Ajker Patrika

পুত্রবধূ বানাতে সেই তরুণীকে ৩ শর্ত দিলেন যুবকের বাবা

বরগুনা প্রতিনিধি
পুত্রবধূ বানাতে সেই তরুণীকে ৩ শর্ত দিলেন যুবকের বাবা

বিয়ের দাবিতে বরগুনায় আসা জামালপুরের সেই তরুণীকে পুত্রবধূ হিসেবে মেনে নিতে তিনটি শর্ত দিয়েছেন মাহমুদুল হাসানের বাবা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ওই তরুণীর সঙ্গে দেখা করে এসব শর্ত পূরণের প্রস্তাব দিয়েছেন যুবকের বাবা মোশাররফ হোসেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান হারুণ অর রশিদ সোনা মিয়া। 

বরগুনার বেতাগী উপজেলার কাজিরাবাদ ইউনিয়নের চান্দখালী বাজার সংলগ্ন বাসায় গিয়ে ওই তরুণীর সঙ্গে দেখা করেন মোশাররফ হোসেন। তাঁর দেওয়া শর্তগুলো হলো—ওই তরুণীর আগের বিয়ের তালাকনামা দেখাতে হবে, অভিভাবক (বাবা—মা) নিয়ে আসতে হবে এবং মিডিয়ার কাছে কোনো কথা বলা যাবে না। 

ইউপি চেয়ারম্যান হারুণ অর রশিদ শুক্রবার সকালে বলেন, ‘মাহমুদুল হাসানের বাবা ব্যাংক কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে চান্দখালী বাজার সংলগ্ন তার ভাড়া বাসায় আসেন। এ সময় ওই বাসায় অবস্থান নেওয়া তরুণীর সঙ্গে তিনি কথা বলেন। বিয়ের দাবি মানতে তিনি তরুণীকে তিনটি শর্ত দেন। শর্তগুলো হলো, ওই তরুণীর আগের বিয়ের তালাকনামা দেখানো, অভিভাবক (বাবা—মা) নিয়ে আসা ও মিডিয়ায় কথা না বলা। এসব শর্ত পূরণ করলে তিনি তার ছেলে মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে ওই তরুণীর বিয়ে দেবেন। তবে শর্ত পূরণের ক্ষেত্রে কোনো সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নি।’

চেয়ারম্যান হারুণ অর রশিদ আরও বলেন, জামালপুর থেকে আসা ওই তরুণী মাহমুদুল হাসানের বাবার শর্ত মেনে নিয়ে আপাতত মোশাররফ হোসেনের ভাড়া বাসাতেই অবস্থান করবেন। তবে শর্ত পূরণে ব্যর্থ হলে বিয়ের দাবি মেনে নেবেন না মাহমুদুল হাসানের বাবা মোশাররফ হোসেন। শর্তের বিষয়ে ওই তরুণীর গণমাধ্যমের কাছে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। এছাড়াও মাহমুদুল হাসানের বাবাও কোনো মন্তব্য করেননি।

ইউপি চেয়ারম্যান হারুণ অর রশিদ সোনা মিয়া বলেন, ‘আমরা ছেলের বাবা, মামা ও ফুপুসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বৈঠকে বসে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাকে যে শর্ত দেওয়া হয়েছে সেটা পূরণ করলে মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে তাঁর বিয়ের দাবি মেনে নেওয়া হবে। যেহেতু বিষয়টি আলোচিত, এ কারণে মেয়েটির লিগ্যাল গার্ডিয়ান ছাড়া বিয়ে সম্ভব নয়। যদি তাঁর বাবা–মা ও আগের বিয়ের তালাকনামা হাজির করতে পারে তবেই বিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা হবে। আপাতত এটাই সিদ্ধান্ত হয়েছে।’ 

উল্লেখ্য, গত ২৮ এপ্রিল জামালপুরের এক তরুণী বিয়ের দাবিতে ঢাকা থেকে বরগুনায় এসে এক যুবকের ভাড়া বাড়ির সামনে অনশন শুরু করেন। 

সে সময় ওই তরুণী জানান, জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে তাঁর গ্রামের বাড়ি। এ ছাড়াও ঢাকার উত্তরায় থাকেন এবং সেখানে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়ছেন বলেও দাবি করেন তিনি। 

ওই তরুণী আরও দাবি করেন,  ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজিতে (আইইউবিটি) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে অধ্যয়নরত মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে পরিচয়ের সূত্রে তরুণীর প্রেম হয়। মাহমুদুল হাসানও রাজধানীর উত্তরায় থেকে পড়াশোনা করেন। তিন বছর প্রেমের সম্পর্কের পর বিয়ের জন্য সম্প্রতি চাপ দিলে মাহমুদুল নানা অজুহাতে এড়িয়ে যেতে থাকেন। রোজার শুরুতে মাহমুদুল গ্রামের বাড়ি চলে আসেন। বাড়িতে আসার পর তরুণীর সঙ্গে যোগাযোগ কমিয়ে দেন। কয়েক দিন ধরে তাঁর ফোন নম্বরটি বন্ধ। এরপরই তরুণী বরগুনায় এসে চান্দখালী বাজার সংলগ্ন মাহমুদুলের বাসার সামনে অবস্থান নেয়। এরপরই মাহমুদুল ও তাঁর পরিবার বাসায় তালা দিয়ে গা ঢাকা দেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাইকোর্টের সামনে মধ্যরাতে গাড়িচাপায় নারীর মৃত্যু

ঢামেক প্রতিবেদক
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর শাহবাগ থানাধীন হাইকোর্টের সামনে সড়ক দুর্ঘটনায় অজ্ঞাত পরিচয় (৩০) এক নারী নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। গুরুতর অবস্থায় পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক রাত আড়াইটার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।

শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হামিদুল ইসলাম জানান, রাতে ট্রিপল নাইনের মাধ্যমে খবর আসে হাইকোর্টের সামনে কোনো যানবাহনের ধাক্কায় এক নারী গুরুতর আহত হয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি আরও জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা গেছে, ওই নারী ভবঘুরে প্রকৃতির। হাইকোর্ট এলাকায় থাকতেন। তাঁর পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পোকা দমনে পরিবেশবান্ধব ‘পাচিং’ পদ্ধতিতে সুফল পাচ্ছেন মৌলভীবাজারের আমনচাষিরা

মাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নে আমনখেতে পাচিং পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নে আমনখেতে পাচিং পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজারের কৃষকেরা আমন ধানের ক্ষতিকারক পোকা দমনে কীটনাশকের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব ‘পাচিং’ পদ্ধতি ব্যবহারে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। জেলার হাওর এলাকা এবং সমতল ভূমিতে বাঁশ বা গাছের খুঁটি ব্যবহার করে এই ‘ডেথ পাচিং’ পদ্ধতি প্রয়োগ করে কৃষকেরা উল্লেখযোগ্য সুফল পাচ্ছেন। কৃষিবিদেরা মনে করছেন, কৃষকদের মধ্যে সচেতনতা আরও বাড়ালে এই পদ্ধতির ব্যবহার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করা সম্ভব।

এই পদ্ধতিতে ধানখেতে বাঁশের খুঁটি বা ডাল পুঁতে দেওয়া হয়, যেখানে বিভিন্ন প্রজাতির শিকারি পাখি এসে বসে। এই পাখিগুলো ধানগাছের ক্ষতিকর পোকামাকড়, বিশেষ করে মাজরা পোকা খেয়ে ফেলে। ফলে ফসলে রোগবালাইয়ের আক্রমণ কমে যায়, কীটনাশকের ব্যবহার ও খরচ হ্রাস পায় এবং পরিবেশ সুরক্ষিত থাকে। পাখিদের মল থেকে জৈব সার তৈরি হওয়ায় জমির উর্বরতা শক্তিও বাড়ে।

সরেজমিনে জেলার কমলগঞ্জ, রাজনগর ও কুলাউড়া উপজেলার আমনখেত ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা বিচ্ছিন্নভাবে এই পদ্ধতি ব্যবহার করছেন। প্রায় ১০০ শতক জমিতে ২৫-৩০টি ডেথ পাচিং দেওয়া হয়েছে। বাঁশের খুঁটি বা গাছের ডালের মাথায় খড় বেঁধে পাখির বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বেশির ভাগ কৃষক পরিবেশবান্ধব এই ডেথ পাচিং পদ্ধতি ব্যবহার করছেন।

কৃষকেরা জানান, জেলায় সবচেয়ে বেশি আমন ধান চাষ হয় এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ে মাজরা পোকার আক্রমণ দেখা যায়। এই পোকা ধানের ডিগ পাতা কেটে দেওয়ায় অনেক সময় পচন রোগের সৃষ্টি হয়। এই আক্রমণ মোকাবিলায় কীটনাশক ব্যবহারের পাশাপাশি তাঁরা পাচিং পদ্ধতি ব্যবহার করছেন।

কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের কৃষক আনোয়ার মিয়া বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে আমার ধানখেতে পাচিং পদ্ধতি ব্যবহার করছি। এই পদ্ধতির কারণে পোকামাকড় কম আসে। আমরা ধানের চারা রোপণের কয়েক সপ্তাহ পর থেকে পাচিং পদ্ধতি ব্যবহার করি। কিছুদিন আগে জমির প্রায় পুরোটা মাজরা পোকার আক্রমণের শিকার হয়েছে। পোকা দমনে কীটনাশক ছিটানোর পাশাপাশি পাচিং পদ্ধতি ব্যবহার করছি।’

কৃষকদের মতে, বিশেষ করে শালিক ও ফিঙে—এই দুই ধরনের পাখি পাচিংয়ে বসে পোকা নিধনে প্রধান ভূমিকা রাখে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৯৮ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ করা হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ পূরণ করেছে।

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, পাচিং পদ্ধতির মাধ্যমে কৃষকেরা সুফল পাচ্ছেন। যারা এই পদ্ধতি ব্যবহার করেন, তাঁদের খরচ কম হয় এবং সুফল বেশি হয়। এটি পরিবেশ বান্ধব। কম খরচে বাঁশের খুঁটি দ্বারা সহজে এটি করা যায়। বিশেষ করে মাজরা পোকার আক্রমণ থেকে ধান রক্ষার জন্য এই পদ্ধতি ব্যবহার করা খুবই প্রয়োজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে বিএনপি নেতা গুলিবিদ্ধ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও নবীনগর প্রতিনিধি
গুলিবিদ্ধ বিএনপি নেতা মফিজুর রহমান মুকুল। ছবি: সংগৃহীত
গুলিবিদ্ধ বিএনপি নেতা মফিজুর রহমান মুকুল। ছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় দুর্বৃত্তদের ছোড়া গুলিতে গুরুতর আহত হয়েছেন বিএনপি নেতা মফিজুর রহমান মুকুল। গতকাল শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে উপজেলার পৌর এলাকার আদালতপাড়ায় এই ঘটনা ঘটে। আহত মফিজুর রহমান ওরফে মুকুল (৫২) উপজেলার পৌর এলাকার পদ্মপাড়ার বাসিন্দা। তিনি নবীনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক।

স্থানীয় বাসিন্দা ও দলীয় নেতা-কর্মীরা জানান, মফিজুর রহমান দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দিনভর উপজেলার বিটঘর বাজারে দলীয় প্রচারপত্র বিতরণ করেন। সন্ধ্যায় উপজেলায় ফিরে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে যান। এরপর তিনি উপজেলার পৌর এলাকার পদ্মপাড়ার নিজের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। রাত ৮টা ১০ মিনিটে পৌর এলাকার আদালতপাড়া অতিক্রম করার পরপরই দুর্বৃত্তরা পেছন থেকে তাঁকে উদ্দেশ করে পরপর তিনটি গুলি করে। দুটি গুলি তাঁর পিঠে এবং একটি কোমরের নিচে লাগে। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

দুর্বৃত্তরা কৌশলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। গুলির শব্দ শুনে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে মফিজুর রহমানকে উদ্ধার করে নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন।

নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, মফিজুর রহমানের পিঠে দুটি এবং কোমরের নিচে একটি গুলি লেগেছে। তাঁকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীনুর ইসলাম বলেন, ‘বিএনপি নেতা গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা শুনেছি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে কোনো লাইট ছিল না। অন্ধকার থাকায় অপরাধীরা ওত পেতে বসে ছিল। আমরা তদন্ত করছি।’

এই ঘটনার পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার পুলিশ সুপার মো. সাখাওয়াত হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, এই হামলার সঙ্গে কারা জড়িত, তা এখনো জানা যায়নি। তবে তদন্ত চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পতিত জমিতে মাল্টা চাষে সফল দুর্গাপুরের তিন মামা-ভাগনে

দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি 
বিক্রি করার জন্য গাছ থেকে মাল্টা তুলছেন রনি মিত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিক্রি করার জন্য গাছ থেকে মাল্টা তুলছেন রনি মিত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা

নেত্রকোনার সীমান্তবর্তী উপজেলা দুর্গাপুরের পাহাড়, নদী ও সবুজ প্রকৃতির মধ্যেও বহু জমি দীর্ঘদিন ধরে পতিত থাকত। সেই পতিত জমিতে এক অনন্য সাফল্যের গল্প তৈরি করেছেন তিন মামা-ভাগনে রনি মিত্র, নিকঞ্জ মণ্ডল ও সুমন মল্লিক।

২০২২ সালে তাঁরা সীমান্তঘেঁষা বিজয়পুর জিরো পয়েন্ট এলাকায় ১ একর জমিতে মাল্টা চাষ শুরু করেন। প্রথমে স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে ৩০০ চারা নিয়ে শুরু করলেও পরে আরও ২০০ চারা রোপণ করেন। বর্তমানে ৫০০ চারার বাগানে টসটসে মাল্টা ঝুলছে।

বাগান গড়তে এ পর্যন্ত প্রায় ১২ লাখ টাকা খরচ হয়েছে বলে জানান রনি মিত্র। তবে এ বছরের ফলন থেকে প্রায় ৪ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রির আশা করছেন তাঁরা। আগামী মৌসুমে ফলন বাড়লে লাভের পরিমাণ কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাবে বলে তাঁদের প্রত্যাশা।

তিন মামা-ভাগনে বলেন, স্থানীয় চাহিদা মেটানোই তাদের মূল লক্ষ্য। বর্তমানে দুর্গাপুরের হাটবাজার ছাড়াও পার্শ্ববর্তী উপজেলা, জেলা শহর এবং ময়মনসিংহ পর্যন্ত এই বাগানের মাল্টা বাজারজাত হচ্ছে। ইতিমধ্যে বাগানের অর্ধেকের বেশি মাল্টা বিক্রি হয়েছে।

বর্তমানে বাগানে রয়েছে ৫০০ চারা। সবগুলো গাছে কমবেশি ঝুলছে টসটসে মাল্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বর্তমানে বাগানে রয়েছে ৫০০ চারা। সবগুলো গাছে কমবেশি ঝুলছে টসটসে মাল্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাইকারি ক্রেতারা জানান, গাছ থেকে সরাসরি বাজারে আসা এই ফরমালিনমুক্ত মাল্টার চাহিদা অনেক বেশি। তাঁরা এখান থেকে পাইকারি কিনে খুচরা বাজারে বিক্রি করে ভালো মুনাফা পাচ্ছেন। স্থানীয় বাসিন্দা কৃষ্ণ কর বলেন, ‘ফরমালিনমুক্ত মাল্টা পেয়ে আমরা খুব খুশি। এতে সহজে পূরণ হচ্ছে ভিটামিন সি-এর চাহিদা।’

উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা মো. রায়হানুল হক বলেন, সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে অক্টোবরের মাঝামাঝি মাল্টা বাজারজাতের উপযুক্ত সময়। তিনি জানান, এই তিন মামা-ভাগনে যথাসময়ে ফল বাজারজাত করায় ভোক্তারা মাল্টার আসল স্বাদ পাচ্ছেন।

পতিত জমিকে কাজে লাগিয়ে মাত্র তিন বছরে এই তিন মামা-ভাগনে যে সফলতার গল্প তৈরি করেছেন, তা এখন দুর্গাপুরের অনেকের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত