Ajker Patrika

দোকানঘর ভাড়া নিয়ে দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব, জনমনে আতঙ্ক

বাগেরহাট ও চিতলমারী প্রতিনিধি
দোকানঘর ভাড়া নিয়ে দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব, জনমনে আতঙ্ক

বাগেরহাটের চিতলমারীতে দোকানঘর ভাড়া দিয়ে অশীতিপর মো. সুলতান আহম্মেদ মুনশি (১০২) ও তাঁর পরিবার বিপাকে পড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় সালিসদারদের একাধিক সালিস বৈঠক ব্যর্থ হয়েছে। ফলে দুই পক্ষের দফায় দফায় মহড়ায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। 

ভয়ে সাধারণ ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে দিয়েছেন। এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার রাত ১১টার দিকে মো. সুলতান আহম্মেদ মুনশির ছেলে মো. উজ্জ্বল মুনশি বাদী হয়ে চিতলমারী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। 

লিখিত অভিযোগে মো. উজ্জ্বল মুনশি বলেন, ‘চিতলমারী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মো. নিয়ামত খান ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে আমার পিতা মো. সুলতান আহম্মেদ মুনশির কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা জামানত দিয়ে দুইটি দোকান ঘর ভাড়া নেন। পরে তাঁর বংশীয় চাচা আব্দুস ছত্তার খান আরও দুইটি ঘর ৫০ হাজার টাকা জামানত দিয়ে ভাড়া নেন। চুক্তিপত্রে ৪টি ঘরের মেয়াদ ২ বছর করে উল্লেখ ছিল। আব্দুস ছত্তার খান মারা যাওয়ায় ৪টি ঘরই নিয়ামত আলী খান ব্যবহার করেন। আরও দুইটি ঘর খালি হলে নিয়ামত খান সেই ঘর দুটিও ভাড়া নেন। মোট ৬টি ঘর তাঁকে ভাড়া দেওয়া হয়। ঘরগুলোর মধ্য একটি ঘরে তিনি স্বেচ্ছাসেবক দলের অফিস বসান ও রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রম শুরু করেন। এ জন্য আমরা তাঁকে ঘর ছাড়তে বলি।’ 

মো. উজ্জ্বল মুনশি আরও বলেন, ‘গত বছরের ৩ নভেম্বর আমার বড় ভাই মাসুদ মুনশি নিয়ামত খানকে ফোনে ৩১ ডিসেম্বর মধ্যে ঘর ছাড়ার জন্য বলেন। পরে আমিসহ আমার ভাইয়েরা তাঁকে ঘর ছাড়ার জন্য বলি। তখন নিয়ামত খান জানান, তিনি নাশকতার মামলায় পলাতক। জামিনে এসে ঘর ছাড়বেন। ১৩ জানুয়ারি গণ্যমান্যদের উপস্থিতিতে তাঁর সঙ্গে ৪টি ঘরের জামানতের এক লাখ টাকা ঘর ছাড়ার সময় ফেরত পাবে বলেও আলোচনা হয়। তিনি বিপদে পড়েছেন বলে আমাদের কাছে ঘর ছাড়ার জন্য ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় চান। কিন্তু গত ২৪ ফেব্রুয়ারি নিয়ামত খান ঘরে ব্যবসার জন্য আরও ফ্রিজ ও মালামাল ওঠান। তখন তাঁকে ২৮ ফেব্রুয়ারি ঘর ছাড়ার কথা বলা হলে তিনি ও তাঁর স্ত্রী লাকি খানম রড দিয়ে আমাদের মারতে তেড়ে আসেন এবং বলেন আমার ঘরে আমি মাল ওঠাব তাতে তোদের কি। ঘরের কাছে আসলে মেরে ফেলব।’ 

মো. উজ্জ্বল মুনশি আরও বলেন, ‘এরপর নিয়ামতের বংশীয় মুরব্বি চিতলমারী আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. বাবুল হোসেন খান বিষয়টি মীমাংসা করার প্রতিশ্রুতি দেন এবং ওইদিন সন্ধ্যায় স্থানীয় গণ্যমান্যদের সমন্বয়ে একটি সালিসের ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে নিয়ামত খান ২৫ লাখ টাকার একটি বন্ধকি চুক্তিনামা দেখায়। সেটি স্থানীয় মুরব্বিরা পরীক্ষা করে নকল (কম্পিউটারে তৈরি) বলে সাব্যস্ত করেন। মো. বাবুল হোসেন খান আরও ২ দিনের সময় নেন। কিন্তু কোনো সমাধান দিতে পারেননি। এ পর্যন্ত তিনবার সালিসি বৈঠক ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমানে মো. নিয়ামত খানের সন্ত্রাসীরা দেশীয় ধারালো অস্ত্র-শস্ত্রসহ আমাদের ঘরের সামনে মহড়া দিচ্ছে। এতে জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সাধারণ ব্যবসায়ীরা ভয়ে দোকানপাট বন্ধ করে দিচ্ছে। বর্তমানে আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’ 

এ ব্যাপারে চিতলমারী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দল আহ্বায়ক মো. নিয়ামত খান বলেন, ‘সুলতান আহমেদ মুনশি দোকানঘর বন্ধক রেখে আমার কাছ থেকে ২৫ লাখ টাকা নিয়েছেন। এই টাকা ফেরত দিলে আমি ঘর ছেড়ে দেব।’

চিতলমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. বাবুল হোসেন খান বলেন, ‘সুলতান আহমেদ মুনশির রেকর্ডের জমিতে এই ঘর। নিয়ামত খানের দাবি করার কোনো সুযোগ নেই। এ ছাড়া ২৫ লাখ টাকা দেওয়ার যে বিষয়টি সেটা আমার কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয় না। ঘর ভাড়া নেওয়ার সময় যদি কোনো অগ্রিম নিয়ে থাকে সেই স্বপক্ষে কোনো কাগজ থাকলে সেটা দেখাতে পারে। কিন্তু ২৫ লাখ টাকা দেওয়ার যে কাগজ এটা কোথাও গ্রহণযোগ্য হবে না।’ 

আজ শনিবার দুপুর ৩টার দিকে চিতলমারী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এ এইচ এম কামরুজ্জামান খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ঘটনায় আগামী বৃহস্পতিবার স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সালিস বৈঠক হবে। আশা করি বৈঠকে একটা সুন্দর সমাধান হবে। যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেদিকে পুলিশের নজর রয়েছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নিরাপদ সড়কসহ ৫ দফা দাবিতে ফার্মগেটে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
নিরাপদ সড়কের দাবিসহ পাঁচ দফা দাবিতে রাজধানীর ফার্মগেটে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
নিরাপদ সড়কের দাবিসহ পাঁচ দফা দাবিতে রাজধানীর ফার্মগেটে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নিরাপদ সড়কের দাবিসহ পাঁচ দফা দাবিতে রাজধানীর ফার্মগেটে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছেন সরকারি বিজ্ঞান কলেজসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। দুদিন আগে ফার্মগেট এলাকায় ট্রাকচাপায় সিফাত নামে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন কর্মসূচি। সড়ক অবরোধের কারণে ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে ফার্মগেট মোড়ে অবস্থান নিলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) ইবনে মিজান। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করেছে। আমরা তাঁদের সঙ্গে কথা বলছি।’

সিফাতের মৃত্যুর ঘটনায় ডিসি ইবনে মিজান জানান, ‘ট্রাকচাপায় ফার্মগেটের একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী সিফাতের মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যে মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’

এ সময় শিক্ষার্থীরা পাঁচ দফা দাবি উপস্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো—

১. সিফাত হত্যার বিচার এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দেওয়ায় প্রশাসনকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।

২. ফুটপাত দখলমুক্তকরণ: ফুটপাত থেকে সব অবৈধ দোকান, অস্থায়ী স্থাপনা, অননুমোদিত বাজার ও ভবঘুরে স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ।

৩. পার্কিং আইন কার্যকর: নো-পার্কিং জোন কঠোরভাবে ঘোষণা ও বাস্তবায়ন।

৪. যানবাহন নিয়ন্ত্রণ: দুর্ঘটনা ও যানজট এড়াতে রেলক্রসিং থেকে গির্জা পর্যন্ত সড়কে অটোরিকশা, ট্রাকসহ ভারী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করতে হবে।

৫. সড়ক নিরাপত্তা অবকাঠামো উন্নয়ন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশে তিনটি স্পিড ব্রেকার, পর্যাপ্ত ল্যাম্পপোস্ট, লেন ডিভাইডার এবং ট্রাফিক আইল্যান্ড স্থাপন।

পুলিশের সঙ্গে আলোচনা সত্ত্বেও দুপুর পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সিরাজগঞ্জে দাদিকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগে নাতি আটক

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় সন্দেশ বেওয়া (৮৫) নামের এক বৃদ্ধকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তাঁর নাতি সজিব আলীর (২২) বিরুদ্ধে। উল্লাপাড়া উপজেলার চকবরু ভেংড়ী গ্রামে বুধবার গভীর রাতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহত সন্দেশ বেওয়া ওই গ্রামের মৃত নওশের আলীর স্ত্রী এবং আটক সজিব আলী তাঁর (বৃদ্ধার) সন্তান আহমদ আলীর ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বুধবার গভীর রাতে সন্দেশ বেওয়ার ঘর থেকে চিৎকারের শব্দ শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসেন। পরে পরিবারের সদস্যরা ঘরে গিয়ে সন্দেশ বেওয়ার গলাকাটা মরদেহ দেখতে পান। খবর পেয়ে রাতেই সলঙ্গা থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে এবং অভিযুক্ত নাতি সজিব আলীকে আটক করে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, আটক যুবক সজিব আলী মাদকাসক্ত এবং মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন।

সলঙ্গা থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হাসিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নিহত ব্যক্তির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এএসআই হাসিম আরও জানান, আটক সজিব আলীকে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও সার্কেল কর্মকর্তা জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। এই ঘটনায় এখনো কোনো মামলা করা হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদ কার্যালয়ে চাকরির সুযোগ

চাকরি ডেস্ক 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদ কার্যালয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে ২ ধরনের পদে ২ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। গত ১৬ অক্টোবর এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। আগ্রহী প্রার্থীরা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত ঠিকানায় ডাকযোগের মাধ্যমে আবেদনপত্র পাঠাতে পারবেন।

পদের নাম: ডুপ্লিকেটিং মেশিন অপারেটর কাম-দপ্তরি।

পদ সংখ্যা: ১টি।

শিক্ষাগত যোগ্যতা: মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট অথবা সমমানের শিক্ষাগত যোগ্যতা। ফটোকপি মেশিন চালানোর বাস্তব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

বেতন: ৮,৮০০–২১,৩১০ টাকা।

পদের নাম: ইলেকট্রিশিয়ান।

পদ সংখ্যা: ১ টি।

শিক্ষাগত যোগ্যতা: মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট অথবা সমমানের শিক্ষাগত যোগ্যতাসহ সরকার কর্তৃক স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান হতে সনদপ্রাপ্ত হতে হবে।

বেতন: ৮,৮০০–২১,৩১০ টাকা।

আবেদন পদ্ধতি: আগ্রহী প্রার্থীরা আবেদনপত্রের খামের উপর পদের নাম উল্লেখ করে ‘প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা পরিষদ, মানিকগঞ্জ’ বরাবরে ডাকযোগে পৌঁছাতে হবে। সরাসরি ও নির্ধারিত তারিখের পরে কোনো আবেদন গ্রহণ করা হবে না।

আবেদনের শেষ সময়: ১৬ নভেম্বর, ২০২৫।

সূত্র: বিজ্ঞপ্তি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ, পুলিশের টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ

গাজীপুর (শ্রীপুর) প্রতিনিধি
আজ দুপুরে উপজেলার জৈনা বাজার এলাকায় কয়েক হাজার শ্রমিক মহাসড়ক অবরোধ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ দুপুরে উপজেলার জৈনা বাজার এলাকায় কয়েক হাজার শ্রমিক মহাসড়ক অবরোধ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ‘এএ ইয়ার্ন মিলস লিমিটেড’ কারখানার শ্রমিকেরা। এতে মহাসড়কের দুই পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। ছবি: আজকের পত্রিকা
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। ছবি: আজকের পত্রিকা

আজ বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার জৈনা বাজার এলাকায় এএ ইয়ার্ন মিলস লিমিটেড কারখানার কয়েক হাজার শ্রমিক মহাসড়ক অবরোধ করে এই বিক্ষোভ শুরু করেন।

কারখানার শ্রমিক মনিরা খাতুন বলেন, ‘গত সেপ্টেম্বর মাসের বকেয়া বেতন দেওয়ার তারিখ ছিল ১০ অক্টোবর। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষের লোকজন দিই-দিচ্ছি করে দিন পার করছে। আজ বেতন পরিশোধ করার কথা ছিল। কিন্তু আজও বেতন পরিশোধ করার কোনো সম্ভবনা নেই। পুলিশ আমাদের ওপর টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে।’

আরেক শ্রমিক আরিফুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমাদের পরিবার আছে, স্ত্রী-সন্তান আছে। বাড়িভাড়া ও মুদিদোকানের বকেয়ার জন্য চরম চাপে আছি। পাওনাদারেরা রীতিমতো চাপ দিচ্ছে টাকা পরিশোধ করতে, নয়তো বাড়ি ছাড়ার হুমকি দিচ্ছে। পেটের দায়েই আমরা রাস্তায় এসেছি। লাঠিপেটা হলেও আমরা টাকা চাই।’

এএ ইয়ার্ন মিলস লিমিটেড কারখানার মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা মনির হোসেন বলেন, ‘এক মাসের বেতন বকেয়া। আজ পরিশোধের তারিখ ছিল; কিন্তু আজও সম্ভব হচ্ছে না। বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য কারখানার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু শ্রমিকেরা কাজ ফেলে মহাসড়কে চলে গেছে।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, বকেয়া বেতন পরিশোধের জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের কয়েকটি তারিখ দিয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসের বেতন পরিশোধের জন্য আজ সর্বশেষ তারিখ ছিল। কিন্তু আজও বেতন পরিশোধ করেনি কর্তৃপক্ষ। এ জন্য সড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকেরা। তিনি আরও বলেন, ‘শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু শ্রমিকেরা কিছুতেই সড়ক ছাড়ছেন না। এ সময় টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত