Ajker Patrika

পাহাড়ের দেশ কলোরাডো

এমরান হোসাইন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে
পাহাড়ের দেশ কলোরাডো

প্রকৃতির মায়ায় সাজানো যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম রাজ্য কলোরাডো, যেখানে বছরের সব সময় প্রকৃতিপ্রেমী ভ্রমণপিপাসুদের পদভারে পাহাড়ের চারদিক সরগরম থাকে। মাউন্ট ইভান, সামিট অব পাইক পিকস, গ্র্যান্ড মেসা, গার্ডন অব দ্য গর্ড, সাফায়ার পয়েন্ট, ফোর কণার মনুমেন্ট, ডেনভার, ডিলন শহর, কলোরাডো স্প্রিং, ফিসকো শহর—সব মিলে এক অদ্ভুত ভালো লাগা পাহাড়ের দেশ কলোরাডো।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যানসাস রাজ্য থেকে আমরা কজন টানা ৯ ঘণ্টা সড়কপথে সমতল থেকে পাহাড়ের দেশ কলোরাডোর ডিলন শহরে গিয়ে পৌঁছে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যায় বুকিং করা বাড়িতে উঠলাম। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৯ হাজার ফুট ওপরে এই শহরে রাত জাগার অন্য রকম অনুভূতি। রাত যত গভীর হতে লাগল, নির্জনতা আরও স্পষ্ট হতে থাকল। আলোঝলমলে পাহাড়ের মাঝখানে এ যেন একখণ্ড হীরক শহর। রকি মাউনটেন থেকে নেমে আসা শত শত ঝরনার কলতানে চোখের ঘুম টেনে নিয়ে যায় ভোরের আলো। মাইলের পর মাইল সারি সারি সবুজ পাইনগাছ পাহাড় আর সমতলের মাঝখানে প্রকৃতির রক্ষাকবচ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে দীর্ঘদিন।

পুরো কলোরাডো সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অনেক ওপরে। এখানকার জিওলজিক্যাল জরিপ থেকে জানা যায়, শতবর্ষী রাজ্য হিসেবে কলোরাডোকে সেনটেনিয়াল স্টেট বলা হয়। আমেরিকা স্বাধীনতার ১০০ বছর পূর্তিতে ১৮৭৬ সালে এটি রাজ্য হিসেবে যাত্রা শুরু করে। ৪১৭টি সিটি নিয়ে পাহাড়ঘেরা কলোরাডো। ১৪ হাজার ফুটের ওপরে ৫৮টি পর্বতশৃঙ্গ রয়েছে আমেরিকার এই রাজ্যে। যদিও এই হিসাব নিয়ে কিছুটা বিতর্ক রয়েছে ফেসবুক-টুইটারে।

গার্ডন অব দ্য গর্ডস্থানীয়রা গ্রীষ্মকালে এই ৫৮টি পাহাড়চূড়ায় হাইকিং করার প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েন। তাই গ্রীষ্মে কলোরাডোর যেকোনো প্রান্তের পাহাড়চূড়ায় কোমরে রশি বাঁধা দু-একজন হাইকার চোখে পড়বেই। আমাদের কাছে এ দৃশ্য দুঃসাহসিক মনে হলেও হাইকারদের কাছে এটি অনেকগুলো শখের একটি মাত্র।

কলোরাডোর রাজধানী ডেনভার। যুক্তরাষ্ট্রের অত্যন্ত ব্যয়বহুল শহরের মধ্যে এটি একটি। ছোট ছোট জলাধার, আঁকাবাঁকা রাস্তা, রকি মাউন্টেন থেকে ধেয়ে আসা শত শত ঝরনা ও সবুজ প্রকৃতি যেন মায়ের কোলে আগলে রেখেছে ডেনভার শহরকে।

মাউন্ট ইভানের চূড়ায় পাহাড়ি ছাগল বা মাউন্ট শিপজালের মতো ছড়ানো আমেরিকার ২১টি মহাসড়কের মধ্যে কলোরাডোর ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া আই-৭০ সড়ক ধরে পুরো আমেরিকা একবার চক্কর দেওয়া যাবে বলে জানান প্রকৌশলী রুপেন দেব, যিনি ইতিমধ্যে আমেরিকার ৫০টি রাজ্য ভ্রমণ করেছেন। গ্রীষ্মকালে কলোরাডোর প্রতিটি পাহাড়ি জনপদ প্রকৃতিপ্রেমীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়। এমনিতে আমেরিকানদের সহজাত প্রবৃত্তি বছরের অন্তত এক মাস ঘোরাঘুরি করা। প্রকৃতিকে জানতে ও বুঝতে বাবা-মায়ের কাঁধে চড়ে, বেবি ক্যারিয়ারে শিশুদের নিয়ে বনবাদাড়ে ঘুরে বেড়ানো, সাইকেলে চড়া, পাহাড়ে উঠে শিশু-কিশোরদের আকাশ ছোঁয়ার গল্প বলা, জীববৈচিত্র্য নিয়ে ছবি আঁকাসহ সব অভিজ্ঞতার ঝুলি কলোরাডো।

কলোরাডো রাজ্যে বছরের প্রতিটি ঋতুতে পর্যটকদের জন্য অনন্যসাধারণ জিনিস খুঁজে পাওয়া যাবে, যা রকি পর্বতমালার চেয়েও বেশি। এর মধ্যে রয়েছে বাইকিং, হাইকিং, এটিভি রেন্টাল ট্যুর, বোটিং, খাদ্য উৎসব, ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা, কলোরাডো গুহা, কলোরাডো ক্রস কান্ট্রি স্কিইংসহ আরও কত কী! অবাক করা কাণ্ড হলো, এখানে আছে ‘ফোর কর্নার মনুমেন্ট’ বলে খ্যাত পুরো আমেরিকার একমাত্র জায়গা, যেখানে অ্যারিজোনা, নিউ মেক্সিকো, উটাহ ও কলোরাডো—এই চার রাজ্যের কোণগুলো এক পথে মিশেছে।

মাউন্ট ইভানের চূড়ায়সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৯ হাজার ফুট ওপরে সবুজ পাহাড়ের সমতলে ডিলন শহর। ভ্রমণের প্রথম দিন সন্ধ্যার আলোয় এই শহরের পাহাড়ি উঁচু-নিচু পথে জিপিএসে চোখ রেখে স্টিয়ারিং হাতে গাড়ি ছুটছিল। ছোট-বড় পাহাড়ের গায়ে লাগানো জলাধার, আঁকাবাঁকা রাস্তা, শহরজুড়ে ডিলনস রিজার্ভার ঘিরে রেখেছে ছোট্ট এই শহরকে। ১ হাজার ৩০০ লোকের এই শহরে বাড়ি রয়েছে ১ হাজার ৪০০। পাহাড়ের খাঁজে যেন ছবির মতো আঁকা বাড়িঘর। বছরের ছয় মাস অধিকাংশ বাড়ি ভাড়া দেওয়া থাকে। বিশেষ করে গ্রীষ্মে পর্যটকদের ভিড় বাড়ে। তাই বাড়ি পেতে বুকিং দিতে হয় শীতে।

মাউন্ট ইভানের চূড়ায়জীববৈচিত্র্যে ভরা ডিলনস শহরে ভোরের পাহাড়ে হাঁটাহাঁটি মানে অন্যরকম অনুভূতি। জনবান্ধব ছোট্ট প্রাণী ‘সিপ মানকস’ বা কাঠবিড়ালি পর্যটকদের হাতের দিকে তাকিয়ে থাকে। হাতে ভুট্টা বা বাদাম দেখলে অমনি আনন্দে লাফালাফি করে ঝাঁকবেঁধে মানুষের আশপাশে ঘোরাঘুরি করবে। চোখে পড়ার মতো শেয়ালের আনাগোনা দেখা যায় এই শহরে। চলতি পথে বালুতে রয়েছে অসংখ্য ছোট গর্ত। শেয়াল আসতে দেখলে গর্তে ঢুকে পড়ে কাঠবিড়ালি। জনশ্রুতি আছে, শেয়ালের প্রাতরাশ এসব নিরীহ প্রাণী।

উত্তর আমেরিকার সবচেয়ে বড় পাকা রাস্তায় গড়া ১৪ হাজার ফুট উচ্চতায় ‘মাউন্ট ইভান’ পর্বতশৃঙ্গে ড্রাইভ করার অপার সুযোগ রয়েছে। এই পাহাড়ের ১১ হাজার ফুট ওপরে উঠতে একঝাঁক পাহাড়ি ছাগল আমাদের গতি রোধ করে গাড়ির আশপাশে কী যেন খুঁজতে লাগল—অনেকটা গাড়ি তল্লাশির মতো করে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, অনেক দর্শনার্থী মাঝেমধ্যে এসব প্রাণীকে খাবার দেয়। তাই তারা এভাবে গাড়ির গতি রোধ করে থাকে। খাওয়া না পেলে ব্যারিকেড তুলে পাহাড়ে চলে যায়।

 মাউন্ট ইভানের চূড়ায়মাউন্ট ইভান পাহাড়ের তিনটি ধাপ। প্রথম ধাপে ৫ হাজার ফুট ওপরে গভীর গাঢ় সবুজ বন বা ডিপ ফরেস্ট, দ্বিতীয় ধাপে ১১ হাজার ফুট ওপরে খোলা জানালা—যত দূর চোখ যায় শুধু পাহাড়ের মেলা, মন চাইলে পাখির মতো ডানা মেলে এই পাহাড় থেকে ওই পাহাড়ে ঘুরে বেড়ানো যায়।

গাড়ির গতিবেগ কখনো ২০, কখনো তারও নিচে ১৫ কিলোমিটার। দীর্ঘ ২৮ মাইল আঁকাবাঁকা সরু পর্বতশৃঙ্গের ড্রাইভ ওয়ে পাড়ি দেওয়ার প্রথম অভিজ্ঞতা। ধীরগতিতে এগিয়ে যাওয়া গাড়ির আয়নায় মেঘের ওড়াউড়ির ফাঁকে চোখে পড়ে স্বচ্ছ জলের ঢেউ, যেন প্রকৃতির অপার সৃষ্টি ‘প্রাকৃতিক জলাধার’ সামিট লেক।

ডিলন শহরে পাহাড়ি জনপদেগ্রীষ্মের পড়ন্ত বিকেলে সুউচ্চ পাহাড় থেকে নেমে আসতে থাকে শিলাবৃষ্টিসহ ঝোড়ো হাওয়া মনের ভেতর কেমন জানি করে ওঠে। গাড়ির ভেতরে থাকা অন্যদের তা বুঝতে না দিয়ে মনে পড়ে গেল—‘তোমার নাম লইয়্যা ধরিলাম পাড়ি …’। অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর সবার অনুপ্রেরণায় ১৪ হাজার ফুট উঁচু পাহাড়চূড়া থেকে নিচে নেমে সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ দিলাম।

পৃথিবীর বৃহত্তম সমতল পর্বত ‘গ্র্যান্ড মেসা’। স্বতন্ত্র ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১২ হাজার ফুট উঁচুতে দাঁড়িয়ে গ্র্যান্ড মেসায় রয়েছে ৬০ প্রজাতির মেমলস ও ৩০০ প্রজাতির পাখি।

বোটিংযুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো রাজ্যে কী নেই, যা প্লানেটে পাওয়া যায় না! প্রতিদিন ফেসবুক-টুইটারে নতুন নতুন তথ্য নিয়ে তর্কবিতর্ক লেগে থাকে এই রাজ্য নিয়ে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অনেক ওপরের রাজ্য হিসেবে এখানে নতুন পর্যটকদের সাধারণ সমস্যা তীব্র আলটিটিউট সিকনেস।

চিজ বার্গারের দেশ কলোরাডোকে জানতে https://climate.colostate.edu/ ব্রাউজ করুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঘর আলো করেছে ৫ নবজাতক, চোখে অন্ধকার দেখছেন মুদিদোকানি সোহেল

বেতন–ভাতা বাড়িয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলার না করলে টেসলা ছাড়তে পারেন মাস্ক

আজকের রাশিফল: ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না

ঘনীভূত হচ্ছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’, আঘাত হানবে সন্ধ্যার পর

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গবেষণায় বেরিয়ে এল আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’র গল্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল। কিন্তু ভাষাবিদ ও সাহিত্য ইতিহাসবিদদের মতে, এই ধারণা আসলে পশ্চিমা দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি এক ‘ঔপনিবেশিক কল্পনা’ মাত্র। বাস্তবে আরবি সাহিত্য কখনোই থেমে যায়নি।

প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, অষ্টম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফাদের অধীনে বিজ্ঞান, দর্শন ও কবিতার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল বাগদাদ। আবু নুয়াস, আল-মুতানাব্বি, আল-ফারাবি ও ইবনে সিনার মতো কবি ও দার্শনিকদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এক স্বর্ণযুগ। ঊনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় গবেষকেরা—যেমন ফরাসি চিন্তাবিদ আর্নেস্ট রেনাঁ ও ডাচ ইতিহাসবিদ রেইনহার্ট দোজি সেই আমলটিকেই আরবি বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনের শিখর বলে স্বীকার করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, একাদশ শতাব্দীর পর এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে। তাঁদের মতে, এরপর প্রায় ৮০০ বছর আরবে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক বা দার্শনিক কাজ হয়নি—যতক্ষণ না ইউরোপে রেনেসাঁ শুরু হয়।

কিন্তু আধুনিক গবেষকেরা বলছেন, এই ধারণা সরলীকৃত ও পক্ষপাতদুষ্ট। ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলায় শেখ জায়েদ বুক অ্যাওয়ার্ডের আয়োজিত এক আলোচনায় ভাষাবিদেরা দাবি করেছেন, আরবি রচনা শৈলী কখনো বিলুপ্ত হয়নি; বরং তা ধারাবাহিকভাবে কপি, অনুবাদ ও পাঠের মাধ্যমে বেঁচে ছিল।

জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলার তাঁর ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ গ্রন্থে দাবি করেছেন, আরবি সাহিত্যে ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে যে ধারণাটি প্রচলিত আছে তা আসলে গাল-গল্প। এই বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। গ্রুন্ডলার এতে দেখিয়েছেন, নবম শতাব্দীর বাগদাদে বইয়ের ব্যবসা, কপিকারদের প্রতিযোগিতা, জনসম্মুখে পাঠ ও লেখার প্রচলন—সবই ছিল আধুনিক প্রকাশনা সংস্কৃতির পূর্বসূরি। তিনি মত দিয়েছেন, ‘বাগদাদের রাস্তায় হাঁটলে আপনি দেখতেন লোকেরা হস্তলিপি বিক্রি করছে, বিরামচিহ্ন নিয়ে তর্ক করছে—এ যেন এক জীবন্ত প্রকাশনা বাজার।’

গবেষণা বলছে, আরবি সাহিত্য আসলে কখনো এক জায়গায় স্থির থাকেনি। এর কেন্দ্র এক সময় বাগদাদ থেকে কায়রো, দামেস্ক ও আন্দালুসিয়ায় স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু ধারাটি অব্যাহতই থাকে। নতুন ঘরানা তৈরি হয়, পুরোনো ঘরানা রূপান্তরিত হয়।

ফরাসি অধ্যাপক হাকান ওজকান তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, ‘জাজাল’ নামের কথ্য ছন্দভিত্তিক কবিতার ধারা আব্বাসীয় যুগের পরও বিকশিত হতে থাকে। তাঁর মতে, ‘এই কবিরা নিয়ম ভেঙে নতুন রূপ দিয়েছে—তাঁদের ছন্দ ও ব্যঙ্গ আধুনিক র্যাপের মতো প্রাণবন্ত।’

জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলারের ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। ছবি: দ্য ন্যাশনাল
জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলারের ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। ছবি: দ্য ন্যাশনাল

এদিকে এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২০ অক্টোবর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, আবুধাবির নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ‘আরবি সাহিত্য লাইব্রেরি’ প্রকল্প ইতিমধ্যেই ‘হারানো শতাব্দী’ বলে বিবেচিত সময়ের ৬০ টিরও বেশি আরবি সাহিত্যকর্ম পুনরুদ্ধার করেছে। প্রকল্পটির সম্পাদক অধ্যাপক মরিস পোমেরান্টজ বলেছেন, ‘এই বইগুলো সম্পাদনা করা মানে এক চলমান সংলাপে অংশ নেওয়া—যেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেখক, অনুবাদক ও সমালোচকেরা একে অপরকে উত্তর দিয়ে গেছেন।’

মরিস মনে করেন, আরবি সাহিত্য স্থবির হয়ে যাওয়ার ধারণাটি মূলত অনুবাদের অভাব থেকেই জন্ম নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো লেখা অনুবাদ করা হয় না, তখন সেটি বৈশ্বিক অস্তিত্ব হারায়।’

মরিসের মতে, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই সাহিত্যকে আবার জনসাধারণের কল্পনায় ফিরিয়ে আনা—স্কুলে পড়ানো, মঞ্চে উপস্থাপন করা, অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া। তা না হলে আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে চিহ্নিত সময়টি অধরাই থেকে যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঘর আলো করেছে ৫ নবজাতক, চোখে অন্ধকার দেখছেন মুদিদোকানি সোহেল

বেতন–ভাতা বাড়িয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলার না করলে টেসলা ছাড়তে পারেন মাস্ক

আজকের রাশিফল: ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না

ঘনীভূত হচ্ছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’, আঘাত হানবে সন্ধ্যার পর

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান। ছবি: সংগৃহীত
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান। ছবি: সংগৃহীত

জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।

রকিব হাসানের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন সেবা প্রকাশনীর উপদেষ্টা মাসুমা মায়মুর। তিনি সেবা প্রকাশনীর প্রতিষ্ঠাতা কাজী আনোয়ার হোসেনের ছোট ছেলে কাজী মায়মুর হোসেনের স্ত্রী।

মাসুমা মায়মুর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তিন গোয়েন্দা ও সেবা প্রকাশনীর পাঠকদেরকে আন্তরিক দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, কিছুক্ষণ আগে রকিব হাসান সাহেব পরলোক গমন করেছেন। ডায়ালাইসিস চলাকালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওনার জীবনাবসান ঘটে। আপনারা ওনার পবিত্র আত্মার মাগফেরাত কামনা করুন।’

১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন রকিব হাসান। বাবার চাকরির কারণে শৈশব কেটেছে ফেনীতে। সেখান থেকে স্কুলজীবন শেষ করে ভর্তি হন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। পড়াশোনা শেষে বিভিন্ন চাকরিতে যুক্ত হলেও অফিসের বাঁধাধরা জীবনে তাঁর মন টেকেনি। অবশেষে তিনি লেখালেখিকে বেছে নেন জীবনের একমাত্র পথ হিসেবে।

জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ। ছবি: সংগৃহীত
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ। ছবি: সংগৃহীত

সেবা প্রকাশনী থেকে তাঁর লেখকজীবনের সূচনা হয়। প্রথমদিকে বিশ্বসেরা ক্ল্যাসিক বই অনুবাদ করে লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন তিনি। এরপর টারজান, গোয়েন্দা রাজু, রেজা-সুজা সিরিজসহ চার শতাধিক জনপ্রিয় বই লেখেন। তবে তাঁর পরিচয়ের সবচেয়ে বড় জায়গা হলো তিন গোয়েন্দা সিরিজ। এই সিরিজ বাংলাদেশের অসংখ্য কিশোর-কিশোরীর কৈশোরের সঙ্গী।

মূলত রবার্ট আর্থারের থ্রি ইনভেস্টিগেটরস সিরিজ অবলম্বনে তিন গোয়েন্দার সূচনা হয়। তবে রকিব হাসানের লেখনশৈলীতে এটি পেয়েছে একেবারে নতুন রূপ। বাংলাদেশি সাহিত্য হয়ে উঠেছে এটি। এই সিরিজের মাধ্যমে তিনি হয়ে ওঠেন হাজারো কিশোর পাঠকের প্রিয় লেখক।

নিজ নামে লেখার পাশাপাশি তিনি ব্যবহার করেছেন বিভিন্ন ছদ্মনাম। শামসুদ্দীন নওয়াব নামে তিনি অনুবাদ করেছিলেন জুল ভার্নের বইগুলো।

বাংলাদেশের পাঠকদের কাছে রকিব হাসান শুধু একজন গোয়েন্দা লেখক নন, তিনি কয়েক প্রজন্মের শৈশব-কৈশোরের ভালোবাসার মানুষ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঘর আলো করেছে ৫ নবজাতক, চোখে অন্ধকার দেখছেন মুদিদোকানি সোহেল

বেতন–ভাতা বাড়িয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলার না করলে টেসলা ছাড়তে পারেন মাস্ক

আজকের রাশিফল: ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না

ঘনীভূত হচ্ছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’, আঘাত হানবে সন্ধ্যার পর

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ক্রাসনাহোরকাইয়ের নোবেল যেন তাঁর দীর্ঘ কোনো বাক্যের সমাপ্তি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
লাসলো ক্রাসনাহোরকাই। ছবি: সংগৃহীত
লাসলো ক্রাসনাহোরকাই। ছবি: সংগৃহীত

হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য। লেখক সুসান সনটাগ অবশ্য তাঁকে একসময় ‘মহাপ্রলয়ের হাঙ্গেরিয়ান গুরু’ আখ্যা দিয়েছিলেন।

সাহিত্যজগতে অনেকের কাছে ক্রাসনাহোরকাইয়ের নোবেল পাওয়ার এই ঘোষণাটি যেন কয়েক দশক ধরে চলা একটি বাক্যের সমাপ্তি।

১৯৫৪ সালে হাঙ্গেরির ছোট শহর জিউলা-তে জন্ম নেওয়া ক্রাসনাহোরকাই ১৯৮০-এর দশকের শুরুতে গল্প লেখা শুরু করেন। তাঁর প্রথম উপন্যাস স্যাটানট্যাঙ্গো (১৯৮৫) একটি বৃষ্টিস্নাত, ধ্বংসপ্রায় গ্রামের কাহিনি—যেখানে প্রতারক, মাতাল ও হতাশ মানুষেরা মিথ্যা আশায় আঁকড়ে থাকে। পরিচালক বেলা-তার তাঁর এই উপন্যাসটিকে দীর্ঘ ৭ ঘণ্টার এক সাদাকালো চলচ্চিত্রে রূপ দেন। এই বইতেই ধরা পড়ে ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখার বৈশিষ্ট্যসমূহ, যেমন—অবিরাম দীর্ঘ বাক্য, দার্শনিক হাস্যরস ও পতনের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের প্রতিচ্ছবি।

তাঁর পরবর্তী উপন্যাসগুলো—দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স (১৯৮৯), ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার (১৯৯৯) ও সেইবো দেয়ার বিলো (২০০৮)—তাঁর এই দৃষ্টিভঙ্গিকে মহাজাগতিক পরিসরে বিস্তৃত করেছে। ‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’–এ তিনি এক নথি প্রহরীর গল্প বলেছেন, যিনি রহস্যময় এক পাণ্ডুলিপি প্রকাশ করতে নিউইয়র্কে পালিয়ে যান এবং আত্মহত্যা করেন—যেন ক্রম বিলীন পৃথিবীতে অর্থ ধরে রাখার এক মরিয়া চেষ্টা তাঁর।

ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখায় কাহিনি প্রায় সময়ই বাক্যের ভেতর হারিয়ে যায়। তিনি লিখেছেন এমন বাক্য, যা একাধিক পৃষ্ঠা জুড়ে পাঠককে টেনে নেয় অবচেতনে, অবিরাম প্রবাহে।

তাঁর সাহিত্যে হাস্যরস ও ট্র্যাজেডি পাশাপাশি চলে। স্যাটানট্যাঙ্গো–এর মাতাল নাচের দৃশ্য যেমন নিঃশেষের প্রতীক, তেমনি ‘ব্যারন ওয়েঙ্কহাইমস হোমকামিং’ (২০১৬)-এ দেখা যায়, ফিরে আসা এক পরাজিত অভিজাতকে। যার মাধ্যমে প্রকাশ পায় সভ্যতার পচন ও মানুষের হাস্যকর ভ্রান্তি।

২০১৫ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার পাওয়ার মধ্য দিয়েই প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পান ক্রাসনাহোরকাই। অনুবাদক জর্জ সির্টেস ও ওটিলি মুলজেট তাঁর জটিল হাঙ্গেরিয়ান ভাষাকে ইংরেজিতে রূপ দিতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ‘হাডসন রিভিউ’ তাঁকে বর্ণনা করেছিল ‘অন্তহীন বাক্যের ভ্রমণশিল্পী’ হিসেবে।

চল্লিশ বছরের সৃষ্টিতে ক্রাসনাহোরকাইয়ের ভুবন চিত্র, সংগীত, দর্শন ও ভাষার মিলনে বিস্তৃত। সাম্প্রতিক উপন্যাস ‘হার্শট ০৭৭৬৯’ (২০২৪)–এ তিনি এক প্রবাহিত বাক্যে লিখেছেন নব্য-নাৎসি, নেকড়ে আর এক হতভাগ্য পদার্থবিদের কাহিনি—আধুনিক ইউরোপের নৈতিক পক্ষাঘাতের রূপক হিসেবে।

তাঁর সমগ্র সাহিত্যজগৎ এক অন্ধকার ও ধ্যানমগ্ন মহাবিশ্ব—যেখানে পতন, শূন্যতা ও করুণা পাশাপাশি থাকে। ‘সেইবো দেয়ার বিলো’ বইটিতে তিনি লিখেছেন, ‘সৌন্দর্য, যত ক্ষণস্থায়ীই হোক না কেন, তা পবিত্রতার প্রতিবিম্ব।’ এই বিশ্বাসই লাসলো ক্রাসনাহোরকাইকে সেই বিরল লেখক করে তুলেছে, যাঁর নৈরাশ্যও মুক্তির মতো দীপ্ত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঘর আলো করেছে ৫ নবজাতক, চোখে অন্ধকার দেখছেন মুদিদোকানি সোহেল

বেতন–ভাতা বাড়িয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলার না করলে টেসলা ছাড়তে পারেন মাস্ক

আজকের রাশিফল: ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না

ঘনীভূত হচ্ছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’, আঘাত হানবে সন্ধ্যার পর

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় লাসলো ক্রাসনাহোরকাইয়ের কলম

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০২৫, ০০: ১০
সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় লাসলো ক্রাসনাহোরকাইয়ের কলম

হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।

আধুনিক হাঙ্গেরীয় সাহিত্যের একজন অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব লাসলো। অভিনব শৈলীর পাশাপাশি দার্শনিক গভীরতার জন্য তাঁর সাহিত্য সমাদৃত হয়েছে। তাঁকে ফ্রানৎস কাফকা ও স্যামুয়েল বেকেটের ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের মধ্যেও শিল্পের লেলিহান ঔজ্জ্বল্য ফুটে ওঠে লাসলোর লেখায়। তাই যুদ্ধবিধ্বস্ত সময়ের বুকে ফুলের মতো স্থান করে নিল তাঁর সাহিত্য।

লাসলোর জন্য সাহিত্যে এটা প্রথম পুরস্কার নয়, ২০১৪ সালে সাহিত্যকর্মের জন্য ম্যান বুকার ইন্টারন্যাশনাল পুরস্কার পান তিনি। এ পুরস্কার বিশ্বসাহিত্যে তাঁর অবস্থানকে সুদৃঢ় করে।

লাসলোর সাহিত্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো—স্বতন্ত্র শৈলী ও গঠন। উপন্যাসের মূল বিষয়বস্তু হলো—মানবতার অবক্ষয়, ধ্বংসের অনিবার্যতা ও আধুনিক জীবনের লক্ষ্যহীন চলন। তাঁর চরিত্রদের মধ্যে প্রায়ই একধরনের হতাশা ও বিচ্ছিন্নতা দেখা যায়; তারা এমন এক জগতের পথিক, যেখানে নৈতিকতা ও আশা বিলীনপ্রায়।

১৯৮৫ সালে প্রকাশিত ‘স্যাটানটাঙ্গো’ নামে প্রথম উপন্যাস লিখেই খ্যাতি পান লাসলো। এই উপন্যাসে বিচ্ছিন্ন ও পতিত এক কৃষি সমবায় গ্রামের জীবন তুলে ধরেছেন তিনি। সেখানে একধরনের বিভ্রম ও আশার জন্ম দেয় এক রহস্যময় আগন্তুকের আগমনে। এই উপন্যাস অবলম্বনে একই শিরোনামে সাত ঘণ্টার কালজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন বিখ্যাত পরিচালক বেলা টর।

লাসলোর আরেকটি ফিকশন উপন্যাস হলো— ‘দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স’। হাঙ্গেরির এক কাল্পনিক শহরের জীবন ফুটে উঠেছে এই উপন্যাসে। সামুদ্রিক প্রাণী হাঙরের প্রদর্শনীকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যকার উন্মাদনা, সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও একনায়কতন্ত্রের উত্থানের চিত্র আঁকা হয়েছে তাতে।

‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’ লাসলোর আরেকটি বিখ্যাত উপন্যাস। লম্বা লম্বা বাক্যে লেখা এই উপন্যাস লাসলোর শৈলী নিয়ে পাঠকদের নতুন করে ভাবায়। উপন্যাসের নায়ক একটি পাণ্ডুলিপি রক্ষা করার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন শহর ঘুরে বেড়ায়। বিশ্বের চূড়ান্ত ধ্বংসের একটি কাব্যিক বর্ণনা পাওয়া যায় এই উপন্যাসে।

এবার লাসলোকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করার নেপথ্যে নোবেল কমিটির বড় কারণ ছিল তাঁর সাহিত্যে শিল্পের জয়ধ্বনি তোলার প্রচেষ্টা। যখন সারা বিশ্বের বেশ কিছু দেশ যুদ্ধবিধ্বস্ত বা যুদ্ধের জন্য উৎসুক, তখন বারবার শিল্পের মোহিনী প্রেম ও বন্ধনের কথা মনে করিয়ে দিতে চায় লাসলোর সাহিত্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঘর আলো করেছে ৫ নবজাতক, চোখে অন্ধকার দেখছেন মুদিদোকানি সোহেল

বেতন–ভাতা বাড়িয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলার না করলে টেসলা ছাড়তে পারেন মাস্ক

আজকের রাশিফল: ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না

ঘনীভূত হচ্ছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’, আঘাত হানবে সন্ধ্যার পর

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত