আজকের পত্রিকা ডেস্ক

নোবেলজয়ী পেরুভিয়ান সাহিত্যিক মারিও বার্গাস যোসা মারা গেছেন। স্থানীয় সময় গতকাল রোববার পেরুর রাজধানী লিমায় তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। তাঁর ছেলে আলভারো বার্গাস যোসা মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ৮৯ বছর বয়সে মারা যাওয়ার আগে মারিও বার্গাস যোসা পাঁচ দশক ধরে তাঁর বুদ্ধিদীপ্ততা ও কাব্যিক গদ্যের মাধ্যমে পাঠকদের মুগ্ধ করেছেন। সাহিত্যিক হলেও তিনি পেরুর রাজনীতিতে আলোচিত মুখ ছিলেন। এমনকি একবার তিনি তাঁর দেশের প্রেসিডেন্ট হওয়ার খুব কাছাকাছিও পৌঁছে গিয়েছিলেন। রোববার লিমায় পরিবারের সান্নিধ্যে শান্তিপূর্ণভাবে তাঁর মৃত্যু হয়।
বিংশ শতাব্দীর লাতিন সাহিত্যের স্বর্ণযুগের অন্যতম প্রধান নক্ষত্র ছিলেন যোসা। ২০১০ সালে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান। ‘আন্ট হুলিয়া অ্যান্ড দ্য স্ক্রিপ্টরাইটার’, ‘ডেথ ইন দ্য আন্দিজ’ এবং ‘দ্য ওয়ার অব দ্য এন্ড অব দ্য ওয়ার্ল্ড’—এর মতো কাজের জন্য তিনি এই স্বীকৃতি লাভ করেন।
তবে তরুণ বয়সেই যোসা সমাজতান্ত্রিক ধারণা ত্যাগ করেন। তাঁর সমসাময়িক অনেকেই এই ধারণা সমর্থন করতেন। যোসার রাজনীতিতে আসা এবং রক্ষণশীল মতামত লাতিন আমেরিকার বামপন্থী বুদ্ধিজীবী মহলের অনেককে অসন্তুষ্ট করেছিল। ১৯৯০ সালে তিনি পেরুর প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
মারিও ভার্গাস যোসা বলেছিলেন, তাঁর দেশ অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলা ও মার্কসবাদী বিদ্রোহের হাত থেকে বাঁচাতে চায়। তবে রান-অফ তথা দ্বিতীয় ধাপের ভোটে তিনি আলবার্তো ফুজিমোরির কাছে পরাজিত হন। ফুজিমোরি ছিলেন কৃষিবিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক। তিনি বিদ্রোহীদের দমন করেছিলেন, কিন্তু পরে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও দুর্নীতির দায়ে কারারুদ্ধ হন।
পরাজয়ে হতাশ হয়ে যোসা স্পেনে চলে যান। তবে লাতিন আমেরিকায় তাঁর প্রভাব বজায় ছিল। তিনি ভেনেজুয়েলার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজের নেতৃত্বাধীন নতুন প্রজন্মের বামপন্থী নেতাদের কঠোর সমালোচনা করতেন। যোসা তাঁর অসংখ্য উপন্যাস, নাটক ও প্রবন্ধে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে গল্প বলেছেন। তিনি সাহিত্যিক আঙ্গিক নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। কখনো সময়ের ধারায় এগিয়েছেন, কখনো পেছনে ফিরেছেন, আবার কখনো পরিবর্তন করেছেন ধারা বর্ণনার ধারণা।
তাঁর কাজ বিভিন্ন সাহিত্যিক ধারাকে ছুঁয়ে করেছে। তিনি ষাটের দশকে লাতিন আমেরিকান সাহিত্যের নবজাগরণে নেতৃত্ব দেওয়া লেখকদের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত। তাঁর বইগুলোতে প্রায়শই নেতা ও প্রজাদের মধ্যে অস্বস্তিকর সম্পর্কগুলো তুলে ধরা হয়েছে। ‘দ্য ফিস্ট অব দ্য গোট’ ডমিনিকান প্রজাতন্ত্রের স্বৈরশাসক রাফায়েল ত্রুজিলোর নৃশংস শাসনের বিবরণ দেয়। অন্যদিকে ‘দ্য ওয়ার অব দ্য এন্ড অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ ১৮৯০—এর দশকে ব্রাজিলের সেনাবাহিনীর সঙ্গে এক মারাত্মক যুদ্ধে নিহত এক ধর্মান্ধ প্রচারকের অনুসারীদের সত্য কাহিনি বর্ণনা করে।
পেরুর প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করা এক পোস্টে বলেছেন, ‘তাঁর বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিভা এবং বিশাল কর্মযজ্ঞ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক চিরস্থায়ী উত্তরাধিকার হয়ে থাকবে।’ তিনি তাঁকে ‘সর্বকালের সবচেয়ে বিখ্যাত পেরুভিয়ান’ বলেও অভিহিত করেছেন।
পেরুর আরেকুইপায়ের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে ১৯৩৬ সালের ২৮ মার্চ জন্ম নেন মারিও ভার্গাস যোসা। তিনি প্রায়শই তাঁর লেখায় ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও পরিবার থেকে উপাদান নিতেন। এমনকি কখনো কখনো নিজের জীবনের ওপর ভিত্তি করে চরিত্র তৈরি করে তাঁর গল্পে যুক্ত করতেন।
তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘দ্য টাইম অব দ্য হিরো’ (১৯৬৩) লিমার এক সামরিক একাডেমিতে ক্যাডেট হিসেবে তাঁর কৈশোর জীবনের ওপর ভিত্তি করে লেখা। ১৯৯৩ সালের আত্মজীবনী ‘আ ফিশ ইন দ্য ওয়াটার’—এ তিনি তাঁর ১৯৯০ সালের প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা লিখেছেন।
অন্যান্য রচনায় তিনি তাঁর দেশের জন্য গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ‘দ্য স্টোরিটেলার’ পেরুতে আদিবাসী ও ইউরোপীয় সংস্কৃতির সংঘাত নিয়ে লেখা। ‘ডেথ ইন দ্য আন্দিজ’ (১৯৯৩) শাইনিং পাথ গেরিলা আন্দোলনের ভয়াবহ বছরগুলোর কথা তুলে ধরে। ২০০১ সালে মাদ্রিদে রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যোসা বলেছিলেন, ‘একজন লেখকের কাজ তাঁর নিজের অভিজ্ঞতা দ্বারা পুষ্ট হয় এবং বছরের পর বছর ধরে তা আরও সমৃদ্ধ হয়।’
অভিজ্ঞতার পরিধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যোসা সাহিত্যিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে গেছেন। ‘দ্য ব্যাড গার্ল’ (২০০৬) ছিল তাঁর প্রথম প্রেমের গল্প। এটি ব্যাপকভাবে তাঁর অন্যতম সেরা কাজ হিসেবে প্রশংসিত হয়েছিল। ১৯৭০-এর দশকে ভার্গাস যোসা কিউবার বিপ্লবের একসময়ের সমর্থক হয়েও ফিদেল কাস্ত্রোর নিন্দা করেন। এতে তাঁর অনেক বামপন্থী সাহিত্যিক সহকর্মী, যেমন গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। ১৯৭৬ সালে মেক্সিকো সিটিতে এক থিয়েটারের বাইরে তাঁদের দুজনের মধ্যে বিখ্যাত ঝগড়া হয়। এমনকি তাঁরা একে অপরকে ঘুষিও মেরেছিলেন। গার্সিয়া মার্কেজের এক বন্ধু বলেছিলেন, যোসার ক্ষুব্ধ হওয়ার কারণ ছিল মার্কেজ তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হওয়ার সময় তাঁকে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন। তবে যোসা এ বিষয়ে আলোচনা করতে চাননি।
যোসা মুক্তবাজার অর্থনীতির কট্টর সমর্থক এবং একই সঙ্গে উদারনৈতিক আদর্শের অনুসারী হয়ে ওঠেন। রাজনৈতিক বিষয়ে স্পষ্টভাষী হওয়া সত্ত্বেও পেরুর প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সময় তিনি নিজেকে একজন অনিচ্ছুক রাজনীতিবিদ হিসেবে তুলে ধরেছিলেন।
যোসা একবার বলেছিলেন, ‘বাস্তবে, আমার কখনো রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ছিল না। আমি খুব বিশেষ পরিস্থিতিতে রাজনীতিতে অংশ নিয়েছিলাম...এবং আমি সব সময় বলেছি যে, আমি নির্বাচনে জিতলেও বা হারলেও, রাজনীতিতে নয় আমার সাহিত্যিক, বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে ফিরে যাব।’
তাঁর ব্যক্তিগত জীবনও উপন্যাসের চেয়ে কম আকর্ষণীয় ছিল না। ‘আন্ট হুলিয়া অ্যান্ড দ্য স্ক্রিপ্টরাইটার’ (১৯৭৭) তাঁর ১৯ বছর বয়সে হুলিয়া উরকুইদির সঙ্গে প্রথম বিবাহের কাহিনির ওপর ভিত্তি করে লেখা। হুলিয়া তাঁর চেয়ে ১০ বছরের বড় ছিলেন এবং তাঁর মামার প্রাক্তন স্ত্রী ছিলেন।
তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলেন তাঁরই চাচাতো বোন প্যাট্রিসিয়া। কিন্তু ৫০ বছর পর ২০১৫ সালে তিনি গায়ক এনরিকে ইগলেসিয়াসের মা ইসাবেল প্রেইসলারের আকর্ষণে তাঁকে ছেড়ে যান। সেই সম্পর্ক ২০২২ সালে শেষ হয়। প্যাট্রিসিয়ার গর্ভে তাঁর তিন সন্তান জন্ম নেয়।

নোবেলজয়ী পেরুভিয়ান সাহিত্যিক মারিও বার্গাস যোসা মারা গেছেন। স্থানীয় সময় গতকাল রোববার পেরুর রাজধানী লিমায় তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। তাঁর ছেলে আলভারো বার্গাস যোসা মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ৮৯ বছর বয়সে মারা যাওয়ার আগে মারিও বার্গাস যোসা পাঁচ দশক ধরে তাঁর বুদ্ধিদীপ্ততা ও কাব্যিক গদ্যের মাধ্যমে পাঠকদের মুগ্ধ করেছেন। সাহিত্যিক হলেও তিনি পেরুর রাজনীতিতে আলোচিত মুখ ছিলেন। এমনকি একবার তিনি তাঁর দেশের প্রেসিডেন্ট হওয়ার খুব কাছাকাছিও পৌঁছে গিয়েছিলেন। রোববার লিমায় পরিবারের সান্নিধ্যে শান্তিপূর্ণভাবে তাঁর মৃত্যু হয়।
বিংশ শতাব্দীর লাতিন সাহিত্যের স্বর্ণযুগের অন্যতম প্রধান নক্ষত্র ছিলেন যোসা। ২০১০ সালে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান। ‘আন্ট হুলিয়া অ্যান্ড দ্য স্ক্রিপ্টরাইটার’, ‘ডেথ ইন দ্য আন্দিজ’ এবং ‘দ্য ওয়ার অব দ্য এন্ড অব দ্য ওয়ার্ল্ড’—এর মতো কাজের জন্য তিনি এই স্বীকৃতি লাভ করেন।
তবে তরুণ বয়সেই যোসা সমাজতান্ত্রিক ধারণা ত্যাগ করেন। তাঁর সমসাময়িক অনেকেই এই ধারণা সমর্থন করতেন। যোসার রাজনীতিতে আসা এবং রক্ষণশীল মতামত লাতিন আমেরিকার বামপন্থী বুদ্ধিজীবী মহলের অনেককে অসন্তুষ্ট করেছিল। ১৯৯০ সালে তিনি পেরুর প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
মারিও ভার্গাস যোসা বলেছিলেন, তাঁর দেশ অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলা ও মার্কসবাদী বিদ্রোহের হাত থেকে বাঁচাতে চায়। তবে রান-অফ তথা দ্বিতীয় ধাপের ভোটে তিনি আলবার্তো ফুজিমোরির কাছে পরাজিত হন। ফুজিমোরি ছিলেন কৃষিবিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক। তিনি বিদ্রোহীদের দমন করেছিলেন, কিন্তু পরে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও দুর্নীতির দায়ে কারারুদ্ধ হন।
পরাজয়ে হতাশ হয়ে যোসা স্পেনে চলে যান। তবে লাতিন আমেরিকায় তাঁর প্রভাব বজায় ছিল। তিনি ভেনেজুয়েলার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজের নেতৃত্বাধীন নতুন প্রজন্মের বামপন্থী নেতাদের কঠোর সমালোচনা করতেন। যোসা তাঁর অসংখ্য উপন্যাস, নাটক ও প্রবন্ধে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে গল্প বলেছেন। তিনি সাহিত্যিক আঙ্গিক নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। কখনো সময়ের ধারায় এগিয়েছেন, কখনো পেছনে ফিরেছেন, আবার কখনো পরিবর্তন করেছেন ধারা বর্ণনার ধারণা।
তাঁর কাজ বিভিন্ন সাহিত্যিক ধারাকে ছুঁয়ে করেছে। তিনি ষাটের দশকে লাতিন আমেরিকান সাহিত্যের নবজাগরণে নেতৃত্ব দেওয়া লেখকদের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত। তাঁর বইগুলোতে প্রায়শই নেতা ও প্রজাদের মধ্যে অস্বস্তিকর সম্পর্কগুলো তুলে ধরা হয়েছে। ‘দ্য ফিস্ট অব দ্য গোট’ ডমিনিকান প্রজাতন্ত্রের স্বৈরশাসক রাফায়েল ত্রুজিলোর নৃশংস শাসনের বিবরণ দেয়। অন্যদিকে ‘দ্য ওয়ার অব দ্য এন্ড অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ ১৮৯০—এর দশকে ব্রাজিলের সেনাবাহিনীর সঙ্গে এক মারাত্মক যুদ্ধে নিহত এক ধর্মান্ধ প্রচারকের অনুসারীদের সত্য কাহিনি বর্ণনা করে।
পেরুর প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করা এক পোস্টে বলেছেন, ‘তাঁর বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিভা এবং বিশাল কর্মযজ্ঞ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক চিরস্থায়ী উত্তরাধিকার হয়ে থাকবে।’ তিনি তাঁকে ‘সর্বকালের সবচেয়ে বিখ্যাত পেরুভিয়ান’ বলেও অভিহিত করেছেন।
পেরুর আরেকুইপায়ের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে ১৯৩৬ সালের ২৮ মার্চ জন্ম নেন মারিও ভার্গাস যোসা। তিনি প্রায়শই তাঁর লেখায় ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও পরিবার থেকে উপাদান নিতেন। এমনকি কখনো কখনো নিজের জীবনের ওপর ভিত্তি করে চরিত্র তৈরি করে তাঁর গল্পে যুক্ত করতেন।
তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘দ্য টাইম অব দ্য হিরো’ (১৯৬৩) লিমার এক সামরিক একাডেমিতে ক্যাডেট হিসেবে তাঁর কৈশোর জীবনের ওপর ভিত্তি করে লেখা। ১৯৯৩ সালের আত্মজীবনী ‘আ ফিশ ইন দ্য ওয়াটার’—এ তিনি তাঁর ১৯৯০ সালের প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা লিখেছেন।
অন্যান্য রচনায় তিনি তাঁর দেশের জন্য গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ‘দ্য স্টোরিটেলার’ পেরুতে আদিবাসী ও ইউরোপীয় সংস্কৃতির সংঘাত নিয়ে লেখা। ‘ডেথ ইন দ্য আন্দিজ’ (১৯৯৩) শাইনিং পাথ গেরিলা আন্দোলনের ভয়াবহ বছরগুলোর কথা তুলে ধরে। ২০০১ সালে মাদ্রিদে রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যোসা বলেছিলেন, ‘একজন লেখকের কাজ তাঁর নিজের অভিজ্ঞতা দ্বারা পুষ্ট হয় এবং বছরের পর বছর ধরে তা আরও সমৃদ্ধ হয়।’
অভিজ্ঞতার পরিধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যোসা সাহিত্যিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে গেছেন। ‘দ্য ব্যাড গার্ল’ (২০০৬) ছিল তাঁর প্রথম প্রেমের গল্প। এটি ব্যাপকভাবে তাঁর অন্যতম সেরা কাজ হিসেবে প্রশংসিত হয়েছিল। ১৯৭০-এর দশকে ভার্গাস যোসা কিউবার বিপ্লবের একসময়ের সমর্থক হয়েও ফিদেল কাস্ত্রোর নিন্দা করেন। এতে তাঁর অনেক বামপন্থী সাহিত্যিক সহকর্মী, যেমন গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। ১৯৭৬ সালে মেক্সিকো সিটিতে এক থিয়েটারের বাইরে তাঁদের দুজনের মধ্যে বিখ্যাত ঝগড়া হয়। এমনকি তাঁরা একে অপরকে ঘুষিও মেরেছিলেন। গার্সিয়া মার্কেজের এক বন্ধু বলেছিলেন, যোসার ক্ষুব্ধ হওয়ার কারণ ছিল মার্কেজ তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হওয়ার সময় তাঁকে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন। তবে যোসা এ বিষয়ে আলোচনা করতে চাননি।
যোসা মুক্তবাজার অর্থনীতির কট্টর সমর্থক এবং একই সঙ্গে উদারনৈতিক আদর্শের অনুসারী হয়ে ওঠেন। রাজনৈতিক বিষয়ে স্পষ্টভাষী হওয়া সত্ত্বেও পেরুর প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সময় তিনি নিজেকে একজন অনিচ্ছুক রাজনীতিবিদ হিসেবে তুলে ধরেছিলেন।
যোসা একবার বলেছিলেন, ‘বাস্তবে, আমার কখনো রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ছিল না। আমি খুব বিশেষ পরিস্থিতিতে রাজনীতিতে অংশ নিয়েছিলাম...এবং আমি সব সময় বলেছি যে, আমি নির্বাচনে জিতলেও বা হারলেও, রাজনীতিতে নয় আমার সাহিত্যিক, বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে ফিরে যাব।’
তাঁর ব্যক্তিগত জীবনও উপন্যাসের চেয়ে কম আকর্ষণীয় ছিল না। ‘আন্ট হুলিয়া অ্যান্ড দ্য স্ক্রিপ্টরাইটার’ (১৯৭৭) তাঁর ১৯ বছর বয়সে হুলিয়া উরকুইদির সঙ্গে প্রথম বিবাহের কাহিনির ওপর ভিত্তি করে লেখা। হুলিয়া তাঁর চেয়ে ১০ বছরের বড় ছিলেন এবং তাঁর মামার প্রাক্তন স্ত্রী ছিলেন।
তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলেন তাঁরই চাচাতো বোন প্যাট্রিসিয়া। কিন্তু ৫০ বছর পর ২০১৫ সালে তিনি গায়ক এনরিকে ইগলেসিয়াসের মা ইসাবেল প্রেইসলারের আকর্ষণে তাঁকে ছেড়ে যান। সেই সম্পর্ক ২০২২ সালে শেষ হয়। প্যাট্রিসিয়ার গর্ভে তাঁর তিন সন্তান জন্ম নেয়।
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

নোবেলজয়ী পেরুভিয়ান সাহিত্যিক মারিও বার্গাস যোসা মারা গেছেন। স্থানীয় সময় গতকাল রোববার পেরুর রাজধানী লিমায় তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। তাঁর ছেলে আলভারো বার্গাস যোসা মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ৮৯ বছর বয়সে মারা যাওয়ার আগে মারিও বার্গাস যোসা পাঁচ দশক ধরে তাঁর বুদ্ধিদীপ্ততা ও কাব্যিক গদ্যের মাধ্যমে পাঠকদের মুগ্ধ করেছেন। সাহিত্যিক হলেও তিনি পেরুর রাজনীতিতে আলোচিত মুখ ছিলেন। এমনকি একবার তিনি তাঁর দেশের প্রেসিডেন্ট হওয়ার খুব কাছাকাছিও পৌঁছে গিয়েছিলেন। রোববার লিমায় পরিবারের সান্নিধ্যে শান্তিপূর্ণভাবে তাঁর মৃত্যু হয়।
বিংশ শতাব্দীর লাতিন সাহিত্যের স্বর্ণযুগের অন্যতম প্রধান নক্ষত্র ছিলেন যোসা। ২০১০ সালে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান। ‘আন্ট হুলিয়া অ্যান্ড দ্য স্ক্রিপ্টরাইটার’, ‘ডেথ ইন দ্য আন্দিজ’ এবং ‘দ্য ওয়ার অব দ্য এন্ড অব দ্য ওয়ার্ল্ড’—এর মতো কাজের জন্য তিনি এই স্বীকৃতি লাভ করেন।
তবে তরুণ বয়সেই যোসা সমাজতান্ত্রিক ধারণা ত্যাগ করেন। তাঁর সমসাময়িক অনেকেই এই ধারণা সমর্থন করতেন। যোসার রাজনীতিতে আসা এবং রক্ষণশীল মতামত লাতিন আমেরিকার বামপন্থী বুদ্ধিজীবী মহলের অনেককে অসন্তুষ্ট করেছিল। ১৯৯০ সালে তিনি পেরুর প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
মারিও ভার্গাস যোসা বলেছিলেন, তাঁর দেশ অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলা ও মার্কসবাদী বিদ্রোহের হাত থেকে বাঁচাতে চায়। তবে রান-অফ তথা দ্বিতীয় ধাপের ভোটে তিনি আলবার্তো ফুজিমোরির কাছে পরাজিত হন। ফুজিমোরি ছিলেন কৃষিবিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক। তিনি বিদ্রোহীদের দমন করেছিলেন, কিন্তু পরে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও দুর্নীতির দায়ে কারারুদ্ধ হন।
পরাজয়ে হতাশ হয়ে যোসা স্পেনে চলে যান। তবে লাতিন আমেরিকায় তাঁর প্রভাব বজায় ছিল। তিনি ভেনেজুয়েলার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজের নেতৃত্বাধীন নতুন প্রজন্মের বামপন্থী নেতাদের কঠোর সমালোচনা করতেন। যোসা তাঁর অসংখ্য উপন্যাস, নাটক ও প্রবন্ধে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে গল্প বলেছেন। তিনি সাহিত্যিক আঙ্গিক নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। কখনো সময়ের ধারায় এগিয়েছেন, কখনো পেছনে ফিরেছেন, আবার কখনো পরিবর্তন করেছেন ধারা বর্ণনার ধারণা।
তাঁর কাজ বিভিন্ন সাহিত্যিক ধারাকে ছুঁয়ে করেছে। তিনি ষাটের দশকে লাতিন আমেরিকান সাহিত্যের নবজাগরণে নেতৃত্ব দেওয়া লেখকদের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত। তাঁর বইগুলোতে প্রায়শই নেতা ও প্রজাদের মধ্যে অস্বস্তিকর সম্পর্কগুলো তুলে ধরা হয়েছে। ‘দ্য ফিস্ট অব দ্য গোট’ ডমিনিকান প্রজাতন্ত্রের স্বৈরশাসক রাফায়েল ত্রুজিলোর নৃশংস শাসনের বিবরণ দেয়। অন্যদিকে ‘দ্য ওয়ার অব দ্য এন্ড অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ ১৮৯০—এর দশকে ব্রাজিলের সেনাবাহিনীর সঙ্গে এক মারাত্মক যুদ্ধে নিহত এক ধর্মান্ধ প্রচারকের অনুসারীদের সত্য কাহিনি বর্ণনা করে।
পেরুর প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করা এক পোস্টে বলেছেন, ‘তাঁর বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিভা এবং বিশাল কর্মযজ্ঞ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক চিরস্থায়ী উত্তরাধিকার হয়ে থাকবে।’ তিনি তাঁকে ‘সর্বকালের সবচেয়ে বিখ্যাত পেরুভিয়ান’ বলেও অভিহিত করেছেন।
পেরুর আরেকুইপায়ের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে ১৯৩৬ সালের ২৮ মার্চ জন্ম নেন মারিও ভার্গাস যোসা। তিনি প্রায়শই তাঁর লেখায় ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও পরিবার থেকে উপাদান নিতেন। এমনকি কখনো কখনো নিজের জীবনের ওপর ভিত্তি করে চরিত্র তৈরি করে তাঁর গল্পে যুক্ত করতেন।
তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘দ্য টাইম অব দ্য হিরো’ (১৯৬৩) লিমার এক সামরিক একাডেমিতে ক্যাডেট হিসেবে তাঁর কৈশোর জীবনের ওপর ভিত্তি করে লেখা। ১৯৯৩ সালের আত্মজীবনী ‘আ ফিশ ইন দ্য ওয়াটার’—এ তিনি তাঁর ১৯৯০ সালের প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা লিখেছেন।
অন্যান্য রচনায় তিনি তাঁর দেশের জন্য গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ‘দ্য স্টোরিটেলার’ পেরুতে আদিবাসী ও ইউরোপীয় সংস্কৃতির সংঘাত নিয়ে লেখা। ‘ডেথ ইন দ্য আন্দিজ’ (১৯৯৩) শাইনিং পাথ গেরিলা আন্দোলনের ভয়াবহ বছরগুলোর কথা তুলে ধরে। ২০০১ সালে মাদ্রিদে রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যোসা বলেছিলেন, ‘একজন লেখকের কাজ তাঁর নিজের অভিজ্ঞতা দ্বারা পুষ্ট হয় এবং বছরের পর বছর ধরে তা আরও সমৃদ্ধ হয়।’
অভিজ্ঞতার পরিধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যোসা সাহিত্যিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে গেছেন। ‘দ্য ব্যাড গার্ল’ (২০০৬) ছিল তাঁর প্রথম প্রেমের গল্প। এটি ব্যাপকভাবে তাঁর অন্যতম সেরা কাজ হিসেবে প্রশংসিত হয়েছিল। ১৯৭০-এর দশকে ভার্গাস যোসা কিউবার বিপ্লবের একসময়ের সমর্থক হয়েও ফিদেল কাস্ত্রোর নিন্দা করেন। এতে তাঁর অনেক বামপন্থী সাহিত্যিক সহকর্মী, যেমন গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। ১৯৭৬ সালে মেক্সিকো সিটিতে এক থিয়েটারের বাইরে তাঁদের দুজনের মধ্যে বিখ্যাত ঝগড়া হয়। এমনকি তাঁরা একে অপরকে ঘুষিও মেরেছিলেন। গার্সিয়া মার্কেজের এক বন্ধু বলেছিলেন, যোসার ক্ষুব্ধ হওয়ার কারণ ছিল মার্কেজ তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হওয়ার সময় তাঁকে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন। তবে যোসা এ বিষয়ে আলোচনা করতে চাননি।
যোসা মুক্তবাজার অর্থনীতির কট্টর সমর্থক এবং একই সঙ্গে উদারনৈতিক আদর্শের অনুসারী হয়ে ওঠেন। রাজনৈতিক বিষয়ে স্পষ্টভাষী হওয়া সত্ত্বেও পেরুর প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সময় তিনি নিজেকে একজন অনিচ্ছুক রাজনীতিবিদ হিসেবে তুলে ধরেছিলেন।
যোসা একবার বলেছিলেন, ‘বাস্তবে, আমার কখনো রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ছিল না। আমি খুব বিশেষ পরিস্থিতিতে রাজনীতিতে অংশ নিয়েছিলাম...এবং আমি সব সময় বলেছি যে, আমি নির্বাচনে জিতলেও বা হারলেও, রাজনীতিতে নয় আমার সাহিত্যিক, বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে ফিরে যাব।’
তাঁর ব্যক্তিগত জীবনও উপন্যাসের চেয়ে কম আকর্ষণীয় ছিল না। ‘আন্ট হুলিয়া অ্যান্ড দ্য স্ক্রিপ্টরাইটার’ (১৯৭৭) তাঁর ১৯ বছর বয়সে হুলিয়া উরকুইদির সঙ্গে প্রথম বিবাহের কাহিনির ওপর ভিত্তি করে লেখা। হুলিয়া তাঁর চেয়ে ১০ বছরের বড় ছিলেন এবং তাঁর মামার প্রাক্তন স্ত্রী ছিলেন।
তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলেন তাঁরই চাচাতো বোন প্যাট্রিসিয়া। কিন্তু ৫০ বছর পর ২০১৫ সালে তিনি গায়ক এনরিকে ইগলেসিয়াসের মা ইসাবেল প্রেইসলারের আকর্ষণে তাঁকে ছেড়ে যান। সেই সম্পর্ক ২০২২ সালে শেষ হয়। প্যাট্রিসিয়ার গর্ভে তাঁর তিন সন্তান জন্ম নেয়।

নোবেলজয়ী পেরুভিয়ান সাহিত্যিক মারিও বার্গাস যোসা মারা গেছেন। স্থানীয় সময় গতকাল রোববার পেরুর রাজধানী লিমায় তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। তাঁর ছেলে আলভারো বার্গাস যোসা মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ৮৯ বছর বয়সে মারা যাওয়ার আগে মারিও বার্গাস যোসা পাঁচ দশক ধরে তাঁর বুদ্ধিদীপ্ততা ও কাব্যিক গদ্যের মাধ্যমে পাঠকদের মুগ্ধ করেছেন। সাহিত্যিক হলেও তিনি পেরুর রাজনীতিতে আলোচিত মুখ ছিলেন। এমনকি একবার তিনি তাঁর দেশের প্রেসিডেন্ট হওয়ার খুব কাছাকাছিও পৌঁছে গিয়েছিলেন। রোববার লিমায় পরিবারের সান্নিধ্যে শান্তিপূর্ণভাবে তাঁর মৃত্যু হয়।
বিংশ শতাব্দীর লাতিন সাহিত্যের স্বর্ণযুগের অন্যতম প্রধান নক্ষত্র ছিলেন যোসা। ২০১০ সালে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান। ‘আন্ট হুলিয়া অ্যান্ড দ্য স্ক্রিপ্টরাইটার’, ‘ডেথ ইন দ্য আন্দিজ’ এবং ‘দ্য ওয়ার অব দ্য এন্ড অব দ্য ওয়ার্ল্ড’—এর মতো কাজের জন্য তিনি এই স্বীকৃতি লাভ করেন।
তবে তরুণ বয়সেই যোসা সমাজতান্ত্রিক ধারণা ত্যাগ করেন। তাঁর সমসাময়িক অনেকেই এই ধারণা সমর্থন করতেন। যোসার রাজনীতিতে আসা এবং রক্ষণশীল মতামত লাতিন আমেরিকার বামপন্থী বুদ্ধিজীবী মহলের অনেককে অসন্তুষ্ট করেছিল। ১৯৯০ সালে তিনি পেরুর প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
মারিও ভার্গাস যোসা বলেছিলেন, তাঁর দেশ অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলা ও মার্কসবাদী বিদ্রোহের হাত থেকে বাঁচাতে চায়। তবে রান-অফ তথা দ্বিতীয় ধাপের ভোটে তিনি আলবার্তো ফুজিমোরির কাছে পরাজিত হন। ফুজিমোরি ছিলেন কৃষিবিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক। তিনি বিদ্রোহীদের দমন করেছিলেন, কিন্তু পরে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও দুর্নীতির দায়ে কারারুদ্ধ হন।
পরাজয়ে হতাশ হয়ে যোসা স্পেনে চলে যান। তবে লাতিন আমেরিকায় তাঁর প্রভাব বজায় ছিল। তিনি ভেনেজুয়েলার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজের নেতৃত্বাধীন নতুন প্রজন্মের বামপন্থী নেতাদের কঠোর সমালোচনা করতেন। যোসা তাঁর অসংখ্য উপন্যাস, নাটক ও প্রবন্ধে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে গল্প বলেছেন। তিনি সাহিত্যিক আঙ্গিক নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। কখনো সময়ের ধারায় এগিয়েছেন, কখনো পেছনে ফিরেছেন, আবার কখনো পরিবর্তন করেছেন ধারা বর্ণনার ধারণা।
তাঁর কাজ বিভিন্ন সাহিত্যিক ধারাকে ছুঁয়ে করেছে। তিনি ষাটের দশকে লাতিন আমেরিকান সাহিত্যের নবজাগরণে নেতৃত্ব দেওয়া লেখকদের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত। তাঁর বইগুলোতে প্রায়শই নেতা ও প্রজাদের মধ্যে অস্বস্তিকর সম্পর্কগুলো তুলে ধরা হয়েছে। ‘দ্য ফিস্ট অব দ্য গোট’ ডমিনিকান প্রজাতন্ত্রের স্বৈরশাসক রাফায়েল ত্রুজিলোর নৃশংস শাসনের বিবরণ দেয়। অন্যদিকে ‘দ্য ওয়ার অব দ্য এন্ড অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ ১৮৯০—এর দশকে ব্রাজিলের সেনাবাহিনীর সঙ্গে এক মারাত্মক যুদ্ধে নিহত এক ধর্মান্ধ প্রচারকের অনুসারীদের সত্য কাহিনি বর্ণনা করে।
পেরুর প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করা এক পোস্টে বলেছেন, ‘তাঁর বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিভা এবং বিশাল কর্মযজ্ঞ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক চিরস্থায়ী উত্তরাধিকার হয়ে থাকবে।’ তিনি তাঁকে ‘সর্বকালের সবচেয়ে বিখ্যাত পেরুভিয়ান’ বলেও অভিহিত করেছেন।
পেরুর আরেকুইপায়ের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে ১৯৩৬ সালের ২৮ মার্চ জন্ম নেন মারিও ভার্গাস যোসা। তিনি প্রায়শই তাঁর লেখায় ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও পরিবার থেকে উপাদান নিতেন। এমনকি কখনো কখনো নিজের জীবনের ওপর ভিত্তি করে চরিত্র তৈরি করে তাঁর গল্পে যুক্ত করতেন।
তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘দ্য টাইম অব দ্য হিরো’ (১৯৬৩) লিমার এক সামরিক একাডেমিতে ক্যাডেট হিসেবে তাঁর কৈশোর জীবনের ওপর ভিত্তি করে লেখা। ১৯৯৩ সালের আত্মজীবনী ‘আ ফিশ ইন দ্য ওয়াটার’—এ তিনি তাঁর ১৯৯০ সালের প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা লিখেছেন।
অন্যান্য রচনায় তিনি তাঁর দেশের জন্য গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ‘দ্য স্টোরিটেলার’ পেরুতে আদিবাসী ও ইউরোপীয় সংস্কৃতির সংঘাত নিয়ে লেখা। ‘ডেথ ইন দ্য আন্দিজ’ (১৯৯৩) শাইনিং পাথ গেরিলা আন্দোলনের ভয়াবহ বছরগুলোর কথা তুলে ধরে। ২০০১ সালে মাদ্রিদে রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যোসা বলেছিলেন, ‘একজন লেখকের কাজ তাঁর নিজের অভিজ্ঞতা দ্বারা পুষ্ট হয় এবং বছরের পর বছর ধরে তা আরও সমৃদ্ধ হয়।’
অভিজ্ঞতার পরিধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যোসা সাহিত্যিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে গেছেন। ‘দ্য ব্যাড গার্ল’ (২০০৬) ছিল তাঁর প্রথম প্রেমের গল্প। এটি ব্যাপকভাবে তাঁর অন্যতম সেরা কাজ হিসেবে প্রশংসিত হয়েছিল। ১৯৭০-এর দশকে ভার্গাস যোসা কিউবার বিপ্লবের একসময়ের সমর্থক হয়েও ফিদেল কাস্ত্রোর নিন্দা করেন। এতে তাঁর অনেক বামপন্থী সাহিত্যিক সহকর্মী, যেমন গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। ১৯৭৬ সালে মেক্সিকো সিটিতে এক থিয়েটারের বাইরে তাঁদের দুজনের মধ্যে বিখ্যাত ঝগড়া হয়। এমনকি তাঁরা একে অপরকে ঘুষিও মেরেছিলেন। গার্সিয়া মার্কেজের এক বন্ধু বলেছিলেন, যোসার ক্ষুব্ধ হওয়ার কারণ ছিল মার্কেজ তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হওয়ার সময় তাঁকে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন। তবে যোসা এ বিষয়ে আলোচনা করতে চাননি।
যোসা মুক্তবাজার অর্থনীতির কট্টর সমর্থক এবং একই সঙ্গে উদারনৈতিক আদর্শের অনুসারী হয়ে ওঠেন। রাজনৈতিক বিষয়ে স্পষ্টভাষী হওয়া সত্ত্বেও পেরুর প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সময় তিনি নিজেকে একজন অনিচ্ছুক রাজনীতিবিদ হিসেবে তুলে ধরেছিলেন।
যোসা একবার বলেছিলেন, ‘বাস্তবে, আমার কখনো রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ছিল না। আমি খুব বিশেষ পরিস্থিতিতে রাজনীতিতে অংশ নিয়েছিলাম...এবং আমি সব সময় বলেছি যে, আমি নির্বাচনে জিতলেও বা হারলেও, রাজনীতিতে নয় আমার সাহিত্যিক, বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে ফিরে যাব।’
তাঁর ব্যক্তিগত জীবনও উপন্যাসের চেয়ে কম আকর্ষণীয় ছিল না। ‘আন্ট হুলিয়া অ্যান্ড দ্য স্ক্রিপ্টরাইটার’ (১৯৭৭) তাঁর ১৯ বছর বয়সে হুলিয়া উরকুইদির সঙ্গে প্রথম বিবাহের কাহিনির ওপর ভিত্তি করে লেখা। হুলিয়া তাঁর চেয়ে ১০ বছরের বড় ছিলেন এবং তাঁর মামার প্রাক্তন স্ত্রী ছিলেন।
তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলেন তাঁরই চাচাতো বোন প্যাট্রিসিয়া। কিন্তু ৫০ বছর পর ২০১৫ সালে তিনি গায়ক এনরিকে ইগলেসিয়াসের মা ইসাবেল প্রেইসলারের আকর্ষণে তাঁকে ছেড়ে যান। সেই সম্পর্ক ২০২২ সালে শেষ হয়। প্যাট্রিসিয়ার গর্ভে তাঁর তিন সন্তান জন্ম নেয়।

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
৪ দিন আগে
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
৯ দিন আগে
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১৫ দিন আগে
হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
১৫ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল। কিন্তু ভাষাবিদ ও সাহিত্য ইতিহাসবিদদের মতে, এই ধারণা আসলে পশ্চিমা দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি এক ‘ঔপনিবেশিক কল্পনা’ মাত্র। বাস্তবে আরবি সাহিত্য কখনোই থেমে যায়নি।
প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, অষ্টম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফাদের অধীনে বিজ্ঞান, দর্শন ও কবিতার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল বাগদাদ। আবু নুয়াস, আল-মুতানাব্বি, আল-ফারাবি ও ইবনে সিনার মতো কবি ও দার্শনিকদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এক স্বর্ণযুগ। ঊনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় গবেষকেরা—যেমন ফরাসি চিন্তাবিদ আর্নেস্ট রেনাঁ ও ডাচ ইতিহাসবিদ রেইনহার্ট দোজি সেই আমলটিকেই আরবি বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনের শিখর বলে স্বীকার করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, একাদশ শতাব্দীর পর এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে। তাঁদের মতে, এরপর প্রায় ৮০০ বছর আরবে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক বা দার্শনিক কাজ হয়নি—যতক্ষণ না ইউরোপে রেনেসাঁ শুরু হয়।
কিন্তু আধুনিক গবেষকেরা বলছেন, এই ধারণা সরলীকৃত ও পক্ষপাতদুষ্ট। ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলায় শেখ জায়েদ বুক অ্যাওয়ার্ডের আয়োজিত এক আলোচনায় ভাষাবিদেরা দাবি করেছেন, আরবি রচনা শৈলী কখনো বিলুপ্ত হয়নি; বরং তা ধারাবাহিকভাবে কপি, অনুবাদ ও পাঠের মাধ্যমে বেঁচে ছিল।
জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলার তাঁর ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ গ্রন্থে দাবি করেছেন, আরবি সাহিত্যে ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে যে ধারণাটি প্রচলিত আছে তা আসলে গাল-গল্প। এই বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। গ্রুন্ডলার এতে দেখিয়েছেন, নবম শতাব্দীর বাগদাদে বইয়ের ব্যবসা, কপিকারদের প্রতিযোগিতা, জনসম্মুখে পাঠ ও লেখার প্রচলন—সবই ছিল আধুনিক প্রকাশনা সংস্কৃতির পূর্বসূরি। তিনি মত দিয়েছেন, ‘বাগদাদের রাস্তায় হাঁটলে আপনি দেখতেন লোকেরা হস্তলিপি বিক্রি করছে, বিরামচিহ্ন নিয়ে তর্ক করছে—এ যেন এক জীবন্ত প্রকাশনা বাজার।’
গবেষণা বলছে, আরবি সাহিত্য আসলে কখনো এক জায়গায় স্থির থাকেনি। এর কেন্দ্র এক সময় বাগদাদ থেকে কায়রো, দামেস্ক ও আন্দালুসিয়ায় স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু ধারাটি অব্যাহতই থাকে। নতুন ঘরানা তৈরি হয়, পুরোনো ঘরানা রূপান্তরিত হয়।
ফরাসি অধ্যাপক হাকান ওজকান তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, ‘জাজাল’ নামের কথ্য ছন্দভিত্তিক কবিতার ধারা আব্বাসীয় যুগের পরও বিকশিত হতে থাকে। তাঁর মতে, ‘এই কবিরা নিয়ম ভেঙে নতুন রূপ দিয়েছে—তাঁদের ছন্দ ও ব্যঙ্গ আধুনিক র্যাপের মতো প্রাণবন্ত।’

এদিকে এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২০ অক্টোবর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, আবুধাবির নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ‘আরবি সাহিত্য লাইব্রেরি’ প্রকল্প ইতিমধ্যেই ‘হারানো শতাব্দী’ বলে বিবেচিত সময়ের ৬০ টিরও বেশি আরবি সাহিত্যকর্ম পুনরুদ্ধার করেছে। প্রকল্পটির সম্পাদক অধ্যাপক মরিস পোমেরান্টজ বলেছেন, ‘এই বইগুলো সম্পাদনা করা মানে এক চলমান সংলাপে অংশ নেওয়া—যেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেখক, অনুবাদক ও সমালোচকেরা একে অপরকে উত্তর দিয়ে গেছেন।’
মরিস মনে করেন, আরবি সাহিত্য স্থবির হয়ে যাওয়ার ধারণাটি মূলত অনুবাদের অভাব থেকেই জন্ম নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো লেখা অনুবাদ করা হয় না, তখন সেটি বৈশ্বিক অস্তিত্ব হারায়।’
মরিসের মতে, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই সাহিত্যকে আবার জনসাধারণের কল্পনায় ফিরিয়ে আনা—স্কুলে পড়ানো, মঞ্চে উপস্থাপন করা, অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া। তা না হলে আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে চিহ্নিত সময়টি অধরাই থেকে যাবে।

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল। কিন্তু ভাষাবিদ ও সাহিত্য ইতিহাসবিদদের মতে, এই ধারণা আসলে পশ্চিমা দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি এক ‘ঔপনিবেশিক কল্পনা’ মাত্র। বাস্তবে আরবি সাহিত্য কখনোই থেমে যায়নি।
প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, অষ্টম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফাদের অধীনে বিজ্ঞান, দর্শন ও কবিতার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল বাগদাদ। আবু নুয়াস, আল-মুতানাব্বি, আল-ফারাবি ও ইবনে সিনার মতো কবি ও দার্শনিকদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এক স্বর্ণযুগ। ঊনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় গবেষকেরা—যেমন ফরাসি চিন্তাবিদ আর্নেস্ট রেনাঁ ও ডাচ ইতিহাসবিদ রেইনহার্ট দোজি সেই আমলটিকেই আরবি বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনের শিখর বলে স্বীকার করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, একাদশ শতাব্দীর পর এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে। তাঁদের মতে, এরপর প্রায় ৮০০ বছর আরবে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক বা দার্শনিক কাজ হয়নি—যতক্ষণ না ইউরোপে রেনেসাঁ শুরু হয়।
কিন্তু আধুনিক গবেষকেরা বলছেন, এই ধারণা সরলীকৃত ও পক্ষপাতদুষ্ট। ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলায় শেখ জায়েদ বুক অ্যাওয়ার্ডের আয়োজিত এক আলোচনায় ভাষাবিদেরা দাবি করেছেন, আরবি রচনা শৈলী কখনো বিলুপ্ত হয়নি; বরং তা ধারাবাহিকভাবে কপি, অনুবাদ ও পাঠের মাধ্যমে বেঁচে ছিল।
জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলার তাঁর ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ গ্রন্থে দাবি করেছেন, আরবি সাহিত্যে ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে যে ধারণাটি প্রচলিত আছে তা আসলে গাল-গল্প। এই বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। গ্রুন্ডলার এতে দেখিয়েছেন, নবম শতাব্দীর বাগদাদে বইয়ের ব্যবসা, কপিকারদের প্রতিযোগিতা, জনসম্মুখে পাঠ ও লেখার প্রচলন—সবই ছিল আধুনিক প্রকাশনা সংস্কৃতির পূর্বসূরি। তিনি মত দিয়েছেন, ‘বাগদাদের রাস্তায় হাঁটলে আপনি দেখতেন লোকেরা হস্তলিপি বিক্রি করছে, বিরামচিহ্ন নিয়ে তর্ক করছে—এ যেন এক জীবন্ত প্রকাশনা বাজার।’
গবেষণা বলছে, আরবি সাহিত্য আসলে কখনো এক জায়গায় স্থির থাকেনি। এর কেন্দ্র এক সময় বাগদাদ থেকে কায়রো, দামেস্ক ও আন্দালুসিয়ায় স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু ধারাটি অব্যাহতই থাকে। নতুন ঘরানা তৈরি হয়, পুরোনো ঘরানা রূপান্তরিত হয়।
ফরাসি অধ্যাপক হাকান ওজকান তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, ‘জাজাল’ নামের কথ্য ছন্দভিত্তিক কবিতার ধারা আব্বাসীয় যুগের পরও বিকশিত হতে থাকে। তাঁর মতে, ‘এই কবিরা নিয়ম ভেঙে নতুন রূপ দিয়েছে—তাঁদের ছন্দ ও ব্যঙ্গ আধুনিক র্যাপের মতো প্রাণবন্ত।’

এদিকে এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২০ অক্টোবর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, আবুধাবির নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ‘আরবি সাহিত্য লাইব্রেরি’ প্রকল্প ইতিমধ্যেই ‘হারানো শতাব্দী’ বলে বিবেচিত সময়ের ৬০ টিরও বেশি আরবি সাহিত্যকর্ম পুনরুদ্ধার করেছে। প্রকল্পটির সম্পাদক অধ্যাপক মরিস পোমেরান্টজ বলেছেন, ‘এই বইগুলো সম্পাদনা করা মানে এক চলমান সংলাপে অংশ নেওয়া—যেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেখক, অনুবাদক ও সমালোচকেরা একে অপরকে উত্তর দিয়ে গেছেন।’
মরিস মনে করেন, আরবি সাহিত্য স্থবির হয়ে যাওয়ার ধারণাটি মূলত অনুবাদের অভাব থেকেই জন্ম নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো লেখা অনুবাদ করা হয় না, তখন সেটি বৈশ্বিক অস্তিত্ব হারায়।’
মরিসের মতে, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই সাহিত্যকে আবার জনসাধারণের কল্পনায় ফিরিয়ে আনা—স্কুলে পড়ানো, মঞ্চে উপস্থাপন করা, অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া। তা না হলে আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে চিহ্নিত সময়টি অধরাই থেকে যাবে।

নোবেলজয়ী পেরুভিয়ান সাহিত্যিক মারিও বার্গাস যোসা মারা গেছেন। স্থানীয় সময় গতকাল রোববার পেরুর রাজধানী লিমায় তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। তাঁর ছেলে আলভারো বার্গাস যোসা মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
১৪ এপ্রিল ২০২৫
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
৯ দিন আগে
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১৫ দিন আগে
হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
১৫ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
রকিব হাসানের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন সেবা প্রকাশনীর উপদেষ্টা মাসুমা মায়মুর। তিনি সেবা প্রকাশনীর প্রতিষ্ঠাতা কাজী আনোয়ার হোসেনের ছোট ছেলে কাজী মায়মুর হোসেনের স্ত্রী।
মাসুমা মায়মুর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তিন গোয়েন্দা ও সেবা প্রকাশনীর পাঠকদেরকে আন্তরিক দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, কিছুক্ষণ আগে রকিব হাসান সাহেব পরলোক গমন করেছেন। ডায়ালাইসিস চলাকালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওনার জীবনাবসান ঘটে। আপনারা ওনার পবিত্র আত্মার মাগফেরাত কামনা করুন।’
১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন রকিব হাসান। বাবার চাকরির কারণে শৈশব কেটেছে ফেনীতে। সেখান থেকে স্কুলজীবন শেষ করে ভর্তি হন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। পড়াশোনা শেষে বিভিন্ন চাকরিতে যুক্ত হলেও অফিসের বাঁধাধরা জীবনে তাঁর মন টেকেনি। অবশেষে তিনি লেখালেখিকে বেছে নেন জীবনের একমাত্র পথ হিসেবে।

সেবা প্রকাশনী থেকে তাঁর লেখকজীবনের সূচনা হয়। প্রথমদিকে বিশ্বসেরা ক্ল্যাসিক বই অনুবাদ করে লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন তিনি। এরপর টারজান, গোয়েন্দা রাজু, রেজা-সুজা সিরিজসহ চার শতাধিক জনপ্রিয় বই লেখেন। তবে তাঁর পরিচয়ের সবচেয়ে বড় জায়গা হলো তিন গোয়েন্দা সিরিজ। এই সিরিজ বাংলাদেশের অসংখ্য কিশোর-কিশোরীর কৈশোরের সঙ্গী।
মূলত রবার্ট আর্থারের থ্রি ইনভেস্টিগেটরস সিরিজ অবলম্বনে তিন গোয়েন্দার সূচনা হয়। তবে রকিব হাসানের লেখনশৈলীতে এটি পেয়েছে একেবারে নতুন রূপ। বাংলাদেশি সাহিত্য হয়ে উঠেছে এটি। এই সিরিজের মাধ্যমে তিনি হয়ে ওঠেন হাজারো কিশোর পাঠকের প্রিয় লেখক।
নিজ নামে লেখার পাশাপাশি তিনি ব্যবহার করেছেন বিভিন্ন ছদ্মনাম। শামসুদ্দীন নওয়াব নামে তিনি অনুবাদ করেছিলেন জুল ভার্নের বইগুলো।
বাংলাদেশের পাঠকদের কাছে রকিব হাসান শুধু একজন গোয়েন্দা লেখক নন, তিনি কয়েক প্রজন্মের শৈশব-কৈশোরের ভালোবাসার মানুষ।

জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
রকিব হাসানের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন সেবা প্রকাশনীর উপদেষ্টা মাসুমা মায়মুর। তিনি সেবা প্রকাশনীর প্রতিষ্ঠাতা কাজী আনোয়ার হোসেনের ছোট ছেলে কাজী মায়মুর হোসেনের স্ত্রী।
মাসুমা মায়মুর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তিন গোয়েন্দা ও সেবা প্রকাশনীর পাঠকদেরকে আন্তরিক দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, কিছুক্ষণ আগে রকিব হাসান সাহেব পরলোক গমন করেছেন। ডায়ালাইসিস চলাকালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওনার জীবনাবসান ঘটে। আপনারা ওনার পবিত্র আত্মার মাগফেরাত কামনা করুন।’
১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন রকিব হাসান। বাবার চাকরির কারণে শৈশব কেটেছে ফেনীতে। সেখান থেকে স্কুলজীবন শেষ করে ভর্তি হন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। পড়াশোনা শেষে বিভিন্ন চাকরিতে যুক্ত হলেও অফিসের বাঁধাধরা জীবনে তাঁর মন টেকেনি। অবশেষে তিনি লেখালেখিকে বেছে নেন জীবনের একমাত্র পথ হিসেবে।

সেবা প্রকাশনী থেকে তাঁর লেখকজীবনের সূচনা হয়। প্রথমদিকে বিশ্বসেরা ক্ল্যাসিক বই অনুবাদ করে লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন তিনি। এরপর টারজান, গোয়েন্দা রাজু, রেজা-সুজা সিরিজসহ চার শতাধিক জনপ্রিয় বই লেখেন। তবে তাঁর পরিচয়ের সবচেয়ে বড় জায়গা হলো তিন গোয়েন্দা সিরিজ। এই সিরিজ বাংলাদেশের অসংখ্য কিশোর-কিশোরীর কৈশোরের সঙ্গী।
মূলত রবার্ট আর্থারের থ্রি ইনভেস্টিগেটরস সিরিজ অবলম্বনে তিন গোয়েন্দার সূচনা হয়। তবে রকিব হাসানের লেখনশৈলীতে এটি পেয়েছে একেবারে নতুন রূপ। বাংলাদেশি সাহিত্য হয়ে উঠেছে এটি। এই সিরিজের মাধ্যমে তিনি হয়ে ওঠেন হাজারো কিশোর পাঠকের প্রিয় লেখক।
নিজ নামে লেখার পাশাপাশি তিনি ব্যবহার করেছেন বিভিন্ন ছদ্মনাম। শামসুদ্দীন নওয়াব নামে তিনি অনুবাদ করেছিলেন জুল ভার্নের বইগুলো।
বাংলাদেশের পাঠকদের কাছে রকিব হাসান শুধু একজন গোয়েন্দা লেখক নন, তিনি কয়েক প্রজন্মের শৈশব-কৈশোরের ভালোবাসার মানুষ।

নোবেলজয়ী পেরুভিয়ান সাহিত্যিক মারিও বার্গাস যোসা মারা গেছেন। স্থানীয় সময় গতকাল রোববার পেরুর রাজধানী লিমায় তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। তাঁর ছেলে আলভারো বার্গাস যোসা মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
১৪ এপ্রিল ২০২৫
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
৪ দিন আগে
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১৫ দিন আগে
হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
১৫ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য। লেখক সুসান সনটাগ অবশ্য তাঁকে একসময় ‘মহাপ্রলয়ের হাঙ্গেরিয়ান গুরু’ আখ্যা দিয়েছিলেন।
সাহিত্যজগতে অনেকের কাছে ক্রাসনাহোরকাইয়ের নোবেল পাওয়ার এই ঘোষণাটি যেন কয়েক দশক ধরে চলা একটি বাক্যের সমাপ্তি।
১৯৫৪ সালে হাঙ্গেরির ছোট শহর জিউলা-তে জন্ম নেওয়া ক্রাসনাহোরকাই ১৯৮০-এর দশকের শুরুতে গল্প লেখা শুরু করেন। তাঁর প্রথম উপন্যাস স্যাটানট্যাঙ্গো (১৯৮৫) একটি বৃষ্টিস্নাত, ধ্বংসপ্রায় গ্রামের কাহিনি—যেখানে প্রতারক, মাতাল ও হতাশ মানুষেরা মিথ্যা আশায় আঁকড়ে থাকে। পরিচালক বেলা-তার তাঁর এই উপন্যাসটিকে দীর্ঘ ৭ ঘণ্টার এক সাদাকালো চলচ্চিত্রে রূপ দেন। এই বইতেই ধরা পড়ে ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখার বৈশিষ্ট্যসমূহ, যেমন—অবিরাম দীর্ঘ বাক্য, দার্শনিক হাস্যরস ও পতনের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের প্রতিচ্ছবি।
তাঁর পরবর্তী উপন্যাসগুলো—দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স (১৯৮৯), ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার (১৯৯৯) ও সেইবো দেয়ার বিলো (২০০৮)—তাঁর এই দৃষ্টিভঙ্গিকে মহাজাগতিক পরিসরে বিস্তৃত করেছে। ‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’–এ তিনি এক নথি প্রহরীর গল্প বলেছেন, যিনি রহস্যময় এক পাণ্ডুলিপি প্রকাশ করতে নিউইয়র্কে পালিয়ে যান এবং আত্মহত্যা করেন—যেন ক্রম বিলীন পৃথিবীতে অর্থ ধরে রাখার এক মরিয়া চেষ্টা তাঁর।
ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখায় কাহিনি প্রায় সময়ই বাক্যের ভেতর হারিয়ে যায়। তিনি লিখেছেন এমন বাক্য, যা একাধিক পৃষ্ঠা জুড়ে পাঠককে টেনে নেয় অবচেতনে, অবিরাম প্রবাহে।
তাঁর সাহিত্যে হাস্যরস ও ট্র্যাজেডি পাশাপাশি চলে। স্যাটানট্যাঙ্গো–এর মাতাল নাচের দৃশ্য যেমন নিঃশেষের প্রতীক, তেমনি ‘ব্যারন ওয়েঙ্কহাইমস হোমকামিং’ (২০১৬)-এ দেখা যায়, ফিরে আসা এক পরাজিত অভিজাতকে। যার মাধ্যমে প্রকাশ পায় সভ্যতার পচন ও মানুষের হাস্যকর ভ্রান্তি।
২০১৫ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার পাওয়ার মধ্য দিয়েই প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পান ক্রাসনাহোরকাই। অনুবাদক জর্জ সির্টেস ও ওটিলি মুলজেট তাঁর জটিল হাঙ্গেরিয়ান ভাষাকে ইংরেজিতে রূপ দিতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ‘হাডসন রিভিউ’ তাঁকে বর্ণনা করেছিল ‘অন্তহীন বাক্যের ভ্রমণশিল্পী’ হিসেবে।
চল্লিশ বছরের সৃষ্টিতে ক্রাসনাহোরকাইয়ের ভুবন চিত্র, সংগীত, দর্শন ও ভাষার মিলনে বিস্তৃত। সাম্প্রতিক উপন্যাস ‘হার্শট ০৭৭৬৯’ (২০২৪)–এ তিনি এক প্রবাহিত বাক্যে লিখেছেন নব্য-নাৎসি, নেকড়ে আর এক হতভাগ্য পদার্থবিদের কাহিনি—আধুনিক ইউরোপের নৈতিক পক্ষাঘাতের রূপক হিসেবে।
তাঁর সমগ্র সাহিত্যজগৎ এক অন্ধকার ও ধ্যানমগ্ন মহাবিশ্ব—যেখানে পতন, শূন্যতা ও করুণা পাশাপাশি থাকে। ‘সেইবো দেয়ার বিলো’ বইটিতে তিনি লিখেছেন, ‘সৌন্দর্য, যত ক্ষণস্থায়ীই হোক না কেন, তা পবিত্রতার প্রতিবিম্ব।’ এই বিশ্বাসই লাসলো ক্রাসনাহোরকাইকে সেই বিরল লেখক করে তুলেছে, যাঁর নৈরাশ্যও মুক্তির মতো দীপ্ত।

হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য। লেখক সুসান সনটাগ অবশ্য তাঁকে একসময় ‘মহাপ্রলয়ের হাঙ্গেরিয়ান গুরু’ আখ্যা দিয়েছিলেন।
সাহিত্যজগতে অনেকের কাছে ক্রাসনাহোরকাইয়ের নোবেল পাওয়ার এই ঘোষণাটি যেন কয়েক দশক ধরে চলা একটি বাক্যের সমাপ্তি।
১৯৫৪ সালে হাঙ্গেরির ছোট শহর জিউলা-তে জন্ম নেওয়া ক্রাসনাহোরকাই ১৯৮০-এর দশকের শুরুতে গল্প লেখা শুরু করেন। তাঁর প্রথম উপন্যাস স্যাটানট্যাঙ্গো (১৯৮৫) একটি বৃষ্টিস্নাত, ধ্বংসপ্রায় গ্রামের কাহিনি—যেখানে প্রতারক, মাতাল ও হতাশ মানুষেরা মিথ্যা আশায় আঁকড়ে থাকে। পরিচালক বেলা-তার তাঁর এই উপন্যাসটিকে দীর্ঘ ৭ ঘণ্টার এক সাদাকালো চলচ্চিত্রে রূপ দেন। এই বইতেই ধরা পড়ে ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখার বৈশিষ্ট্যসমূহ, যেমন—অবিরাম দীর্ঘ বাক্য, দার্শনিক হাস্যরস ও পতনের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের প্রতিচ্ছবি।
তাঁর পরবর্তী উপন্যাসগুলো—দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স (১৯৮৯), ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার (১৯৯৯) ও সেইবো দেয়ার বিলো (২০০৮)—তাঁর এই দৃষ্টিভঙ্গিকে মহাজাগতিক পরিসরে বিস্তৃত করেছে। ‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’–এ তিনি এক নথি প্রহরীর গল্প বলেছেন, যিনি রহস্যময় এক পাণ্ডুলিপি প্রকাশ করতে নিউইয়র্কে পালিয়ে যান এবং আত্মহত্যা করেন—যেন ক্রম বিলীন পৃথিবীতে অর্থ ধরে রাখার এক মরিয়া চেষ্টা তাঁর।
ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখায় কাহিনি প্রায় সময়ই বাক্যের ভেতর হারিয়ে যায়। তিনি লিখেছেন এমন বাক্য, যা একাধিক পৃষ্ঠা জুড়ে পাঠককে টেনে নেয় অবচেতনে, অবিরাম প্রবাহে।
তাঁর সাহিত্যে হাস্যরস ও ট্র্যাজেডি পাশাপাশি চলে। স্যাটানট্যাঙ্গো–এর মাতাল নাচের দৃশ্য যেমন নিঃশেষের প্রতীক, তেমনি ‘ব্যারন ওয়েঙ্কহাইমস হোমকামিং’ (২০১৬)-এ দেখা যায়, ফিরে আসা এক পরাজিত অভিজাতকে। যার মাধ্যমে প্রকাশ পায় সভ্যতার পচন ও মানুষের হাস্যকর ভ্রান্তি।
২০১৫ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার পাওয়ার মধ্য দিয়েই প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পান ক্রাসনাহোরকাই। অনুবাদক জর্জ সির্টেস ও ওটিলি মুলজেট তাঁর জটিল হাঙ্গেরিয়ান ভাষাকে ইংরেজিতে রূপ দিতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ‘হাডসন রিভিউ’ তাঁকে বর্ণনা করেছিল ‘অন্তহীন বাক্যের ভ্রমণশিল্পী’ হিসেবে।
চল্লিশ বছরের সৃষ্টিতে ক্রাসনাহোরকাইয়ের ভুবন চিত্র, সংগীত, দর্শন ও ভাষার মিলনে বিস্তৃত। সাম্প্রতিক উপন্যাস ‘হার্শট ০৭৭৬৯’ (২০২৪)–এ তিনি এক প্রবাহিত বাক্যে লিখেছেন নব্য-নাৎসি, নেকড়ে আর এক হতভাগ্য পদার্থবিদের কাহিনি—আধুনিক ইউরোপের নৈতিক পক্ষাঘাতের রূপক হিসেবে।
তাঁর সমগ্র সাহিত্যজগৎ এক অন্ধকার ও ধ্যানমগ্ন মহাবিশ্ব—যেখানে পতন, শূন্যতা ও করুণা পাশাপাশি থাকে। ‘সেইবো দেয়ার বিলো’ বইটিতে তিনি লিখেছেন, ‘সৌন্দর্য, যত ক্ষণস্থায়ীই হোক না কেন, তা পবিত্রতার প্রতিবিম্ব।’ এই বিশ্বাসই লাসলো ক্রাসনাহোরকাইকে সেই বিরল লেখক করে তুলেছে, যাঁর নৈরাশ্যও মুক্তির মতো দীপ্ত।

নোবেলজয়ী পেরুভিয়ান সাহিত্যিক মারিও বার্গাস যোসা মারা গেছেন। স্থানীয় সময় গতকাল রোববার পেরুর রাজধানী লিমায় তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। তাঁর ছেলে আলভারো বার্গাস যোসা মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
১৪ এপ্রিল ২০২৫
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
৪ দিন আগে
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
৯ দিন আগে
হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
১৫ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
আধুনিক হাঙ্গেরীয় সাহিত্যের একজন অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব লাসলো। অভিনব শৈলীর পাশাপাশি দার্শনিক গভীরতার জন্য তাঁর সাহিত্য সমাদৃত হয়েছে। তাঁকে ফ্রানৎস কাফকা ও স্যামুয়েল বেকেটের ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের মধ্যেও শিল্পের লেলিহান ঔজ্জ্বল্য ফুটে ওঠে লাসলোর লেখায়। তাই যুদ্ধবিধ্বস্ত সময়ের বুকে ফুলের মতো স্থান করে নিল তাঁর সাহিত্য।
লাসলোর জন্য সাহিত্যে এটা প্রথম পুরস্কার নয়, ২০১৪ সালে সাহিত্যকর্মের জন্য ম্যান বুকার ইন্টারন্যাশনাল পুরস্কার পান তিনি। এ পুরস্কার বিশ্বসাহিত্যে তাঁর অবস্থানকে সুদৃঢ় করে।
লাসলোর সাহিত্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো—স্বতন্ত্র শৈলী ও গঠন। উপন্যাসের মূল বিষয়বস্তু হলো—মানবতার অবক্ষয়, ধ্বংসের অনিবার্যতা ও আধুনিক জীবনের লক্ষ্যহীন চলন। তাঁর চরিত্রদের মধ্যে প্রায়ই একধরনের হতাশা ও বিচ্ছিন্নতা দেখা যায়; তারা এমন এক জগতের পথিক, যেখানে নৈতিকতা ও আশা বিলীনপ্রায়।
১৯৮৫ সালে প্রকাশিত ‘স্যাটানটাঙ্গো’ নামে প্রথম উপন্যাস লিখেই খ্যাতি পান লাসলো। এই উপন্যাসে বিচ্ছিন্ন ও পতিত এক কৃষি সমবায় গ্রামের জীবন তুলে ধরেছেন তিনি। সেখানে একধরনের বিভ্রম ও আশার জন্ম দেয় এক রহস্যময় আগন্তুকের আগমনে। এই উপন্যাস অবলম্বনে একই শিরোনামে সাত ঘণ্টার কালজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন বিখ্যাত পরিচালক বেলা টর।
লাসলোর আরেকটি ফিকশন উপন্যাস হলো— ‘দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স’। হাঙ্গেরির এক কাল্পনিক শহরের জীবন ফুটে উঠেছে এই উপন্যাসে। সামুদ্রিক প্রাণী হাঙরের প্রদর্শনীকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যকার উন্মাদনা, সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও একনায়কতন্ত্রের উত্থানের চিত্র আঁকা হয়েছে তাতে।
‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’ লাসলোর আরেকটি বিখ্যাত উপন্যাস। লম্বা লম্বা বাক্যে লেখা এই উপন্যাস লাসলোর শৈলী নিয়ে পাঠকদের নতুন করে ভাবায়। উপন্যাসের নায়ক একটি পাণ্ডুলিপি রক্ষা করার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন শহর ঘুরে বেড়ায়। বিশ্বের চূড়ান্ত ধ্বংসের একটি কাব্যিক বর্ণনা পাওয়া যায় এই উপন্যাসে।
এবার লাসলোকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করার নেপথ্যে নোবেল কমিটির বড় কারণ ছিল তাঁর সাহিত্যে শিল্পের জয়ধ্বনি তোলার প্রচেষ্টা। যখন সারা বিশ্বের বেশ কিছু দেশ যুদ্ধবিধ্বস্ত বা যুদ্ধের জন্য উৎসুক, তখন বারবার শিল্পের মোহিনী প্রেম ও বন্ধনের কথা মনে করিয়ে দিতে চায় লাসলোর সাহিত্য।

হাঙ্গেরির সাহিত্যে অসীম জনপ্রিয়তা ও প্রভাব তাঁর; বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের দাপটেও শিল্পের শক্তি চেনায় তাঁর কলম। তিনি হাঙ্গেরিয়ান ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই; সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
আধুনিক হাঙ্গেরীয় সাহিত্যের একজন অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব লাসলো। অভিনব শৈলীর পাশাপাশি দার্শনিক গভীরতার জন্য তাঁর সাহিত্য সমাদৃত হয়েছে। তাঁকে ফ্রানৎস কাফকা ও স্যামুয়েল বেকেটের ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বজোড়া আতঙ্ক ও সন্ত্রাসের মধ্যেও শিল্পের লেলিহান ঔজ্জ্বল্য ফুটে ওঠে লাসলোর লেখায়। তাই যুদ্ধবিধ্বস্ত সময়ের বুকে ফুলের মতো স্থান করে নিল তাঁর সাহিত্য।
লাসলোর জন্য সাহিত্যে এটা প্রথম পুরস্কার নয়, ২০১৪ সালে সাহিত্যকর্মের জন্য ম্যান বুকার ইন্টারন্যাশনাল পুরস্কার পান তিনি। এ পুরস্কার বিশ্বসাহিত্যে তাঁর অবস্থানকে সুদৃঢ় করে।
লাসলোর সাহিত্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো—স্বতন্ত্র শৈলী ও গঠন। উপন্যাসের মূল বিষয়বস্তু হলো—মানবতার অবক্ষয়, ধ্বংসের অনিবার্যতা ও আধুনিক জীবনের লক্ষ্যহীন চলন। তাঁর চরিত্রদের মধ্যে প্রায়ই একধরনের হতাশা ও বিচ্ছিন্নতা দেখা যায়; তারা এমন এক জগতের পথিক, যেখানে নৈতিকতা ও আশা বিলীনপ্রায়।
১৯৮৫ সালে প্রকাশিত ‘স্যাটানটাঙ্গো’ নামে প্রথম উপন্যাস লিখেই খ্যাতি পান লাসলো। এই উপন্যাসে বিচ্ছিন্ন ও পতিত এক কৃষি সমবায় গ্রামের জীবন তুলে ধরেছেন তিনি। সেখানে একধরনের বিভ্রম ও আশার জন্ম দেয় এক রহস্যময় আগন্তুকের আগমনে। এই উপন্যাস অবলম্বনে একই শিরোনামে সাত ঘণ্টার কালজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন বিখ্যাত পরিচালক বেলা টর।
লাসলোর আরেকটি ফিকশন উপন্যাস হলো— ‘দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স’। হাঙ্গেরির এক কাল্পনিক শহরের জীবন ফুটে উঠেছে এই উপন্যাসে। সামুদ্রিক প্রাণী হাঙরের প্রদর্শনীকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যকার উন্মাদনা, সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও একনায়কতন্ত্রের উত্থানের চিত্র আঁকা হয়েছে তাতে।
‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’ লাসলোর আরেকটি বিখ্যাত উপন্যাস। লম্বা লম্বা বাক্যে লেখা এই উপন্যাস লাসলোর শৈলী নিয়ে পাঠকদের নতুন করে ভাবায়। উপন্যাসের নায়ক একটি পাণ্ডুলিপি রক্ষা করার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন শহর ঘুরে বেড়ায়। বিশ্বের চূড়ান্ত ধ্বংসের একটি কাব্যিক বর্ণনা পাওয়া যায় এই উপন্যাসে।
এবার লাসলোকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করার নেপথ্যে নোবেল কমিটির বড় কারণ ছিল তাঁর সাহিত্যে শিল্পের জয়ধ্বনি তোলার প্রচেষ্টা। যখন সারা বিশ্বের বেশ কিছু দেশ যুদ্ধবিধ্বস্ত বা যুদ্ধের জন্য উৎসুক, তখন বারবার শিল্পের মোহিনী প্রেম ও বন্ধনের কথা মনে করিয়ে দিতে চায় লাসলোর সাহিত্য।

নোবেলজয়ী পেরুভিয়ান সাহিত্যিক মারিও বার্গাস যোসা মারা গেছেন। স্থানীয় সময় গতকাল রোববার পেরুর রাজধানী লিমায় তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। তাঁর ছেলে আলভারো বার্গাস যোসা মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
১৪ এপ্রিল ২০২৫
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
৪ দিন আগে
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
৯ দিন আগে
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১৫ দিন আগে