Ajker Patrika

বিদায়ের আগে মেয়র সাদিকের নিয়োগ দেওয়া ১৩৪ কর্মচারী চাকরিচ্যুত

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৮: ১৩
Thumbnail image

বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) থেকে বিদায়ের আগমুহূর্তে প্রায় ৩০০ দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে যান সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। তাঁদের মধ্যে ১৩৪ জনের নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। বিসিসি বলছে, প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। এ জন্য বাড়তি কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। 

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বিসিসির ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুমা আক্তার স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ তথ্য জানা গেছে। রাতেই নিয়োগ বাতিল হওয়া ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।

গত ৯ নভেম্বর সাদিক আবদুল্লাহ মেয়র পদ থেকে বিদায় নেন। নবনির্বাচিত মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত দায়িত্ব গ্রহণ করেন ১৪ নভেম্বর। দায়িত্ব নেওয়ার সময় মেয়র খোকন বলেছিলেন, প্রায় ৩০০ কোটি টাকা দেনা এবং বাড়তি জনবল রেখে গেছেন তৎকালীন মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ। 

করপোরেশনের প্রশাসনিক শাখা সূত্রে জানা গেছে, নিয়োগ বাতিল হওয়া কর্মচারীরা প্রতিষ্ঠানটির পরিচ্ছন্নতা, প্রশাসন, হাটবাজার, ভান্ডার, বিদ্যুৎ-সম্পত্তি, জন্মনিবন্ধন, প্রকৌশল, সিটি নিরাপত্তা, কর আদায়, সম্পত্তি, বাণিজ্য, জনসংযোগসহ কয়েকটি শাখায় কর্মরত ছিলেন। 

সূত্র মতে, আরও ৫১ জন কর্মচারীকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কর্মস্থলে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। আগামী রোববার ওই ৫১ জনের বিষয়েও সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে জানা গেছে। 

নতুন মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই কেন প্রায় ২০০ জনের নিয়োগ বাতিল করা হচ্ছে–এ বিষয়টি খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাবেক মেয়র সাদিক গত ৯ নভেম্বর দায়িত্ব থেকে বিদায় নেওয়ার মাত্র এক মাসের মাথায় প্রায় ৩০০ দৈনিক মজুরকে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দিয়ে যান। 

বিসিসির কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান বিপ্লব বলেন, ‘যাঁদের নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে, তাঁরা যোগদানের আগেই দুই মাস অ্যাডভান্স বেতন নিয়েছেন। সাবেক মেয়র সাদিক বিদায়ের এক মাস আগে মেয়র খোকন ভাইকে বিতর্কে ফেলতে প্রায় ৩০০ দৈনিক মজুরকে নিয়োগ দেওয়া হয়। অথচ তাঁদের কোনো নির্দিষ্ট কাজের জায়গা নেই। নিয়োগে কোনো কমিটিও করা হয়নি। নতুন পরিষদ দায়িত্ব নিয়ে জরুরি সভায় বাড়তি এই কর্মচারীদের নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়।’ 

তবে চাকরি হারানো কর্মচারীরা নানা অভিযোগ তুলেছেন। 

বিসিসির নিরাপত্তাকর্মী শহিদুল ইসলাম বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় কাজ শেষ করে নগর ভবনে আসলে তাঁকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা জানিয়ে দেন, তাঁর আর কর্মস্থলে আসতে হবে না। 

অফিস সহকারী তাজাম্মুল ইসলাম বলেন, তিনি নভেম্বর মাসের ১ তারিখ চাকরিতে যোগদান করেছেন। গতকাল তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়, তাঁর নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে।

এসব প্রসঙ্গে বিসিসির ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুমা আক্তার বলেন, প্রতিষ্ঠানটিতে প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি অস্থায়ী কর্মচারী দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগের শর্ত ছিল, যখন ইচ্ছা কর্তৃপক্ষ তাঁদের চাকরি বাতিল করতে পারবে। যে কারণে ১৩৪ জনের নিয়োগ গতকাল সন্ধ্যার পর বাতিল করা হয়েছে। বাকি ৫১ জনের নিয়োগ আগামী রোববার বাতিল করা হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত