এমরান হোসাইন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে
প্রকৃতির মায়ায় সাজানো যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম রাজ্য কলোরাডো, যেখানে বছরের সব সময় প্রকৃতিপ্রেমী ভ্রমণপিপাসুদের পদভারে পাহাড়ের চারদিক সরগরম থাকে। মাউন্ট ইভান, সামিট অব পাইক পিকস, গ্র্যান্ড মেসা, গার্ডন অব দ্য গর্ড, সাফায়ার পয়েন্ট, ফোর কণার মনুমেন্ট, ডেনভার, ডিলন শহর, কলোরাডো স্প্রিং, ফিসকো শহর—সব মিলে এক অদ্ভুত ভালো লাগা পাহাড়ের দেশ কলোরাডো।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যানসাস রাজ্য থেকে আমরা কজন টানা ৯ ঘণ্টা সড়কপথে সমতল থেকে পাহাড়ের দেশ কলোরাডোর ডিলন শহরে গিয়ে পৌঁছে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যায় বুকিং করা বাড়িতে উঠলাম। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৯ হাজার ফুট ওপরে এই শহরে রাত জাগার অন্য রকম অনুভূতি। রাত যত গভীর হতে লাগল, নির্জনতা আরও স্পষ্ট হতে থাকল। আলোঝলমলে পাহাড়ের মাঝখানে এ যেন একখণ্ড হীরক শহর। রকি মাউনটেন থেকে নেমে আসা শত শত ঝরনার কলতানে চোখের ঘুম টেনে নিয়ে যায় ভোরের আলো। মাইলের পর মাইল সারি সারি সবুজ পাইনগাছ পাহাড় আর সমতলের মাঝখানে প্রকৃতির রক্ষাকবচ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে দীর্ঘদিন।
পুরো কলোরাডো সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অনেক ওপরে। এখানকার জিওলজিক্যাল জরিপ থেকে জানা যায়, শতবর্ষী রাজ্য হিসেবে কলোরাডোকে সেনটেনিয়াল স্টেট বলা হয়। আমেরিকা স্বাধীনতার ১০০ বছর পূর্তিতে ১৮৭৬ সালে এটি রাজ্য হিসেবে যাত্রা শুরু করে। ৪১৭টি সিটি নিয়ে পাহাড়ঘেরা কলোরাডো। ১৪ হাজার ফুটের ওপরে ৫৮টি পর্বতশৃঙ্গ রয়েছে আমেরিকার এই রাজ্যে। যদিও এই হিসাব নিয়ে কিছুটা বিতর্ক রয়েছে ফেসবুক-টুইটারে।
স্থানীয়রা গ্রীষ্মকালে এই ৫৮টি পাহাড়চূড়ায় হাইকিং করার প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েন। তাই গ্রীষ্মে কলোরাডোর যেকোনো প্রান্তের পাহাড়চূড়ায় কোমরে রশি বাঁধা দু-একজন হাইকার চোখে পড়বেই। আমাদের কাছে এ দৃশ্য দুঃসাহসিক মনে হলেও হাইকারদের কাছে এটি অনেকগুলো শখের একটি মাত্র।
কলোরাডোর রাজধানী ডেনভার। যুক্তরাষ্ট্রের অত্যন্ত ব্যয়বহুল শহরের মধ্যে এটি একটি। ছোট ছোট জলাধার, আঁকাবাঁকা রাস্তা, রকি মাউন্টেন থেকে ধেয়ে আসা শত শত ঝরনা ও সবুজ প্রকৃতি যেন মায়ের কোলে আগলে রেখেছে ডেনভার শহরকে।
জালের মতো ছড়ানো আমেরিকার ২১টি মহাসড়কের মধ্যে কলোরাডোর ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া আই-৭০ সড়ক ধরে পুরো আমেরিকা একবার চক্কর দেওয়া যাবে বলে জানান প্রকৌশলী রুপেন দেব, যিনি ইতিমধ্যে আমেরিকার ৫০টি রাজ্য ভ্রমণ করেছেন। গ্রীষ্মকালে কলোরাডোর প্রতিটি পাহাড়ি জনপদ প্রকৃতিপ্রেমীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়। এমনিতে আমেরিকানদের সহজাত প্রবৃত্তি বছরের অন্তত এক মাস ঘোরাঘুরি করা। প্রকৃতিকে জানতে ও বুঝতে বাবা-মায়ের কাঁধে চড়ে, বেবি ক্যারিয়ারে শিশুদের নিয়ে বনবাদাড়ে ঘুরে বেড়ানো, সাইকেলে চড়া, পাহাড়ে উঠে শিশু-কিশোরদের আকাশ ছোঁয়ার গল্প বলা, জীববৈচিত্র্য নিয়ে ছবি আঁকাসহ সব অভিজ্ঞতার ঝুলি কলোরাডো।
কলোরাডো রাজ্যে বছরের প্রতিটি ঋতুতে পর্যটকদের জন্য অনন্যসাধারণ জিনিস খুঁজে পাওয়া যাবে, যা রকি পর্বতমালার চেয়েও বেশি। এর মধ্যে রয়েছে বাইকিং, হাইকিং, এটিভি রেন্টাল ট্যুর, বোটিং, খাদ্য উৎসব, ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা, কলোরাডো গুহা, কলোরাডো ক্রস কান্ট্রি স্কিইংসহ আরও কত কী! অবাক করা কাণ্ড হলো, এখানে আছে ‘ফোর কর্নার মনুমেন্ট’ বলে খ্যাত পুরো আমেরিকার একমাত্র জায়গা, যেখানে অ্যারিজোনা, নিউ মেক্সিকো, উটাহ ও কলোরাডো—এই চার রাজ্যের কোণগুলো এক পথে মিশেছে।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৯ হাজার ফুট ওপরে সবুজ পাহাড়ের সমতলে ডিলন শহর। ভ্রমণের প্রথম দিন সন্ধ্যার আলোয় এই শহরের পাহাড়ি উঁচু-নিচু পথে জিপিএসে চোখ রেখে স্টিয়ারিং হাতে গাড়ি ছুটছিল। ছোট-বড় পাহাড়ের গায়ে লাগানো জলাধার, আঁকাবাঁকা রাস্তা, শহরজুড়ে ডিলনস রিজার্ভার ঘিরে রেখেছে ছোট্ট এই শহরকে। ১ হাজার ৩০০ লোকের এই শহরে বাড়ি রয়েছে ১ হাজার ৪০০। পাহাড়ের খাঁজে যেন ছবির মতো আঁকা বাড়িঘর। বছরের ছয় মাস অধিকাংশ বাড়ি ভাড়া দেওয়া থাকে। বিশেষ করে গ্রীষ্মে পর্যটকদের ভিড় বাড়ে। তাই বাড়ি পেতে বুকিং দিতে হয় শীতে।
জীববৈচিত্র্যে ভরা ডিলনস শহরে ভোরের পাহাড়ে হাঁটাহাঁটি মানে অন্যরকম অনুভূতি। জনবান্ধব ছোট্ট প্রাণী ‘সিপ মানকস’ বা কাঠবিড়ালি পর্যটকদের হাতের দিকে তাকিয়ে থাকে। হাতে ভুট্টা বা বাদাম দেখলে অমনি আনন্দে লাফালাফি করে ঝাঁকবেঁধে মানুষের আশপাশে ঘোরাঘুরি করবে। চোখে পড়ার মতো শেয়ালের আনাগোনা দেখা যায় এই শহরে। চলতি পথে বালুতে রয়েছে অসংখ্য ছোট গর্ত। শেয়াল আসতে দেখলে গর্তে ঢুকে পড়ে কাঠবিড়ালি। জনশ্রুতি আছে, শেয়ালের প্রাতরাশ এসব নিরীহ প্রাণী।
উত্তর আমেরিকার সবচেয়ে বড় পাকা রাস্তায় গড়া ১৪ হাজার ফুট উচ্চতায় ‘মাউন্ট ইভান’ পর্বতশৃঙ্গে ড্রাইভ করার অপার সুযোগ রয়েছে। এই পাহাড়ের ১১ হাজার ফুট ওপরে উঠতে একঝাঁক পাহাড়ি ছাগল আমাদের গতি রোধ করে গাড়ির আশপাশে কী যেন খুঁজতে লাগল—অনেকটা গাড়ি তল্লাশির মতো করে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, অনেক দর্শনার্থী মাঝেমধ্যে এসব প্রাণীকে খাবার দেয়। তাই তারা এভাবে গাড়ির গতি রোধ করে থাকে। খাওয়া না পেলে ব্যারিকেড তুলে পাহাড়ে চলে যায়।
মাউন্ট ইভান পাহাড়ের তিনটি ধাপ। প্রথম ধাপে ৫ হাজার ফুট ওপরে গভীর গাঢ় সবুজ বন বা ডিপ ফরেস্ট, দ্বিতীয় ধাপে ১১ হাজার ফুট ওপরে খোলা জানালা—যত দূর চোখ যায় শুধু পাহাড়ের মেলা, মন চাইলে পাখির মতো ডানা মেলে এই পাহাড় থেকে ওই পাহাড়ে ঘুরে বেড়ানো যায়।
গাড়ির গতিবেগ কখনো ২০, কখনো তারও নিচে ১৫ কিলোমিটার। দীর্ঘ ২৮ মাইল আঁকাবাঁকা সরু পর্বতশৃঙ্গের ড্রাইভ ওয়ে পাড়ি দেওয়ার প্রথম অভিজ্ঞতা। ধীরগতিতে এগিয়ে যাওয়া গাড়ির আয়নায় মেঘের ওড়াউড়ির ফাঁকে চোখে পড়ে স্বচ্ছ জলের ঢেউ, যেন প্রকৃতির অপার সৃষ্টি ‘প্রাকৃতিক জলাধার’ সামিট লেক।
গ্রীষ্মের পড়ন্ত বিকেলে সুউচ্চ পাহাড় থেকে নেমে আসতে থাকে শিলাবৃষ্টিসহ ঝোড়ো হাওয়া মনের ভেতর কেমন জানি করে ওঠে। গাড়ির ভেতরে থাকা অন্যদের তা বুঝতে না দিয়ে মনে পড়ে গেল—‘তোমার নাম লইয়্যা ধরিলাম পাড়ি …’। অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর সবার অনুপ্রেরণায় ১৪ হাজার ফুট উঁচু পাহাড়চূড়া থেকে নিচে নেমে সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ দিলাম।
পৃথিবীর বৃহত্তম সমতল পর্বত ‘গ্র্যান্ড মেসা’। স্বতন্ত্র ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১২ হাজার ফুট উঁচুতে দাঁড়িয়ে গ্র্যান্ড মেসায় রয়েছে ৬০ প্রজাতির মেমলস ও ৩০০ প্রজাতির পাখি।
যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো রাজ্যে কী নেই, যা প্লানেটে পাওয়া যায় না! প্রতিদিন ফেসবুক-টুইটারে নতুন নতুন তথ্য নিয়ে তর্কবিতর্ক লেগে থাকে এই রাজ্য নিয়ে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অনেক ওপরের রাজ্য হিসেবে এখানে নতুন পর্যটকদের সাধারণ সমস্যা তীব্র আলটিটিউট সিকনেস।
চিজ বার্গারের দেশ কলোরাডোকে জানতে https://climate.colostate.edu/ ব্রাউজ করুন।
প্রকৃতির মায়ায় সাজানো যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম রাজ্য কলোরাডো, যেখানে বছরের সব সময় প্রকৃতিপ্রেমী ভ্রমণপিপাসুদের পদভারে পাহাড়ের চারদিক সরগরম থাকে। মাউন্ট ইভান, সামিট অব পাইক পিকস, গ্র্যান্ড মেসা, গার্ডন অব দ্য গর্ড, সাফায়ার পয়েন্ট, ফোর কণার মনুমেন্ট, ডেনভার, ডিলন শহর, কলোরাডো স্প্রিং, ফিসকো শহর—সব মিলে এক অদ্ভুত ভালো লাগা পাহাড়ের দেশ কলোরাডো।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যানসাস রাজ্য থেকে আমরা কজন টানা ৯ ঘণ্টা সড়কপথে সমতল থেকে পাহাড়ের দেশ কলোরাডোর ডিলন শহরে গিয়ে পৌঁছে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যায় বুকিং করা বাড়িতে উঠলাম। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৯ হাজার ফুট ওপরে এই শহরে রাত জাগার অন্য রকম অনুভূতি। রাত যত গভীর হতে লাগল, নির্জনতা আরও স্পষ্ট হতে থাকল। আলোঝলমলে পাহাড়ের মাঝখানে এ যেন একখণ্ড হীরক শহর। রকি মাউনটেন থেকে নেমে আসা শত শত ঝরনার কলতানে চোখের ঘুম টেনে নিয়ে যায় ভোরের আলো। মাইলের পর মাইল সারি সারি সবুজ পাইনগাছ পাহাড় আর সমতলের মাঝখানে প্রকৃতির রক্ষাকবচ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে দীর্ঘদিন।
পুরো কলোরাডো সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অনেক ওপরে। এখানকার জিওলজিক্যাল জরিপ থেকে জানা যায়, শতবর্ষী রাজ্য হিসেবে কলোরাডোকে সেনটেনিয়াল স্টেট বলা হয়। আমেরিকা স্বাধীনতার ১০০ বছর পূর্তিতে ১৮৭৬ সালে এটি রাজ্য হিসেবে যাত্রা শুরু করে। ৪১৭টি সিটি নিয়ে পাহাড়ঘেরা কলোরাডো। ১৪ হাজার ফুটের ওপরে ৫৮টি পর্বতশৃঙ্গ রয়েছে আমেরিকার এই রাজ্যে। যদিও এই হিসাব নিয়ে কিছুটা বিতর্ক রয়েছে ফেসবুক-টুইটারে।
স্থানীয়রা গ্রীষ্মকালে এই ৫৮টি পাহাড়চূড়ায় হাইকিং করার প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েন। তাই গ্রীষ্মে কলোরাডোর যেকোনো প্রান্তের পাহাড়চূড়ায় কোমরে রশি বাঁধা দু-একজন হাইকার চোখে পড়বেই। আমাদের কাছে এ দৃশ্য দুঃসাহসিক মনে হলেও হাইকারদের কাছে এটি অনেকগুলো শখের একটি মাত্র।
কলোরাডোর রাজধানী ডেনভার। যুক্তরাষ্ট্রের অত্যন্ত ব্যয়বহুল শহরের মধ্যে এটি একটি। ছোট ছোট জলাধার, আঁকাবাঁকা রাস্তা, রকি মাউন্টেন থেকে ধেয়ে আসা শত শত ঝরনা ও সবুজ প্রকৃতি যেন মায়ের কোলে আগলে রেখেছে ডেনভার শহরকে।
জালের মতো ছড়ানো আমেরিকার ২১টি মহাসড়কের মধ্যে কলোরাডোর ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া আই-৭০ সড়ক ধরে পুরো আমেরিকা একবার চক্কর দেওয়া যাবে বলে জানান প্রকৌশলী রুপেন দেব, যিনি ইতিমধ্যে আমেরিকার ৫০টি রাজ্য ভ্রমণ করেছেন। গ্রীষ্মকালে কলোরাডোর প্রতিটি পাহাড়ি জনপদ প্রকৃতিপ্রেমীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়। এমনিতে আমেরিকানদের সহজাত প্রবৃত্তি বছরের অন্তত এক মাস ঘোরাঘুরি করা। প্রকৃতিকে জানতে ও বুঝতে বাবা-মায়ের কাঁধে চড়ে, বেবি ক্যারিয়ারে শিশুদের নিয়ে বনবাদাড়ে ঘুরে বেড়ানো, সাইকেলে চড়া, পাহাড়ে উঠে শিশু-কিশোরদের আকাশ ছোঁয়ার গল্প বলা, জীববৈচিত্র্য নিয়ে ছবি আঁকাসহ সব অভিজ্ঞতার ঝুলি কলোরাডো।
কলোরাডো রাজ্যে বছরের প্রতিটি ঋতুতে পর্যটকদের জন্য অনন্যসাধারণ জিনিস খুঁজে পাওয়া যাবে, যা রকি পর্বতমালার চেয়েও বেশি। এর মধ্যে রয়েছে বাইকিং, হাইকিং, এটিভি রেন্টাল ট্যুর, বোটিং, খাদ্য উৎসব, ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা, কলোরাডো গুহা, কলোরাডো ক্রস কান্ট্রি স্কিইংসহ আরও কত কী! অবাক করা কাণ্ড হলো, এখানে আছে ‘ফোর কর্নার মনুমেন্ট’ বলে খ্যাত পুরো আমেরিকার একমাত্র জায়গা, যেখানে অ্যারিজোনা, নিউ মেক্সিকো, উটাহ ও কলোরাডো—এই চার রাজ্যের কোণগুলো এক পথে মিশেছে।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৯ হাজার ফুট ওপরে সবুজ পাহাড়ের সমতলে ডিলন শহর। ভ্রমণের প্রথম দিন সন্ধ্যার আলোয় এই শহরের পাহাড়ি উঁচু-নিচু পথে জিপিএসে চোখ রেখে স্টিয়ারিং হাতে গাড়ি ছুটছিল। ছোট-বড় পাহাড়ের গায়ে লাগানো জলাধার, আঁকাবাঁকা রাস্তা, শহরজুড়ে ডিলনস রিজার্ভার ঘিরে রেখেছে ছোট্ট এই শহরকে। ১ হাজার ৩০০ লোকের এই শহরে বাড়ি রয়েছে ১ হাজার ৪০০। পাহাড়ের খাঁজে যেন ছবির মতো আঁকা বাড়িঘর। বছরের ছয় মাস অধিকাংশ বাড়ি ভাড়া দেওয়া থাকে। বিশেষ করে গ্রীষ্মে পর্যটকদের ভিড় বাড়ে। তাই বাড়ি পেতে বুকিং দিতে হয় শীতে।
জীববৈচিত্র্যে ভরা ডিলনস শহরে ভোরের পাহাড়ে হাঁটাহাঁটি মানে অন্যরকম অনুভূতি। জনবান্ধব ছোট্ট প্রাণী ‘সিপ মানকস’ বা কাঠবিড়ালি পর্যটকদের হাতের দিকে তাকিয়ে থাকে। হাতে ভুট্টা বা বাদাম দেখলে অমনি আনন্দে লাফালাফি করে ঝাঁকবেঁধে মানুষের আশপাশে ঘোরাঘুরি করবে। চোখে পড়ার মতো শেয়ালের আনাগোনা দেখা যায় এই শহরে। চলতি পথে বালুতে রয়েছে অসংখ্য ছোট গর্ত। শেয়াল আসতে দেখলে গর্তে ঢুকে পড়ে কাঠবিড়ালি। জনশ্রুতি আছে, শেয়ালের প্রাতরাশ এসব নিরীহ প্রাণী।
উত্তর আমেরিকার সবচেয়ে বড় পাকা রাস্তায় গড়া ১৪ হাজার ফুট উচ্চতায় ‘মাউন্ট ইভান’ পর্বতশৃঙ্গে ড্রাইভ করার অপার সুযোগ রয়েছে। এই পাহাড়ের ১১ হাজার ফুট ওপরে উঠতে একঝাঁক পাহাড়ি ছাগল আমাদের গতি রোধ করে গাড়ির আশপাশে কী যেন খুঁজতে লাগল—অনেকটা গাড়ি তল্লাশির মতো করে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, অনেক দর্শনার্থী মাঝেমধ্যে এসব প্রাণীকে খাবার দেয়। তাই তারা এভাবে গাড়ির গতি রোধ করে থাকে। খাওয়া না পেলে ব্যারিকেড তুলে পাহাড়ে চলে যায়।
মাউন্ট ইভান পাহাড়ের তিনটি ধাপ। প্রথম ধাপে ৫ হাজার ফুট ওপরে গভীর গাঢ় সবুজ বন বা ডিপ ফরেস্ট, দ্বিতীয় ধাপে ১১ হাজার ফুট ওপরে খোলা জানালা—যত দূর চোখ যায় শুধু পাহাড়ের মেলা, মন চাইলে পাখির মতো ডানা মেলে এই পাহাড় থেকে ওই পাহাড়ে ঘুরে বেড়ানো যায়।
গাড়ির গতিবেগ কখনো ২০, কখনো তারও নিচে ১৫ কিলোমিটার। দীর্ঘ ২৮ মাইল আঁকাবাঁকা সরু পর্বতশৃঙ্গের ড্রাইভ ওয়ে পাড়ি দেওয়ার প্রথম অভিজ্ঞতা। ধীরগতিতে এগিয়ে যাওয়া গাড়ির আয়নায় মেঘের ওড়াউড়ির ফাঁকে চোখে পড়ে স্বচ্ছ জলের ঢেউ, যেন প্রকৃতির অপার সৃষ্টি ‘প্রাকৃতিক জলাধার’ সামিট লেক।
গ্রীষ্মের পড়ন্ত বিকেলে সুউচ্চ পাহাড় থেকে নেমে আসতে থাকে শিলাবৃষ্টিসহ ঝোড়ো হাওয়া মনের ভেতর কেমন জানি করে ওঠে। গাড়ির ভেতরে থাকা অন্যদের তা বুঝতে না দিয়ে মনে পড়ে গেল—‘তোমার নাম লইয়্যা ধরিলাম পাড়ি …’। অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর সবার অনুপ্রেরণায় ১৪ হাজার ফুট উঁচু পাহাড়চূড়া থেকে নিচে নেমে সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ দিলাম।
পৃথিবীর বৃহত্তম সমতল পর্বত ‘গ্র্যান্ড মেসা’। স্বতন্ত্র ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১২ হাজার ফুট উঁচুতে দাঁড়িয়ে গ্র্যান্ড মেসায় রয়েছে ৬০ প্রজাতির মেমলস ও ৩০০ প্রজাতির পাখি।
যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো রাজ্যে কী নেই, যা প্লানেটে পাওয়া যায় না! প্রতিদিন ফেসবুক-টুইটারে নতুন নতুন তথ্য নিয়ে তর্কবিতর্ক লেগে থাকে এই রাজ্য নিয়ে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অনেক ওপরের রাজ্য হিসেবে এখানে নতুন পর্যটকদের সাধারণ সমস্যা তীব্র আলটিটিউট সিকনেস।
চিজ বার্গারের দেশ কলোরাডোকে জানতে https://climate.colostate.edu/ ব্রাউজ করুন।
হিমালয় পাই এর নতুন বই’ ডিটাচমেন্ট টু ডিপার্চার’ প্রকাশিত হয়েছে। বইটি বাজারে এনেছে জনপ্রিয় প্রকাশনা সংস্থা আদর্শ প্রকাশনী। বইটিতে মূলত উত্তর ভারতের বিভিন্ন শহর পরিভ্রমণের প্রেক্ষিতে লেখকের সোশিওলজিকাল, পলিটিক্যাল কালচারাল, হিস্টরিকাল, এনথ্রোপলজিকাল যেসব পর্যবেক্ষণ তৈরি হয়েছে সেগুলোকেই সোশ্যাল থিসিসরূ
১৪ দিন আগে‘স্বাধীনতা সাম্য সম্প্রীতির জন্য কবিতা’ স্লোগান নিয়ে শুরু হচ্ছে জাতীয় কবিতা উৎসব ২০২৫। আগামী ১ ও ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি চত্বরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে কবিতার এই আসর। আজ শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এটি জানানো হয়েছে...
২১ দিন আগেবাংলা একাডেমি ২০২৪ সালের ষাণ্মাসিক ফেলোশিপ এবং ছয়টি পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের নাম ঘোষণা করেছে। মুক্তিযুদ্ধ, ইতিহাস, বিজ্ঞান, শিল্পকলা এবং ভাষা গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি ফেলোশিপ পাচ্ছেন। এ ছাড়া প্রবন্ধ, শিশুসাহিত্য, নাটক এবং কথাসাহিত্যে অবদানের জন্য মোট ছয়টি পুরস্কার দেওয়া হচ্
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪সূক্ষ্মচিন্তার খসড়াকে ধারণ করে শিল্প-সাহিত্য ভিত্তিক ছোটকাগজ ‘বামিহাল’। বগুড়ার সবুজ শ্যামল মায়াময় ‘বামিহাল’ গ্রামের নাম থেকেই এর নাম। ‘বামিহাল’ বিশ্বাস করে বাংলার আবহমান জীবন, মানুষ-প্রকৃতি কিংবা সুচিন্তার বিশ্বমুখী সূক্ষ্ম ভাবনার প্রকাশই আগামীর সবুজ-শ্যামল মানববসতি বিনির্মাণ করতে পারে...
২১ ডিসেম্বর ২০২৪