরা ভাতা পান না, নতুন গাড়ি-অফিস চান সদস্যসচিব

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে এমন ‘অদ্ভুতুড়ে’ ঘটনার কারণ তাহলে এটাই

সময়ক্ষেপণ করবেন না, আগামীকালের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করুন— প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘বিএনপি ক্ষমতায় এলে আ.লীগ কর্মীরা নিরাপদে থাকবে’

বাগেরহাট প্রতিনিধি
বাগেরহাট সদরের খানপুর ইউনিয়নে বিএনপির মতবিনিময় সভা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাগেরহাট সদরের খানপুর ইউনিয়নে বিএনপির মতবিনিময় সভা। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘যদি ভোটে জিততে চান, আ.লীগ কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলুন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে তোমরা নিরাপদে থাকবে’—এমন মন্তব্য করেছেন বাগেরহাট সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ নাসির আহমেদ মালেক। গতকাল বুধবার রাতে সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নে বিএনপির মতবিনিময় সভা, গণসংযোগ ও ৩১ দফা সম্বলিত লিফলেট বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সৈয়দ নাসির আহমেদ মালেক বলেন, ‘যারা নিরীহ আওয়ামী লীগ, যারা বাধ্য হয়ে মিছিল-মিটিংয়ে গেছে, কিন্তু কারও নামে মিথ্যা মামলা দেয়নি, কারও ক্ষতি করেনি, তাদের দয়া করে কিছু বলবেন না, তাদের বুকে টেনে নিন।’

তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে এ দেশের মুসলমানদের প্রিয় মানুষ আল্লামা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীকে পয়জন পুশ করে মেরে ফেলা হয়েছিল। সেই জামায়াত পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলছে বিএনপি মারছে, আমরা ঠেকাচ্ছি।’

তারা নিজেরাই সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করছে। তারা এখন ভোটের জন্য হিন্দু ভাইদের বাড়ি যাচ্ছে, পূজায় যাচ্ছে, গীতা পাঠ করছে, প্রসাদ খাচ্ছে—সবই একটি ভোটের আশায়।

সৈয়দ নাসির আহমেদ আরও বলেন, ‘যারা আওয়ামী লীগের নামে জুলুম-অত্যাচার, হামলা-মামলা, দখল-জবরদখল করেছে, তাদের সঙ্গে কোনো আপস নয়। তবে যারা নিরীহ, যারা শুধু নাম লেখিয়েছে তাদের প্রতি সহনশীল হোন। যদি ভোটে জিততে চান, তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলুন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে তোমরা নিরাপদে থাকবে, শান্তিতে থাকবে—আমরা সে দায়িত্ব নিচ্ছি।’

এ সময় জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বুলু, মহিলা দলনেত্রী ফরিদা বেগম, রোজিনা খাতুনসহ স্থানীয় নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকেরা ভাতা পান না, নতুন গাড়ি-অফিস চান সদস্যসচিব

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে এমন ‘অদ্ভুতুড়ে’ ঘটনার কারণ তাহলে এটাই

সময়ক্ষেপণ করবেন না, আগামীকালের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করুন— প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত