Ajker Patrika

স্লুইসগেটের পানির স্রোতে বিদ্যুৎ তৈরি করে আলো ছড়াচ্ছেন মনিরুল

মনোতোষ হাওলাদার, বরগুনা
স্লুইসগেটের স্রোতের মুখে বসানো হয়েছে ওয়ার্কশপে তৈরি করা বিশেষ পদ্ধতির একটি ঘূর্ণনযন্ত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা
স্লুইসগেটের স্রোতের মুখে বসানো হয়েছে ওয়ার্কশপে তৈরি করা বিশেষ পদ্ধতির একটি ঘূর্ণনযন্ত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা

স্লুইসগেটের স্রোতের মুখে বসানো হয়েছে ওয়ার্কশপে তৈরি করা বিশেষ পদ্ধতির একটি ঘূর্ণনযন্ত্র। পানির চাপে ঘুরছে সেটি। আর সেই যন্ত্রের ঘূর্ণনগতি দিয়ে একটি চেইনের মাধ্যমে ঘোরানো হয় একটি মর্টার, যা দিয়ে উৎপাদিত হয় বিদ্যুৎ-শক্তি। এই বিদ্যুৎ দিয়ে একসঙ্গে জ্বালানো হচ্ছে অর্ধশতাধিক বৈদ্যুতিক বাতি।

প্রকৃতির শক্তি কাজে লাগিয়ে কোনো ধরনের খরচ ছাড়াই বিদ্যুৎ উৎপাদন করছেন বরগুনা সদরের পুরাঘাটা গ্রামের জ্বালানি তেল ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম। তার এই উদ্ভাবনে খুশি গ্রামবাসী। স্থানীয়রা মনে করেন, এভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারলে দেশের জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, পায়রা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত একটি স্লুইসগেটের সরু মুখে ওয়ার্কশপে তৈরি করা একটি বিশেষ টারবাইন বসিয়েছেন মনিরুল। রড অ্যাঙ্গেল ঝালাই করে বিয়ারিংয়ের সাহায্যে স্থাপন করা ওই টারবাইন জোয়ার-ভাটার সময় স্রোতের চাপে ঘুরতে থাকে। টারবাইনের সঙ্গে মোটরসাইকেলের চেইনের মাধ্যমে যুক্ত থাকে একটি শক্তিশালী জেনারেটরের মোটর। টারবাইনের ঘূর্ণন থেকে মোটর বিদ্যুৎ উৎপাদন করে, যা দিয়ে অর্ধশতাধিক বৈদ্যুতিক বাল্ব জ্বালানো সম্ভব হচ্ছে।

মনিরুলের তৈরি বিদ্যুৎ দিয়ে একসঙ্গে জ্বালানো হচ্ছে অর্ধশতাধিক বৈদ্যুতিক বাতি। ছবি: আজকের পত্রিকা
মনিরুলের তৈরি বিদ্যুৎ দিয়ে একসঙ্গে জ্বালানো হচ্ছে অর্ধশতাধিক বৈদ্যুতিক বাতি। ছবি: আজকের পত্রিকা

উদ্ভাবক মনিরুল ইসলাম বলেন, আমি নিজে একজন তেল ব্যবসায়ী। আমি জানি বিদেশ থেকে বিদ্যুৎ কিনতে আমাদের দেশের অনেক টাকা খরচ হয়। তাই আমি অনেক দিন গবেষণা করেছি, কীভাবে পানির স্রোত দিয়ে গ্রামে বিদ্যুৎ তৈরি করতে পারি। প্রায় তিন মাস কাজ করে ৭০ হাজার টাকা খরচে আমি এটি তৈরি করতে সক্ষম হই। এই প্রকল্প দেশের প্রতিটি স্লুইসগেটে করা হলে ওই এলাকায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাবে জনগণ।

তিনি জানান, নদীতে প্রতিদিন দুবার জোয়ার আসে, ফলে দিনে ১৫-১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত এই পদ্ধতিতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। পর্যাপ্ত সুযোগ পেলে বিনা মূল্যে গ্রামের পর গ্রাম আলোকিত করা যাবে।

পুরাঘাটা গ্রামের বাসিন্দা মো. সবুজ আহমেদ বলেন, ‘মনির ভাই দীর্ঘদিন পরিশ্রম করে পানি দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছেন। সরকার তাঁকে সহায়তা করলে তিনি শুধু পুরাঘাটা নয়, সারা দেশ আলোকিত করতে পারবেন।’

এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, ‘মনিরুলের উদ্ভাবন মানুষের কল্যাণে ব্যবহৃত হলে সরকার অবশ্যই তাঁর পাশে থাকবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

অরকার আক্রমণে তরুণী প্রশিক্ষকের মৃত্যু, ভাইরাল ভিডিওটি সম্পর্কে যা জানা গেল

জি এম কাদেরের সাংগঠনিক কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা ও মামলা প্রত্যাহার

ভারতকে পাকিস্তানি সেনাপ্রধানের পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকি, যা বলল যুক্তরাষ্ট্র

জুলাই সনদের বৈধতা নিয়ে আদালতেও প্রশ্ন তোলা যাবে না

জর্ডান-মিসরকে নিয়ে বৃহত্তর ইসরায়েল প্রতিষ্ঠা করতে চান নেতানিয়াহু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত