Ajker Patrika

বরিশালের ৮ বালুমহাল

দরপত্র জমা দিতে যুব ও স্বেচ্ছাসেবক দলের বাধা

  • একজনকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ।
  • ছিনিয়ে নেওয়া হয় মহিলা দলের এক নেত্রীর দরপত্র।
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বরিশালের ৮টি বালুমহাল বাগিয়ে নিতে ইজারার দরপত্র জমাদানে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের বাইরে থেকে একজনকে উঠিয়ে নিয়ে যায় তারা।

বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১২ মার্চ জেলার মোট ৮টি বালুমহাল ইজারার দরপত্র আহ্বান করা হয়। ২৩ মার্চ ছিল দরপত্র বিক্রির শেষ দিন। আর গতকাল সোমবার ছিল দরপত্র জমাদানের দিন। জেলার হিজলার ১ টি, বানারীপাড়ার ৩টি এবং বাকেরগঞ্জের ৪টি বালুমহালের ইজারা ডাকা হয়েছে।

জানা গেছে, জেলার ৮টি বালুমহাল ইজারা বাগিয়ে নিতে গত রোববার রাত থেকেই তৎপরতা শুরু করেন যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীরা। এ জন্য নগরের লঞ্চঘাটসংলগ্ন রিচমার্ট হোটেলে রাতভর বৈঠকে বসেন তাঁরা। কিন্তু গতকাল দুপুরে হঠাৎ একটি দরপত্র জমা দিয়ে ফেলেন আরবি এন্টারপ্রাইজের মো. আবুল বাছেদ। তিনি হিজলা ৩৫ নম্বর শাওরা সৈয়দখালী বালুমহালের বিপরীতে দরপত্র জমা দেওয়ায় বিপত্তি ঘটে।

অভিযোগ উঠেছে, এ ঘটনায় মহিলা দলের এক নেত্রীর দরপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি জাফর নামের এক ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে যান যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীরা। এদিকে গতকাল বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীদের তৎপরতা দেখা গেছে। এ সময় কেউ ইজারার দরপত্র জমা দিতে এলে তাঁকে বাধা দেন তাঁরা।

আরবি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. আবুল বাছেদ বলেন, ‘আমি বিভাগীয় কমিশনারের অফিসে হিজলা ৩৫ নম্বর শাওরা সৈয়দখালী বালুমহাল ইজারার দরপত্র জমা দেই বেলা পৌনে ১টার দিকে। এটির সরকারি দর ৫৬ লাখ টাকা। এ সময় সঙ্গে থাকা আমার খালাতো ভাই জাফর হোসেনকে বাইরে থেকে ধরে নিয়ে যান মহানগর যুবদল ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মাসুদ রাঢ়ী, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম জাহান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মশিউর রহমান মঞ্জু, যুবদলের আনিসুর রহমান, জাহিদসহ বেশ কয়েকজন।’

জানা গেছে, জাফরকে লঞ্চঘাটের রিচমার্ট হোটেলে নেওয়া হয়। গতকাল রাত ৮টা পর্যন্ত তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আবুল বাছেদ বলেন, ‘আমি সেনাবাহিনীকে আগেই জানিয়েছি। টেন্ডার ওপেন হয়েছে। কোতোয়ালি থানায় গিয়ে জাফরকে ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি অবহিত করব।’

এ বিষয়ে মহানগর মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ফরিদা বেগম বলেন, ‘আমি দরপত্র কিনেছি। কিন্তু দলীয় লোকজন আমাকে এক জায়গায় যেতে বলেন, যেখানে বণ্টন হবে। পরে কবির ও নিজাম হুমকি দিয়ে বলেন, কথা না শুনলে মেরে ফেলব। দল ক্ষমতায় আসেনি, এখনই যদি এমন দখলবাজি করে তাহলে তা হবে দুঃখজনক।’

মহানগর যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মাসুদ রাঢ়ী বলেন, ‘বালুমহালের বিষয়ে আমি জানি না। ইজারার ধারেকাছেও ছিলাম না। জাফর কিংবা বাছেদ নামের কাউকে চিনিও না।’ ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম জাহান বলেন, তিনিও এসব বিষয়ে কিছু জানেন না।

মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা অত্যন্ত ঘৃণিত কাজ। দলে চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজের ঠাঁই নেই। ঘটনা খতিয়ে দেখে কেন্দ্রে অবহিত করা হবে।’

এ বিষয়ে বিভাগীয় কমিশনারসংলগ্ন বিমানবন্দর থানার ওসি জাকির সিকদার বলেন, ‘বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে লোক পাঠানো হয়েছে। কাউকে ধরে নেওয়ার খবর এখনো পাইনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত