Ajker Patrika

বিত্তবানের নামে খাসজমি বন্দোবস্ত কাণ্ডের মূল হোতা সার্ভেয়ার হুমায়ুন গ্রেপ্তার

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
বিত্তবানের নামে খাসজমি বন্দোবস্ত কাণ্ডের মূল হোতা সার্ভেয়ার হুমায়ুন গ্রেপ্তার

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ইউএনওর স্বাক্ষর জাল করে ৪২ বিত্তবানের নামে ২৫ কোটি টাকা মূল্যের ৭২ একর সরকারি খাসজমি রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করে দেওয়ার মূল হোতা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার হুমায়ুন কবিরকে গ্রেপ্তার করেছে কলাপাড়া থানা-পুলিশ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বরিশালের রূপাতলী আবাসিক এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার হয়। শুক্রবার সকালে আদালতের মাধ্যমে তাঁকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। 

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হকের দায়ের করা অভিযোগর ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জসিম। 
 
জানা গেছে, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় তিনটি স্মারকে মুজিব শতবর্ষে গৃহহীন–ভূমিহীন পরিবারকে দুই শতক খাস জমিসহ ১৯৫টি সেমিপাকা ঘর প্রদান করা হয়। চূড়ান্ত তালিকায় থাকা এই ১৯৫টি বন্দোবস্ত কেসের কবুলিয়ত দলিল রেজিস্ট্রি করা হয় খেপুপাড়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে। কিন্তু সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ের সার্ভেয়ার হুমায়ুন কবির জালিয়াতির মাধ্যমে এ বন্দোবস্ত কেসের সঙ্গে ৪২ জন বিত্তবানের নাম কথিত ভূমিহীনের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে তাদের নামে ৭২ একর ৬৩ শতাংশ খাসজমির দলিল রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করে। চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল ২২ টির স্থলে ৩১ টি,২৪ এপ্রিল ১২০ টির স্থলে ১৩২টি এবং ১৯ মে ৫৩ টির স্থলে ৭৪টি কবুলিয়ত দলিল রেজিস্ট্রি করা হয়। সম্পাদনকৃত এই ৪২টি দলিলে সর্বনিম্ন এক থেকে সর্বোচ্চ তিন একর করে খাসজমি বন্দোবস্ত দেখানো হয়েছে। ১৯৫৯-১৯৬০ থেকে ১৯৮৭-১৯৮৮ সালের তালিকার কেস নম্বর থেকে ৪২টি নামে এই পরিমাণ খাসজমি মুজিব শতবর্ষের তালিকায় ঢুকিয়ে রেজিস্ট্রি করে দেওয়া হয়েছে। যার অনুমোদন নিতে হয়েছে জেলা প্রশাসনের কাছ থেকেও। কবুলিয়ত দলিল রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করতে তৎকালীন সহকারী কমিশনারের (ভূমি) দায়িত্ব পালনকারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হকের সই স্ক্যান করে ব্যবহার করেন। এ ঘটনার তথ্য ফাঁস হওয়ার পর মোবাইল বন্ধ করে গাঁ ঢাকা দেন সার্ভেয়ার হুমায়ুন কবির। 

ঘটনার পরপরই সার্ভেয়ার হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন কলাপাড়ার ইউএনও। ৪ আগস্ট কলাপাড়া থানায় হুমায়ুন কবিরকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করেন তিনি। মামলা নম্বর-৭। 

এদিকে, ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (রাজস্ব) প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। আগামী ৭ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়েছে। এ ছাড়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের নকলনবিশ মোছা হাওয়া বেগম, দলিল লেখক মো. আনোয়ার হোসেনকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। ১২ জন নকলনবিশকে অফিশিয়াল কাজ থেকে বিরত রাখা হয়েছে। 

তদন্ত কমিটি প্রধান ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার তদন্তে আমার সঙ্গে জেলা রেজিস্ট্রার ও পুলিশ সুপারের একজন প্রতিনিধি রয়েছেন।’ 

কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জসিম বলেন, ‘গ্রেপ্তার সার্ভেয়ার হুমায়ূনকে শুক্রবার সকালে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মহুয়াকে বিয়ে করলেন পিনাকী

পালানোর গুঞ্জনের অবসান ঘটিয়ে দেশে ফিরলেন আবদুল হামিদ

মেঘালয়ে হানিমুনের সময় ভাড়াটে খুনি দিয়ে স্বামীকে হত্যা, উত্তর প্রদেশে নববধূর আত্মসমর্পণ

কানাডার লেকে বোট উল্টে বাংলাদেশের পাইলট ও গার্মেন্টস ব্যবসায়ীর মৃত্যু

এআই যুগে চাকরি পেতে যে দক্ষতা লাগবেই, জানালেন মাইক্রোসফটের সিইও

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত