Ajker Patrika

বাগেরহাটে স্থান পাল্টে বিএনপির এক পক্ষের সমাবেশ, পরে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন

  • একই স্থানে উপজেলা বিএনপির সমাবেশ ও সাবেক এমপিকে সংবর্ধনার আয়োজন।
  • ১৪৪ ধারা জারির কারণে স্থান পরিবর্তন করে ট্রাকে মঞ্চ বানিয়ে এক পক্ষের সমাবেশ।
  • জেলা বিএনপি ও সাবেক এমপির পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন।
বাগেরহাট প্রতিনিধি
উপজেলা বিএনপির সমাবেশে নেতা-কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
উপজেলা বিএনপির সমাবেশে নেতা-কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাগেরহাটের কচুয়ায় একই স্থানে বিএনপির দুপক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করে উপজেলা প্রশাসন। পরে স্থান পরিবর্তন করে অস্থায়ী মঞ্চে উপজেলা বিএনপি সমাবেশ করে।

অন্যদিকে বাগেরহাট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) ও বিএনপি নেতা এম এ এইচ সেলিমকে সংবর্ধনা দিতে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। তবে সেটি স্থগিত করা হয়।

১৪৪ ধারার কারণে সাইনবোর্ড বাজার জামে মসজিদের সামনের সড়কে একটি ট্রাকের ওপর মঞ্চ বানিয়ে সমাবেশ করেন উপজেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরা। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন—বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক শামীমুর রহমান। কচুয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি হাজরা আছাদুল ইসলাম পান্নার সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অহিদুজ্জামান দিপু, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ টি এম আকরাম হোসেন তালিম, সাবেক সভাপতি এম এ সালাম প্রমুখ।

বক্তব্যে জেলা প্রশাসক এবং সাবেক সংসদ সদস্য এম এ এইচ সেলিমের সমালোচনা করেন বিএনপির নেতারা। সমাবেশে উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী অংশ নেন।

সমাবেশ-সংবর্ধনা ঘিরে ১৪৪ ধারা

মঙ্গলবার দুপুরে কচুয়া উপজেলার গোয়ালমাঠ এলাকার মাজেদা বেগম কৃষিপ্রযুক্তি কলেজের মাঠে কলেজটির প্রতিষ্ঠাতা ও বাগেরহাট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ এইচ সেলিমকে সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল কলেজ কর্তৃপক্ষ।

অন্যদিকে পাশের গোয়ালমাঠ রশিক লাল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে একই সময়ে কচুয়া উপজেলা বিএনপি জনসভার ঘোষণা দেয়। এই নিয়ে উভয় পক্ষের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল।

সহিংসতা এড়াতে সোমবার রাতে ১৪৪ ধারা জারি করেন কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম আবু নওশাদ। এ জন্য মঙ্গলবার সকাল থেকে দুটি সমাবেশস্থলে পুলিশ মোতায়েন ছিল। সকালে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার চেয়ে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান উপজেলা ও জেলা বিএনপির নেতারা।

তবে ১৪৪ ধারা জারির পরও উপজেলা বিএনপি ও জেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরা সমাবেশ করার কথা বলে আসছিলেন। কলেজ মাঠ ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে মঞ্চও প্রস্তুত ছিল। কলেজ মাঠে কোনো নেতা-কর্মী জড়ো না হলেও, দুপুর থেকে বিদ্যালয় মাঠে বিএনপির নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন।

বেলা ৩টা নাগাদ কয়েক হাজার নেতা-কর্মী মাঠে উপস্থিত হন। জেলা বিএনপির আহ্বায়কসহ শীর্ষ নেতারা মঞ্চে অবস্থান করেন। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা নিজেদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল দাবি করে মাইকে ঘোষণা দিয়ে মঞ্চ থেকে নেমে যান। এক কিলোমিটার দূরে সাইনবোর্ড বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে অস্থায়ী মঞ্চে সমাবেশ করেন তাঁরা।

উভয় পক্ষের পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন

দুই পক্ষের সমাবেশ ও ১৪৪ ধারায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উপজেলা ও জেলা বিএনপি এবং সাবেক সংসদ সদস্য এম এ এইচ সেলিম বাগেরহাট প্রেসক্লাবে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এদিন বেলা পৌনে ১টার দিকে প্রশাসনের ১৪৪ ধারা জারির সমালোচনা করে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে করে জেলা বিএনপি।

বিএনপির দুপক্ষের সমাবেশস্থলে পুলিশ মোতায়েন ছিল। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিএনপির দুপক্ষের সমাবেশস্থলে পুলিশ মোতায়েন ছিল। ছবি: আজকের পত্রিকা

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক টি এম আকরাম হোসেন তালিম বলেন, ‘সকালে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করে সাধ্য অনুযায়ী যুক্তি দিয়ে বোঝাতে চেয়েছি, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ হবে। সেখানে ১৪৪ ধারা জারির জন্য যে কথা বলা হয়েছে, তার কোনো ভিত্তি আমরা খুঁজে পাইনি। আমাদের জনসভার মধ্যমণি ছিলেন দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে একই মামলায় মিথ্যা অভিযোগে দীর্ঘ সাত বছর কারাভোগ করা বিএনপির নেতা মনিরুল ইসলাম খান।’

আকরাম হোসেন আরও বলেন, এম এ এইচ সেলিম এমপি হতে দলে এসেছিলেন এবং তা হওয়ার পর ২০০৯ সালে তিনি দল ছেড়ে চলে যান। এমন যাঁরা সময় সময় আসেন, তাঁরা দলে স্থান পাবেন না। সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

জেলা বিএনপির সংবাদ সম্মেলনের পরপরই একই স্থানে সংবাদ সম্মেলন করেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি এম এ এইচ সেলিম।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘যেহেতু প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে, তাই আইনের প্রতি সম্মান দেখিয়ে আমার কলেজ কর্তৃপক্ষকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান স্থগিত করতে বলেছি। ওই অনুষ্ঠান আপাতত হচ্ছে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদির ওপর হামলাকারীরা সীমান্ত দিয়ে পালিয়েছে কি না—তা শতভাগ নিশ্চিত নয় বিজিবি

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান । ছবি: আজকের পত্রিকা
বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান । ছবি: আজকের পত্রিকা

বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, ঢাকায় শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলি বর্ষণকারী ব্যক্তিরা ময়মনসিংহ সীমান্ত ব্যবহার করে ভারতে পালিয়েছে কি না—তা এখনো শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।

সোমবার ময়মনসিংহ নগরীর খাগডহর বিজিবি ক্যাম্পে তিনি আরও জানান, শুক্রবার ৯টার মধ্যে বিজিবি সদর দপ্তরের নির্দেশনায় সম্ভাব্য পাচারের রুটগুলো চিহ্নিত করে টহল এবং চেকপোস্ট বসানো হয় সীমান্তের অধিকাংশ স্থানে। পরদিন অর্থাৎ শনিবারে পুলিশ এবং বিজিবির সমন্বয়ে যৌথ অপারেশনের প্ল্যান করা হয়। ঢাকা থেকে আগত পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে বিজিবি ময়মনসিংহ সেক্টর কমান্ডারের নিয়মিত যোগাযোগ এবং অপারেশন সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা হয়।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আলোচনায় দুটি স্থানে একসঙ্গে অপারেশনের প্ল্যান করা হয়। সন্দেহভাজন হিসেবে শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে অবস্থানরত ফিলিপ স্নালকে আটকের পরিকল্পনা করা হয়। পুলিশের আরেকটি টিম হালুয়াঘাট এলাকায় অপারেশনের প্ল্যান করে। হালুয়াঘাটে অপারেশনের বিষয়ে বিজিবির সোর্স এবং অন্যান্য বিষয়ে তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহায়তা করেছে। অপর দিকে নালিতাবাড়ীর বারোমারি এলাকায় অপারেশন পরিচালিত হয় বিজিবির নেতৃত্বে এবং ঢাকা হতে আগত ও হালুয়াঘাট থানার পুলিশ সদস্যদের সমন্বয়ে। কিন্তু ফিলিপকে পাওয়া যায়নি। তবে তার স্ত্রী ডেলটা চিরান, শ্বশুর ইয়ারসন রংডি এবং মানব পাচারকারী লুইস লেংমিঞ্জাকে আটক করা হয়। তাদের বাড়ি থেকে একটি মোটরসাইকেলও উদ্ধার করা হয়।’

তাঁদের পরিবারের তিনজনসহ এ পর্যন্ত বিজিবি চারজনকে আটক করেছে। এঁদের মধ্যে সোমবার সকালে মানব পাচারকারী বেঞ্জামিন চিরামকে আটক করা হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বরগুনায় স্বামীকে গলা টিপে হত্যা, স্ত্রী ও পরকীয়া প্রেমিক আটক

বরগুনা প্রতিনিধি
আটক পরকীয়া প্রেমিক আলামিন। ছবি: সংগৃহীত
আটক পরকীয়া প্রেমিক আলামিন। ছবি: সংগৃহীত

বরগুনার বামনা উপজেলায় পরকীয়া প্রেমের জেরে এক প্রবাসফেরত স্বামীকে গলা টিপে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ আব্দুল জলিল (৪৫)। তিনি উপজেলার রামনা ইউনিয়নের ঘোপখালী গ্রামের বাসিন্দা।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী নাজমা বেগম (৩৫) ও তাঁর পরকীয়া প্রেমিক আলামিনকে (৩০) আটক করেছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুজনই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে আব্দুল জলিলের নিজ বাড়িতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

স্থানীয় ও থানা সূত্রে জানা যায়, প্রায় পাঁচ বছর ধরে একই এলাকার আবু খতিবের ছেলে আলামিন নিহতের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করতেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে নাজমা বেগমের পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায় ১৫ দিন আগে প্রবাস থেকে বাড়িতে ফিরে স্ত্রীর সম্পর্কের বিষয়টি জানতে পারেন আব্দুল জলিল।

অভিযোগ রয়েছে, রোববার বিকেলে স্ত্রী ও ওই গৃহকর্মী মিলে ঘুমন্ত অবস্থায় আব্দুল জলিলকে গলা টিপে হত্যা করেন।

হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে বামনা থানায় নিয়ে যায়। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

বামনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে নিহতের স্ত্রী ও তাঁর পরকীয়া প্রেমিককে তাৎক্ষণিকভাবে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা দুজনই হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মামলা দায়েরের পর আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মহান বিজয় দিবসে মেট্রোরেল সাময়িক বন্ধ থাকবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে আগামী ১৬ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) মেট্রোরেল চলাচল সাময়িক বন্ধ থাকবে। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দর এলাকায় প্যারাজাম্প অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে প্যারাট্রুপারদের নিরাপত্তার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ডিএমটিসিএল ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছে, আগামী ১৬ ডিসেম্বর দুপুর ১১টা ৫০ মিনিট হতে ১২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত, অর্থাৎ মোট ৪০ মিনিটের জন্য মেট্রোরেল চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে।

ডিএমটিসিএল সাময়িক অসুবিধার জন্য যাত্রীসাধারণের কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে। যাত্রীদের এই সময়সূচি মেনে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইডেনের সেই ছাত্রীকে বিয়ের ছয়মাস পর নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চার্জশিট

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
নোবেল। ছবি: সংগৃহীত
নোবেল। ছবি: সংগৃহীত

বাসায় আটকে রেখে ইডেন কলেজের এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করার অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় গায়ক নোবেলের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। গত ২৯ নভেম্বর ডেমরা থানার উপপরিদর্শক এসআই মুরাদ হোসেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন প্রসিকিউশন বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) ইলামনি আজ সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আগামী ২৮ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্রটি উপস্থাপন করা হবে। পরে এ সংক্রান্ত মামলা বিচারের জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হবে।

নোবেলের আইনজীবী মোসতাক আহমেদ জানান, এই ধর্ষণ মামলার বাদীকে বিয়ে করেছেন নোবেল। তাঁরা সংসার করছেন।

গত ১৯ মে নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, নির্যাতন ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেন ইডেন কলেজের ওই ছাত্রী। নোবেলকে গ্রেপ্তার করার পর কারাগারে পাঠানো হলে বিয়ের শর্তে তিনি জামিন পান। ১৯ জুন ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বসে ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে নোবেল ওই ছাত্রীকে বিয়ে করেন।

এই মামলায় অভিযোগ করা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই ছাত্রীর সঙ্গে পরিচয় হয় নোবেলের। এরপর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নোবেল তাঁর স্টুডিও দেখানোর কথা বলে ছাত্রীকে ডেমরার বাসায় নিয়ে যান। সেখানে আটকে রাখেন, মোবাইল ফোন ও টাকা কেড়ে নেন। এরপর ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ করেন। কথামতো না চললে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয়ও দেখান।

অভিযোগে বলা হয়, ওই তরুণীকে ছয় মাস ধরে ডেমরার ওই বাসায় আটকে রাখা হয়, মারধর করা হতো প্রায়ই। দু-তিন জনের সহায়তায় বাদীকে চুল ধরে টেনেহিঁচড়ে একটি কক্ষে আটকে রাখেন নোবেল। ওই ঘটনার ভিডিও ছড়ালে বাদীর বাবা-মা তাঁকে চিনতে পারেন। এরপর পরিবার পুলিশের সহায়তায় তাঁকে ১৯ মে উদ্ধার করে এবং পুলিশ নোবেলকে গ্রেপ্তার করে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, নোবেল বাদীকে আটক রেখে ধর্ষণ করেন এবং ধর্ষণের ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে রাখেন। বাসায় না থাকলে ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। নোবেল নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বিভিন্ন সময়ে তাঁকে মারপিট করেছেন।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, বাদীর অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। আসামি নোবেল জামিনে আছেন।

তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্রে আরও বলেছেন, বাদীকে মারধর ও ধর্ষণে আসামিকে আরও কয়েকজন সহযোগিতা করেছেন। তবে তাঁদের নাম-ঠিকানা উদ্‌ঘাটন করা সম্ভব হয়নি। অদূর ভবিষ্যতে তাঁদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করা সম্ভব হলে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।

এখন কী হবে:

নোবেলের আইনজীবী বলেছেন, নোবেল মামলার বাদীকে বিয়ে করে সংসার করছেন। তাই এই অভিযোগপত্রে নোবেলের কোনো সমস্যা হবে না। বিচারিক ট্রাইব্যুনালে বাদী আপসনামা দেওয়ার পর মামলা নিষ্পত্তি হবে। খালাস পাবেন নোবেল।

উল্লেখ্য, ভারতের সংগীত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান ‘সা রে গা মা’ দিয়ে পরিচিতি পান এই গায়ক। এর আগে মাদকে আসক্ত হয়ে সংগীত ছেড়েছিলেন তিনি। দীর্ঘ বিরতির পর আবারও শ্রোতাদের সামনে হাজির হন। সেবার নোবেল জানিয়েছিলেন, তিনি আর কখনো দর্শকদের হতাশ করবেন না। সব অতীত পেছনে ফেলে নিয়মিত গান উপহার দেবেন।

কিন্তু ২০২৩ সালে অগ্রিম টাকা নিয়ে গান গাইতে না যাওয়ায় প্রতারণার অভিযোগে রাজধানীর মতিঝিল থানায় নোবেলের বিরুদ্ধে মামলা হয়। জানা যায়, ওই বছর ১৬ মে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ হেডকোয়ার্টার পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি ব্যাচ ২০১৬-এর অনুষ্ঠানে গান গাইতে গিয়ে ১ লাখ ৭২ হাজার টাকা অগ্রিম নেওয়ার প্রতারণায় অভিযোগে আটক হয়েছিলেন। সে সময় একদিন রিমান্ডেও ছিলেন এই গায়ক। পরে আপসের মাধ্যমে ওই মামলা থেকে অব্যাহতিও পান নোবেল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত