Ajker Patrika

হাসান আজিজুল হকের সংস্কৃতিচর্চা

সাজ্জাদ বকুল
আপডেট : ১৯ নভেম্বর ২০২২, ১০: ০০
হাসান আজিজুল হকের সংস্কৃতিচর্চা

বাংলা কথাসাহিত্যের জগতে শক্তিশালী লেখক হিসেবে সুবিদিত হাসান আজিজুল হক করতেন শিক্ষকতা—প্রথমে বিভিন্ন কলেজে, পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে, দর্শন বিভাগে। শিক্ষকতার পেশায় থেকে অনেকেই লেখালেখি করে থাকেন। তবে হাসান আজিজুল হকের লেখালেখি যে নিতান্ত শখের বশে নয়, তা যাঁরা তাঁর লেখা পাঠ করেছেন বা তাঁকে কাছ থেকে দেখেছেন, তাঁরা নিশ্চয়ই উপলব্ধি করেছেন। প্রায় এক যুগ তাঁকে খুব কাছ থেকে দেখে, ঘনিষ্ঠভাবে মিশে আমারও তা কিছুটা হৃদয়ঙ্গম হয়েছে।

হাসান আজিজুল হক একজন সমাজ-সচেতন লেখক, বিবেকবান, প্রতিবাদী মানুষ। মানুষের দুঃখ, বেদনা, সংগ্রাম, বঞ্চনা, বৈষম্য, রাষ্ট্রের মালিক জনগণের ওপর শাসকদের শোষণ-পীড়ন তাঁকে ক্ষুব্ধ করেছে। এসবের শৈল্পিক প্রতিবাদ করতেই তিনি কলম হাতে তুলে নিয়েছেন। তাঁর এমন ক্ষোভের আগুন থেকেই জন্ম নিয়েছে ‘শকুন’-এর মতো বাংলা ছোটগল্প-জগতের বাঁক বদলকারী গল্পের। পাকিস্তান আমলে স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের সামরিক অপশাসনের প্রতিবাদ হিসেবে তিনি এই গল্প রচনা করেন।

দেশভাগের মতো রাজনীতিবিদদের স্বার্থতাড়িত অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্তপ্রসূত ঘটনার বিয়োগান্ত পরিণতিতে ক্ষুব্ধ হাসান আজিজুল হক লেখক-জীবনের প্রায় শুরুতে লিখেছেন ‘আত্মজা ও একটি করবী গাছ’-এর মতো কালজয়ী গল্প, শেষ দিকে এসে লিখেছেন ‘আগুনপাখি’র মতো মহাকাব্যিক উপন্যাস।

হাসান আজিজুল হককে পাঠ করলে আমরা এই সিদ্ধান্তে আসতে পারি, তাঁর লেখালেখি আসলে বিবেকের দায় থেকে। সেই দায় বিপন্ন, দুস্থ মানুষের দুর্দশার কথা সকলের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার দায়। সেই দায় তিনি শুধু তাঁর লেখালেখি দিয়ে মেটাতে চেষ্টা করেননি। একই সঙ্গে তিনি সক্রিয় থেকেছেন মাঠে।

যখনই মানুষ আক্রান্ত হয়েছে, সমাজ কলুষিত হয়েছে, হাসান আজিজুল হক মাঠে নেমেছেন—সাহিত্যের মাঠে যেমন, তেমনি আন্দোলন-সংগ্রামের মাঠেও। নানা সংগঠন, সভা-সমাবেশে নেতৃত্ব দিয়েছেন, অন্যদের ডাকে সাড়া দিয়ে যেমন, তেমন নিজে থেকেও এসবের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, মানুষকে সংগঠিত করেছেন। তিনি এমন একজন লেখক, যিনি একদিকে বিবেকের দায়বোধ থেকে সাহিত্য রচনা করেছেন, অন্যদিকে সামাজিক-সাংস্কৃতিক নানা কর্মকাণ্ডে সক্রিয় থেকে তাঁর বক্তব্য আপামর জনতার কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন, অনেকের কাছে হয়তো তাঁর লেখাসেভাবে পৌঁছায়নি।

অবিভক্ত ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার যবগ্রামে জন্ম নেওয়া এই মানুষটা দেশভাগের নির্মম বাস্তবতার শিকার হয়ে পাকিস্তানে তথা বাংলাদেশে চলে আসতে বাধ্য হন। এরপর কিছুকাল খুলনায় কাটিয়ে চলে আসেন উত্তরের জেলা রাজশাহীতে। জীবনের প্রায় ছয় দশকেরও বেশি সময় তিনি কাটিয়েছেন রাজশাহীতে। ১৯৭৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর থেকে ২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর প্রয়াত হওয়ার সময় পর্যন্ত তিনি বাস করেছেন শিক্ষানগরীখ্যাত এই জেলা শহরে।

হাসান আজিজুল হক এই দীর্ঘ সময়ে রাজশাহীর নানা সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় থেকেছেন। কখনো সংগীত, কখনো আবৃত্তি, কখনো চলচ্চিত্র, কখনো নাটক। শিল্প-সংস্কৃতির নানা মাধ্যমে সাংগঠনিক তৎপরতায় নিজেকে সম্পৃক্ত করেছেন। এখানে তিনি শুধুই অংশগ্রহণকারী থাকেননি বা নিছক মনের ক্ষুধা নিবৃত্ত করতে এসব করেননি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে হয়েছেন সংগঠক। এখানেই অন্য অনেক লেখকের চেয়ে তিনি আলাদা।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর দীর্ঘদিনের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের সহযোদ্ধা অনেকের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে নানা তথ্য পাওয়া যায়। এমন কয়েকজন হলেন হাসান আজিজুল হকের প্রায় সমবয়সী রাবির অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক, একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট লেখক-চিন্তক সনৎ কুমার সাহা, বাংলা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক কবি চৌধুরী জুলফিকার মতিন, বিভাগে হাসান আজিজুল হকের শিক্ষার্থী ও পরে সহকর্মী অধ্যাপক এস এম আবু বকর, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত নাট্যব্যক্তিত্ব মলয় ভৌমিক প্রমুখ।

তাঁদের কাছ থেকে জানা যায়, হাসান আজিজুল হক স্বাধীনতা-উত্তরকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও কয়েকজন গুণী শিক্ষক, যেমন আলী আনোয়ার, বজলুল মোবিন চৌধুরী, শহীদুর রহমান, গুণী কর্মকর্তা নাজিম মাহমুদ প্রমুখের সঙ্গে মিলে ক্যাম্পাসে নাট্যচর্চার ক্ষেত্র প্রস্তুত করেন। সে সময় থিয়েটার ওয়ার্কশপ আয়োজন, নাট্য রচনা, বিদেশি নাটকের অনুবাদ ও সেসবের মঞ্চায়নসহ নাটক নিয়ে নানা কর্মকাণ্ডের ফলে রাবিতে নাটক বিষয়ে অনেক সংগঠন আত্মপ্রকাশ করে, যার মধ্যে অনুশীলনসহ কয়েকটি এখনো সক্রিয়।

নাজিম মাহমুদ প্রমুখের প্রতিষ্ঠিত আবৃত্তি সংগঠন ‘স্বনন’-এর সঙ্গে তিনি ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন, বলা যায় তিনিই ছিলেন এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক। ‘স্বনন’ নামটিও তাঁর দেওয়া। ক্যাম্পাসে সংগীতবিষয়ক নানা কর্মকাণ্ডেও হাসান আজিজুল হকের অনুপ্রেরণা, অংশগ্রহণ ছিল। জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের কেন্দ্রীয় ও রাজশাহী শাখার উপদেষ্টা ছিলেন তিনি। এই সংগঠনের রাজশাহী শাখার সাবেক সভাপতি তাপস মজুমদারের তথ্যমতে, রাজশাহীতে তাঁরা ‘রবীন্দ্রমেলা’সহ নানা আয়োজন করলে হাসান আজিজুল হক নানাভাবে যুক্ত থাকতেন, অনুষ্ঠানের খরচের জন্য বিজ্ঞাপন জোগাড়ে তিনিই ছিলেন মূল ভরসা।

রাজশাহী শহরে কবিকুঞ্জ বলে কবিদের একটা সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হয় ২০১২ সালে। তিনি এই সংগঠনের উপদেষ্টা ছিলেন বলে জানান এর সাধারণ সম্পাদক আরিফুল হক কুমার। প্রতিবছর তাঁরা ‘জীবনানন্দ কবিতামেলা’ বলে যে আন্তর্জাতিক কবিতা-উৎসবের আয়োজন করে আসছেন, তাতে আমৃত্যু যুক্ত থেকেছেন হাসান আজিজুল হক, একাধিক মেলা উদ্বোধন করেছেন। এ ছাড়া 
রাজশাহী শহরে ‘ইলা মিত্র শিল্পী সংঘ’, ‘খেলাঘর আসর’সহ নানা সংগঠনে তিনি নানাভাবে সক্রিয় সহযোগিতা করেছেন।

২০০১ সালের পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর অনুপ্রেরণায় ‘বাংলাদেশ চর্চা পাঠচক্র’ নামে একটি বুদ্ধিবৃত্তিক সংগঠন জন্ম নেয়, মৃত্যুর আগপর্যন্ত যার প্রতিটি আসরে সভাপতিত্ব করেছেন হাসান আজিজুল হক। ২০১০-১১ সাল থেকে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমি দায়িত্ব পালন করছি। মাঝেমধ্যে কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়লে আমাকে তাড়া দিয়েছেন এটিকে আবার বাঁচিয়ে তোলার জন্য।

আমি ২০১১ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ’ প্রতিষ্ঠা করি, আমৃত্যু যার উপদেষ্টা ছিলেন হাসান আজিজুল হক। আমাদের চলচ্চিত্রবিষয়ক সব বড় অনুষ্ঠানে তাঁকে পেয়েছি। রাজশাহী শহরে ‘ঋত্বিক ঘটক চলচ্চিত্র সংসদ’, ‘রাজশাহী ফিল্ম সোসাইটি’সহ অন্য চলচ্চিত্র সংসদগুলোর কর্মকাণ্ডে হাসান স্যারই ছিলেন প্রধান আকর্ষণ।

রাজশাহীতে ২০১৮ সালে ‘উপহার’ সিনেমা হল বন্ধ করে দেওয়ার সময় এটি চালু রাখার দাবিতে আমরা যে আন্দোলন গড়ে তুলেছিলাম, তাতে হলের সামনে আমাদের অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত থেকে উৎসাহ দিয়েছেন। মিঞাপাড়ায় আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটকের পারিবারিক যে ভিটেটি হোমিওপ্যাথিক কলেজের আড়ালে দখল করা হয়েছে, সেটি উদ্ধারের আন্দোলনেও হাসান স্যার আমাদের উৎসাহ দিয়েছেন। হোমিওপ্যাথিক কলেজে ঋত্বিক ঘটকের নামে করা মিলনায়তনের উদ্বোধকও হাসান আজিজুল হক।

১৯৯২ সালে রাজশাহীতে ‘একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’র যে আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয় তাতে আহ্বায়ক হিসেবে নেতৃত্বে থেকে অন্যদের সাহস জুগিয়েছেন হাসান আজিজুল হক। এই 
কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক এস এম আবু বকর এই সংগঠনের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে হাসান আজিজুল হকের সাহসী পদক্ষেপের যে বিবরণ আমাকে সম্প্রতি শোনালেন, তা ছোটগল্পের রাজপুত্র হিসেবে পরিচিত এই কথাশিল্পীর সমাজের প্রতি, মানুষের প্রতি দায়বোধের আরেকটি দিক উন্মোচিত করে।

এভাবে কত সংগঠনের সঙ্গে যে তাঁর নানারকম যোগ ছিল তা খতিয়ে দেখতে গেলে রীতিমতো বিস্মিত হতে হয়। এই স্বল্প পরিসরের লেখায় সব তুলে আনা গেল না। সবশেষে বলা যায়, হাসান আজিজুল হক কিংবদন্তি কথাশিল্পীর পরিচয়ের পাশাপাশি সামাজিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলনের একজন পুরোধা ব্যক্তিত্ব হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গবেষণায় বেরিয়ে এল আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’র গল্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল। কিন্তু ভাষাবিদ ও সাহিত্য ইতিহাসবিদদের মতে, এই ধারণা আসলে পশ্চিমা দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি এক ‘ঔপনিবেশিক কল্পনা’ মাত্র। বাস্তবে আরবি সাহিত্য কখনোই থেমে যায়নি।

প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, অষ্টম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফাদের অধীনে বিজ্ঞান, দর্শন ও কবিতার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল বাগদাদ। আবু নুয়াস, আল-মুতানাব্বি, আল-ফারাবি ও ইবনে সিনার মতো কবি ও দার্শনিকদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এক স্বর্ণযুগ। ঊনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় গবেষকেরা—যেমন ফরাসি চিন্তাবিদ আর্নেস্ট রেনাঁ ও ডাচ ইতিহাসবিদ রেইনহার্ট দোজি সেই আমলটিকেই আরবি বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনের শিখর বলে স্বীকার করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, একাদশ শতাব্দীর পর এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে। তাঁদের মতে, এরপর প্রায় ৮০০ বছর আরবে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক বা দার্শনিক কাজ হয়নি—যতক্ষণ না ইউরোপে রেনেসাঁ শুরু হয়।

কিন্তু আধুনিক গবেষকেরা বলছেন, এই ধারণা সরলীকৃত ও পক্ষপাতদুষ্ট। ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলায় শেখ জায়েদ বুক অ্যাওয়ার্ডের আয়োজিত এক আলোচনায় ভাষাবিদেরা দাবি করেছেন, আরবি রচনা শৈলী কখনো বিলুপ্ত হয়নি; বরং তা ধারাবাহিকভাবে কপি, অনুবাদ ও পাঠের মাধ্যমে বেঁচে ছিল।

জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলার তাঁর ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ গ্রন্থে দাবি করেছেন, আরবি সাহিত্যে ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে যে ধারণাটি প্রচলিত আছে তা আসলে গাল-গল্প। এই বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। গ্রুন্ডলার এতে দেখিয়েছেন, নবম শতাব্দীর বাগদাদে বইয়ের ব্যবসা, কপিকারদের প্রতিযোগিতা, জনসম্মুখে পাঠ ও লেখার প্রচলন—সবই ছিল আধুনিক প্রকাশনা সংস্কৃতির পূর্বসূরি। তিনি মত দিয়েছেন, ‘বাগদাদের রাস্তায় হাঁটলে আপনি দেখতেন লোকেরা হস্তলিপি বিক্রি করছে, বিরামচিহ্ন নিয়ে তর্ক করছে—এ যেন এক জীবন্ত প্রকাশনা বাজার।’

গবেষণা বলছে, আরবি সাহিত্য আসলে কখনো এক জায়গায় স্থির থাকেনি। এর কেন্দ্র এক সময় বাগদাদ থেকে কায়রো, দামেস্ক ও আন্দালুসিয়ায় স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু ধারাটি অব্যাহতই থাকে। নতুন ঘরানা তৈরি হয়, পুরোনো ঘরানা রূপান্তরিত হয়।

ফরাসি অধ্যাপক হাকান ওজকান তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, ‘জাজাল’ নামের কথ্য ছন্দভিত্তিক কবিতার ধারা আব্বাসীয় যুগের পরও বিকশিত হতে থাকে। তাঁর মতে, ‘এই কবিরা নিয়ম ভেঙে নতুন রূপ দিয়েছে—তাঁদের ছন্দ ও ব্যঙ্গ আধুনিক র্যাপের মতো প্রাণবন্ত।’

জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলারের ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। ছবি: দ্য ন্যাশনাল
জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলারের ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। ছবি: দ্য ন্যাশনাল

এদিকে এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২০ অক্টোবর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, আবুধাবির নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ‘আরবি সাহিত্য লাইব্রেরি’ প্রকল্প ইতিমধ্যেই ‘হারানো শতাব্দী’ বলে বিবেচিত সময়ের ৬০ টিরও বেশি আরবি সাহিত্যকর্ম পুনরুদ্ধার করেছে। প্রকল্পটির সম্পাদক অধ্যাপক মরিস পোমেরান্টজ বলেছেন, ‘এই বইগুলো সম্পাদনা করা মানে এক চলমান সংলাপে অংশ নেওয়া—যেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেখক, অনুবাদক ও সমালোচকেরা একে অপরকে উত্তর দিয়ে গেছেন।’

মরিস মনে করেন, আরবি সাহিত্য স্থবির হয়ে যাওয়ার ধারণাটি মূলত অনুবাদের অভাব থেকেই জন্ম নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো লেখা অনুবাদ করা হয় না, তখন সেটি বৈশ্বিক অস্তিত্ব হারায়।’

মরিসের মতে, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই সাহিত্যকে আবার জনসাধারণের কল্পনায় ফিরিয়ে আনা—স্কুলে পড়ানো, মঞ্চে উপস্থাপন করা, অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া। তা না হলে আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে চিহ্নিত সময়টি অধরাই থেকে যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান। ছবি: সংগৃহীত
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান। ছবি: সংগৃহীত

জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।

রকিব হাসানের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন সেবা প্রকাশনীর উপদেষ্টা মাসুমা মায়মুর। তিনি সেবা প্রকাশনীর প্রতিষ্ঠাতা কাজী আনোয়ার হোসেনের ছোট ছেলে কাজী মায়মুর হোসেনের স্ত্রী।

মাসুমা মায়মুর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তিন গোয়েন্দা ও সেবা প্রকাশনীর পাঠকদেরকে আন্তরিক দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, কিছুক্ষণ আগে রকিব হাসান সাহেব পরলোক গমন করেছেন। ডায়ালাইসিস চলাকালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওনার জীবনাবসান ঘটে। আপনারা ওনার পবিত্র আত্মার মাগফেরাত কামনা করুন।’

১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন রকিব হাসান। বাবার চাকরির কারণে শৈশব কেটেছে ফেনীতে। সেখান থেকে স্কুলজীবন শেষ করে ভর্তি হন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। পড়াশোনা শেষে বিভিন্ন চাকরিতে যুক্ত হলেও অফিসের বাঁধাধরা জীবনে তাঁর মন টেকেনি। অবশেষে তিনি লেখালেখিকে বেছে নেন জীবনের একমাত্র পথ হিসেবে।

জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ। ছবি: সংগৃহীত
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ। ছবি: সংগৃহীত

সেবা প্রকাশনী থেকে তাঁর লেখকজীবনের সূচনা হয়। প্রথমদিকে বিশ্বসেরা ক্ল্যাসিক বই অনুবাদ করে লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন তিনি। এরপর টারজান, গোয়েন্দা রাজু, রেজা-সুজা সিরিজসহ চার শতাধিক জনপ্রিয় বই লেখেন। তবে তাঁর পরিচয়ের সবচেয়ে বড় জায়গা হলো তিন গোয়েন্দা সিরিজ। এই সিরিজ বাংলাদেশের অসংখ্য কিশোর-কিশোরীর কৈশোরের সঙ্গী।

মূলত রবার্ট আর্থারের থ্রি ইনভেস্টিগেটরস সিরিজ অবলম্বনে তিন গোয়েন্দার সূচনা হয়। তবে রকিব হাসানের লেখনশৈলীতে এটি পেয়েছে একেবারে নতুন রূপ। বাংলাদেশি সাহিত্য হয়ে উঠেছে এটি। এই সিরিজের মাধ্যমে তিনি হয়ে ওঠেন হাজারো কিশোর পাঠকের প্রিয় লেখক।

নিজ নামে লেখার পাশাপাশি তিনি ব্যবহার করেছেন বিভিন্ন ছদ্মনাম। শামসুদ্দীন নওয়াব নামে তিনি অনুবাদ করেছিলেন জুল ভার্নের বইগুলো।

বাংলাদেশের পাঠকদের কাছে রকিব হাসান শুধু একজন গোয়েন্দা লেখক নন, তিনি কয়েক প্রজন্মের শৈশব-কৈশোরের ভালোবাসার মানুষ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ক্রাসনাহোরকাইয়ের নোবেল যেন তাঁর দীর্ঘ কোনো বাক্যের সমাপ্তি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
লাসলো ক্রাসনাহোরকাই। ছবি: সংগৃহীত
লাসলো ক্রাসনাহোরকাই। ছবি: সংগৃহীত

হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য। লেখক সুসান সনটাগ অবশ্য তাঁকে একসময় ‘মহাপ্রলয়ের হাঙ্গেরিয়ান গুরু’ আখ্যা দিয়েছিলেন।

সাহিত্যজগতে অনেকের কাছে ক্রাসনাহোরকাইয়ের নোবেল পাওয়ার এই ঘোষণাটি যেন কয়েক দশক ধরে চলা একটি বাক্যের সমাপ্তি।

১৯৫৪ সালে হাঙ্গেরির ছোট শহর জিউলা-তে জন্ম নেওয়া ক্রাসনাহোরকাই ১৯৮০-এর দশকের শুরুতে গল্প লেখা শুরু করেন। তাঁর প্রথম উপন্যাস স্যাটানট্যাঙ্গো (১৯৮৫) একটি বৃষ্টিস্নাত, ধ্বংসপ্রায় গ্রামের কাহিনি—যেখানে প্রতারক, মাতাল ও হতাশ মানুষেরা মিথ্যা আশায় আঁকড়ে থাকে। পরিচালক বেলা-তার তাঁর এই উপন্যাসটিকে দীর্ঘ ৭ ঘণ্টার এক সাদাকালো চলচ্চিত্রে রূপ দেন। এই বইতেই ধরা পড়ে ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখার বৈশিষ্ট্যসমূহ, যেমন—অবিরাম দীর্ঘ বাক্য, দার্শনিক হাস্যরস ও পতনের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের প্রতিচ্ছবি।

তাঁর পরবর্তী উপন্যাসগুলো—দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স (১৯৮৯), ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার (১৯৯৯) ও সেইবো দেয়ার বিলো (২০০৮)—তাঁর এই দৃষ্টিভঙ্গিকে মহাজাগতিক পরিসরে বিস্তৃত করেছে। ‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’–এ তিনি এক নথি প্রহরীর গল্প বলেছেন, যিনি রহস্যময় এক পাণ্ডুলিপি প্রকাশ করতে নিউইয়র্কে পালিয়ে যান এবং আত্মহত্যা করেন—যেন ক্রম বিলীন পৃথিবীতে অর্থ ধরে রাখার এক মরিয়া চেষ্টা তাঁর।

ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখায় কাহিনি প্রায় সময়ই বাক্যের ভেতর হারিয়ে যায়। তিনি লিখেছেন এমন বাক্য, যা একাধিক পৃষ্ঠা জুড়ে পাঠককে টেনে নেয় অবচেতনে, অবিরাম প্রবাহে।

তাঁর সাহিত্যে হাস্যরস ও ট্র্যাজেডি পাশাপাশি চলে। স্যাটানট্যাঙ্গো–এর মাতাল নাচের দৃশ্য যেমন নিঃশেষের প্রতীক, তেমনি ‘ব্যারন ওয়েঙ্কহাইমস হোমকামিং’ (২০১৬)-এ দেখা যায়, ফিরে আসা এক পরাজিত অভিজাতকে। যার মাধ্যমে প্রকাশ পায় সভ্যতার পচন ও মানুষের হাস্যকর ভ্রান্তি।

২০১৫ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার পাওয়ার মধ্য দিয়েই প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পান ক্রাসনাহোরকাই। অনুবাদক জর্জ সির্টেস ও ওটিলি মুলজেট তাঁর জটিল হাঙ্গেরিয়ান ভাষাকে ইংরেজিতে রূপ দিতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ‘হাডসন রিভিউ’ তাঁকে বর্ণনা করেছিল ‘অন্তহীন বাক্যের ভ্রমণশিল্পী’ হিসেবে।

চল্লিশ বছরের সৃষ্টিতে ক্রাসনাহোরকাইয়ের ভুবন চিত্র, সংগীত, দর্শন ও ভাষার মিলনে বিস্তৃত। সাম্প্রতিক উপন্যাস ‘হার্শট ০৭৭৬৯’ (২০২৪)–এ তিনি এক প্রবাহিত বাক্যে লিখেছেন নব্য-নাৎসি, নেকড়ে আর এক হতভাগ্য পদার্থবিদের কাহিনি—আধুনিক ইউরোপের নৈতিক পক্ষাঘাতের রূপক হিসেবে।

তাঁর সমগ্র সাহিত্যজগৎ এক অন্ধকার ও ধ্যানমগ্ন মহাবিশ্ব—যেখানে পতন, শূন্যতা ও করুণা পাশাপাশি থাকে। ‘সেইবো দেয়ার বিলো’ বইটিতে তিনি লিখেছেন, ‘সৌন্দর্য, যত ক্ষণস্থায়ীই হোক না কেন, তা পবিত্রতার প্রতিবিম্ব।’ এই বিশ্বাসই লাসলো ক্রাসনাহোরকাইকে সেই বিরল লেখক করে তুলেছে, যাঁর নৈরাশ্যও মুক্তির মতো দীপ্ত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় লাসলো ক্রাসনাহোরকাইয়ের কলম

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০২৫, ০০: ১০
সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় লাসলো ক্রাসনাহোরকাইয়ের কলম

হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।

আধুনিক হাঙ্গেরীয় সাহিত্যের একজন অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব লাসলো। অভিনব শৈলীর পাশাপাশি দার্শনিক গভীরতার জন্য তাঁর সাহিত্য সমাদৃত হয়েছে। তাঁকে ফ্রানৎস কাফকা ও স্যামুয়েল বেকেটের ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের মধ্যেও শিল্পের লেলিহান ঔজ্জ্বল্য ফুটে ওঠে লাসলোর লেখায়। তাই যুদ্ধবিধ্বস্ত সময়ের বুকে ফুলের মতো স্থান করে নিল তাঁর সাহিত্য।

লাসলোর জন্য সাহিত্যে এটা প্রথম পুরস্কার নয়, ২০১৪ সালে সাহিত্যকর্মের জন্য ম্যান বুকার ইন্টারন্যাশনাল পুরস্কার পান তিনি। এ পুরস্কার বিশ্বসাহিত্যে তাঁর অবস্থানকে সুদৃঢ় করে।

লাসলোর সাহিত্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো—স্বতন্ত্র শৈলী ও গঠন। উপন্যাসের মূল বিষয়বস্তু হলো—মানবতার অবক্ষয়, ধ্বংসের অনিবার্যতা ও আধুনিক জীবনের লক্ষ্যহীন চলন। তাঁর চরিত্রদের মধ্যে প্রায়ই একধরনের হতাশা ও বিচ্ছিন্নতা দেখা যায়; তারা এমন এক জগতের পথিক, যেখানে নৈতিকতা ও আশা বিলীনপ্রায়।

১৯৮৫ সালে প্রকাশিত ‘স্যাটানটাঙ্গো’ নামে প্রথম উপন্যাস লিখেই খ্যাতি পান লাসলো। এই উপন্যাসে বিচ্ছিন্ন ও পতিত এক কৃষি সমবায় গ্রামের জীবন তুলে ধরেছেন তিনি। সেখানে একধরনের বিভ্রম ও আশার জন্ম দেয় এক রহস্যময় আগন্তুকের আগমনে। এই উপন্যাস অবলম্বনে একই শিরোনামে সাত ঘণ্টার কালজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন বিখ্যাত পরিচালক বেলা টর।

লাসলোর আরেকটি ফিকশন উপন্যাস হলো— ‘দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স’। হাঙ্গেরির এক কাল্পনিক শহরের জীবন ফুটে উঠেছে এই উপন্যাসে। সামুদ্রিক প্রাণী হাঙরের প্রদর্শনীকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যকার উন্মাদনা, সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও একনায়কতন্ত্রের উত্থানের চিত্র আঁকা হয়েছে তাতে।

‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’ লাসলোর আরেকটি বিখ্যাত উপন্যাস। লম্বা লম্বা বাক্যে লেখা এই উপন্যাস লাসলোর শৈলী নিয়ে পাঠকদের নতুন করে ভাবায়। উপন্যাসের নায়ক একটি পাণ্ডুলিপি রক্ষা করার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন শহর ঘুরে বেড়ায়। বিশ্বের চূড়ান্ত ধ্বংসের একটি কাব্যিক বর্ণনা পাওয়া যায় এই উপন্যাসে।

এবার লাসলোকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করার নেপথ্যে নোবেল কমিটির বড় কারণ ছিল তাঁর সাহিত্যে শিল্পের জয়ধ্বনি তোলার প্রচেষ্টা। যখন সারা বিশ্বের বেশ কিছু দেশ যুদ্ধবিধ্বস্ত বা যুদ্ধের জন্য উৎসুক, তখন বারবার শিল্পের মোহিনী প্রেম ও বন্ধনের কথা মনে করিয়ে দিতে চায় লাসলোর সাহিত্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত