Ajker Patrika

পাথরঘাটায় বেড়েছে চুরি-ছিনতাই, আতঙ্কে স্থানীয়রা

তারিকুল ইসলাম কাজী রাকিব, পাথরঘাটা (বরগুনা)
হোগলাপাশা গ্রামে এক বাড়িতে মালামাল লুট করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। ছবি: সংগৃহীত
হোগলাপাশা গ্রামে এক বাড়িতে মালামাল লুট করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। ছবি: সংগৃহীত

বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় হঠাৎ বেড়ে গেছে চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা। প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো এলাকায় সংঘটিত হচ্ছে এমন অপরাধ। কখনো গভীর রাতে, আবার কখনো দিনের আলোয় সংঘবদ্ধ চক্র নিঃশব্দে দরজা বা জানালার গ্রিল কেটে ঘরে ঢুকে মূল্যবান মালামাল লুট করছে। স্থানীয়রা বলছেন, এলাকার কিছু মাদকাসক্ত কিশোর-যুবক এসব অপরাধ করে বেড়াচ্ছে। প্রশাসনের যথাযথ নজরদারির অভাবে তারা দিনদিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে।

শনিবার (৯ নভেম্বর) দিবাগত রাতে উপজেলার চরদুয়ানী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের হোগলাপাশা গ্রামে এক বাড়িতে দুর্বৃত্তরা হামলা করে।

ওই গ্রামের হাফেজ মাহবুবুর রহমানের বাড়িতে জানালার গ্রিল কেটে ঢুকে দুর্বৃত্তরা স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। ভুক্তভোগী নারী শিউলী বেগম (৩৫) বলেন, ‘আমার শ্বশুর অসুস্থ হয়ে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি। আমি দুই ও চার বছরের শিশুদের নিয়ে ঘুমিয়েছিলাম। হঠাৎ দেখি দুজন লোক আমার বাচ্চাদের জিম্মি করেছে। তারা আলমারির চাবি চাইলে দেরি হওয়ায় আমার মাথায় দা দিয়ে কোপ দেয় এবং হাতে থাকা রড দিয়ে চোখে আঘাত করে। পরে চার ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।’

গত বৃহস্পতিবার পাথরঘাটা পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে এক প্রবাসীর ঘরে তালা ভেঙে প্রায় ৫০ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা চুরি হয়েছে। এরও আগে ৪ নভেম্বর রাতে দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফেরার পথে তিন ব্যবসায়ীকে চোখে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে তিন লাখ টাকা ছিনতাই করা হয়। ২১ অক্টোবর চরদুয়ানী ইউনিয়নের মঠেরখাল এলাকায় একই রাতে অন্তত আটটি বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় প্রায় ২৫ লাখ টাকার মালামাল চুরি হয়। গত ১ আগস্ট রাতে সদর ইউনিয়ন পরিষদের দরজা ভেঙে কম্পিউটার ও প্রিন্টার চুরি করে নিয়ে যায় চোর চক্র। এ ছাড়া ৬ জুলাই পূর্ব হাতেমপুরে ইসমাইল হোসেনের গোয়ালঘর থেকে ছয়টি গরু চুরি যায়।

স্থানীয়রা জানান, বড় ধরনের চুরির ঘটনা ছাড়াও প্রায় প্রতিদিনই ছোটখাটো চুরি বা ছিনতাই হচ্ছে পাথরঘাটার বিভিন্ন এলাকায়। এমনকি হাটবাজারেও ‘শয়তানের নিশ্বাস’ (অচেতনকারী দ্রব্য) ব্যবহার করে নারীদের কাছ থেকে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে অপরাধীরা। কিছু ঘটনার ভিডিও সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়লেও এসব চক্রের কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দা আয়শা বেগম বলেন, ‘রাতে ঘুমিয়ে ছিলাম, সকালে দেখি দরজা খোলা, আলমারি ফাঁকা—সব নিয়ে গেছে।’

ঘন ঘন চুরি, ছিনতাইয়ের ঘটনায় স্থানীয়দের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি স্বীকার করে পাথরঘাটা থানার ওসি মেহেদী হাসান বলেন, ‘ঘটনাগুলো নিয়ন্ত্রণে আনতে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। অভিযান চলছে, খুব দ্রুতই জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...